ইনসাইড ইকোনমি

বাজেটে আসছে সর্বজনীন পেনশনের ঘোষণা, বাধ্যতামূলক ২০২৮ সালের পর

প্রকাশ: ০৯:৩৪ এএম, ৩০ মে, ২০২৩


Thumbnail

সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি চালুর ব্যাপারে সরকার এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। গত জানুয়ারিতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩ পাস হয়েছে। আর ফেব্রুয়ারিতে হয়েছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রজ্ঞাপন। তবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ এখনো গঠিত হয়নি।

কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, সদস্যসহ ১৬ সদস্যের যে পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হওয়ার কথা, তা–ও হয়নি এখনো। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ কর্তৃপক্ষের জন্য একটি অফিস খুঁজে পেতেও ব্যর্থ হয়েছে। তহবিল, কর্মসূচি ইত্যাদির জন্য বিধিমালা তৈরি হওয়া দরকার। সে কাজও হয়নি।

তবু বর্তমান মেয়াদের শেষ বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল পরীক্ষামূলকভাবে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি চালুর ঘোষণা দেবেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রবাসী, বেসরকারি প্রাতিষ্ঠানিক চাকরিজীবী, শ্রমিকশ্রেণি, অপ্রাতিষ্ঠানিক ব্যক্তি, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিভুক্ত জনগোষ্ঠী ও শিক্ষার্থী—তাঁদের জন্য আলাদা ছয় ধরনের কর্মসূচি করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ বিভাগ। অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, কাজটি অনেক জটিল। ২০২৮ সালের আগে সর্বজনীন পেনশন বাধ্যতামূলকভাবে শুরু করার বাস্তবতা নেই। তার আগপর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি ঐচ্ছিক হিসেবে চলবে। আগামী অর্থবছরে এ ব্যাপারে কোনো বরাদ্দও থাকছে না।

আইনেও বলা আছে, সরকার যতক্ষণ এটিকে সব নাগরিকের জন্য বাধ্যতামূলক না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সর্বজনীন পেনশন ঐচ্ছিক থাকবে। সর্বজনীন পেনশনে ১৮ বছর বা এর বেশি বয়স থেকে ৫০ বছর বয়সী সব বাংলাদেশি নাগরিক অংশ নিতে পারবেন। পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরাও বিশেষ বিবেচনায় সুযোগ পাবেন। তবে আপাতত সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীরা সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থার আওতাবহির্ভূত থাকবেন।

বর্তমানে সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মচারীরা অবসরের পর পেনশন-সুবিধা পান। আইনে বলা হয়েছে, সর্বজনীন পেনশন–পদ্ধতিতে সরকারি, আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও অংশ নিতে পারবে। এ ক্ষেত্রে কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের চাঁদার অংশ নির্ধারণ করবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ।

তবে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত সরকারি ও আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীরা সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত থাকবেন না। চাঁদাদাতাকে ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিতে হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে জাতীয়ভাবে সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থা চালু করার ব্যাপারে নির্বাচনী ইশতেহারে অঙ্গীকার করেছিলেন। প্রয়াত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থা চালুর জন্য ২০১৭-১৮ সালের বাজেট বক্তব্যে একটি রূপরেখা দিয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ‘সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থা’ চালুর বিষয়ে একটি কৌশলপত্র প্রণয়ন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করে অর্থ বিভাগ। কৌশলপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর তুলনায় কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেশি থাকায় সর্বজনীন পেনশন–পদ্ধতি শুরু করার এটাই প্রকৃত সময়। তারপরই এ আলোচনা গতি পায়।

জানা গেছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আনফান্ডেড, ফান্ডেড, ডিফাইন্ড বেনিফিটস (ডিবি), ডিফাইন্ড কন্ট্রিবিউশনস (ডিসি)—এই চার ধরনের পেনশন–পদ্ধতি চালু রয়েছে। আনফান্ডেড পেনশনে কোনো কর্মীকে চাঁদা দিতে হয় না বলে এটির জন্য কোনো তহবিলও সৃষ্টি হয় না। ফান্ডেড পেনশনে কর্মী বা প্রতিষ্ঠান বা উভয়কেই চাঁদা দিতে হয়। ডিবি পদ্ধতি সরকারি কর্মচারীদের জন্য। ডিসি পদ্ধতিতে কর্মী বা প্রতিষ্ঠান থেকে একটি তহবিলে অর্থ জমা হয় এবং সেখান থেকেই ব্যয় নির্বাহ করা হয়। কোনো কোনো দেশে অবশ্য বিমা কোম্পানির মাধ্যমেও পেনশনব্যবস্থা চালু আছে।

দেশে দেশে সর্বজনীন পেনশন

অর্থ বিভাগের তৈরি করা কৌশলপত্রে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী ভারতে ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে জাতীয় পেনশনব্যবস্থা (এনপিএস) চালু করা হয়। শুরুতে সামরিক বিভাগ ছাড়া শুধু কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের জন্য চালু করা হয় এটি। গ্রাহক ও নিয়োগকর্তা বা সরকার নির্দিষ্ট পরিমাণে চাঁদা দেয় এনপিএসে, যা পরে লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করা হয়। এতে ৬০ বছর বয়সে অবসরে যাওয়ার সময় ৬০ শতাংশ অর্থ নগদে তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়। বাকি ৪০ শতাংশ অর্থ পেনশন প্রদানের সুযোগ তৈরি করা হয়।

ভারত ২০০৯ সালের ১ মে দেশের ভেতরে ও বাইরে থাকা ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী সব নাগরিকের জন্য পেনশনব্যবস্থা উন্মুক্ত করে। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের কর্মীদেরও পেনশন-সুবিধায় অংশগ্রহণের ব্যবস্থা রাখা হয়। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মজীবী এবং নিম্ন আয়ের নাগরিকদের জন্য ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে একটি এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে আরেকটি বিশেষ প্রকল্প হাতে নেয় ভারত। মাঝখানে ২০১৩ সালে সরকারি ব্যবস্থায় এনপিএস চালুর জন্য পেনশন তহবিল নিয়ন্ত্রক ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (পিএফআরডিএ) প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ ছাড়া দেশটিতে বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও বিধবাদের জন্য সামাজিক পেনশনব্যবস্থাও চালু রয়েছে।

অর্থ বিভাগের কৌশলপত্রে বলা হয়েছে, চীনে মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ কর্মক্ষম। দেশটিতে তিন ধরনের পেনশনব্যবস্থা চালু রয়েছে। শহরে কর্মরত ব্যক্তিদের জন্য আরবান পেনশন সিস্টেম (ইউপিএস), সরকারি ও আধা সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সিভিল ও পাবলিক সার্ভিস পেনশন সিস্টেম (সিপিএসপিএস) এবং গ্রামে বেসরকারি চাকরিতে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য রুরাল পেনশন সিস্টেম (আরপিএস) চালু রয়েছে দেশটিতে। ইউপিএস বাধ্যতামূলক ও ঐচ্ছিক—দুই ধরনেরই রয়েছে। এদিকে সরকারি ক্ষেত্রে ডিবি এবং গ্রাম ও শহুরেদের ক্ষেত্রে ডিসি পদ্ধতি চালু রয়েছে চীনে।

ইউপিএসে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্মচারীর মূল বেতনের ২০ শতাংশ দেয়। আর কর্মচারী দেন তাঁর মূল বেতনের ৮ শতাংশ। আরপিএস সম্পূর্ণ অংশগ্রহণমূলক। এতে সরকার ও ব্যক্তি উভয় অংশই নির্দিষ্ট হারে অর্থ জমা করে, যা থেকে মাসিক পেনশন দেওয়া হয়। সিপিএসপিএস সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত হয়।

যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয়, পেশাগত, ব্যক্তিগত ও আনফান্ডেড—এই চার ধরনের পেনশনব্যবস্থা চালু রয়েছে বলে কৌশলপত্রে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, রাষ্ট্রীয় পেনশনেও রয়েছে রাষ্ট্রীয় অবসর ভাতা, সম্পূরক পেনশন ও পেনশন ক্রেডিট নামক তিনটি অংশ। রাষ্ট্রীয় অবসর ভাতার আওতায় যাঁদের বার্ষিক আয় ৯ হাজার ৫০০ পাউন্ডের বেশি, তাঁদের বাধ্যতামূলক চাঁদা দিতে হয় জাতীয় বিমায়। যাঁদের আয় রাষ্ট্র নির্ধারিত নিম্ন আয়সীমার নিচে, তাঁদের দেওয়া হয় সম্পূরক পেনশন। এটা ঐচ্ছিক। আর পেনশন ক্রেডিট হচ্ছে ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য, যাঁদের আয় কম।

যুক্তরাজ্যে পেশাগত পেনশন হচ্ছে কর্মীর বেতন থেকে ৩ শতাংশ এবং সরকার বা কোম্পানি থেকে ৫ শতাংশ জমা হওয়ার পদ্ধতি। এতে বিনিয়োগ করে যে মুনাফা হয়, সেই মুনাফার টাকাসহ পেনশন দেওয়া হয়। এ ছাড়া আনফান্ডেড পদ্ধতিতে পেনশন দেওয়া হয় সব সামরিক, সরকারি কর্মচারী এবং শিক্ষকদের। আর ব্যক্তিগত পেনশন হচ্ছে বিমা কোম্পানির মাধ্যমে পরিচালিত একটি পদ্ধতি।

আর যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সামাজিক নিরাপত্তা, চাকরিভিত্তিক, আনফান্ডেড এবং ব্যক্তিগত পেনশন। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সামাজিক নিরাপত্তাপদ্ধতির আওতায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ৯৪ শতাংশ কর্মক্ষম লোক। গ্রাহকের কর ও ট্রাস্ট ফান্ডে জমা হওয়া অর্থ বিনিয়োগের মুনাফা থেকে এ পেনশন দেওয়া হয়। এ পদ্ধতিতে বছরে চারবার ১ হাজার ৪১০ ডলার করে জমা, অর্থাৎ ১০ বছরে ৫৬ হাজার ৬০০ ডলার জমা হলেই পেনশনের প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করা যায়। চাকরিভিত্তিক পেনশনের আওতায় কর্মী যা দেবেন, তার সমপরিমাণ দেবে সরকার বা কোম্পানি। এ ছাড়া আনফান্ডেড পদ্ধতি ও ব্যক্তিগত পেনশনব্যবস্থা যুক্তরাজ্যের মতোই।

অর্থ বিভাগের তৈরি করা কৌশলপত্রে আরও বলা হয়েছে, উন্নত দেশ হওয়ায় অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে বাজেট থেকে সবাইকে পেনশন দেওয়া হয়। জাপান, হংকং, কোরিয়া ও তাইওয়ানের পরিস্থিতিও উন্নত দেশগুলোর মতোই। থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনাম পেনশন সংস্কার করছে। ফিলিপাইন, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াও অংশগ্রহণমূলক পেনশন–পদ্ধতি শুরু করেছে।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

একীভূত হতে নারাজ ন্যাশনাল ব্যাংক

প্রকাশ: ০৭:৫৬ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

কোনো ব্যাংকের সঙ্গে এখনই একীভূত না হয়ে বরং নিজেরাই সবল হতে চায় বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংক। গতকাল শনিবার (২৭ এপ্রিল) ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। 

