দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।
শুক্রবার (১২ মে) আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান সই করা সকাল সাড়ে ৮টার ১০ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোখা শুক্রবার সকাল ৬টা নাগাদ চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
গত সোমবার (৮ মে) সকালে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। ওইদিন মধ্যরাতে এটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। মঙ্গলবার (৯ মে) সন্ধ্যার পর সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আরও শক্তিশালী হয়ে নিম্নচাপ এবং গতকাল বুধবার (১০ মে) সকালে তা গভীর নিম্নচাপে রূপ নেয়। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সেটি আরও শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’য় রূপ নেয়।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবিলায় দেশের উপকূলীয় জেলা-উপজেলাগুলোতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। চট্টগ্রামে প্রায় ১৭ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। একই সঙ্গে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ১ হাজার ৩০টি আশ্রয়কেন্দ্রও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাতে প্রায় পাঁচ লাখের অধিক মানুষকে দুর্যোগকালীন আশ্রয় দেওয়া যাবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
গত বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোনে পরিণত হতে পারে। এরপর এটি ১৩ মে (শনিবার) সন্ধ্যা থেকে ১৪ মে (রোববার) সকালের মধ্যে কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সবদিক থেকে সরকার প্রস্তুতি নিয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি জানমালের ক্ষয়ক্ষতি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পারবো।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবিলায় উপকূলীয় জেলায় ১৪৯টি ফায়ার স্টেশন প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস আ্যন্ড সিভিল ডিফেন্স। গত বুধবার সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিস সদরদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় সরকার সব দিক থেকে প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের উপকূলবর্তী জেলাগুলোর ১৪৯টি ফায়ার স্টেশনও প্রস্তুত রয়েছে। এসব স্টেশনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সতর্ক রাখা হয়েছে।
এছাড়া বরিশালে ৫৪১টি, কক্সবাজারে ৫৭৬টি এবং পটুয়াখালীতে ৭৩০টি সাইক্লোন শেল্টার সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। ভোলায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবিলায় তিন স্তরের প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলার সাত উপজেলায় ৭৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ছয়টি মুজিব কিল্লা প্রস্তুত করা করা হয়েছে। ৯৩টি মেডিকেল টিম, আটটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ১৩ হাজার ৬০০ সিপিপি সদস্য ও প্রায় পাঁচ হাজার রেড ক্রিসেন্ট স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র ক্ষতি থেকে ফসল রক্ষায় বিশেষ কৃষি আবহাওয়া পরামর্শ দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বাংলাদেশ কৃষি আবহাওয়া তথ্য সেবা (বামিস)। গতকাল বৃহস্পতিবার অধিদপ্তরের কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্পের পরিচালক এক বিজ্ঞপ্তিতে উপকূলীয় এলাকার ১৪ জেলার জন্য বিশেষ সতর্কতার কথা জানিয়েছেন। জেলাগুলো হলো- বরিশাল, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজার।
তবে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখার সুপার সাইক্লোনে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা নেই। এটি খুবই ধীরগতিতে এগোচ্ছে। আগামী রোববার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে বাংলাদেশের কক্সবাজার ও মিয়ানমারের উত্তর উপকূল অতিক্রম করতে পারে ‘মোখা’।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
রাজধানীসহ সারা দেশে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ
পরিস্থিতিতে আরো ৭২ ঘণ্টা বা তিন দিন ধরে এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে জানিয়ে হিট অ্যালার্ট
জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রোববার (২৮ এপ্রিল) আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক
বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, দেশের উপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ (২৮ এপ্রিল) হতে
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি
পেতে পারে।
এর আগে গত ১৯ এপ্রিল তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তর
থেকে প্রথমবার তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়। এরপর কয়েক ধাপে তা বাড়ানো হয়।
হিট অ্যালার্ট আবহাওয়া অধিদপ্তর
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সব স্থানে দীর্ঘতম সময়ের তাপদাহ শেষ হওয়ার পর আগামী
মাসে দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সর্বকালের রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ
করেছে আবহাওয়া অফিস।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা বলেন, ‘আমাদের গাণিতিক
মডেল বিশ্লেষণ বলছে, আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশের কিছু অংশে প্রত্যাশিত বৃষ্টিপাত
হলেও মে মাসে দেশে সর্বকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সিলেট অঞ্চল, বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের
কিছু অংশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব চট্টগ্রাম অঞ্চলে কিছু স্বস্তির বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা
থাকলেও এতে সারা দেশে চলমান তাপদাহ হ্রাসের সম্ভাবনা কম।’
দেশে গত ১ এপ্রিল থেকে ২৭ দিন ধরে তাপপ্রবাহের দীর্ঘতম সময় প্রত্যক্ষ
করছে এবং আবহাওয়া অফিস সতর্ক করেছে যে এ অবস্থা পরবর্তী মাসজুড়ে অব্যাহত থাকবে।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক মন্তব্য করেন, ‘আগের তাপদাহের বিপরীতে
এ বছর তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।’ আবহাওয়াবিদ জেবুন্নেসাও একথা সমর্থন করেন।
দৃশ্যত, প্রথমবারের মতো আবহাওয়াবিদরা জলবায়ু বিশেষজ্ঞ এবং অ্যাক্টিভিস্টদের
সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে স্বীকার করেছেন যে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়া অস্বাভাবিক আচরণ
করেছে এবং এর ফলে ধীরে ধীরে তাপদাহের অঞ্চল প্রসারিত হচ্ছে।
তারা বলছেন, তাপদাহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ অংশ এবং আংশিকভাবে পূর্ব
এশিয়ার দেশ ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামকে
প্রভাবিত করেছে।
আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ বুলেটিন অনুসারে, এদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে
৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, পশ্চিমা
লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এই অবস্থায় রোববার
(২৮ এপ্রিল) চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ
বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে
পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক
থাকতে পারে।
চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং রাজশাহী,
পাবনা, সিরাজগঞ্জ, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলাগুলোর ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
দিনাজপুর, রাঙামাটি, চাঁদপুর, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ
এবং ঢাকা ও বরিশাল বিভাগগুলোর ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে
এবং তা অব্যাহত থাকবে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা
প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান
থাকবে।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে
দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে
শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া
প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। সারা দেশে দিন এবং রাতের
তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব
বিরাজমান থাকবে।
সোমবার (৩০ এপ্রিল) দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে
পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র
অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ
অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা
প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান
থাকবে। বর্ধিত পাঁচ দিনের শেষের দিকে দেশে বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে পারে
এবং দিনের তাপমাত্রা কমতে পারে।
মন্তব্য করুন
দেশের সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে
ঝড় বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে এ অঞ্চলে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি
হতে পারে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১টা থেকে পর্যন্ত দেশের
অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম
অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ
অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নৌবন্দরসমূহকে ১ নম্বর
সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে, শনিবার (২৭ এপ্রিল) দেওয়া আগামী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে
বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং টাঙ্গাইল,
বগুড়া,বাগেরহাট, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলাগুলোর ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
এ ছাড়াও মৌলভীবাজার, রাঙামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান
জেলাসহ রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের
ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
অপরদিকে, সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং
রাতের তাপমাত্রা প্রায় একইরকম থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব
বিরাজমান থাকতে পারে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে
দমকা, ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে
শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
পরের দিন সোমবার সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা,
ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে
শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর ঝড়ো বৃষ্টি বজ্র
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এরই মধ্যে তিন বার জারি হয়েছে হিট অ্যালার্ট। তবে আবহাওয়ার পরিস্থিতি ভালো হওয়ার আপাত্ত কোন সম্ভবনা নেই। বর্তমানে এ অবস্থা যে শুধু বাংলাদেশে চলছে তা নয়, এশিয়ার অনেক দেশেই চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ।
বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় তাপমাত্রা এরইমধ্যে ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। ভারতের একাধিক রাজ্যে তীব্র তাপপ্রবাহ দেখা গেছে। একই পরিস্থিতি পাকিস্তানেও।
ইরানে গত বছর সর্বাধিক তাপমাত্রা ছাড়িয়েছিল ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই নিরিখে এ বছরের চলতি মাসের চিত্র বিশেষ আশার আলো দেখাতে পারছে না। দেখে নেওয়া যাক বাংলাদেশ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার সেই সমস্ত শহর যার তাপমাত্রা এখন সর্বাধিক।
ভারত: ভারতের ওড়িশার বারিপদা ও পশ্চিমবঙ্গের পানাগড়ে এরই মধ্যে ৪৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রাজধানী দিল্লিতে তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস না থাকলেও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি হবে আগামী তিনদিনে। গত এক সপ্তাহে ওই তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি থেকে ৩৯ ডিগ্রির মধ্যে।
হরিয়ানাতেও তাপমাত্রার দিল্লির কাছাকাছি রয়েছে। বিহার, পূর্ব মধ্য প্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং পন্ডিচেরির একাধিক অঞ্চলসহ পূর্ব উত্তর প্রদেশের বিচ্ছিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৪-৬ ডিগ্রি বেশি রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
পাকিস্তান: সিন্ধ প্রদেশের একাধিক অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। সিন্ধের নওয়াব শাহতে গত এক সপ্তাহে সর্বাধিক তাপমাত্রা ছুঁয়েছে ৪২ ডিগ্রি, মহেঞ্জোদারোতে তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। লাহোরে গত এক সপ্তাহে সর্বাধিক তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে।
উষ্ণতম শহরের তালিকায় বেলুচিস্তানের তুরবত অঞ্চলের নাম অনেক আগেই নথিভুক্ত হয়েছে। সেখানে গত এক সপ্তাহে তাপমাত্রা ছুঁয়েছে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বেলুচিস্তানের ন্নকুন্দিতে ৩৭ ডিগ্রি এবং সিব্বিতে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
অন্যদিকে করাচিতে চলতি মাসে সর্বাধিক তাপমাত্রা রয়েছে ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। গত এক সপ্তাহে করাচির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মালদ্বীপ: চলতি মাসে মালের গড় তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত এক সপ্তাহে সর্বাধিক তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি।
মালদ্বীপের আদ্দু অ্যাটলের দক্ষিণতম দ্বীপ গান-এ গত এক সপ্তাহে নথিভুক্ত করা তথ্য বলছে সেখানে সর্বাধিক তাপমাত্রা রয়েছে ৩২ ডিগ্রি থেকে ৩৩ ডিগ্রির মধ্যে। হিথাধুর পরে গান হলো দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ। মালদ্বীপের ফুভাহমুলাহতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গত এক সপ্তাহে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মালদ্বীপের আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী ২০২৩-এর মে মাস ছিল সেখানকার উষ্ণতম মাস।
নেপাল: চলতি মাসে নেপালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকছে। রাজধানী কাঠমান্ডুর গড় তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানা গেছে। চলতি সপ্তাহে কাঠমান্ডুর বাগমতি অঞ্চলের তাপমাত্রা রয়েছে ৩০-৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
অন্যদিকে নেপালের লুম্বিনী অঞ্চলে অবস্থিত গৌতম বুদ্ধ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত এক সপ্তাহে রেকর্ড করা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে, বিরাটনগর বিমানবন্দর এলাকায় গত এক সপ্তাহে তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করেছে ৩৫ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
নেপালের জ্বালানি, জলসম্পদ ও সেচ মন্ত্রণালয়ের ২০২৩ সালের জলবায়ু রিপোর্ট অনুযায়ী, নেপালের সারা বছরের স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ০.৬ শতাংশ বেড়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সে বছর তরাইয়ের নাওয়ালপারাসির দামকাউলি রেকর্ড ভাঙা তাপমাত্রা (৪৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) পর্যবেক্ষণ করা গিয়েছে যা গত ৪৪ বছরে দেখা যায়নি।
শ্রীলঙ্কা: চলতি মাসে শ্রীলঙ্কার গড় তাপমাত্রা ২৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কলম্বোতে এ সপ্তাহে সর্বাধিক তাপমাত্রা রয়েছে ৩৩ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
শ্রীলঙ্কার ঐতিহাসিক শহর অনুরাধাপুরার বিমানবন্দর অঞ্চলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা গিয়েছে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত এক সপ্তাহে সাবারাগামুওয়া প্রদেশের রাজধানী শহর রত্নপুরায় সবচেয়ে বেশি উষ্ণতা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শ্রীলঙ্কার মধ্যাঞ্চল প্রদেশে অবস্থিত অন্যতম বৃহত্তম শহর ক্যান্ডিতে গত এক সপ্তাহে যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করা গিয়েছে তা হল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এরই মধ্যে তিন বার জারি হয়েছে হিট অ্যালার্ট। তবে আবহাওয়ার পরিস্থিতি ভালো হওয়ার আপাত্ত কোন সম্ভবনা নেই। বর্তমানে এ অবস্থা যে শুধু বাংলাদেশে চলছে তা নয়, এশিয়ার অনেক দেশেই চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় তাপমাত্রা এরইমধ্যে ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। ভারতের একাধিক রাজ্যে তীব্র তাপপ্রবাহ দেখা গেছে। একই পরিস্থিতি পাকিস্তানেও। ইরানে গত বছর সর্বাধিক তাপমাত্রা ছাড়িয়েছিল ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই নিরিখে এ বছরের চলতি মাসের চিত্র বিশেষ আশার আলো দেখাতে পারছে না। দেখে নেওয়া যাক বাংলাদেশ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার সেই সমস্ত শহর যার তাপমাত্রা এখন সর্বাধিক।