পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য তিন জেলার দুর্গম এলাকার পাহাড়ী বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মানোন্নয়নে পার্বত্য অঞ্চলে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরী শিক্ষাসহ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, রাস্তাঘাট, কালভার্ট, ব্রীজ নির্মাণসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার কাজ অব্যাহত রয়েছে।’
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলাধীন ওয়াগ্গা ইউনিয়নের সাক্রাছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে দুর্গম এলাকার দুই ইউনিয়নের ১১৫ সুবিধাভোগী পরিবারের মাঝে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সোলার হোম প্যানেল এর মাধ্যম্যে বিদ্যুৎ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এসব জনসেবা নিশ্চিত করতে সরকার পার্বত্য জেলাগুলোর জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করছে। পার্বত্য দুর্গম এলাকায় সৌর শক্তির আলোয় আলোকিত করার লক্ষ্যে সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল বিতরণ করছে। পার্বত্য তিন জেলার দুর্গম পাহাড়ি ৪২ হাজার ৫০০ পরিবার সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সৌর বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করবে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রামকে শহরে রূপান্তর করার ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা সে লক্ষ্যে এগুচ্ছি। অতীতের কোনো সরকার জনগণের উন্নয়নের জন্য কোনোপ্রকার আন্তরিক ছিল না। ব্রিটিশ, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের প্রায় পৌণে ৩ শত বছর শাসনকালের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মাত্র সাড়ে ২২ বছরের শাসনামলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারাদেশে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। সরকার মেয়েদের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করেছে। মেয়েদের উপবৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বেদে, হরিজনদের ভাতা নিশ্চিত করেছে। সরকার সম্পূর্ণ আন্তরিক হয়েই জনগণের কল্যাণে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করছে। কিন্তু আগের কোনো সরকারই সারাদেশে তথা পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করেনি। হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে তলাবিহিন ঝুরি হিসেবে আখ্যা করেছিলেন, তিনি বুঝতেই পারেননি তার এ মন্তব্য যে সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ হবে একদিন। উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশকে অনুসরণ করার জন্য উন্নত দেশগুলোও এখন তাদের নিজেদেরকে বলছে।’
পার্বত্য রিমোট অঞ্চলে বাইরের লোক এসে রাতের বেলায় জোনাকির মতো আলো ঘরে ঘরে জ্বলছে দেখে অবাক হচ্ছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে পাহাড়ের দুর্গম এলাকায় বসবাসরত ৪০ হাজার অনগ্রসর দরিদ্র পরিবারের মাঝে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। আজ থেকে ১১৫ পরিবারের ঘরে সৌর বিদ্যুতের আলো পাবে। পার্বত্য ছেলে মেয়েরা যাতে আলো, বাতাস পায় সে ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বললেন পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর।’
সোলার প্যানেল বিদ্যুৎ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এর জন্য কাউকে কোনো টাকা পয়সা না দেওয়ার জন্য বলেন মন্ত্রী। এ সময় আগামিতে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সকলের সহযোগিতা চান পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।
তিনি বলেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলের সর্বত্র বিদ্যুত সেবা নিশ্চিত করতে আরো এক হাজার কোটি টাকার বিশেষ বিদ্যুতায়ন প্রকল্প বিদ্যুৎ ও জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়েছে। এই সোলার প্যানেল সঠিকভাবে ব্যবহার করলে অন্তত ২০ বছর পর্যন্ত প্রত্যেকটি পরিবার বিনামূল্যে বিদ্যুতের আলো, ফ্যান ও মোবাইল চার্জারের সুবিধা পাবেন। উপকারভোগীদের পক্ষ থেকে প্রত্যেক পরিবারকে সোলার প্যানেলের ব্যবহারবিধি জানার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও রয়েছে। প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী প্রত্যেককে নগদ আরো ৬৫০ টাকা করে দেওয়া হবে ‘
মন্ত্রী বীর বাহাদুর ওয়াগগা সোলার প্যানেল হোম সিস্টেম বিতরণ শেষে নানিয়ারচর উপজেলাধীন ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন বাজার এলাকা হতে নিচ পাড়া পর্যবন্ত পাকা রাস্তার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। এবং পরে সুরিদাশপাড়ায় বগাছড়ি ১ নং সাবেক্ষ্যং ইউনিয়নের ইক্ষু বাগান পরিদর্শন করেন। ইক্ষু বাগানে ৩৯০টি বাগান সৃজন করা হয়েছে। একেকটি বাগান ৩৩ শতক ভূমির উপর তৈরি করা।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমার সভাপতিত্বে এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান নুরুল আলম চৌধুরী, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ মেশিন টুলস্ ফ্যাক্টরী (বিএমটিএফ) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রোসায়দুল মাওলা, বিএমটিএফ এর জিএম লে. কর্ণেল বজলুর রহমান হায়াতী, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য-প্রশাসন ইফতেখার আহমেদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য-বাস্তবায়ন ও প্রকল্প পরিচালক মো. হারুন-অর-রশিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং সোলার প্যানেল
মন্তব্য করুন
কোরবানির ঈদের মাসখানেক বাকি। ইতিমধ্যে বাজারে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম প্রতি কেজি ৮০-১০০ থেকে বেড়ে ১৫০-১৬০ টাকা হয়েছে। গত কোরবানির সময়ে ঢাকায় কাঁচা মরিচের কেজি ৭০০ টাকায় উঠেছিল।
বছরের এই সময়ে দেশে কাঁচা মরিচের কিছুটা সংকট থাকে। তাতে আমদানি করে প্রয়োজন মেটাতে হয়। এবার দাম বাড়তে থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। বাজারে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম উচ্চ মূল্যে স্থিতিশীল।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃষ্টির কারণে মরিচের সরবরাহ কমেছে। এতে বাড়ছে দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা বেড়েছে। এদিকে বাজারে গ্রীষ্মকালীন মরিচের গাছ এখন শুকিয়ে এসেছে। ফলনও আগের তুলনায় কমে এসেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সঙ্গনিরোধ শাখা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশের বাইরে থেকে কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি (আইপি) দেওয়া হয়নি। তবে বাজার পর্যালোচনা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
মন্তব্য করুন
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েই চলছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) চলতি মাসে বাংলাদেশের খাদ্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, খানা জরিপ অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশের দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের খাবার কেনার খরচ ছিল প্রতি মাসে মাথাপিছু ১ হাজার ৮৫১ টাকা। গত দুই বছরে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে মাথাপিছু খাবার কেনার খরচ বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ৯২৩ টাকা; যা দুই বছর আগের তুলনায় ৫৮ শতাংশ বেশি।
সরকারি ও বেসরকারি সব হিসাব বলছে, গত দুই বছরে দেশের মানুষের আয় বাড়লেও এই সময়ে ধারাবাহিকভাবে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের আশপাশে থেকেছে। সামগ্রিকভাবে দেশের প্রধান খাদ্যগুলোর দাম বেড়েছে। বিশেষ করে চাল, আটা ও আমিষের প্রধান উৎস মুরগির মাংস, ডিম, মাছ ও সবজির দাম বাড়তির দিকে। বেড়েছে আলু, পেঁয়াজ, আদা, কাঁচা মরিচ ও ফলের দামও।
ডব্লিউএফপি গত মাসে (এপ্রিল) বাংলাদেশের খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রভাব নিয়ে আরেকটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের ১৭ শতাংশ মানুষ খাদ্যঝুঁকিতে ছিল; যা এর আগের মাসের তুলনায় ২ শতাংশ বেড়েছে। দেশের ৬৮ শতাংশ মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। আর ৪৩ শতাংশ মানুষ বাকিতে খাবার কিনছে। ২২ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বাবদ খরচ কমিয়েছে। আর ১৩ শতাংশ মানুষ সঞ্চয় ভাঙছে। খাদ্যঝুঁকিতে থাকা মাত্র ২১ শতাংশ মানুষ বাইরে থেকে সহায়তা পাচ্ছে।
ডব্লিউএফপির চলতি মাসের বাজার তদারকি প্রতিবেদন বলছে, মাথাপিছু খাদ্যের দাম দেশের একেক বিভাগে একেকভাবে বেড়েছে। চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেটে জাতীয় গড়ের চেয়ে বেশি বেড়েছে। রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহে তুলনামূলকভাবে কম বেড়েছে। বাকি এলাকাগুলোতে দাম অপরিবর্তিত আছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে ছয় মাস ধরে গমের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে। ফলে বাংলাদেশেও গমের আমদানি বেড়েছে। তবে আমদানির তুলনায় গমের দাম কমেনি। মার্চে আটার খুচরা মূল্য প্রতি কেজি প্রায় ৫৭ টাকায় পৌঁছেছে; যা এর আগের মাসের তুলনায় সামান্য বেশি। দেশে গমের চাহিদার ৮৫ শতাংশ আমদানি করা হয়।
টানা চতুর্থ মাসের মতো ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে দেশে চালের দাম বেড়েছে। আমনে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬ শতাংশ বেশি উৎপাদন হওয়া সত্ত্বেও দাম বেড়েছে। উৎপাদন বেশি হওয়া সত্ত্বেও চালের দাম বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে চালকল মালিকেরা উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করেছেন।
ডব্লিউএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে দেশে সরকারি খাদ্য মজুত কমতির দিকে ছিল। সাধারণত বছরের এই সময়ে খাদ্যের মজুত কম থাকে। কিন্তু এবার মজুতের পরিমাণ আগের থেকে কম। ফেব্রুয়ারিতে সরকারি খাদ্য মজুত ছিল ১৫ লাখ ৬০ হাজার টন। এর মধ্যে চাল ১৩ লাখ ৩০ হাজার টন, যা আগের এক বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ কম।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে সরকারি মজুত গত দুই মাসে আরও কমেছে। গত ১৫ মে গুদামে চাল, গম ও ধান মিলিয়ে মোট মজুত ছিল ১১ লাখ ১২ হাজার ৪২০ টন। এর মধ্যে চাল ৭ লাখ ৫১ হাজার ৩২৫ টন আর গম ৩ লাখ ৫১ হাজার টন। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে চাল ও গমের সরবরাহ বাড়িয়ে দেওয়ায় মজুত কমছে। তবে আগামী জুন থেকে বোরো সংগ্রহ শুরু হলে মজুত বাড়তে শুরু করবে বলে মনে করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
ডব্লিউএফপি চলতি মাসে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ প্রতিবেদনে ২০১৯ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত খাদ্য পরিস্থিতির পরিবর্তনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, সংকটের সময় বাংলাদেশে খাদ্য ব্যবস্থাপনা বহুমুখী সমস্যার মধ্য দিয়ে গেছে। কোভিড-১৯ সংকটের পর ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে খাদ্য আমদানি কমে আসে। এর আগে ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে খাদ্যপণ্যের উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। এ ছাড়া ২০১০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত গবাদিপশুর উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার গণমাধ্যকে বলেন, ‘আমাদের খাদ্য উৎপাদন যথেষ্ট ভালো। আর সার, জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় চালের উৎপাদন খরচও বেড়েছে। ফলে চালের দাম আরও কমাতে গেলে কৃষক উৎপাদন কমিয়ে দেবেন। তখন চালের জন্য আমাদের আবারও আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভর করতে হবে।’
ডব্লিউএফপির হিসাব অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ সালে খাদ্য মূল্যস্ফীতি প্রায় ৮ শতাংশে পৌঁছায়। এর আগে ছিল ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০২৩ সাল থেকে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দ্রুত বাড়তে থাকে। ওই বছরের অক্টোবরে তা ১৩ শতাংশে পৌঁছায়।
সংকট শুরু হওয়ার পর অর্থাৎ ২০১৭ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে খাদ্যের দাম ৭৫ শতাংশ বেড়ে যায়। এর মধ্যে শক্তি জোগায় এমন খাদ্যগুলোর দাম ২৫ শতাংশ বেড়ে যায়। চাল ও গমের মতো দানাদার খাদ্য, চিনি, ভোজ্যতেল, মাছ, মাংস ও মুরগির মতো প্রাণিজ আমিষ ও সবজি, দুধ ও ডিমের মতো পুষ্টিকর খাবারের দামও বেড়ে যায়।
মন্তব্য করুন
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরের আবাসনবাজার বেশ রমরমা। বিভিন্ন দেশের সেলিব্রিটি থেকে শুরু করে সন্দেহভাজন অপরাধীরাও এখানে বিনিয়োগ করছে। কিনছে বাড়ি ও ফ্ল্যাট। এই তালিকায় পিছিয়ে নেই বাংলাদেশিরাও।
ইইউ
ট্যাক্স অবজারভেটরির বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে ৫৩২ জন বাংলাদেশি সেখানে
বাড়ি ও ফ্ল্যাট কিনেছেন। যার মূল্য ৩৭ কোটি ৭৪ লাখ ডলার।
ফাঁস
হওয়া সম্পদ কেনার ঘটনার সঙ্গে ট্যাক্স অবজারভেটরি নিজেদের আনুমানিক হিসাবও দিয়েছে।
যেখানে ফাঁস হওয়া ঘটনার সঙ্গে ফাঁস না হওয়া ঘটনাও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তবে কারা এসব
সম্পদ কিনেছেন, সেই তথ্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।
তবে প্রতিবেদনে
বলা হয়েছে, ২০২২ সালে দুবাইয়ের শতভাগ রেডিমেড (প্রস্তুত) আবাসন সম্পদ কিনেছেন বা অপ্রস্তুত
আবাসন সম্পদ কেনার জন্য প্রক্রিয়া অনুসরণ করছেন এমন কিছু ব্যক্তির তালিকা ফাঁস হয়েছে।
তালিকায়
৩৯৪ জন বাংলাদেশির নাম এসেছে। ওই বছর তারা মোট ২২ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের সম্পদ কিনেছেন।
সেবার বাংলাদেশিরা মোট ৬৪১টি সম্পদ কিনেছিলেন। তবে অবজারভেটরির মতে, ওই বছর সর্বমোট
৫৩২ জন বাংলাদেশি সেখানে বাড়ি-ফ্ল্যাট কিনেছেন।
ব্যাংক
লুট করে বিসমিল্লাহ গ্রুপের খাজা সোলায়মান আনোয়ার চৌধুরীসহ অন্তত ২০ জন ঋণখেলাপির সম্পদ
এখন দুবাইয়ে। তালিকায় আরও রয়েছে সাবেক মন্ত্রী, রাজনীতিক, অপরাধী, অর্থ পাচারকারীদের
নাম।
ওয়ান-ইলেভেনের
প্রভাবশালী সাবেক সেনা কর্মকর্তারা সেখানেই অবস্থান করছেন। তাদের রয়েছে বাড়ি, দোকানসহ
নানা ধরনের ব্যবসা। আমলাদের অনেকেই তাঁদের বিত্তের ঘাঁটি গড়েছেন দুবাইয়ে। তাঁদের একাধিক
বাড়ি আর বিশাল সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। সদ্যবিদায়ী মন্ত্রিসভার একজন মন্ত্রী এবং তাঁর
মেয়ের নাম উঠে এসেছে গোপন সম্পদের পাহাড় গড়ার তালিকায়।
গত
মঙ্গলবার একটি বৈশ্বিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা প্রকল্প ‘দুবাই আনলকড’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে
বিশ্বের সম্পদশালীদের গোপন সম্পদের তথ্য ফাঁস করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, দুবাইয়ের
আবাসন খাতে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিরা। তাদের
তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশি নাগরিকও। ৩৯৪ বাংলাদেশির ২ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা মূল্যের ৬৪১টি
সম্পত্তি রয়েছে দুবাইয়ে। সম্পত্তির মালিকের এ তালিকায় আরও রয়েছেন বিভিন্ন দেশের বড়
ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এমনকি বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যক্তি,
অর্থ পাচারকারী ও অপরাধীরাও সেখানে বিপুল সম্পদের মালিক।
প্রতিবেদনে
ভারতের ধনকুবের মুকেশ আম্বানির পাশাপাশি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির
পরিবারের সদস্যদের নাম রয়েছে। তালিকায় দেখা গেছে, দুবাইয়ে সবচেয়ে বেশি সম্পদ রয়েছে
ভারতীয়দের। সেখানে ৩৫ হাজার প্রপার্টির মালিক ২৯ হাজার ৭০০ ভারতীয়। এ তালিকায় দ্বিতীয়
স্থানে রয়েছেন পাকিস্তানিরা। দেশটির ১৭ হাজার নাগরিকের দুবাইয়ে ২৩ হাজার প্রপার্টি
রয়েছে। এর মূল্য ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার।
মন্তব্য করুন
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীর নির্দেশের প্রভাব পড়েনি সড়কে। আগের মতোই রাজধানীর সড়কগুলোয় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। পেট্রল পাম্পগুলোও হেলমেট না থাকলে জ্বালানি দেওয়া বন্ধ করেনি। উল্টো ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশের পরদিনই এ খাতে বেড়েছে চাঁদার হার। গতকাল সরেজমিনে রাজধানী ঘুরে ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
বুধবার (১৫ মে) বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৭’-এর অধীনে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন থেকে ব্যাটারিচালিত কোনো রিকশা বা গাড়ি যেন ঢাকা শহরে না চলে। শুধু নিষেধাজ্ঞা নয়, চলতে যেন না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া বুধবার থেকেই সারা দেশে ‘নো হেলমেট, নো ফুয়েল’ কঠোরভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন।
সড়কে অব্যবস্থাপনা নিয়ে তিনি বিআরটিএর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এত উন্নয়নের পরও সড়ক, মহাসড়কে যানজট ও দুর্ঘটনা কেন?’ দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে এসব নির্দেশ দেন তিনি। তবে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে অবৈধ চাঁদার হার বৃদ্ধি ছাড়া সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর নির্দেশের কোনো প্রভাব গতকাল রাজধানীতে দেখা যায়নি।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী বলেন, মন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। এটা রেজ্যুলেশন হবে। মন্ত্রী স্বাক্ষর করবেন। এরপর আমরা পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সেই নির্দেশনা পাঠাব।
এদিকে পল্টন এলাকার একাধিক রিকশাচালক জানান, রিকশা নামাতে কেউ নিষেধ করেনি; তবে রিকশার মালিক বলেছেন, আগামী মাস থেকে প্রতিদিনের জমা ৫০ টাকা বেশি দিতে হবে। রাস্তায় রিকশা নামাতে উনার নাকি এখন বেশি চাঁদা দিতে হবে। নতুন বাজার এলাকার এক রিকশাচালক জানান, তিনি এক বছর ধরে প্রতিদিন ১০০ টাকা চাঁদা দিয়ে আসছেন। তার আগে দিতেন ৬০ টাকা। গতকাল থেকে চাঁদা ১২০ টাকা করা হয়েছে।
হাই কোর্ট ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর ব্যাটারিচালিত থ্রি-হুইলার অটোরিকশা বন্ধের নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশের পরও সড়কে নতুন করে নেমেছে কয়েক লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিপুল পরিমাণ চাঁদাবাজির কারণেই রিকশাগুলো বন্ধ হচ্ছে না। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে প্রায় ৪০ লাখ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা চলাচল করছে।
‘আইনগত অবৈধ’ এসব অটোরিকশার মালিক-চালকদের কাছ থেকে বছরে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা চাঁদাবাজি হচ্ছে। টাকার ভাগ যাচ্ছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা এবং ট্রাফিক ও থানা পুলিশের এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার পকেটে। রাজধানীতে প্রতিটি থ্রি-হুইলার অটোরিকশার জন্য এলাকাভেদে মাসে মালিককে দিতে হয় দেড় থেকে ২ হাজার টাকা। টাকা দিলে দেওয়া হয় বিশেষ টোকেন, যা থাকে সিটের নিচে। ওই টোকেন থাকলেই সড়কে চলার অনুমতি মেলে। কিছু এলাকায় কিউআর কোড ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি বাস নিয়ন্ত্রণ
হারিয়ে খাদে পড়ে পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৭ মে) ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপজেলার বসন্তপুর
এলাকায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম কক্সবাজারগামী রিলাক্স পরিবহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এ ঘটনা
ঘটে।
নিহতদের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা হলেন হলেন, কক্সবাজারের
টেকনাফ উপজেলার মতিউর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ হোসেন (৩০), চট্টগ্রামের বাশখালীর বাহারছড়া
গ্রামের নুরুল আবছারের ছেলে বদরুল হাসান রিয়াদ (২৬)।
আহতরা হলেন, কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার মতিউর রহমানের ছেলে ফিরোজ
(৪০), একই এলাকার আলী আহমেদের ছেলে মোক্তার হোসেন (৪০), ফজলুর রহমান (৪২), আরাফাত
(৩৪), সিয়াম (৩২), সোহাগ (২৮), কামরুন নাহার (২৫), স্বপন শিকদার (২৫), রফিকুল ইসলাম
(৩০), মনির (৩০)। এদের মধ্যে চারজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, আমরা
ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্তলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস গাড়িতে করে
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। পরে পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায়
গাড়ির ভিতর থেকে নিহত পাঁচ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
মিয়াবাজার হাইওয়ে থানার এসআই নজরুল ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে কক্সবাজার
গামী রিলাক্স পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। খবর পেয়ে
ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচ জন নিহত হয়েছেন।
মহাসড়ক দুর্ঘটনা ঢাকা-চট্টগ্রাম
মন্তব্য করুন
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েই চলছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) চলতি মাসে বাংলাদেশের খাদ্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, খানা জরিপ অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশের দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের খাবার কেনার খরচ ছিল প্রতি মাসে মাথাপিছু ১ হাজার ৮৫১ টাকা। গত দুই বছরে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে মাথাপিছু খাবার কেনার খরচ বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ৯২৩ টাকা; যা দুই বছর আগের তুলনায় ৫৮ শতাংশ বেশি।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশের প্রভাব পড়েনি সড়কে। আগের মতোই রাজধানীর সড়কগুলোয় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। পেট্রল পাম্পগুলোও হেলমেট না থাকলে জ্বালানি দেওয়া বন্ধ করেনি। উল্টো ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশের পরদিনই এ খাতে বেড়েছে চাঁদার হার। গতকাল সরেজমিনে রাজধানী ঘুরে ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র উঠে এসেছে।