ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে পুনর্গঠিত হচ্ছে ইউরোপ!

প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ০২ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail

রাশিয়া ও ইউক্রেন ছাড়া পূর্ব ইউরোপের দেশসমূহ হচ্ছে মলদোভা, বেলারুশ, জর্জিয়া, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান ও তুরস্ক। জার্মান চ্যান্সেলরের হোয়াইট হাউজ সফরকে একসময় ইউরো-আমেরিকান কূটনৈতিক সম্পর্কের চূড়া বিবেচনা করা হতো। জার্মানির ওলাফ শলৎজ ৩ মার্চ জো বাইডেনের সঙ্গে আলোচনার জন্য ওয়াশিংটন, ডিসি-তে যাবেন, তখন এটি সেই পাক্ষিক ইউরোপের সঙ্গে আমেরিকান প্রেসিডেন্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বলে গণ্য নাও হতে পারে। গত সপ্তাহে মধ্য ইউরোপের দেশ পোল্যান্ড সফরের সময় বাইডেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এর পূর্ব প্রান্তের নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন। ইউক্রেন যুদ্ধে তাদের সহায়তার জন্য প্রশংসাও করেন। এতে প্রতীয়মান হয় যে ইউরোপ যুদ্ধের ফলে পুনর্গঠিত হয়েছে ।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পূর্ব প্রান্তের দেশগুলো মনে করে এখন সময় এসেছে। দেশগুলোর নেতাদের বক্তব্যে, পূর্ব দিকে একটি টেকটোনিক স্থানান্তর ঘটছে। ‘পুরোনো ইউরোপ’ থেকে ক্ষমতা দ্রুত বিলুপ্ত হচ্ছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আগ্রাসনের প্রথম সারিতে থাকা দেশগুলোর ভুল ধারণা ছিল। যুদ্ধ নতুন ধারণা ও নতুন নেতৃত্বের সুযোগ করে দিয়েছে। পোলিশ উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাওয়েল জাবলনস্কি বলেছেন, এটি সমগ্র ইউরোপের জন্য একটি অস্তিত্ব রক্ষার সময়। ইউক্রেন এখন প্রার্থী হয়ে এই ক্লাবের অংশ হতে পারে। কেউ কেউ স্বপ্ন দেখেন পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ ও ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের মধ্যে একটি নতুন অক্ষ শক্তি তৈরি হতে পারে যেমন প্যারিস ও বার্লিনের মধ্যে আছে।

দ্রুত নয় তবে ইউরোপীয় দেশগুলোর মেজাজ যে পরিবর্তিত হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। পোল্যান্ডের মতো দেশগুলো যেমন ন্যাটোর পূর্বাঞ্চলীয় ৯টি দেশের জোট ‘বুখারেস্ট নাইন বা বি-নাইন’ এর ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলছে। এসব দেশ হলো বুলগেরিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, এস্তোনিয়া, হাঙ্গেরি, লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া, পোল্যান্ড, রোমানিয়া ও স্লোভাকিয়া। ২০০৪ সালে এসব দেশ ন্যাটোর সদস্য হয়। এই অঞ্চলটি এর আগে একটি বৃহত্তর ইউরোপীয় নেতৃত্বের ভূমিকার সুযোগ নষ্ট করেছে।

পশ্চিম ইউরোপীয়রাও স্বীকার করে এটি মধ্য ইউরোপের দেশগুলোর সময়। গ্যাসের জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভর করার ঝুঁকি জার্মানিতে অতি-উদ্বেগজনক বিবেচিত হতো। এখন তারা দূরদর্শী সম্পন্ন। মধ্য ইউরোপীয় দেশগুলো যেভাবে লাখ লাখ ইউক্রেনীয়কে সহায়তা করেছে তার জন্য ব্যাপক প্রশংসা পাচ্ছে।

ইউক্রেনকে সাহায্য করার জন্য এই অঞ্চলের অস্ত্রাগার নিষ্কাশন করা হয়েছে। পোল্যান্ড থেকে লেপার্ড ট্যাংকের প্রথম চালান ছাড়া হয়েছে এবং প্রচুর নতুন সামরিক কিট অর্ডার করা হয়েছে। সবই মধ্য ইউরোপকে নৈতিক নেতৃত্বের সুযোগ করে দিয়েছে ইইউর টেবিলে কথা বলার জন্য। একজন পশ্চিম ইউরোপীয় কূটনীতিক বলেন, ‘আমরা সবসময় তাদের কথা শুনতাম। এখন সম্ভবত আমরা একটু বেশি শুনি।’

নিরাপত্তা ও হুমকির ওপর জোর দেওয়া একটি ভিন্ন ইস্যু। পোল্যান্ড ও অন্যান্য ফ্রন্টলাইনে থাকা দেশগুলোর জন্য রাশিয়ার হুমকি শিগগির হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। এই অঞ্চলের নেতারা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন পুতিনের সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষা একদিন তাদের দিকে ফিরে আসবে। ওয়ারশের একটি থিংক ট্যাংক ওএসডব্লিউ-এর জাস্টিনা গোতকোস্কা বলেছেন,যতদিন পুতিন ক্ষমতায় থাকবেন, ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি হলেও, আমরা ধরে নিই যে এটি যুদ্ধে বিরতিই হবে, মিমাংসা নয়।

পশ্চিম ইউরোপ সামগ্রিকভাবে, ভিন্নভাবে বিষয়টি অনুধাবন করে। ইউক্রেনও সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দেশটিকে সাহায্য করার জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন ব্যয় করা হচ্ছে, সশস্ত্র বাহিনীকে সমৃদ্ধ করা হচ্ছে। যুদ্ধ মহাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। ফিনল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ানদেরও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

কিন্তু ব্রাসেলস, ডাবলিন বা প্যারিস থেকে দেখা যায়, যুদ্ধ সত্ত্বেও জীবন চলে। জ্বালানির ক্ষেত্রে নতুন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইউরো জোন মাইগ্রেশন বা ব্রেক্সিট যাই হোক না কেন, গত এক দশকে ইউরোপীয় দেশগুলো অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। এটি আগামী বছরগুলোতেও আরও সমস্যার মুখোমুখি হবে, তাকে কোনো সন্দেহ নেই।

ইইউ নেতারা যখন ব্রাসেলসে মিলিত হন, তখন ফোকাস পয়েন্ট আর শুধু ইউক্রেনের দিকে থাকে না। অবৈধ অভিবাসনের পুনরুত্থানে ইউরোপের যে পদ্ধতিতে প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত, তা বলা বা আমেরিকার সবুজ ভর্তুকিতে প্রতিক্রিয়া জানানোর মতোই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ওঠে আসে। এটি মধ্য ইউরোপীয়দের জন্য বিস্ময়কর যে পুতিন তাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস নিতে পারেন। তাদের কাছে, ইউক্রেন ব্যতীত অন্য কিছু নিয়ে আলোচনা করা মানে অবমূল্যায়ন করা।

পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাউইকি ইউরোপের বাকি অংশকে ‘জাগিয়ে দেওয়ার’ জন্য তাকে যে কাজটি করতে হবে তার কথা বলেছেন। পোল্যান্ড যুক্তিসঙ্গতভাবে আশা করতে পারে যুদ্ধে তার ভূমিকা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী দ্বন্দ্ব নিরসনে সহায়তা করবে।

বুখারেস্ট নাইন এর জনসংখ্যা ৯৫ মিলিয়ন যা মোট ইউরোপীয় অঞ্চলের এক পঞ্চমাংশের কাছাকাছি। তাদের সম্মিলিত জিডিপি বাজারের হারে ইউরোপের মোট জিডিপির মাত্র দশ ভাগ। শুধু পোল্যান্ডকে একটি বড় সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে গণনা করা হয়। তারা ঐক্যবদ্ধও নয়। হাঙ্গেরির স্বৈরাচারী নেতা ভিক্টর অরবান কীভাবে রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছেন তাও দেখার বিষয়। ইউক্রেন বা পশ্চিম বলকান পর্যন্ত ইউরোপীয় অঞ্চল সম্প্রসারিত হলে এই সংখ্যা এবং অঞ্চলের গুরুত্বও বৃদ্ধি পাবে।

ইউরোপীয় অঞ্চলের দেশগুলো মহাদেশের সাধারণ সমস্যাগুলো সমাধান করার ক্ষমতা ও ইচ্ছার মাধ্যমে প্রভাব অর্জন করতে পারে। সেই সমস্যাগুলো কী সেটি সম্পর্কে বোঝার জন্য শেয়ার করা প্রয়োজন। পোল্যান্ড ও এর মিত্রদের যোগাযোগ অব্যাহত থাকবে যখন ইউরোপ ও বিশ্বের নজর তার সীমান্তের কাছে যা ঘটছে তার ওপর। তবুও যা দেখা যায় তা ততটা স্পষ্ট নয়।


ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ   ইউক্রেন   রাশিয়া   ইউরোপ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানে মোসাদের সফল প্রতিবিপ্লব?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নরসহ ৯ জন আরোহীর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সারা বিশ্বে তোলপাড় চলছে। এটি নিছক দুর্ঘটনা, না পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড- এ নিয়ে বিভিন্ন মহলের সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। ইরানের পক্ষ থেকে এটিকে হত্যাকাণ্ড বলা হচ্ছে। তারা মনে করছে, এটি দুর্ঘটনা নয়। তবে দুর্ঘটনাই হোক বা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডই হোক। এর সঙ্গে যে ইরানের অভ্যন্তরীণ কিছু ব্যক্তি জড়িত এ নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই।

ইরানের গণমাধ্যম এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকরাও বিশ্বাস করছেন যে, ইরানের ভিতর কিছু বিশ্বাসঘাতকদের সহযোগিতা ছাড়া এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না। এই ঘটনার পর কয়েকটি মৌলিক প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এরকম একটি দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টার কেন উড়ার সিদ্ধান্ত নিল? এই ব্যাপারে নিরাপত্তা ছাড়পত্র কে দিল সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ যেকোনো বিবেচনায় এই বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে হেলিকপ্টার উড্ডয়নের কথা নয়।

আল জাজিরার রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, ইরানের প্রেসিডেন্ট, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং গভর্নর এক হেলিকপ্টারে ওঠাটাও একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। কারণ এর আগে কখনোই ইরানের প্রেসিডেন্ট অন্য কারও সঙ্গে হেলিকপ্টারে ওঠেন না। তৃতীয়ত, যেখানে তাদের বহনকারী অন্য হেলিকপ্টারগুলো অন্যদিকে যাচ্ছিল সেখানে এই হেলিকপ্টারটি কেন গতিপথ পরিবর্তন করল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আর এ সবকিছু একটি পরিকল্পিত বলেই মনে করা হচ্ছে।

পরিকল্পিত ভাবার পিছনেও কারণ আছে। অতীতেও দেখা গেছে যে, এরকম বিমান বা হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার শত্রুকে দমন করেছে পাকিস্তানি জিয়াউল হক নিহত হয়েছিলেন এরকমই একটি বিমান দুর্ঘটনায়। পরবর্তীতে প্রমাণিত হয়েছে যে, সেটি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরই একটি পরিকল্পিত নীল নকশা এবং মার্কিন রাষ্ট্রদূতকেও ওই দুর্ঘটনায় জীবন দিতে হয়।

এবার ইরানের যে ঘটনাটি ঘটল তার পিছনে সুপরিকল্পিত চক্রান্ত রয়েছে বলেই অনেকে মনে করে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা এখন বলছেন যে, এর পিছনে মোসাদের হাত রয়েছে। ইসরায়েলি এই গোয়েন্দা সংস্থা দীর্ঘদিন ধরেই ইরানে পট পরিবর্তনের জন্য ভেতরে ভেতরে কাজ করছিল। সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের ভিতরে যে হিজাব বিরোধী আন্দোলন, সেই আন্দোলনেও মোসাদের হাত ছিল এবং মোসাদকে সহযোগিতা করেছিল সিআইএ- এমন তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ইরানকে অস্থিতিশীল করে তোলার জন্য মোসাদ এবং সিআইএ বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেছে, ষড়যন্ত্র করছে- এমন প্রতিবেদনও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন সময় প্রকাশিত হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে ইরান, ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের মাথাব্যথা হয়ে গিয়েছিল। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, নিষেধাজ্ঞা থাকায় দেশটির মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন জঙ্গি সন্ত্রাসীদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়, অস্ত্র সরবরাহ করে। সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলে যে হামলা হামাস পরিচালনা করেছিল, তার পিছনে ইরানের মদত ছিল। ইরানের মাধ্যমেই মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলকে কোণঠাসা করার চেষ্টা চলছে, এমন বক্তব্য মার্কিন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা হরহামেশাই করে থাকেন। আর এ কারণে ইরানের পট পরিবর্তনের একটি পরিকল্পনা দীর্ঘদিন ছিল।

এর আগেও ইরানের গোয়েন্দা প্রধানকে হত্যা করা হয়েছিল। যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি সিআইএ এবং মোসাদ জড়িত ছিল বলে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। এবারের এই ঘটনাটি সেরকমই কোন ঘটনা বলেই অনেকের স্থিরবিশ্বাস। বিশেষ করে দীর্ঘদিন ধরে ইরানের ভিতর একটি প্রতিবিপ্লব ঘটিয়ে উগ্র মৌলবাদী ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দেওয়ার একটা পরিকল্পনা চলছিল। এখন সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে এই ঘটনা ঘটানো হল বলে কেউ কেউ মনে করছেন।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর এখন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসাবে যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তিনি অত কট্টরপন্থী নন বলেই মনে করা হচ্ছে। ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার অনেকটাই নমনীয় এবং ইরানের ভিতর এখন এরকম ব্যক্তির সংখ্যা আরও বেড়েছে বলেই কোন কোন বিশ্লেষক মনে করছেন। বিশেষ করে যদি ভিতরে শত্রু তৈরি করে প্রেসিডেন্টকে হত্যা করা যায়, তাহলে ইরানে ইসলামী বিপ্লবী সরকারকে হটিয়ে দেওয়াটা খুব কঠিন কাজ নয়। মোসাদ এবং সিআইএ কি সেই পথেই এগোচ্ছে, এর উত্তর সময়ই বলে দিবে।


ইব্রাহিম রাইসি   ইরান   হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা   মোসাদ   সিআইএ   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের খুটিনাটি শুনলেন পুতিন

প্রকাশ: ০৮:৫১ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মস্কোয় নিয়োজিত ইরানের রাষ্ট্রদূত কাজেম জালালিকে ক্রেমলিনে ডেকে নিয়ে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনা বিস্তারিত শুনেছেন। রাষ্ট্রদূত কাজেম জালালি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছেন।

কাজেম জালালি বলেন, 'রোববার রাশিয়ায় সরকারি ছুটি হওয়া সত্ত্বেও রাত ১০টার দিকে পুতিন বৈঠক করেন। এ সময় রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ও বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তার আমন্ত্রণে ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরানের প্রতিনিধি হিসেবে আমি বৈঠকে অংশগ্রহণ করি।'

কাজেম জালালি বলেন, বৈঠকের শুরুতেই পুতিন আমাকে বলেন, ইরানের প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় আমরা খুবই মর্মাহত। এ বিষয়ে সহযোগিতার জন্য যা দরকার হবে, তা আমরা করব। এ ঘটনায় আমরা খুবই উদ্বিগ্ন ও বিচলিত। যা কিছু প্রয়োজন, তার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি, এ বার্তা ইসলামিক রেভল্যুশনের সর্বোচ্চ নেতার কাছে পৌঁছানো নিশ্চিত করুন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলুসভ, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সেক্রেটারি সের্গেই শোইগু, সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব দ্য জয়েন্ট স্টাফ ভ্যালিরি গেরাসিমভ, বেসামরিক সুরক্ষা, জরুরি পরিস্থিতি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী আলেক্সান্দার কোরেনকোভ, প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী ইগোর লেভিতিন ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।  


ইরান   রাষ্ট্রদূত   হেলিকপ্টার   বিধ্বস্ত   রাশিয়া   প্রেসিডেন্ট   ভ্লাদিমির পুতিন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাইসির দাফন কোথায়, কবে

প্রকাশ: ০৮:৪২ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির দাফন আগামীকাল মঙ্গলবার তাবরিজে অনুষ্ঠিত হবে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম তাসনিম জানিয়েছে। খবর বিবিসির

ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃৃত করে দেশটির গণমাধ্যম তাসনিম জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি তার নিহত সফরসঙ্গীদের দাফনও হবে সেখানে।

এর আগে মরদেহগুলো তাবরিজের ফরেনসিক বিভাগে রাখা হবে।

প্রসঙ্গত, রবিবার সন্ধ্যায় তাদেরকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে দুর্ঘটনার শিকার হয়। তবে ঠিক কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা এখনও জানা যায়নি। 

স্থানীয় সময় সোমবার সকালে তাদের মৃত্যুর খবর জানায় 'তেহরান টাইমস ও মেহের নিউজ'সহ স্থানীয় আরও কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। 

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে একই হেলিকপ্টারে ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আব্দুল্লাহিয়ান। এছাড়াও আরও বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন সেটিতে। 

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম ইরনা জানিয়েছে, এই হেলিকপ্টারে পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতি ও এই প্রদেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেমও ছিলেন। এছাড়াও অন্যদের মধ্যে প্রেসিডেন্টের দেহরক্ষী দলের সদস্য মাহদি মুসাভি, হেলিকপ্টারের পাইলট, সহকারী পাইলট ও ক্রু সদস্য ছিলেন।


ইরান   প্রেসিডেন্ট   ইব্রাহিম রাইসি   দাফন   মৃত্যু  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাইসির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় আমরা জড়িত নই: ইসরায়েল

প্রকাশ: ০৭:৫১ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর ঘটনায় ইসরায়েলের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা। 

তিনি বলেছেন, ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌'দুর্ঘটনার পেছনে আমরা নেই।' তবে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যুতে তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েলি সরকারের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। 

ইসরায়েলের বিরোধী দল বেতেনু পার্টির চেয়ারম্যান এম কে আভিগদোর লিবারম্যান বলেছেন, রাইসির মৃত্যু এই অঞ্চলে ইরানের নীতিতে কোনও পার্থক্য আনবে বলে ইসরায়েল আশা করে না।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেইটকে তিনি বলেছেন, 'আমাদের জন্য, এটা কোনও বিষয় নয়। এই ঘটনা ইসরায়েলের (ইরানের প্রতি) মনোভাবে কোনও প্রভাব ফেলবে না। ইরানের নীতি দেশটির সর্বোচ্চ নেতার (আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি) মাধ্যমে নির্ধারিত হয়।'

তিনি আরও বলেন, 'ইরানের প্রেসিডেন্ট যে একজন নিষ্ঠুর লোক ছিলেন তাতে কোনও সন্দেহ নেই। আমরা তার জন্য একফোঁটা চোখের পানিও ফেলব না।'

ইসরায়েলের অতি-রক্ষণশীল নোয়াম পার্টির নেতা এম কে আভিগদোর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উপমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, 'এক মাসেরও কম সময় আগে রাইসি হুমকি দিয়েছিলেন যে, ইসরায়েল আক্রমণ চালালে এর কোনও কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। আর এখন তিনিই ইতিহাসের ধূলিকণা।'

উল্লেখ্য, রোববার প্রতিবেশি দেশ আজারবাইজানের সাথে যৌথ অর্থায়নে নির্মিত কিজ কালাসি বাঁধের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ানসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তা। পরে সেখান থেকে ইরানের তাবরিজ শহরে আরেকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করতে যাওয়ার সময় ভারজাকান অঞ্চলের দিজামারের পার্বত্য এলাকায় প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।  

কয়েক ঘণ্টার দীর্ঘ তল্লাশি অভিযানের পর সোমবার দিজামারের উজি ও পীর গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ শনাক্ত করা হয়। সেখান থেকে ইরানের উদ্ধারকারী দলের কর্মকর্তারা প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ানসহ ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করেন।

রাইসির মৃত্যুর পর ইরানের নতুন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবেরের নাম ঘোষণা করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। 

এছাড়াও, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনায় ৫ দিনের রাষ্ট্রীয় শোকও ঘোষণা করেছেন তিনি। 


ইব্রাহিম রাইসি   মৃত্যু   মধ্যপ্রাচ্য   রাজনীতি   ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাইসির মৃত্যু: বদলে যাবে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি?

প্রকাশ: ০৭:০৯ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

রহস্যজনকভাবে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যুতে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে কোন পরিবর্তন আসবে কিনা বা এটার প্রভাব কেমন হতে পারে! এটাই এখন বিশ্বরাজনীতির আলোচিত বিষয়।   

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রভাবশালী এই দুই নেতার মৃত্যুতে অনেকটাই পাল্টে যেতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক সমীকরণ। আর রাইসির মৃত্যু থেকে এখন ইসরায়েলই সবচেয়ে লাভবান হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। 

বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইব্রাহিম রাইসি ও হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যু মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চলমান সংঘাতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। 

গত কয়েক দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছিল তেহরান। বিশেষ করে লেবানন, সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেন, বাহরাইন ও ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অর্থ ও সমরাস্ত্রের অন্যতম যোগানদাতা ছিল ইরানের ইসলামী বিপ্লবী রক্ষীবাহিনী। 

আর এসব গোষ্ঠী মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকা ও ইসরায়েলের স্বার্থের জন্য ক্রামাগত হুমকি তৈরি করে আসছিল।

 গত মাসে ইব্রাহিম রাইসির সরকার সরাসরি ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলও ইরানের ইস্ফাহান শহরে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই ঘটনার আগে কেউ কখনো কল্পনাই করতে পারেনি মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশ ইসরায়েলের হামলার সাহস করতে পারে, সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখিয়েছিলেন ইব্রাহিম রাইসি।

শুধু এ হামলা নয়, কয়েক দশক ধরে ইরানের পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে বেশ অসন্তুষ্ট ইসরায়েল ও পশ্চিমা দেশগুলো। এমনকি এ তালিকায় রয়েছে সুন্নি প্রধান দেশ সৌদি আরবও। আর পশ্চিমা শক্তির কোনো তোয়াক্কা না করে পরমাণু কর্মসূচিতে জোরদার ভূমিকা পালন করেছেন ইব্রাহিম রাইসি। এমনকি বেশ কয়েকবার ইসরায়েলকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার হুমকিও দিয়েছিলেন সদ্য নিহত ইরানি প্রেসিডেন্ট। এ কারণে বিশ্লেষকরা বলছে, রাইসির মৃত্যু প্রভাব ফেলতে পারে দেশটির পরমাণু কর্মসূচিতেও।  

এছাড়া, রাইসির মৃত্যু শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয় বরং মধ্য এশিয়া ও ইউরোপীয় ভূরাজনীতিতেও  প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে রুশ বাহিনীকে যে বিপুল পরিমাণ ড্রোন ও সমরাস্ত্র সরবরাহ করেছিল তেহরান এখন সেই পদক্ষেপ কতটা ধারাবাহিক থাকবে সে প্রশ্ন উঠেতে শুরু করেছে অনেক মহলে। এছাড়াও রাইসির নেতৃত্বে আর্মেনিয়া-আজারবাইজান সংঘাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল তেহরান।


ইব্রাহিম রাইসি   মৃত্যু   মধ্যপ্রাচ্য   রাজনীতি   সৌদি আরব  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন