মার্কিন ভিসানীতির পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দারস্ত হচ্ছে আওয়ামী লীগ বিএনপি দুটি রাজনৈতিক দল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেকে প্রভু মেনে প্রকারন্তে তার কাছেই অভিযোগের পসার সাজাচ্ছে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল। এই দুটি রাজনৈতিক দল পরস্পরের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো আনছে তাতে মূলত ভিসানীতি লঙ্ঘনের অভিযোগটি মুখ্য করে আনা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ
এ পর্যন্ত ১৬টি অভিযোগ দিয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি নেতারা অভিযোগ দিয়েছে ৩২টি। আওয়ামী
লীগের পক্ষ থেকে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা আরাফাত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনের
কাছে ই-মেইল পাঠিয়ে এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগগুলো উত্থাপন করেছেন। এই অভিযোগে তিনি মার্কিন
ভিসানীতি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে বিএনপি নেতারা কি কি কর্মকান্ড করছেন তার ফিরিস্তি তুলে
ধরেছেন। তিনি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বেশ কয়েকজন নেতার বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ
পাঠিয়ে বলেছেন যে, তারা নির্বাচন হতে দেবেনা বলে উচ্চারন করেছেন এবং নির্বাচন বানচাল
করার জন্য কাজ করছেন। এটা নতুন মার্কিন ভিসানীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
উল্লেখ্য যে,
গত ২৪ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন যেন সুষ্ঠু অবাধ
নিরপেক্ষ হয় সেজন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করা হয়েছে। এই নতুন ভিসানীতিতে মার্কিন ইমিগ্রেশন
অ্যাক্টের ২১২(এ)(৩)(সি)(৩সি) ধারা প্রয়োগ করা হবে বলে বলা হয়েছে। এই ধারা অনুযায়ী
কোন ব্যক্তি যদি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধাগ্রস্থ করতে চায়, ভোট করচুপি করতে চায়,
নির্বাচনের ফলাফলকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় তাহলে সেক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাকে
ভিসা দেবে না। একইভাবে ওই ধারায় বলে হয়েছে যে, জনগণের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা দান
করা, গণতান্ত্রিক চর্চায় বাধা দান করার ক্ষেত্রেও ভিসানীতি প্রয়োগ করা হবে এবং যারা
এতে বাধা প্রদান করবে তাদের ভিসা দেয়া হবে না। মার্কিন নীতিমালা অনুযায়ী যেকোন সংশ্লিষ্ট
ব্যক্তি এই ভিসানীতির আওতায় পড়বে এবং তাকে ভিসা প্রদানে অপারগতা জানাতে পারবে মার্কিন
প্রশাসন।
এই নীতিমালার
দ্বিতীয় অংশ দিয়ে অভিযোগের পসার সাজাচ্ছে বিএনপি। বিএনপি এ পর্যন্ত ৩২টি অভিযোগ পাঠিয়েছে।
এর মধ্যে নিপুন রায় চৌধুরী অভিযোগ করেছেন যে, তিনি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চেয়েছিলেন
এবং সেখানে তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাধা দিয়েছে। একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশে
বাধাদান ভিসানীতির লঙ্ঘন।
বিএনপি’র দুই
নেতা আমানউল্লাহ আমান এবং ইকবাল মাহমুদ টুকুর বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ নিয়েও বিএনপি’র পক্ষ
থেকে করা হয়েছে। তাদেরকে বলা হয়েছে যে, ‘ফরমায়েশি রায় দিয়ে নির্বাচনে আযোগ্য করার জন্যই
এই ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে যা মার্কিন ভিসানীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।‘ এছাড়া পটুয়াখালীসহ
বিভিন্ন স্থানে বিএনপি’র সমাবেশে বাধাদানের ঘটনাকেও অভিযোগ আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। যেখানে বলা হচ্ছে যে, শান্তিপূর্ণ সমাবেশগুলোকে সরকার বাধা দিচ্ছে।
যার ফলে বিরোধীমত দমন করা হচ্ছে এবং আবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনকে বাধা প্রদান করা
হচ্ছে।
এই অভিযোগ পাল্টা
অভিযোগের ফলে বাংলাদেশের রাজনীর নিয়ন্ত্রকে পরিণত হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু
প্রশ্ন হল এরকম অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ বিএনপি’র কি লাভ হবে। নাকি শুধুমাত্র
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশের রাজনীতিতে আরও শক্তিশালী হবে?
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।