দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বাকি ৮ মাস। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে সরকার এবং সরকার বিরোধী দলগুলোর মধ্যে চলছে বাকযুদ্ধ। এই বাকযুদ্ধে কেউ ইভিএম-এ নির্বাচনের পক্ষে কথা বলছেন, আবার কেউ বিরুদ্ধে কথা বলছেন। কেউ বলছেন ইভিএম ঠিক অর্থাৎ ইভিএম-এ কোনো কারচুপির ব্যবস্থা নেই, আবার কেউ বলছেন বেঠিক অর্থাৎ ইভিএম-এ কারচুপি করা হবে।
এসব প্রসঙ্গ নিয়ে শনিবার (১১ মার্চ) দুপুরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের একটি তারকা হোটেলে ‘নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার: চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’- শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করলে নির্বাচনে ভারসাম্য সৃষ্টি হতো। নির্বাচন ও রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কিছু সমস্যা রয়েছে। নির্বাচন যতই শান্তিপূর্ণ আর সুষ্টু হোক, জয়লাভ করতে পারলে নির্বাচন ঠিক আর জিততে না পারলে সবকিছু বেঠিক- এমন সংস্কৃতির পরিবর্তন দরকার। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে এককভাবে দায়ী করে লাভ নেই।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমমিশনের ৫০ থেকে ৮০টি আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণের সক্ষমতা আছে। ইভিএম পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে অনেকেই আপত্তি তুলেছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউই তথ্যনির্ভর কোনো অভিযোগ উপস্থাপন করতে পারেননি। ইভিএম পদ্ধতির ভোট নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) এককভাবে দায়ী করে লাভ হবে না।’
এরই মধ্যে ইভিএম-এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছিল নানা বিতর্ক। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) করার জন্য নতুন মেশিন কেনার প্রকল্পও হাতে নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু নতুন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার প্রকল্প স্থগিত হয়। এই প্রকল্প স্থগিত হলেও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেদের হাতে থাকা ইভিএমগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চেয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে তারা যে দেড় লাখ ইভিএম কিনেছিল, সেগুলোর কতটি ব্যবহারের উপযোগী আছে, তা যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করছে কমিশন। এটা শেষ হলে বলা যাবে, আগামী সংসদ নির্বাচনে কতটি আসনে ইভিএমে ভোট করা সম্ভব হবে।
এদিকে আজ শনিবার (১১ মার্চ) প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছেন ৫০ থেকে ৮০টি আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণের সক্ষমতা আছে। প্রসঙ্গতই রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন ওঠেছে, তবে কি আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইভিএম-এ হচ্ছে না?
চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি (সোমবার) নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাংগীর আলম এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দুই লাখ নতুন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার প্রকল্পটি ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতি আর আর্থিক সংকটের’- কথা বিবেচনা করে আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছে সরকার। আমরা পরিকল্পনা কমিশন থেকে সিদ্ধান্ত পেয়েছি। এ মুহূর্তে প্রকল্পটি তারা প্রক্রিয়াজাতকরণ করছে না। বাতিলও হচ্ছে না, তবে এ মুহূর্তে হচ্ছে না।’
এসব বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য যেহেতু সরকার বিরোধী দলগুলো ইভিএম- এ নির্বাচন বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে এবং নির্বাচন কমিশনেরও ইভিএম-এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের যথেষ্ঠ সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সেহেতু সরকারে উচিৎ ইভিএম বাদ দিয়েই আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা। গতানুগতিকভাবে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হলে সরকারের নির্বাচনী ব্যয়ও সংকুলান হবে।
তবে ইভিএম-এ ভোট গ্রহণে যে কারচুপির অভিযোগ করা হচ্ছে- তা কখনই সম্ভব নয়। এটি একটি প্রযুক্তিগত ব্যাপার। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম-ই কেবল পারে প্রযুক্তিনির্ভর একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে। বাংলাদেশে বর্তমানে উদ্ভাবিত এবং ব্যবহৃত ইভিএম মেশিনটি ২০১৩ সাল পর্যন্ত ব্যবহৃত ইভিএম মেশিন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সম্পূর্ণ নতুন চিন্তা নিয়ে ভিন্ন প্রযুক্তিতে এটি ভিন্নভাবে উদ্ভাবিত। নতুন এই মেশিনটির উদ্ভাবকদের সঙ্গে আগের মেশিনের উদ্ভাবকদের কোনো সংযোগ নেই- নেই আগের ইভিএম মেশিনের কোনো সম্পর্ক।
তাঁরা বলছেন, নতুন এই মেশিনে এক জনের ভোট আরেকজন দিতে পারে না এবং ভোটের সময় ছাড়া এর আগে বা পরের দিনে বা রাতে কখনই ভোট দেওয়া যায় না। ভোটার আঙুলের ছাপ দিলেই কেবল ইলেকট্রনিক ব্যালট পেপার ভোটদানের জন্য উন্মুক্ত হয়, অন্যথায় নয়। ব্যালট পেপার অন হওয়ার পর ভোটার তার ভোট প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে তা আবারও অকেজো হয়ে যায় এবং অন্য একজন ভোটারের আঙুলের ছাপ না দেওয়া পর্যন্ত আর ভোটদানের জন্য উন্মুক্ত হয় না। একজন ভোটার দ্বিতীয়বার ভোট দিতে চাইলে মেশিন নিজেই তাকে ভর্ৎসনা করে ফিরিয়ে দেয়। মানুষের করা দুর্নীতির সব প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করে দেয় এই মেশিন, তার নিজস্ব ক্ষমতাবলে।
কাজেই এখন দেখার বিষয় হচ্ছে আগামী দ্বাদশ নির্বাচনে ইভিএম সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়া হয় কি না? নাকি সচল ইভিএমগুলো ৫০ থেকে ৮০টি কেন্দ্রে ব্যবহার করা হয়?
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ব্যবহৃত ইভিএম
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক হোসেন
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।