ন্যাশনাল ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, আগে থেকে কোনো ধরনের আলোচনা না করে হঠাৎ গত ৯ এপ্রিল ইউসিবির সঙ্গে একীভূত হওয়ার কথা বলা হয়। ঈদের আগে শেষ কর্মদিবসে এ সিদ্ধান্ত জেনে আমানতকারী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে অনেকে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিতে শুরু করেন। তবে চাপিয়ে দেওয়া এ সিদ্ধান্ত পরিচালনা পর্ষদে অনুমোদন হয়নি। ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য ঋণ আদায় জোরদার করবে। বিশেষ করে শীর্ষ খেলাপিদের থেকে আদায়ে ক্রাশ কর্মসূচি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ জন্য কর্মকর্তাদের বিভিন্ন স্থরে ঋণ আদায়ের একটি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেওয়া হবে।

ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারপারসন পারভীন হক সিকদার এমপি বলেন,  অন্য কোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার পরিকল্পনা কখনও তারা নেননি। একীভূত হওয়ার ইস্যুতে পরিচালক বা ব্যবস্থাপনার কেউ জানেনও না। 

তিনি বলেন, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৪১ বছরের ইতিহাস রয়েছে। কিছু সমস্যা দেখা দিলেও সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ ভেঙ্গে নতুনভাবে গঠন করে দিয়েছে। সবার চেষ্টায় দ্রুততম সময়ে এই ব্যাংক আবার দেশের এক নম্বর ব্যাংকে পরিণত হবে।

উল্লেখ্য, গত ৯ এপ্রিল বেসরকারি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবিএল) সঙ্গে একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার সভাপতিত্বে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ব্যাংক একীভূত   ন্যাশনাল ব্যাংক   বাংলাদেশ ব্যাংক   ইউসিবি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

ছয় দিনে ৫ বার স্বর্ণের দাম কমলো

প্রকাশ: ০৬:১৯ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দেশের বাজারে গত ছয় দিনে টানা পাঁচ বার কমলো স্বর্ণের দাম। পঞ্চম দফায় স্বর্ণের দাম কমেছে ৩১৫ টাকা। স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা সোনা) দাম কমার প্রেক্ষিতে এক সপ্তাহ ব্যবধানে পাঁচ দফায় ভালো মানের স্বর্ণের দাম কমেছে। এ সময়ে ভালো মানের স্বর্ণ ভরিতে ৬ হাজার ৮১২ টাকা কমেছে।

রোববার (২৮ এপ্রিল) বিকেল ৪টা থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। একইদিন বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিংয়ের বৈঠকে নতুন এ দাম নির্ধারণ হয়। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

নতুন মূল্য অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৩১৫ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৩১৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৩০৪ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২৫৬ টাকা কমিয়ে ৯২ হাজার ১৪৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ২১০ টাকা কমিয়ে ৭৬ হাজার ৬৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে গতকাল ২৭ এপ্রিল এবং তার আগে ২৫ এপ্রিল, ২৪ এপ্রিল ও ২৩ এপ্রিল চার দফা স্বর্ণের দাম কমানো হয়। ২৭ এপ্রিল ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৬৩০ টাকা, ২৫ এপ্রিল ৬৩০ টাকা, ২৪ এপ্রিল ২ হাজার ৯৯ টাকা এবং ২৩ এপ্রিল ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমানো হয়।

স্বর্ণ   বাজুস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

২৬ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬৮ কোটি ডলার

প্রকাশ: ০৬:২৪ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যানুযায়ী, চলতি মাসের প্রথম ২৬ দিনে দেশে এসেছে ১৬৮ কোটি ৯ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ৬ কোটি ৪৬ লাখ ডলার দেশে এসেছে। 

রোববার (২৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

এতে বলা হয়, এপ্রিল মাসের প্রথম ২৬ দিনে দেশে এসেছে ১৬৮ কোটি ৯ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর মার্চ মাসের প্রথম ২৬ দিনে এসেছিল ১৬২ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। সেই হিসাব অনুযায়ী, চলতি মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। 

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এপ্রিলের প্রথম ২৬ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৬ কোটি ১ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এ ছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৯৮ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৪২ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫৩ লাখ ৬০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।

বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, এপ্রিলের ২০ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ৩৯ কোটি ৯৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার। ১৩ থেকে ১৯ এপ্রিল দেশে এসেছে ৪০ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। এছাড়া ৬ থেকে ১২ এপ্রিলের মধ্যে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৪২ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার। আর ১ থেকে ৫ এপ্রিল দেশে এসেছে ৪৫ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।


