গত ৩১ জানুয়ারী,
২০২৩ মঙ্গলবার বাংলাইনসাইডার
অনলাইনে ‘চেইন অব কমান্ড’ ভেঙে
যাচ্ছে আওয়ামী লীগের‘
শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগরে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশগুলোতে ‘চেইন অব কমান্ড’ মানছে
না দলের নেতাকর্মীরা। এ সমস্ত সমাবেশে
প্রায় রাগান্বিত দেখা যাচ্ছে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে। তার রেগে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো দলে ‘চেইন অব কমান্ড’ না
থাকা। সমাবেশে বক্তৃতা দেওয়ার সময় নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানালেও কেউ কর্ণপাত করেন না। ব্যানার গুটাও বললে, গুটায় না, অনেকটা তাকে অবজ্ঞা করেই সমাবেশে স্লোগান দিতে থাকেন। আর এতে রীতিমত
বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা যায় ওবায়দুল কাদেরকে‘।
আমি মনে করি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবং এর অংগ-সহযোগী সংগঠনগুলো বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়ে উঠা অত্যন্ত রাজনৈতিক সচেতন সুশৃংখল নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে একটি পরিপূর্ণ রাজনৈতিক সংগঠন। শিক্ষা শান্তি প্রগতির পতাকাবাহী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষা জীবন শেষ করে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে দেশ গড়ার কাজে মনোনিবেশ করে। অনেকেই ছাত্রজীবন শেষে জাতীয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মী গড়ার পাঠশালা। সুতরাং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ‘চেইন অব কমান্ড‘ ভঙ্গ করতে পারে না। সিনিয়র নেতাদের কমান্ডের বাইরে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগের সম্মেলনে জনাব ওবায়দুল কাদেরের সাহিত্য সমৃদ্ধ তথ্যবহুল বক্তব্য চলাকালে পুরো ছাত্র সমাবেশে, সম্মেলনস্থলে পিনপতন নিরবতা বজায় থাকতো। উনার পুরো বক্তব্যটাই মনে হতো যেন কবি স্বরচিত কবিতা পাঠ করছেন। জনাব ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য চলাকালে কোন বিশৃঙ্খলা বা কথোপকথন ছিল অবিশ্বাস্য ঘটনা। জনাব ওবায়দুল কাদের বর্তমানে তৃতীয়বার বাংলাদেশে আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। সেই ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য চলাকালে ‘চেইন অব কমান্ড‘ ভেঙ্গে গেছে এই নিউজ প্রকাশিত হয়েছে শুধুমাত্র হাইব্রিডদের কারনে। আদর্শহীন সুবিধাবাদী বা স্বাধীনতা বিরোধীদের অনুপ্রবেশের কারনেই এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। সদ্য সমাপ্ত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামীলীগের একটি থানা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে থানা আওয়ামীলীগের সদ্য সাবেক সফল সভাপতি, ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র নেতা, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসভাপতি প্রার্থী হওয়া সত্ত্বেও বিএনপি ঘরানার শিল্পপতির নাম আলোচিত হচ্ছে ঐ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসেবে। টাকা দিয়ে পদ-পদবী নিয়ে বনে যাওয়া এসকল নেতা ও তাদের অনুসারীরাই আওয়ামীলীগ নেতাদের কমান্ড মানে না, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
এই প্রসঙ্গে স্মৃতি থেকে কিছু কথা উল্লেখ না করলেই নয়। ২০০১ থেকে ২০০৮ সালে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা তখন দেশের প্রায় প্রতিটি উপজেলায় সাংগঠনিক সফর করেছেন। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের হাতে নির্যাতিত মানুষের পাশে গিয়ে দাড়িয়েছেন। আমার সৌভাগ্য হয়েছে প্রায় প্রতিটি উপজেলায় মাননীয় নেত্রীর সফরসঙ্গী হওয়ার। এমনি একটি সফরকালীন স্মৃতিচারন করছি। পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলায় সাংগঠনিক সফর। মাননীয় নেত্রী দুপুর নাগাদ গলাচিপা উপজেলা সদরে পৌঁছেছেন। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময় শেষে মধ্যাহ্নভোজ সম্পন্ন করে বিকাল তিনটায় জনসভা। জনসভাস্থলের নাম ঠিক মনে নেই। তবে এটুকু মনে আছে, প্রবেশ পথে তোরণ থেকে মঞ্চ পর্যন্ত সাদা চুনাপাথরের গুড়া ব্যবহার করে দাগ দিয়ে একটি নির্দিষ্ট রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। তোরণের সামনের রাস্তায় মানুষের ভিড়। সকলেই প্রানপ্রিয় নেত্রীকে একনজর দেখতে চায়, নেত্রীর দিকনির্দেশনা শুনতে এসেছেন। তোরণের ঠিক নীচে সাদা চুনের দাগ কেউ অতিক্রম করছেন না। তোরণ থেকে মঞ্চ পর্যন্ত নির্দিষ্ট রাস্তাটিও সম্পূর্ণ ফাঁকা। যদিও তোরণ থেকে এই ফাঁকা স্থানে যেতে কেউ বাধাও দিচ্ছিল না। আমি মঞ্চের পিছনের পর্দা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে পুরো মাঠের দিকে নজর রাখছি। জনসভাস্থল কানায় কানায় পরিপূর্ণ ছিল। জনসভাস্থলে কোন ব্যানার নেই। মাঠের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত পরিস্কার দেখা যাচ্ছে, সকলেই বসে আছে। মিছিলে নিয়ে আসা ব্যানার গুলো মাঠের চারদিকে রাখা হয়েছে। জনসভার সভাপতি আমাকে বসার অনুরোধ করে অত্যন্ত আত্মবিশ্বাস নিয়ে বললেন, ‘আওলাদ তুমি বসো। এখানে নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। অনুমতি ছাড়া ঐ গেইটের সাদা দাগ অতিক্রম করে কেউ মাঠে ঢুকবে না। মাঠের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত কেহ দাঁড়াবে না এবং অপ্রয়োজনে শ্লোগান দিয়ে সভা পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটাবে না‘। সত্যিই তাই হলো। মঞ্চ থেকে ঘোষণা করতে হয়নি, ‘ব্যানার ফেস্টুন গুলো গুটিয়ে ফেলুন। শ্লোগান বন্ধ করুন‘। আমি সত্যিই অভিভূত। এই আত্মবিশ্বাসী সুশৃংখলতার কারন উদগাটন করতে বেশিদিন সময় লাগেনি।
কিছুদিন পরই সেই জনসভার সভাপতি ঢাকায় এসে আমাকে বললেন, ‘আওলাদ, তোমার একটু হেল্প লাগবে‘।
আমি ভাবলাম হয়তো তিনি মাননীয় নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। কিন্তু না। তিনি বললেন, ‘জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকে প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুর অ্যালবাম ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বই লাগবে। কিন্তু সংখ্যায় বেশী বিধায় মাননীয় নেত্রীর অনুমতি লাগবে। তুমি অনুমতির ব্যবস্থা করে দাও‘।
আমি বললাম, ‘ ঠিক আছে। এটা কোন সমস্যা না। কিন্তু এত সংখ্যক অ্যালবাম ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বই দিয়ে কি করবেন‘?
প্রত্যুত্তরে তিনি বললেন, ‘আগামীদিনের নেতৃত্ব গড়ে তুলতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বই পড়াতে হবে। সুশৃংখল কর্মীবাহিনী তৈরি করতে বঙ্গবন্ধুকে জানা জরুরী। তাই স্কুল-কলেজের ছাত্রলীগের মাধ্যমে সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। সেই প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের এবং সকল অংশগ্রহণকারীকে এই বই গুলো উপহার দিব‘। উপজেলা নেতার এই পরিকল্পনা শুনে মাননীয় নেত্রী চাহিদা অনুযায়ী সকল বই ও অ্যালবাম বিনামূল্যে সরবরাহ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এখানেই শেষ নয়। ঐ নেতা আরও বললেন, ‘ সারা বাংলাদেশে কিভাবে কি হবে আমি জানিনা। গলাচিপার দায়িত্ব আমার। গলাচিপায় আমাদের জনসভায় তুমি নিশ্চয়ই ‘চেইন অব কমান্ড‘ লক্ষ্য করেছো। কিন্তু ঐ শৃংখলতা সৃষ্টি করতে আমাকে অনেক কাজ করতে হয়েছে। সারাদেশে যাই হোক না কেন, আমার উপজেলায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিবছর ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। স্কুল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি দশম শ্রেণীর ছাত্র ও সাধারণ সম্পাদক নবম শ্রেণীর ছাত্র হবে। পরের বছরই সাধারণ সম্পাদক দশম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হলে তাকে সভাপতি করা হবে। একইভাবে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হবে ইন্টারমিডিয়েট দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও সাধারণ সম্পাদক হবে প্রথম বর্ষের ছাত্র। পরের বছরই স্কুল শাখার ন্যায় একই ভাবে প্রথম বর্ষ থেকে দ্বিতীয় বর্ষে উত্তীর্ণ হওয়া সাধারণ সম্পাদককে সভাপতি করা হবে। এরই মাঝে শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদকের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক বই পড়ানো, বক্তৃতা প্রশিক্ষণ কর্মশালা ইত্যাদি কর্মসুচীর পালনের মাধ্যমে সুশৃংখল কর্মীবাহিনী তৈরি করা হয়‘।
এই সুশৃংখল কর্মী গড়ার পেছনের কারিগর বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জননেতা খ ম জাহাঙ্গীর এমপি। ছাত্রলীগের নেতা থেকে আওয়ামীলীগ নেতা হওয়ায় তিনি বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসতে পেরেছিলেন এবং দেশ গড়ার কাজে সুশৃংখল কর্মীবাহিনী গড়ার গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছিলেন।
কিছুদিন আগে আমি বাংলাইনসাইডারে লিখেছিলাম ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী গড়ার আতুড়ঘর বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মীদের মূল্যায়ন প্রয়োজন‘। আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় অনেক নেতাই বিভিন্ন সভা-সমাবেশে পদ বানিজ্য বা টাকা নিয়ে পদ-পদবী দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বক্তব্য প্রদান করছেন। ইতিমধ্যে স্বাধীনতা বিরোধীদের অনেকেই সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও অংগ-সহযোগী সংগঠনে অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন, সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়েছে। এমনকি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতেও জায়গা দখল করে নিয়েছে। উনারা কেহই একা অনুপ্রবেশ করেনি। আওয়ামীলীগ ও অংগ-সহযোগী সংগঠনে নিজস্ব বলয় তৈরী করার জন্য উনাদের সাথে পূর্ববর্তী অনুসারীদেরও সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ে অনুপ্রবেশ করিয়েছেন। ঐ সকল অনুপ্রবেশকারী নেতাকর্মীরা ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য আগে কখনও শুনে নাই। এই বক্তব্যের অর্থও বুঝতে পারে না, বুঝার প্রয়োজনও মনে করে না। সেই জন্যই ‘চেইন অব কমান্ড‘ নষ্ট হয়।
তাই সংগঠনে শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মী গড়ার পাঠশালা বাংলাদেশ ছাত্রলীগসহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও অংগ-সহযোগী সংগঠনগুলোর ইউনিটসহ সকল পর্যায়ে নেতা নির্বাচনে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। সংগঠনের মধ্যে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকা অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে সংগঠন থেকে বিতারিত করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি বিশ্বাস, শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থা ও রাজনৈতিক কমিটমেন্ট থাকা নেতাকর্মীদের সংগঠনে মূল্যায়ন জরুরি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:১৫ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:১২ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:০৭ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
সবার জন্য স্বাস্থ্য নিশ্চিতে বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক অভাবনীয়, অনন্য এবং যুগান্তকারী একটি মডেল। শিশু স্বাস্থ্য, মাতৃ স্বাস্থ্য এবং কিশোরীদের স্বাস্থ্য পরিসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এটি একটি অসাধারণ উদ্যোগ। নবজাতকের মৃত্যু, মাতৃ মৃত্যু কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অনুসরণ শুরু করেছে। গত বছর ১৭ মে কমিউনিটি ক্লিনিক ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিসিয়েটিভ’ হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়। ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ সারা বিশ্বের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রত্যাশী জনগণের জন্য ‘আলোক বর্তিকা’।
আজকে আমরা ১৭ মে নিয়ে কথা বলছি। যেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। আবার গত বছর এই দিনে তাঁর চিন্তা প্রসূত কমিউনিটি ক্লিনিককে জাতিসংঘ ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আজকে আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছি, উন্নয়নশীল বাংলাদেশের কথা বলছি, যে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি, একদিন উন্নত বাংলাদেশ হব বলে স্বপ্ন দেখছি এই সবকিছু শেখ হাসিনার স্বপ্ন, শেখ হাসিনার ইনিশিয়েটিভ। বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৭৮১ সালে পলাশি যুদ্ধে ইতিহাসের ঘৃণিত সেনাপতি মির্জাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় নবাব সিরাজ উদ্দৌলার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ২০০ বছরের গোলামী আমাদের ললাটে এসেছিল। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হলেও বাঙালী এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা পায়নি। যার পটভূমিতে বীরদর্পে আবির্ভূত হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ থেকে ৭৫’ বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশে স্বাধীনতার লাল পতাকা উড়েছিল বাঙালী আশায় বুক বেধেছিল।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বিয়োগান্তের ঘটনায় জাতি ছিল দিক নির্দেশনাহীন। নারকীয় এই ঘটনায় জনগণ হয়ে পড়েন দিশেহারা। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করার কোন শক্তি সাহস ছিল না। দলের অনেক বড় বড় নেতাও ছিলেন কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ধানমন্ডির ৩২ বাড়ি ছিল কবরের নীরবতা। সমগ্র জাতি তখন অন্ধকারে। সামরিক বুটে পিষ্ঠ গণতন্ত্র। নির্বাসনে সংবিধান আর মানুষের মৌলিক অধিকার। বাক স্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিল না। এমনকি বঙ্গবন্ধু নাম উচ্চারণ ছিল নিষিদ্ধ।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের মৌলিক চরিত্রকেই বদলে ফেলা হয়। বিশেষ করে পাকিস্তানি ধারায় সামরিক শাসনের সংস্কৃতির প্রবর্তন ঘটে দেশে। সাম্প্রদায়িকতা ফিরে আসে রাজনীতি, প্রশাসন, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরে। একের পর এক স্বপ্নভঙ্গের ঘটনা ঘটতে থাকে দেশে। বাঙালি জাতির জীবনে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ঘোর অমানিশার অন্ধকার। ঠিক এমন প্রতিকূল সময় ১৯৮১ সালের ১৭ মে সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর রক্তস্নাত মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন বাঙালির মুক্তির মহানায়কের যোগ্য উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনা।