সংসদ সদস্যপদ বাতিলের পর লন্ডনে ‘মোদী’ পদবি নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করায় ক্ষমা চাইবেন না বলে জানিয়েছেন ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি এও দাবি করেন, দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে শঙ্কিত।
শনিবার (২৫ মার্চ) মানহানির মামলায় কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে এমন সব মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে রাহুল গান্ধী বলেন, আমার সংসদ সদস্যপদ বাতিলের মূল কারণ হলো, বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদী আমার পরবর্তী ভাষণ নিয়ে শঙ্কিত। আমি মোদীর চোখে ভয় দেখেছি। আর এ কারণেই তারা আমাকে সংসদে কথা বলতে দিতে চায় না।
বিজেপির ক্ষমা চাইতে বলা নিয়ে রাহুল বলেন, আমি ‘সাভারকার’ নয়, আমি ‘গান্ধী’। ক্ষমা আমি চাইবো না। এর পাশাপাশি তিনি দেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয়ে বাইরের অর্থাৎ বহির্শক্তিকে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ করে দিতে চান- বিজেপির এমন দাবিকে অস্বীকার করেন।
রাহুল গান্ধী বলেন, মোদি-আদানি সম্পর্ক নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তোলাতেই নিশানা করা হয়েছে তাকে। সেই সঙ্গে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি প্রশ্ন তুললেন দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আদানিদের ঘনিষ্ঠ চীনা শিল্প সংস্থার ‘অংশগ্রহণ’ নিয়েও।
মোদির সঙ্গে আদানির সম্পর্ক ‘বহু দিনের পুরনো’ বলে দাবি করেন রাহুল। মোদির রাজ্যের আদালতের রায়কে হাতিয়ার করে তার সাংসদ পদ খারিজ করা হলেও দেশের স্বার্থে তিনি লড়াই চালিয়ে যাবেন জানিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘আমি ভয় পাই না। বিজেপি এত দিনেও সেটা বুঝতে পারেনি।’’
‘মোদি’ পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে বৃহস্পতিবার রাহুলকে ২ বছরের সাজা দেয় গুজরাটের সুরাত জেলা আদালত। তারই ভিত্তিতে ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শুক্রবার রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা।
ব্রিটেন সফরে গিয়ে তিনি ‘দেশকে অপমান’ করেছেন বলে বিজেপির পক্ষ থেকে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা নস্যাৎ করে ওয়ানেড়ের সদ্য প্রাক্তন সাংসদ বলেন, ‘‘আমি দেশবিরোধী কোনো মন্তব্য করিনি। ওদের (বিজেপি) সমস্যা হল, আদানির অপমানকে দেশের অপমান ভাবেন।’’
উল্লেখ্য, লন্ডন থেকে ফিরে গত বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে ঢোকার আগে ওয়েনাড়ের তৎকালীন কংগেস সাংসদ রাহুল বলেছিলেন, ‘‘আমি (লন্ডনের আলোচনা সভায়) ভারতবিরোধী কিছুই বলিনি। যদি তারা সুযোগ দেন, তবে আমি সংসদের ভিতরেও সে কথা বলব।’’
শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল বলেন, ‘‘আমি সংসদে বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বলতে দেওয়া হয়নি। বলতে চেয়ে প্রথম চিঠি দিয়েছি। দ্বিতীয় চিঠি দিয়েছি। স্পিকারের সঙ্গে দেখাও করেছি। কিন্তু বলার সুযোগ পাইনি।’’