অনলাইনে যোগাযোগে নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা
সুরক্ষার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদে কথা ও লিখিত বার্তা
আদান–প্রদানের ক্ষেত্রে বর্তমানে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে সিগন্যাল, হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম অ্যাপ।
তিনটি অ্যাপেই রয়েছে শক্তিশালী এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন
সুবিধা। গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার দিক
থেকে এই তিন অ্যাপের
মধ্যে পার্থক্যও খুব বেশি না। অ্যাপ তিনটির মধ্যে কোনটি সেরা? টুইটারের নতুন মালিক ও প্রধান নির্বাহী
কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক সিগনালকেই রেখেছে এক নম্বরে। এবার
দেখা যাক তিনটি অ্যাপের কোনটায় নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার জন্য
কী আছে কী নেই।
সিগন্যাল
১. ফোন নম্বর ছাড়া ব্যবহারকারীর আর কোনো তথ্য সংরক্ষণ করে না।
২. বিজ্ঞাপনমুক্ত, বিনা মূল্যে ব্যবহার করা যায়। অ্যাপটির নির্মাতা অলাভজনক সিগন্যাল ফাউন্ডেশন।
৩. সম্পূর্ণ ওপেন সোর্স, অর্থাৎ এর প্রোগ্রামিং সংকেত বা সোর্সকোড উন্মুক্ত।
৪. এনক্রিপশনে সিগন্যাল
প্রোটোকল ব্যবহার করে। অর্থাৎ একক ক্রিপ্টোগ্রাফিক প্রোটোকল ব্যবহার করে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন
প্রযুক্তিতে বার্তা আদান-প্রদান করে।
সিগন্যালে যেকোনো ব্যক্তি বা গ্রুপের বার্তা, ছবি, অডিও–ভিডিও এনক্রিপশন করে পাঠানো হয়। ব্যবহারকারীদের কোনো তথ্য সংগ্রহ না করলেও ফোন নম্বর যাচাই করে অ্যাপটি। ফলে অন্য ব্যবহারকারীদেরও ফোন নম্বর জানা যায়। এনক্রিপশন ছাড়াও অ্যাপটিতে আরও বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে, যার মধ্যে অ্যাপটির পর্দা লক সুবিধা অন্যতম। ফলে ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়া অন্য কেউ অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারে না। নির্দিষ্ট সময়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাঠানো বার্তা মুছে ফেলার পাশাপাশি ছবিতে থাকা চেহারাও ঝাপসা করার টুল রয়েছে অ্যাপটিতে। আর তাই দ্য গার্ডিয়ান, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য নিউইয়র্ক টাইমস এবং ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতো বিখ্যাত পত্রিকাগুলোও নিজেদের সংবাদকর্মীদের নিরাপদে যোগাযোগের জন্য সিগন্যাল অ্যাপ ব্যবহার করতে পরামর্শ দিয়েছে।
টেলিগ্রাম
১. ব্যবহারকারীর নাম,
ফোন নম্বর, ফোনে থাকা নম্বর ও আইডি সংরক্ষণ
করে।
২. বিনা মূল্যে ব্যবহার করা যায়।
৩. আংশিক ওপেন সোর্স।
৪. এনক্রিপশনে এমটিপ্রোটো মোবাইল প্রোটোকল ব্যবহার করে।
গোপনীয়তার মাপকাঠিতে মাঝামাঝি অবস্থানে থাকলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মতো একে অপরের সঙ্গে যোগযোগের সুযোগ বেশি থাকায় টেলিগ্রাম অ্যাপটি খুবই জনপ্রিয়। টেলিগ্রাম অ্যাপে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন পদ্ধতিতে বার্তা পাঠানো গেলেও সেটি সেটিংস থেকে চালু করতে হয়। টেলিগ্রামের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে এটি হোয়াটসঅ্যাপের মতো ব্যবহারকারীর তথ্য সংরক্ষণ করে না। মন্দ দিকও আছে, গ্রুপ কলে এনক্রিপশন সুবিধা নেই। ফলে গ্রুপে আদান-প্রদান করা তথ্য খুব বেশি নিরাপদ নয়। ব্যবহারকারীদের আইপি (ইন্টারনেট প্রোটোকল) ঠিকানা সংরক্ষণ করায় গোপনীয়তার ক্ষেত্রে সিগন্যালের থেকে পেছনে রয়েছে টেলিগ্রাম। ২০২০ সালের মার্চ মাসে সাইবার হামলা চালিয়ে পড়ে ৪ কোটি ২০ লাখ টেলিগ্রাম ব্যবহারকারীর আইডি ও ফোন নম্বর চুরি করেছিল হ্যাকাররা। ২০১৯ সালেও কারিগরি সমস্যায় পড়েছিল অ্যাপটি।
