জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। বাংলাদেশের অবস্থা খুবই খারাপ হোক আমরা তা চাই না। দেশের মানুষ একটি জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরীর জ্বালামুখে আছে। যে কোন সময়ে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। আমরা চাই, খারাপ হলেও যেনো দেশের অবস্থা সব চেয়ে কম খারাপ হয়। দেশের অবস্থা যে খারাপ হবে তা মোটামুটি নিশ্চিত।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যে তথ্য দিচ্ছে তা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বিশ্বাস করছে না। সরকার বলছে, দেশে ৩১ বিলিয়ন রিজার্ভ আছে। কিন্তু আইএমএফ বলছে, এর মধ্যে ৮ বিলিয়ন ডলার সরকারের হাতে নেই। সরকার শ্রীলংকাকে ঋণ দিয়েছে, সে টাকা কী সরকার ফেরত পাবে? পায়রা বন্দরসহ বিভিন্ন খাতে খরচ করা হয়েছে। এগুলো কী সরকারের হাতে আছে? বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা বাংলাদেশের হিসেব-নিকেশ গ্রহণ করে না। মুডিস নামে একটি সংস্থা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে ভয়াবহ বলে ঘোষণা করেছে। তাদের বক্তব্য বাংলাদেশকে ঋণ দিলে তা ফেরত দিতে পারবে না। আবার বিনিয়োগ করলেও তা হবে ভয়াবহ ঝুকিপূর্ণ। তারা বাংলাদেশকে ঝুকিপূর্ণ দেশ বলে ঘোষণা করেছে।’
শনিবার (১১ মার্চ) বিকেলে কুমিল্লা শহরের টাউন হল মাঠে জাতীয় পার্টি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে দেয়া বক্তৃতায় গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন। সম্মেলনের শেষে জাতীয় পার্টি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন জাতীয় পাটি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি। এসময় এয়ার আহম্মেদ সেলিমকে সভাপতি, হুমায়ুন কবির মুন্সিকে সিনিয়র সহসভাপতি এবং ওবায়দুল কবির মোহনকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন। দ্রুততার সাথে তাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠেনের নির্দেশ দেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব।
এ সময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের মত হতে পারে। প্রবাসীদের আয়ের চেয়ে দেশের ব্যয় রেড়ে গেলে রিজার্ভ একটু করে কমতে থাকে। ঋণ নিয়ে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে শ্রীলংকা সুদ ও ঋণ শোধ করতে পারেনি। তাই তারা দেউলিয়া হয়ে গেছে। ঋণ নিয়ে যে সব প্রকল্পে বাংলাদেশ বিনিয়োগ করেছে তা ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি খরচ ও ৩ থেকে ৪ গুন বেশি সময় নিয়ে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তাই, রিজার্ভ থেকে টাকা পাারশোধ করতে হচ্ছে। গেলো বছর ১২ বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে। এবার হয়তো ২৩ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু, রিজার্ভ আছে মাত্র ২২ বিলিয়ন ডলার। সরকার এখন আস্তে আস্তে দিতে চাচ্ছে। গোজামিল দিয়ে সকার পরিচালনা করা হচ্ছে। দেশ আসলেই দেউলিয়ার পথে। আবার পাকিস্তান বড় বড় প্রকল্প না করলেও বিভিন্ন ভাবে খরচ করেছে, দুর্নীতি করেছে, বিদেশে টাকা পাচার করেছে। শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের অনেক মিল আছে। বাংলাদেশ ব্যাংক হিসেব দিয়েছে দেশের খেলাপী ঋণের পরিমাণ শতকরা ৮ ভাগ। কিন্তু আইএমএফ বলেছে বাংলাদেশের খেলাপী ঋণের পরিমান ২৫ ভাগ। কিন্তু হংকং এর খেলাপী ঋণের পরিমাণ ১ ভাগ, সৌদি আরবে দেড় ভাগ সেই তুলনায় শতকরা ৮ ভাগ অনেক বেশি। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের খেলাপী ঋণের পরিমাণ শতকরা ২৫ ভাগ। শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের পর বাংলাদেশ যে দেউলিয়া হবে না তার নিশ্চয়তা নেই।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি অত্যন্ত অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। সংবিধানের সুযোগ নিয়ে সরকার প্রশাসনসহ সকল প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করেছে। সংবিধান সংশোধন করে সব কিছু নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সরকার। নির্বাচন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার। সব কিছু কুক্ষিগত করছে সরকার। তাই সামনের নির্বাচন কেমন হবে তা অনুমান করা যায়। আমরা আবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে। সরকার চাইলে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ফর্মুলা দেবো। কিন্তু সরকার গায়ের জোরে সব কিছু করতে চাইছে।’
জি এম কাদের আরো বলেন, ‘সরকার দেশের মানুষের কথা শোনে না, দেশের মানুষের কথা ভাবে না। আমরা বারবার বলেছি সাপ্তাহিকভাবে রেশন কার্ড দিয়ে মানুষকে বাঁচাতে হবে। সরকার বলছে, করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলছে। ডলারের দাম বাড়লো কেন? আমরা জানি সরকারের সিন্দুকে টাকা নেই। তাই, সরকার নতুন ভাবে টাকা ছাপতে শুরু করছে। কাগজের নোট বানালে ডলারের দাম আরো বেড়ে যাবে। এতে দ্রব্যমূল্য আরো বেড়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘মানুষ বৈষম্য থেকে মুক্তির জন্য বৃটিশ ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে। তারা আমাদের সাথে চাকরি ও ব্যবসায় বৈষম্য করতো। আমাদের দেশের মানুষের ওপর নির্যাতন করতো। বৈষম্যের জন্য দারিদ্র ও বেকারত্ব বেড়েই চলছিলো। মুক্তির আন্দোলন এক পর্যায়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে রুপ নেয়। কারণ, দেশের মানুষ বুঝতে পেরেছিলো আমাদের নিজম্ব একটি দেশ না পেলে আমরা মুক্তি পাবো না। যে দেশের মালিক হবো আমরা, দেশের মানুষ হবে দেশের প্রকৃত মালিক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিলো বৈষম্যমুক্ত সমাজ। স্বাধীনতার চেতনা ছিলো জনগণের মালিকানাধীন স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশ। বর্তমান সরকার মৃক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলেন। এমন অনেক আইন করা হয়েছে, মনের কথা বললেই দেশদ্রোহী হয়ে যাবেন। সরকারের বিরুদ্ধে কথাকে দেশের বিরুদ্ধে গণ্য করা হয়। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে দেশদ্রোহিতার মামলা হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে, দেশে এখন সব চেয়ে বেশি বৈষম্য করা হচ্ছে। যারা সরকারি দল করছে তারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার মাধ্যমে লাখো-কোটি টাকা আয় করে বিদেশে পাচার করছে। বেশির ভাগ মানুষ চাকরি, ব্যবসা, আইনের সহায়তা ও মানবিক সহায়তা থেকে বঞ্ছিত হচ্ছে। দেশের বেশির ভাগ মানুষ দরিদ্র থেকে আরো দরিদ্র হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হয়েও সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করছে না। বৃটিশ ও পাকিস্তাতানীরা দেশের মানুষের সাথে যা করেছে, সরকার দেশের মানুষের সাথে তাই করছে। মুক্তিদ্ধের চেতনার কথা বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিদায় দেয়া হয়েছে, স্বাধীনতার চেতনার কথা বলে স্বাধীনতার চেতনা বিদায় দেয়া হয়েছে। গণতন্ত্রের কথা বলে গণতন্ত্র বিদায় দেয়া হয়েছে।’
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা প্রায়ই বলেন, খেলা হবে। কিসের খেলা হবে? দেশের কোটি কোটি বেকারদের জন্য কী খেলা আছে আপনাদের? আসলে একটি দল ক্ষমতা থেকে লুটপাট আর দলবাজী বজায় রাখতে চাচ্ছে। আর, অপর দলটি আবারো ক্ষমতায় গিয়ে লুটপাটের ধান্দা করছে। আসলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কেউই দেশের মানুষের কথা ভাবে না। তাই, দেশের মানুষ আর আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে বিশ্বাস করছে না। দেশের মানুষ জাতীয় পার্টিকে আরো শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে দেখতে চায়।’
এ সময় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক এয়ার আহমেদ সেলিম এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সাল চিশতী, এডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা হেনা খান পন্নী প্রমুখ।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বিরোধীদল উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।