রেমিট্যান্স   ডলার   বাংলাদেশ ব্যাংক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের চাপ বাজেটে

প্রকাশ: ০১:০১ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বর্তমানে দেশের অর্থনীতিতে সাড়ে ১১ লাখ কোটি টাকার বিদেশি ঋণের চাপ রয়েছে। নির্দিষ্ট সময় শেষে এই ঋণের সুদসহ পরিশোধের বিধান রয়েছে। এই ঋণের একটা অংশ প্রতি মাসে সরকার এখন সুদ-আসলে পরিশোধও করছে। তবে বিদেশি ঋণে নির্দিষ্ট সময়ের বাধ্যবাধকতা থাকায় দিন যত পার হচ্ছে, এ ঋণ পরিশোধে সরকারের চাপও তত বাড়ছে।

চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) গত ৯ মাসেই বিদেশি ঋণের সুদ-আসল মিলিয়ে মোট ২৮ হাজার ২৮১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। এর মধ্যে আসল ১৬ হাজার ৬৭৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। বাকি ১১ হাজার ৬০১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা সুদ বাবদ দিতে হয়েছে।

যদিও চলতি অর্থবছরের বাজেটে বিদেশি ঋণের আসল ২৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা এবং সুদ পরিশোধ বাবদ ১২ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা মিলিয়ে মোট ৩৭ হাজার ৭৬ কোটি টাকা পরিশোধের লক্ষ্য নির্ধারণ করে সরকার। এর অর্থ হচ্ছে, বাজেটে বৈদেশিক ঋণের দায় খাতে রাখা বরাদ্দের অর্থ দিয়ে চলতি অর্থবছরের বাকি ব্যয় সংকুলান হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রমতে, এ কারণে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে সরকার ১৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকায় উন্নীত করেছে। চলতি অর্থবছরের প্রাথমিক বাজেটে বিদেশি ঋণের জন্য ১২ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। অর্থাৎ সংশোধিত বাজেটে সেটি ৩ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সাধারণত বাংলাদেশের মতো কল্যাণমূলক উন্নয়নশীল দেশে সব সরকারেরই জনপ্রতিশ্রুতি থাকে। এ কারণে উন্নয়নের চাহিদাও বেশি হয়। বিশেষ করে এই বাস্তবতায় এ ধরনের দেশগুলোয় রাজনৈতিক সরকারের বড় বৈশিষ্ট্য হলো, কম আয়ে বেশি উন্নয়নের চেষ্টা। ফলে সরকার বিভিন্ন সময় উন্নয়ন চাহিদা পূরণে বাড়তি ব্যয়ের সঙ্গে আয়ের তাল মেলাতে প্রতি বছর যে বাজেট তৈরি করছে, তার ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ খাতের বাইরে বৈদেশিক বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ করে থাকে। দেশে সরকারের কাঁধে এখন যে ঋণের বোঝা, এটি তারই পুঞ্জীভূত আকার। যার ঋণ এখন প্রতি মাসেই সুদ-আসলে শোধ দিতে হচ্ছে। তবে বিদেশি ঋণে সুদ তুলনামূলক কম, পরিশোধের গ্রেস পিরিয়ডও বেশি। এ কারণে সরকার বিদেশি ঋণেই ঝুঁকছে।

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে বিদেশি ঋণ পরিশোধে ব্যয় করেছিল ১৬ হাজার ৯৬৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে আসল ছিল ১২ হাজার ২০২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আর সুদ পরিশোধ করতে হয়েছিল ৪ হাজার ৭৬৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরের যেখানে ৪ হাজার ৭৬৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা সুদ দিতে হয়েছিল, সেখানে চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত সুদ পরিশোধ করতে হয়েছে তার প্রায় আড়াই গুণ।

সংশোধিত বাজেটে বিদেশি ঋণের দায় খাতে এই অতিরিক্ত বরাদ্দের কারণ জানতে চাইলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, বিদেশি ঋণের প্রায় ৪৫ শতাংশই নেওয়া এসডিআর (স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস) মুদ্রায়, যা পরিশোধ করতে হয় সাধারণত মার্কিন ডলার কিংবা যুক্তরাজ্যের পাউন্ড স্টার্লিংয়ে; কিন্তু সম্প্রতি বৈশ্বিক অস্থিরতার কারণে এখন এই এসডিআর মুদ্রার সঙ্গে ডলার ও পাউন্ডের বিনিময় হার, ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় হারের তারতম্য এবং ইউরোবর ও সোফর হার অনেক বেড়ে গেছে। ফলে বৈদেশিক ঋণ ও ঋণের ওপর সুদ পরিশোধের পরিমাণও আগের তুলনায় বেড়েছে।

অর্থাৎ ডলার ও পাউন্ডের তুলনায় টাকার অবমূল্যায়নের কারণে একই পরিমাণ বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে আগের তুলনায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে। এই বাড়তি ব্যয়ই এখন বাজেট ব্যবস্থাপনায় সরকারের বড় চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা ছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেশে বেশ কিছু মেগা প্রকল্পের বাস্তবায়ন হয়েছে, কিছু বাস্তবায়নাধীনও রয়েছে। যেগুলোর গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়ায় এখন তার অর্থায়নকৃত ঋণের কিস্তি পরিশোধ এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। এতে করেও নতুন-পুরোনো মিলে সরকারের কাঁধে বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধের চাপও আগের তুলনায় বেড়েছে। এই বাস্তবতায়ও বাজেট সংশোধনীতে এ খাতের সুদ পরিশোধের অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।

এদিকে এই বৈদেশিক উৎসের ঋণ সরকারের নিজস্ব আয় থেকে পরিশোধ করার কথা। কিন্তু দেশীয় বাস্তবতায় সরকারের আয় কম। আবার আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রও কম। একমাত্র ভরসা হলো রাজস্ব খাত। সেখান থেকেও নানা কারণে কাঙ্ক্ষিত আয় আসছে না। যে কারণে সরকার নিজের আয় থেকে আংশিক পরিশোধ করে বাকিটা ঋণ নিয়েই ঋণের দায় শোধের চেষ্টা করছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বেসরকারি আর্থিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সমস্যা হচ্ছে, সরকার অভ্যন্তরীণ উৎসের আয় বাড়াতে পারছে না। আবার যে আয় করছে, তার বড় একটা অংশ ভর্তুকিতেই খরচ করে ফেলছে। আবার রাজস্ব আয় বাড়ানোর যে সংস্কার কাজ তারও গতি বাড়াতে পারছে না। এ বাস্তবতায় যে বিদেশি ঋণ আসছে, তা প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজে কিছুটা ধীরগতির কারণে হয়তো সেটি বিদেশি ঋণের সুদাসল পরিশোধ করে থাকতে পারে।

তবে এতে করে বিদেশি ঋণের আকার যেমন বাড়বে, তেমনি সুদ পরিশোধ খাতেও বড় আকারের ব্যয় করতে হবে। এর থেকে বেরিয়ে সরকারের উচিত বাজেটে বিভিন্ন খাতে যে রাজস্ব ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে, তা উঠিয়ে সরকারের রাজকোষ সমৃদ্ধ করা। এতে অন্তত প্রতি বছর যে মোটা অঙ্কের সুদ ডলারে পরিশোধ হচ্ছে, সেটি সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।


বৈদেশিক ঋণ   বাজেট   অর্থবছর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

অর্থনীতিতে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দেশের অর্থনীতি ক্রমশ নাজুক ঋণনির্ভর এবং সঙ্কটজনক অবস্থায় যাচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সরকার বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বটে তবে এখন পর্যন্ত কোনও আশার আলো দেখা যায়নি। অর্থনৈতিক মোকাবিলা করাই এখন সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় রকম চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

সরকারের পক্ষ থেকেও অর্থনৈতিক সংকটের কথা অস্বীকার করা হচ্ছে না। বরং অর্থনীতিতে ৭টি বিপদ সংকেতকে সরকারের পক্ষ থেকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর এই বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলেও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। আগামী বাজেটে তার প্রতিফলন দেখা যাবে বলেও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

অর্থনীতির যে সাতটি বিপদ সংকেত সুস্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা হলো-

.ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম: ব্যাংকিং খাতে একটি বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হচ্ছে। জন আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে ব্যাংকিং খাতে। বিশেষ করে ব্যাংক একীভূত করার কৌশলটি নিয়ে বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন উঠেছে। ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে সেটি নিয়ে কথা উঠছে এবং খেলাপিদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। ব্যাংকিং খাতের এই নাজুক পরিস্থিতি অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের বিপদের কারণ হতে পারে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

.ঋণ নির্ভরতা বাড়ছে: বাংলাদেশের ঋণ নির্ভরতা বাড়ছে‌। সুদ এবং ঋণের দায় মেটানোর জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। যার ফলে সামনের দিনগুলোতে বৈদেশিক রিজার্ভের ওপর বড় ধরনের চাপ বাড়বে। এখনই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে নীচে নেমে গেছে এবং রিজার্ভ বাড়ানোর কোনও উদ্যোগই এখন পর্যন্ত সফল হচ্ছে না। সামনের দিনগুলোতে ঋণ এবং সুদ মেটাতে সরকারকে হিমশিম খেতে হবে বলেও কোনও কোনও অর্থনীতিবিদ মনে করছেন। অর্থনীতিতে এই বিদেশি ঋণ পরিশোধ এখন সরকারের জন্য একটি বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও অর্থনীতিবিদরা মনে করেন। সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে যে, সামনের দিনগুলোতে ঋণের দায় মেটানোটা সরকারের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ।

. মুদ্রাস্ফীতি: মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে। গত ১ বছরের গড় মুদ্রা ১০ এর কাছাকাছি। এর ফলে, জিনিসপত্রের দাম সীমাহীন ভাবে বাড়ছে। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে এবং এর ফলে জন অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে।

. প্রবাসী আয় কমে যাওয়া: প্রবাসী আয় যে ভাবে বাড়ার কথা ছিল সেভাবে প্রবাসী আয়ে বাড়ছে না। প্রবাসী আয় কমে যাওয়াটা সরকারের জন্য একটা বড় ধরনের অস্বস্তির কারণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

. অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের হতাশাজনক চিত্র: অর্থনৈতিক সঙ্কট মেটানোর জন্য অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বাড়ানোর উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। আর এই অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রেও তেমন কোনও আশাজনক বাস্তবতা দেখা যাচ্ছে না। অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এখন পর্যন্ত সফল হতে পারেনি বলেই অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন।

. দুর্নীতি: একদিকে যেমন অর্থনৈতিক সংকট বেড়ে চলেছে অন্যদিকে, দুর্নীতিও কমছে না। ফলে কোন কিছুতেই অর্থনৈতিক সংকট কমিয়ে আনার মত কোন বাস্তব পরিস্থিতি থাকছে না বলেই মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।

. বিদ্যুৎ এবং রপ্তানি আয়ের উপর আঘাত: বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি সংকট দেখা দিলে রপ্তানি আয়ের উপরেও একধরনের সমস্যা তৈরি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, আমদানি নির্ভর জ্বালানি খাত সামনের দিনগুলোতে অর্থনীতিতে, এবং রপ্তানি আয়ের উপর বড় ধরনের প্রভাব পরবে বলেই মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। সব কিছু মিলিয়ে এই বিপদগুলোকে কাটিয়ে ওঠায় সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ।


অর্থনীতি   মুদ্রাস্ফীতি   প্রবাসী আয়   দুর্নীতি   বাংলাদেশ ব্যাংক  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন