যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, ‘আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনা, আপনাদের প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে আপনাদের কাছে পাঠিয়েছেন, কিছু খাদ্যসামগ্রী দিয়ে। এই উপহারগুলো আপনাদের অধিকার। এগুলোকে অনুদান মনে করবেন না। সরকার সর্বদা সচেষ্ট আছে আপনাদের দুঃখ-কষ্ট লাঘব করার জন্য। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সৃষ্টি হয়েছিল জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। আজকে বিশ্বমন্দা ও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস-পত্রের দামের উর্ধ্বগতি হওয়াতে আপনাদের যে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে সেটা আমরা অনুভব করি। কিন্তু আপনারা দুশ্চিন্তা করবেন না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী যুবলীগ আপনাদের পাশে আছে এবং চিরদিন থাকবে।’
শনিবার (১ এপ্রিল) কামরাঙ্গীরচরে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল মাঠে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা’র খাদ্যসামগ্রী উপহার বিতরণ অনুষ্ঠোনে তিনি এসব কথা বলেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের সাথে আমাদের নাড়ির সম্পর্ক। এদেশের জনগণকে আমরা সব সময় আমাদের সাথে পেয়েছি। এ দেশের জনগণ চরম বিপদের সময় আমাদের পাশে ছিল এবং সব সময় থাকে। জনগণ থাকে সেই সকল রাজনৈতিক দলের সাথে যারা দেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে, দেশকে গড়ার স্বপ্ন দেখায়। আমাদের নেত্রী এই দেশকে গড়ার স্বপ্ন বুকে ধারণ করে, তাই আওয়ামী লীগের সাথে এই দেশের মানুষ আছে।’
তিনি বলেন, ‘একটা ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণের এক পরিকল্পিত নীলনকশার বাস্তবায়ন চলছে। এমন পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা চলছে, যে সাধারণ মানুষ যেন সরকারের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে। আর এ নীলনঁকশার বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছেন এক-এগারোর কুশীলবরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত এখন বেশ জোরেশোরে চলছে। দেশের সুশীল সমাজের একটি অংশ এখন জনগণকে বিভ্রান্ত করতে তৎপর হয়েছেন। ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবদের মাঠে নামানোর এক পরিকল্পিত প্রয়াস চলছে। কিছু গণমাধ্যম এখন খুবই নগ্নভাবে বিরোধী দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ। যার ন্যাক্কারজনক বহিঃপ্রকাশ সম্প্রতি জনগণের সম্মুখে এসেছে প্রথম আলোর হলুদ সাংবাদিকতার মাধ্যমে। এটাকে শুধু হলুদ সাংবাদিকতা বলা যায় না। এই ধরণের সাংবাদিকতা সমগ্র সাংবাদিক পেশাজীবীদের কলঙ্কিত করেছে। এর মাধ্যমে শিশু সরলতাকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রদ্রোহিতা করা হয়েছে ‘
পরশ বলেন, ‘আমি নিজে একজন সাংবাদিকের সন্তান হিসেবে ভিশনভাবে ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। আমি প্রথম আলোকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য সকল মহলকে আহ্বান করছি এবং প্রথম আলোর বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি করছি। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে গণমাধ্যম সরকারের সমালোচনা করবে এটা স্বাভাবিক কিন্তু ওই সমালোচনা যদি উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও দেশবিরোধী হয়, তাহলে তার প্রতিবাদ করার অধিকার জনগণের আছে। প্রথম আলোরা এই সকল চক্রান্তমূলক কাজে লিপ্ত। অর্থাৎ সব মিলিয়ে দেশটাকে ঝুঁকিপূর্ণ, সংকটময় দেখানোর ন্যাক্কারজনক অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। সরকার ব্যর্থ এটি প্রমাণ করতে মরিয়া এরা। এ সমাজে কিছু মানুষ আছে যারা সুযোগ সন্ধানী। দেশকে অস্থিতিশীল করতে পারলেই এদের পোয়াবারো। এদের কারণে গণতান্ত্রিক সরকার বার বার সংকটে পড়ে। অগণতান্ত্রিক শক্তি ডালপালা মেলে। ’৭৫-এর প্রেক্ষাপট একটু খতিয়ে দেখলে দেখবেন। হলিডে ও গণকণ্ঠ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছিল। একশ্রেণির ভাড়াটে বুদ্ধিজীবী, দেশ গেল বলে আর্তনাদ করেছিল। মুনাফাখোর, কালোবাজারি, মজুদদাররা দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে বাজার অস্থির করে তুলেছিল। সেই পুরানো খেলা চলমান। আজ তিন মেয়াদে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার দেশ পরিচালনা করছে। এতো দীর্ঘ দিবস-রজনী ক্ষমতা থেকে দূরে থাকাটা তথাকথিত সুশীলসমাজের কীভাবে সহ্য হবে? তাই শুরু হয়েছে সেই পুরোনো খেলা। চারদিকে হতাশার নানা বাদ্যযন্ত্র বাজানো হচ্ছে। কয়েকজন সুশীল তাঁদের নিয়ন্ত্রিত কিছু গণমাধ্যম, কিছু মতলববাজ সুযোগসন্ধানী দুর্বৃত্ত, ক্ষমতার মধু খাওয়া কিছু নব্য মোশতাক ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কেউ কেউ (যারা এখনো নিজেদের প্রভু ভাবেন) আরেকটি এক-এগারোর আয়োজন করতে চাচ্ছে।’
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা জানেন, জনগণই তাঁর শক্তি। তাই তিনি বার বার আমাদের জনগণের কাছেই পাঠান। আর আমরা আপনাদের কাছে বার বার ফিরে আসি। আপনারাই আমাদের ভরসা।’
তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাদের সামনে অনেক কাজ। আপনারা যদি যুবলীগ করতে চান, তাহলে পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করতে হবে। জনগণের পাশে থাকতে হবে। শেখ হাসিনা যেই রাজনৈতিক মানদণ্ড স্থাপন করেছেন- সেটা অনুসরণ করতে হবে। সততা এবং নিষ্ঠার সাথে গণমানুষের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করে যেতে হবে। আমাদের আগামীতে এই দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কোন জনবিচ্ছিন্ন সুশীলদের পূর্ব-নির্ধারিত সুশাসনের সংজ্ঞা দ্বারা আমাদের পরিচালিত হতে হবে না। আমাদের সুশাসনের সংজ্ঞা জননেত্রী শেখ হাসিনা রচিত করেছেন ইতিমধ্যে, সেটা হচ্ছে মানবিকতা, ন্যায়পরায়ণতা ও স্বচ্ছতা।’
প্রধান অতিথির বক্তব্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাড. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘রোজার মাসে মানুষকে কষ্ট দেওয়ার জন্যই বিএনপি অকারণে আন্দোলন করছে। আর আওয়ামী লীগের কাজ হচ্ছে সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করা। তাদের ভালমন্দ দেখা। তাই আজকে যুবলীগের উদ্যোগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে রোজাদারদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী উপহার বিতরণ।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে চলেছে। সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ সকল সূচকে অভূতপূর্বক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে আজ সম্মানের সাথে দেখা হয়। এটা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সন্ত্রাসী দল। ’৭১-এর পরাজিত শক্তি জামাত-বিএনপি আবারও মাথাচারা দিয়ে উঠছে, দেশের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে। এই সকল ষড়যন্ত্রের জবাব দিতে হবে যুবলীগকেই।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘মহামারি করোনা এবং ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে সারা বিশ্বের অর্থনীতি যখন টালমাটাল সেই মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা ঘূর্ণায়মান। আর আমাদের আছে বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। আজ ইউরোপে ১ ডজন মুরগী কেনা যায় না, ৫ লিটার তেল কেনা যায় না, ২ কেজি টমেটো কেনা যায় না। সেখানে একজন শেখ হাসিনা নাই বলেই আজকে বন্ধ হয়ে যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক, সিগনেচার ব্যাংক, সুইজারল্যান্ডের ক্রেডিট সুইস ব্যাংক। আর বাংলাদেশে একজন শেখ হাসিনা আছে বলেই কোন ব্যাংক বন্ধ হয় না, ইন্স্যুরেন্স বন্ধ হয় না, না খেয়ে কেউই থাকে না।’
সঞ্চালকের বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘আজ বিএনপির নেতারা গণতন্ত্র নিয়ে টালবাহানা শুরু করেছেন। বিএনপি কারা করে- আপনারা ভাল করেই জানেন। যারা সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ তারাই বিএনপি করে। বিএনপির জন্ম সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে। জিয়াউর রহমান বন্দুকের গুলিতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেছিল। তার সন্তান তারেক রহমান। ২০০২-২০০৬ সাল বাংলাদেশকে কারাগারে পরিণত করেছিল। সারা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা করেছিল। বাড়ি-ঘর করতে গিয়ে চাঁদা দেওয়া লেগেছে, ব্যবসা করতে গিয়ে চাঁদা দেওয়া লেগেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির যারা কুলাঙ্গার আছে তাদের মুখোশ উন্মোচন করবই করবো।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. মামুনুর রশীদ, মো. হাবিবুর রহমান পবন, মো. নবী নেওয়াজ, তাজউদ্দিন আহমেদ, মো. আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জহির উদ্দিন খসরু, অ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক মো. আবদুল হাই, ধর্ম সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান সরদার, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-অর্থ সম্পাদক সরিফুল ইসলাম দুর্জয় প্রমুখ।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, মন্ত্রী-এমপিদের
স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারবে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল
কাদের এনিয়ে একাধিকবার বক্তব্য রেখেছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন যে, যদি মন্ত্রী-এমপিরা
দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আগামী ৩০ শে এপ্রিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির
বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী
শেখ হসিনা। এই বৈঠকে দলের সিদ্ধান্ত যারা লঙ্ঘন করেছে তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ
করা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ স্থানীয় নেতারা
বলছেন, নানা বাস্তবতায় আওয়ামী লীগ এখনই মন্ত্রী এমপিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাবে
না। কোন মন্ত্রী-এমপিকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনের জন্য বহিষ্কার করা হবে না বলেও আওয়ামী
লীগের বিভিন্ন নেতারা মনে করছেন। তারা বলছেন, বিষয়টি আওয়ামী লীগ সভাপতি মনে রাখবেন,
ভবিষ্যতে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, ঢালাও বহিষ্কার বা একটি সিদ্ধান্ত
লঙ্ঘন করলেই তাকে তাৎক্ষণিকভাবে দল থেকে বের করে দেওয়ার নীতিতে আওয়ামী লীগ বিশ্বাস
করে না। আওয়ামী লীগ এক্ষেত্রে সংযত ও গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমুন্নত রাখার নীতি
অনুসরণ করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ৩০ এপ্রিলের বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক
সম্পাদকরা তাদের বিভাগ অনুযায়ী প্রতিবেদন দিবেন। কোন কোন বিভাগে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা
নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। এবং কোন প্রেক্ষাপটে তারা প্রার্থী হয়েছেন সে বিষয়টিও সাংগঠনিক
সম্পাদকদের রিপোর্টে উপস্থাপিত হবে। এরপর যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ
গ্রহণ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ‘কারন দর্শানো নোটিশ’ জারি করা হতে পারে বলে আওয়ামী লীগের
দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
এরপর ‘কারন দর্শানোর নোটিশ’এর জবাবের প্রেক্ষাপটে তাদেরকে সতর্ক
করা বা স্বজনদেরকে পদ-পদবী থেকে সরিয়ে দেয়ার মতো পদক্ষেপগুলো নেয়া হবে। আওয়ামী লীগের
একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত নেন না।
তিনি সিদ্ধান্ত নেন ধীর স্থীর ভাবে। আর একারণেই দীর্ঘ মেয়াদী কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে
পরবেন এমপি-মন্ত্রীরা।
যেসমস্ত এমপি-মন্ত্রীরা দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন পরবর্তীতে
দলীয় কমিটিগুলোতে তাদের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যাবে। অনেকে কমিটি থেকে বাদ পড়বেন। যেসমস্ত
মন্ত্রীরা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, ভবিষ্যতে তারা আওয়ামী
লীগ সভাপতির আস্থাভাজনের তালিকা থেকে বাদ যাবেন। অনেক এমপি হয়তো পরবর্তী নির্বাচনে
মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন।
তবে যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন তারা শেখ হাসিনার সু-নজর
থেকে সরে গেলেন। আওয়ামী লীগে এদের ভবিষ্যৎ ধূসর এবং কুয়াসাচ্ছন্ন হয়ে গেল। আওয়ামী লীগ
সভাপতি বহিষ্কার করেন খুব কম। তবে দলের রেখে তাদের এমনভাবে গুরুত্বহীন করে ফেলা হয়
যে শাস্তি বহিষ্কারের চেয়ে অনেক বেশী। আর এই কৌশলটি অধিকতর কার্যকর বলে আওয়ামী লীগের
নেতা-কর্মীরা মনে করে। তাই ৩০ এপ্রিল বৈঠকে আওয়ামী লীগ দলের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাচনে
যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে হুলুস্থুল কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা
হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপির সাংগঠনিক শৃঙ্খলা অটুট রাখতে শক্ত অবস্থান নিয়েছে দলটির
হাইকমান্ড। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায়
দল ও অঙ্গসংগঠন থেকে নতুন করে আরও তিনজনকে শুক্রবার বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সিনিয়র
যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃতরা হলেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলার হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির
সদস্য আব্দুল হামিদ। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচন করছেন। শেরপুরের শ্রীবর্দী
উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম মোস্তফা (সোনাহার)। তিনি ২নং পৌর ওয়ার্ড বিএনপির
সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
অপর একজন হলেন, চট্টগ্রাম বিভাগের রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলা
বিএনপির উপদেষ্টা মংসুইউ চৌধুরী। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন।
বিএনপি বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ (শনিবার) সকালে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, বিএনপি দাসত্ব করে ক্ষমতা পাওয়ার জন্য, জনগণকে মূল বিষয় হিসেবে মনে করে না। বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করলে ক্ষমতায় যাওয়া যায়? এখনো তাদের দুরভিসন্ধি হচ্ছে বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়?
তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল মনে করি না। তাদের ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, প্রহসনে পরিণত করেছে। গণতান্ত্রিক বিধিবিধান তারা দলের মধ্যেও কোনো দিন
মানেনি। তারা বড় বড় কথা বলে, তারা কবে দলীয় কাউন্সিল করেছে? তারা কোথায় দলীয় কাউন্সিল করেছে? ৭-৮ বছর আগে লা মেরিডিয়ানে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে সাধারণ মানুষের মাঝে যারা রাজনীতিকে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে জাতীয় নেতা শেরে বাংলা ছিলেন অন্যতম। সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলাকে গ্রাম বাংলার কৃষকরা কোনোদিনও ভুলতে পারবে না। তিনি চিরদিন তাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রজাসত্ব ও ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে সুদ খোর মহাজনদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করেছেন, তিনি সে জন্য এখনও স্মরণীয় হয়ে আছেন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আজ আমাদের অঙ্গীকার বঙ্গবন্ধু, সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা লড়ে যাচ্ছি মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে। সেটাই শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের স্বপ্ন এবং সেটা আজ আমাদের অঙ্গীকার।
ওবায়দুল কাদের ক্ষমতায় বিদেশি দাসত্ব বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারবে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এনিয়ে একাধিকবার বক্তব্য রেখেছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন যে, যদি মন্ত্রী-এমপিরা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেটি চেয়েছিলেন যে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন হবে, যে নির্বাচনে যে যার মতো করে অংশগ্রহণ করবেন এবং সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বিজয়ী হবেন। সে রকম একটি নির্বাচন এখন দুরাশায় পরিণত হচ্ছে। আর এই দুরাশায় পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ হল মন্ত্রীদের ক্ষমতার লোভ, এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং কোথাও কোথাও পরিবারতন্ত্র কায়েমের আগ্রাসী মনোভাব।