হোয়াটসঅ্যাপ
১. যন্ত্রের আইডি সংগ্রহ করার পাশাপাশি ব্যবহারকারীরা কোন ধরনের বিজ্ঞাপন দেখেন, সেই তথ্যও সংগ্রহ করে হোয়াটসঅ্যাপ। কেনাকাটার ইতিহাস, আর্থিক লেনদেনের তথ্য, ব্যবহারকারীর অবস্থানসহ ফোন নম্বর, যোগাযোগের ঠিকানা, ফোনে থাকা নম্বরও সংগ্রহ করে হোয়াটসঅ্যাপ।
২. বিনা মূল্যে ব্যবহার করা যায় মেটার মালিকানাধীন অ্যাপটি।
৩. এনক্রিপশন পদ্ধতি ছাড়া কোনো কিছু ওপেন সোর্স নয়।
৪. এনক্রিপশনে সিগন্যাল প্রোটোকল ব্যবহার করে।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এনক্রিপশন পদ্ধতিতে তথ্য আদান-প্রদান করে থাকে হোয়াটসঅ্যাপ। ফলে নিরাপদে ছবি, ভিডিও এবং ভয়েস মেসেজও পাঠানো যায়। ব্যবহার পদ্ধতি সহজ হওয়ায় হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বেশি।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপ সিগন্যালের মতোই এনক্রিপশন পদ্ধতি ব্যবহার করে। দ্য গার্ডিয়ান, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট এবং দ্য নিউইয়র্ক টাইমস সিগন্যালের পাশাপাশি নিজেদের সংবাদকর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারেরও পরামর্শ দিয়েছে।
তবে অ্যাপটিতে আদান-প্রদান করা তথ্য যথেষ্ট নিরাপদ কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ, ২০২০ সালে হোয়াটসঅ্যাপের একটি ভিডিও ফাইলের মাধ্যমে অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের ফোন হ্যাক করেছিল সাইবার অপরাধীরা। আর তথ্য সংরক্ষণের তালিকাই বলে দেয় অ্যাপটি গোপনীয়তার কতটুকু সুরক্ষা দেয়।
মন্তব্য করুন
জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ। বার্তা আদান প্রদানের জন্য বর্তমানে তুমুল জনপ্রিয় এই মাধ্যমটি। সারাবিশ্বের পাশাপাশি ভারতেও জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে এই হোয়াটসঅ্যাপ। তবে সম্প্রতি ভারত থেকে পরিষেবা তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে মেটার জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটি। দিল্লি হাইকোর্টে একটি মামলার শুনানিতে এমনটাই দাবি করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) আদালতে হোয়াটসঅ্যাপের আইনজীবী বলেছেন, সাধারণ মানুষ গোপনীয়তার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন। ব্যবহারকারীদের সকল বার্তা এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপ্ট করা হয়। এই এনক্রিপশন ভাঙলে তা ব্যবহারকারীদের সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গের সামিল হবে।
ভারতের ২০২১ সালের তথ্য প্রযুক্তি আইনে বলা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায়কে কোন তথ্য দিচ্ছে তা চিহ্নিত করতে হবে। অর্থাৎ কোনো তথ্যের মূল উৎস কিংবা কোন মেসেজ কোথা থেকে শুরু হয়েছে সেটা খুঁজে বের করার জায়গা রাখতে হবে। কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিলে মেসেজের তথ্য চিহ্নিত করার সুযোগ রাখতে হবে। এই আইনকে চ্যালেঞ্জ করেছিল হোয়াটসঅ্যাপ। যার শুনানির দিন ধার্য হয় আগামী ১৪ আগস্ট। তার আগেই হোয়াটসঅ্যাপ দিল্লি হাইকোর্টকে তাদের অবস্থান জানিয়ে দিলো।
হোয়াটসঅ্যাপের দাবি, এই ধারা মানতে গেলে বিপুল সংখ্যক মেসেজ নির্দিষ্ট কিছু বছরের জন্য স্টোর করে রাখতে হবে হোয়াটসঅ্যাপকে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটি দিল্লি হাইকোর্টকে জানিয়েছে, এর জন্য মেসেজের কমপ্লিট চেন রাখতে হবে কারণ কখন কোন মেসেজ নিয়ে জানতে চাওয়া হবে তার ঠিক নেই। এমন পদ্ধতি বিশ্বের কোথাও নেই।
এদিকে, ভারতের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বলছে, হোয়াটসঅ্যাপ ভারতে ব্যবহারকারীদের মৌলিক অধিকারকে লঙ্ঘন করছে। মন্ত্রণালয়টির দাবি, যদি তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০২১ বাস্তবায়িত না হয়, তাহলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জন্য ভুয়া তথ্যের উৎস খোঁজার কাজ কঠিন হয়ে পড়বে।
উল্লেখ্য, মোদি সরকার ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০২১-এর গাইডলাইন প্রকাশ করেছে। সেখানে টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপের মতো বড় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোকে নিয়ম মেনে চলার কথা বলা হয়।
মন্তব্য করুন
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন কেব্লের মাধ্যমে
ইন্টারনেট পরিষেবা বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এক ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকবে।
গতকাল বুধবার (১৭ এপ্রিল) ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন সংস্থা বাংলাদেশ সাবমেরিন
কেব্লস (বিএসসিপিএলসি)-এর এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিএসসিপিএলসির সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানানো
যাচ্ছে, কুয়াকাটায় দ্বিতীয় সাবমেরিন কেব্ল রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। এ কারণে বৃহস্পতিবার
দিবাগত রাত ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত এই কেব্লের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ পরিষেবা
বন্ধ থাকবে।
বিএসসিপিএলসি জানিয়েছে, এতে গ্রাহকরা সাময়িকভাবে ইন্টারনেটে ধীরগতির সম্মুখীন হতে পারেন বা ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হতে পারে। তবে একই সময়ে কক্সবাজার ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে অন্য সাবমেরিন কেব্লের মাধ্যমে ব্যান্ডউইডথ সেবা যথারীতি চালু থাকবে।
মন্তব্য করুন
ইন্টারনেট সেবা সাবমেরিন ক্যাবলস কোম্পানি লিমিটেড
মন্তব্য করুন
আবারও মেটার মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপ-ইনস্টাগ্রাম বিভ্রাট দেখা
দিয়েছে। ফলে বিশ্বজুড়ে থমকে গেছে এই দুই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পরিষেবা। বার্তা
আদান-প্রদানে সমস্যার মুখে পড়ছেন ব্যবহারকারীরা।
তবে কী কারণে এই বিভ্রাট, তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো বিবৃতি দেয়নি
মেটা। এক মাসের মধ্যেই দু’বার মেটার বিভিন্ন পরিষেবা বিভ্রাটের সম্মুখীন হলো।
বুধবার (৩ এপ্রিল) রাত পৌনে ১২টা নাগাদ সমস্যার শুরু হয়। অনেক ব্যবহারকারী
লক্ষ করেন তারা হোয়াটসঅ্যাপের ওয়েব সংস্করণে লগইন করতে পারছেন না। মোবাইল অ্যাপ থেকে
মেসেজ পাঠানোর চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হন তারা।
এ ছাড়া সমস্যা দেখা দেয় ইনস্টাগ্রামেও। ব্যবহারকারীরা বার বার তাদের
ফিড রিফ্রেশ করলেও নতুন কোনো পোস্ট দেখতে পারছিলেন না। তবে ফেসবুকের পরিষেবা ঠিকই ছিল।
সেখানেই অনেকে জানান, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রামের পরিষেবা বিভ্রাট সংক্রান্ত সমস্যার
কথা।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ। বার্তা আদান প্রদানের জন্য বর্তমানে তুমুল জনপ্রিয় এই মাধ্যমটি। সারাবিশ্বের পাশাপাশি ভারতেও জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে এই হোয়াটসঅ্যাপ। তবে সম্প্রতি ভারত থেকে পরিষেবা তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে মেটার জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটি। দিল্লি হাইকোর্টে একটি মামলার শুনানিতে এমনটাই দাবি করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।