দৈনিক প্রথম আলো। মামলা-জামিন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্বকে নিয়ে কটাক্ষ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, বিবৃতি, পাল্টা বিবৃতি- প্রভৃতি বিষয় নিয়ে সমসাময়িক বাংলাদেশে আলোচিত-সমালোচিত দৈনিকটি এবং এর সম্পাদক মতিউর রহমান। দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশিত সংবাদ মাধ্যমটির বিশ্বাসযোগ্যতা এবং গ্রহণযোগ্যতা সর্বাধিক থাকলেও, গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশিত একটি সংবাদকে কেন্দ্র করে এই সংবাদমাধ্যমটির গ্রহণযোগ্যতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে। বলা হচ্ছে, বিভিন্ন সময়ে এই দৈনিকটি মিথ্যা সংবাদ প্রাকাশ করে একটি বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতেই বিশেষ কোনো গোষ্ঠী বা সংস্থার এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর রয়েছে।
কেউ কেউ বলছেন, অবাধ তথ্য প্রবাহ এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রশ্নে দৈনিকটি এবার সরসারি বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির স্বাধীনতা নিয়ে কটুক্তিমূলক সংবাদ পরিবেশন করেছে। যা রীতিমতো রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। কিন্তু জাকির হোসেন নামে যে ব্যক্তিটির উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদটি করেছিল প্রথম আলো, প্রশ্ন হচ্ছে সেই জাকির হোসেন কে? যাকে একজন দিনমজুর বলে পরিচয় দিয়েছে প্রথম আলো, সেই ব্যক্তি জাকির হোসেনকে কেন সামনে আনছে না প্রথম আলো?
এদিকে, প্রথম আলোর এই ভুয়া সংবাদ প্রচার ও এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করে মামলা হয়। মামলায় ওই প্রতিবেদনটির প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস-কে আটক করে পুলিশের সিআইডি শাখা। পরে তাকে ওই মামলায় কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনার পর পরই দৈনিকটির প্রতিদিনের পাতাজুড়ে সুশীল সমাজ, সম্পাদক মতিউর রহমানের দোসরদের বিভিন্ন লেখা-বিবৃতি প্রকাশ পেতে শুরু হয়। তবে সংবাদপত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এটা দৈনিকটির পুরোনো কৌশল। এর আগেও বেশ কিছু অপকর্ম করে এভাবেই বিবৃতি দিয়ে বেঁচে গিয়েছিল প্রথম আলো।
বুধবার (৫ এপ্রিল) প্রথম আলোতে কর্মরত কুর্রাতুল-আইন-তাহ্মিনা লিখেছেন, সব ডালপালা, লতা-পাতা সরিয়ে ফেলে কাঁটাটা খোলা চোখে দেখা যাক। ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করমু। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।’
কাঁটা ফুটিয়েছে এ মন্তব্যই। জাকির হোসেন নামের এক দিনমজুরের এ বক্তব্য উঠে এসেছিল প্রথম আলো অনলাইনে প্রকাশিত ‘সবই ঠিক আছে, কিন্তু সবকিছুর দাম বেশি, এখন জীবন অনেক কঠিন’ প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনটি ২৭ মার্চ তারিখে হালনাগাদ করা। হালনাগাদ বলতে, ফেসবুকে তোলা ছবির কার্ডে একটি বিভ্রান্তির সুযোগ থাকায় সেটি তুলে নেওয়া এবং শিরোনামটি পাল্টে দেওয়া।
ছবির কার্ডে ‘ভুল’ তথ্য, ‘বানোয়াট’ বক্তব্য—এসব প্রতিক্রিয়া অজুহাতমাত্র। অনেকটা যেন, ‘তুই পানি ঘোলা করিস নাই, তোর বাপ করেছে!’ পানি যে আদৌ ঘোলা নয়, সেটাও দেখার বালাই নেই।
কুর্রাতুল-আইন-তাহ্মিনার এমন বক্তব্যকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞ মহল। তারা বলছেন, যেহেতু প্রথম আলো বলছে এটি একটি ‘ভুল’। এবং পরে তা সংশোধন করা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, যে জাকির হোসেনকে ওই প্রতিবেদনে উপস্থাপন করা হয়েছে, তাহলে সেই জাকির হোসেনকে কেন সামনে আনছে না প্রথম আলো? তারা বলছেন, ধরে নিলাম একমাত্র প্রতিবেদক শামসুজ্জামানই দিনমজুর জাকির হোসেনকে চিনতেন বা জানতেন। যেহেতু প্রতিবেদক সামসুজ্জামান কারাগারে ছিলেন, তাই উদ্ধৃতিকারী দিনমজুর জাকির হোসেনকে এতোদিন সামনে আনতে পারেনি প্রথম আলো। কিন্তু এখন-তো সামসুজ্জামান জামিন পেয়েছেন। এখন কেন জাকির হোসেনকে সামনে আনতে পারছে না প্রথম আলো? প্রকৃপক্ষে ওই প্রতিবেদনটি ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বানোয়াট একটি গল্প। যা দেশের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন্ করতেই সরকার বিরোধী কোনো গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের হালচিত্র।
জানা গেছে, সোমবার (৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা ২২ মিনিটে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হন পুলিশের রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলার আসামি প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস। এর আগে দুপুরে শামসুজ্জামানকে ২০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত। এর আগে রোববার (২ এপ্রিল) ওই মামলার প্রধান আসামি প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দেয় হাইকোর্ট। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিনের এ আদেশ দেন। সেই সঙ্গে আদালত বলেন, প্রথম আলোর বিষয়টি আরেকটি বাসন্তী কাহিনী। দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে এটা করা ঠিক হয়েছে কিনা- সেই প্রশ্নও করেন আদালত।
এসব বিষয়ে বিজ্ঞ মহল বলছেন, মূলত জাকির হোসেন নামে যে ব্যক্তিকে ওই উদ্ধৃতিকারী হিসেবে উল্লেখ করেছে প্রথম আলো- সেই ব্যক্তি হচ্ছেন একজন কাল্পনিক ব্যক্তি। সেই ব্যক্তিকে কখনই সামনে আনতে পারবে না প্রথম আলো। এ ঘটনাটি সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত এবং একটি সাজানো নাটক। যে নাটকের প্রযোজক প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান এবং পরিচালনা করেছেন প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস্। এবং এর যে চরিত্র জাকির হোসেন, তিনি একটি কাল্পনিক চেহারা। যে চেহারাতে শিশু সবুজকে উপস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু তার বয়সের কারণে মানানসই না হওয়ায় ধরা খেয়ে গেছে প্রথম আলো।
এখন দেখার বিষয় হচ্ছে, প্রথম আলো ওই প্রতিবেদন সম্পর্কে ‘ভুল’- বলে যে অপব্যাখ্যা দিয়ে আসছে, তার সত্যতা প্রমাণ করতে জাকির হোসেনকে সামনে আনতে পারে কি না? নাকি অন্য আরেক সবুজকে দিয়ে জাকির হোসেন চরিত্রে অভিনয় করায় প্রথম আলো?
মন্তব্য করুন
বুম বাংলাদেশ প্রথম আলো ভুয়া খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিডিনিউজ দুদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী
মন্তব্য করুন
বিটিভি ও দৈনিক সমকাল পত্রিকার শেরপুর জেলা প্রতিনিধি দেবাশীষ ভট্রাচার্যকে সভাপতি ও বাংলা ইনসাইডারের স্টাফ রিপোর্টার প্রতিনিধি মোঃ মেরাজ উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করে শেরপুর প্রেসক্লাবের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি নির্বাচন করা হয়েছে।
এর আগে ক্লাবের বিপুল সংখ্যক সদস্যসহ জেলার প্রায় পৌনে দুইশ সাংবাদিকের উপস্থিতিতে ইতিপূর্বে সম্পূর্ন অনিয়মতান্ত্রিকভাবে গঠিত শেরপুর প্রেসক্লাবের কমিটি ক্লাবের স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম ও ব্যর্থতার অভিযোগে ক্লাবের সদস্যদের দাবীর মুখে শেরপুর প্রেসক্লাবের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করা হয়। এতে ক্লাবের দুই তৃতীয়াংশ সদস্য সর্বসম্মত সমর্থন প্রদান করেন।
এর আগে বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে শেরপুরের প্রবীন সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযুদ্ধা আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় ভার্চুয়ালী যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন সংসদ উপ নেতা ও শেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেরপুর-১ সদর আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব ছানুয়ার হোসেন, শেরপুর-৩ আসনের এমপি এডিএম শহিদুল ইসলাম, শেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমান, শেরপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ রফিকুল ইসলাম, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুন্নাহার কামাল, জেলা জাসদের সভাপতি শেরপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন, শেরপুর সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবিহা জামান শাপলা, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বায়েযীদ হাসানসহ আরো অনেকে।
এসময় বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান সরকার সাংবাদিকদের কল্যাণে নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। স্বাধীনভাবে খবর প্রচার করে আসছে। আমরা শেরপুরের সাংবাদিকদের কল্যাণে সব ধরনের সহযোগিতা করবো। আমি নতুন নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানাই।’
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সদস্যরা উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করে। পরে সর্বসম্মতিক্রমে উপদেষ্টা পরিষদের কাছে দায়িত্ব অর্পন করা হয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করার জন্য। উপদেষ্টা পরিষদ সভাপতি হিসেবে বিটিভি ও দৈনিক সমকালের শেরপুর জেলা প্রতিনিধি দেবাশীষ ভট্রাচার্যকে সভাপতি ও ইনডিপেনডেন্ট টিভির স্টাফ রিপোর্টার মেরাজ উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচন করার জন্য প্রস্তাব করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত করা হয়।
মন্তব্য করুন
প্রথম আলো স্কয়ার গ্রুপ মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ একাত্তর টিভি মিডিয়া স্টার লিমিটেড
মন্তব্য করুন
দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে ২০২৩ সালে ছড়ানো ভুয়া খবর পরিসংখ্যানের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বুম বাংলাদেশ। প্রতিবেদনে প্রকাশিত খবরের মধ্যে রেকর্ড সংখ্যক ৪৪টি ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর চিহ্নিত হয়েছে এবং গণমাধ্যমগুলো তাদের ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে রেটিংয়ের মুখে পড়েছে। আগের তিন বছরের তুলনায় এই সংখ্যা অনেক বেশি।
মিডিয়া স্টার লিমিটেডের মালিকানাধীন প্রথম আলো বিক্রির জন্য মালিকপক্ষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারা প্রথম আলো বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের সাথে কথাবার্তা বলছেন। প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমান নিজেই দু একটি শিল্প গ্রুপের সাথে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়াও মালিকপক্ষের অন্যরা সিমিন রহমান শাজরেহ হক দুজনই প্রথম আলো বিক্রির জন্য বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে আলাপ করছেন বলে জানা গেছে।