গত আড়াই বছরে
করোনার তা-ব এবং আতঙ্কের পরে এখন চলছে ডেঙ্গু আতঙ্ক। অবস্থা প্রায় মহামারী পর্যায়ে।
বিশেষ করে ঢাকা, কক্সবাজার এবং কিছু বড় শহরে। ডেঙ্গু রোগের ইতিহাস হাজার বছরের পুরোনো।
৯৯২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত ‘চাইনিজ মেডিকেল এনসাইক্লোপেডিয়া’-তে ডেঙ্গু রোগ ব্যবস্থাপনা
সম্পর্কে তথ্য আছে। রোগটি প্রথমে বানরের মধ্যে বিস্তার লাভ করে। সেখান থেকে ‘এডিস ইজিপ্টাই’
নামের মশার মাধ্যমে মানুষের শরীরে অনুপ্রবেশ। তবে রোগটি আফ্রিকা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার
গুটিকয়েক দেশে সীমিত ছিল শত শত বছর ধরে। অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতকে জাহাজযোগে বৈদেশিক বাণিজ্যের
প্রসারের সাথে সাথে এডিস প্রজাতির এ মশা জাহাজে করে দেশান্তরী হয়। সাথে নিয়ে যায় ডেঙ্গু
ভাইরাস। বর্তমানে প্রায় ১২৯টি দেশে ডেঙ্গু রোগ আছে।
আমাদের দেশে
ডেঙ্গু জর প্রথম শনাক্ত হয় ১৯৬৪ সালে। পরবর্তী ৬০ বছরে খুবই সীমিত আকারে সংক্রমণ ছিল
বিক্ষিপ্তভাবে। আতঙ্ক তো ছিলই না, এমনকি খুব একটা পরিচিতিও ছিল না। প্রাদুর্ভাব ও আতঙ্ক
নিয়ে হাজির হয় ২০০০ সালে। স্বাস্থ্যবিভাগ তো প্রথম দিকে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের কথা
উচ্চারণ করতেই চায়নি। চিকিৎসকদের সংগঠন ‘ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’ সচেতনতা
বৃদ্ধির জন্য তখন একটা মিছিল বের করেছিল। মিছিলের ব্যানারে স্লোগান ছিল ‘অন্ধ হলেও
প্রলয় বন্ধ হয় না’। বাংলাদেশ স্কাউটস থেকে লিফলেট তৈরি, র্যালি এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
অভিযান চালানো হয়েছিল বেশ জোরেসোরেই। শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায়
বাংলাদেশ স্কাউটস হাসপাতাল চত্বরে তাঁবু ও ক্যাম্প খাট দিয়ে অস্থায়ী ডেঙ্গু হাসপাতাল
পরিচালনাও করেছে
এরপরে প্রায়
২২ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। ডেঙ্গু সম্পর্কে আলোচনা, পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্তি, চিকিৎসা
এবং সচেতনতা বেড়েছে। অন্ধ থাকেনি, কিন্তু প্রলয় বন্ধ হয়নি। প্রলয় বরং বেড়েছে। ডেঙ্গু
ভাইরাসের ১, ২, ৩ ও ৪ নামে ৪টি সেরোটাইপ আছে।
২০০০ সালে সেরোটাইপ-১ দিয়ে সংক্রমণ শুরু হয়। ২০১৬ সালে সেরোটাইপ-১ এর সাথে সেরোটাইপ-
২ ও ৩ সংক্রমণে যোগ দিয়েছে। তখন থেকেই সংক্রমণ ও রোগের তীব্রতায় গতি পায়। জাপানের ওসাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বাংলাদেশের কয়েকটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সমীক্ষা থেকে প্রতীয়মান
হয় ২০১৭ সাল পর্যন্ত সেরোটাইপ-১ এর সংক্রমণই বেশি ছিল (৯১.৩%)। ২০১৮ সালে সেরোটাইপ-১,
২ ও ৩ এর সংক্রমণ ছিল প্রায় কাছাকাছি। হঠাৎ করেই ২০১৯ সালে সেরোটাইপ-৩ এর সংক্রমণ প্রায়
সর্বগ্রাসী হয় (৯১.৮৬%)। এ ২০১৯ সালেই রোগীর সংখ্যা লক্ষাধিক এবং ১৭৯ জনের মৃত্যু ঘটে।
পরের ২ বছর গতি একটু সীমিত থাকলেও এ বছর রোগীর সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার ছুঁই ছুঁই, এবং
মৃত্যু ঘটেছে ২৬০ জনের বেশি। শুধু নভেম্বরের ৩ সপ্তাহে ৯৩ জন রোগী মৃত্যুবরণ করেছে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু।
প্রশ্ন উঠতেই
পারে নভেম্বর মাসে বৃষ্টিপাতের লেশমাত্র নেই। এর পরেও রোগী এবং মৃত্যু বেশি কেন? এডিস
মশা বদ্ধ স্বচ্ছ পানিতে ডিম পারে। মশার জীবনকাল গড়ে ৪০ দিন, কিন্তু একবার এ মশা সংক্রমিত
হলে পুরো জীবনকালই সংক্রমণ ঘটাতে থাকে। প্রতি
৩ দিন অন্তর ডিম পারে। কাজেই কম জীবনকাল হলেও একটু স্বচ্ছ পানি পাওয়া গেলে দ্রুত বংশ
বিস্তারে এ মশার জুড়ি নেই। এক চায়ের চামচ বা একটা বোতলের ছিপির পানিই যথেষ্ট। জলবায়ুর
পরিবর্তনে ভ্রমাত্মক বৃষ্টিপাত বেড়েছে। মাঝে মাঝে বৃষ্টি ও কিছুদিন বিরতি পেলেই ছোট
পাত্রে পানি জমে। আর আমাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভ্যাস নিকৃষ্টের মধ্যে অন্যতম। একবার
মাত্র ব্যবহারযোগ্য কাপ, বোতল, পাত্র ছুড়ে ফেলার অভ্যাস আমরা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছি।
শিক্ষার হার, গড় আয়ু, ভোগ্যপণ্য ব্যবহার ইত্যাদি বৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্লা দিয়েছে বর্জ্য।
পাল্লা দিয়ে বেড়েছে এগুলো ছুড়ে ফেলার অভ্যাস। পানি জমার ছোট পাত্রের এখন অভাব নেই।
ফলে ডেঙ্গু সারা বছর থাকার সুযোগ পাচ্ছে। নভেম্বরে তো মোটেই রেহাই দেয়নি। ডিসেম্বরেও
থাকার আশঙ্কা খুব বেশি।
ডেঙ্গুর ৪টি
সেরোটাইপের মধ্যে ১টিতে আক্রান্ত হলে পরবর্তীতে অন্য ০৩টি সেরোটাইপের যেকোন একটির সংক্রমণের
আশঙ্কা থাকে। ৪টি সেরোটাইপের কারণে একজন ব্যক্তি ৪ বার ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।
কিন্তু প্রথম সংক্রমণের পরে পরবর্তী সংক্রমণের তীব্রতা ও মারণঘাতী ক্ষমতা অনেক বেশি।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং থাইল্যান্ডের মাহিদল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক যৌথ গবেষণাপত্রে
উল্লেখ করা হয়েছে ডেঙ্গুর দ্বিতীয় ও পরবর্তী সংক্রমণের ভয়াবহতা অনেক বেশি। দ্বিতীয়
ও পরবর্তী সংক্রমণে শরীরে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ ঘটায়, লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যা হেমোরেজিক
ডেঙ্গু জ্বরে রূপান্তর ঘটায়, তখন রক্তচাপ ও হদস্পন্দন হ্রাস পায় এবং শক সিনড্রোম শুরু
হয়। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ডেঙ্গুর প্রথম সংক্রমণে সৃষ্ট এন্টিবডি দ্বিতীয়বার
ভিন্ন সেরোটাইপের সংক্রমণে ভাইরাসকে প্রতিরোধ তো করেই না, বরং ভাইরাসের প্রতিলিপি বৃদ্ধিতে
সহায়তা করে। যে কারণে রোগের তীব্রতা ও মারণঘাতী ক্ষমতা খুবই বৃদ্ধি পায়।
মশাবাহিত বলে ডেঙ্গু ভাইরাস কখনও নির্মূল হবে না। প্রতি বছর এর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে ও পাবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ১০ কোটি লোক ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে প্রায় ২২ হাজার মারা যায়। মৃত্যুর খতিয়ানে শিশুর সংখ্যা বেশি। গত ৫০ বছরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা প্রায় ৩০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। হ্রাস পাওয়ার কোন লক্ষণ নেই। ডেঙ্গু প্রতিরোধের ভ্যাকসিন তৈরির প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে ১৯২৯ সাল থেকেই। বর্তমানে ৬ পদ্ধতির ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চলছে। মাত্র একটি তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে আছে। আশা করা যাচ্ছে ৫ বছর পরে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। কাজেই বর্তমান পর্যায়ে সচেতনতা ও রোগ ব্যবস্থাপনাই প্রধান ভরসা।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে রক্তের প্লাটিলেট সংখ্যা দ্রুত কমে। একজন মানুষের শরীরে প্রতি মাইক্রোলিটার রক্তে ১.৫ থেকে ৪ লক্ষ প্লাটিলেট থাকে। প্লাটিলেট রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। ডেঙ্গু সংক্রমণ ঘটলে ৮০% থেকে ৯০% রোগীর প্লাটিলেট ১ লক্ষের নিচে নেমে যায়। ১০% থেকে ২০% রোগীর প্লাটিলেট ২০ হাজারের নিচে নামে। রক্ত জমাট বাঁধার এ উপাদানটি দ্রুত কমে যাওয়ায় শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ শুরু হয়। কাজেই, ডেঙ্গুর সময়কালে ভিটামিন, আয়রণ ও খনিজ লবণ সমৃদ্ধ ফল, শাক-সবজি বেশি খাওয়া উচিত। ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’ ও ভিটামিন ‘কে’ সমৃদ্ধ খাবার রক্তের প্লাটিলেট বৃদ্ধি করে এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এক সেরোটাইপের সংক্রমণে ডেঙ্গু রোগী যতো বাড়বে, পরবর্তীতে অন্য সেরোটাইপের সংক্রমণে ডেঙ্গু রোগের ভয়াবহতা ও মারণঘাতী ক্ষমতা ততো বেশি বৃদ্ধি পাবে। কাজেই এডিস মশার বংশবিস্তার রোধ, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নয়নে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিতে হবে।
লেখক
ড. মিহির
কান্তি মজুমদার, সাবেক সচিব।
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।