শেষ পর্যন্ত
হাসি ফুটেছে বরিশাল আওয়ামী লীগে। বরিশালে আওয়ামী লীগে যে দ্বন্দ্ব ও বিভক্তি ছিল তা
কিছুটা হলেও হ্রস পেয়েছে খোকন সেরনিয়াবাতকে
বড় ভাই আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ’র জড়িয়ে ধরার
মধ্য দিয়ে।
বরিশাল সিটি
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নির্বাচনী টিমের ২য় বিশেষ বর্ধিত সভায় নৌকা
প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ্ খোকন সেরনিয়াবাতকে দীর্ঘ দিন পর কাছে পেয়ে বুকে জড়িয়ে ধরলেন
বড় ভাই। শুধু তাই
নয় বর্ধিত সভায় আবুল হাসানাত
আব্দুল্লাহ আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন নৌকার মেয়র প্রার্থী আবুল
খায়েরকে। আহবান জানিয়েছেন ১২ জুনের নির্বাচনে
সব ভেদাভেদ ভুলে দলীয় প্রার্থীকে
বিজয়ী করার। দীর্ঘদিন পর দুই ভাইয়ের
এই মিল দেখে নির্বাচনে বিজয়ের ক্ষেত্রে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন দর্লীয়
নেতাকর্মীরা। সমর্থক থেকে শুরু করে
সাধারণ ভোটাররা বিষয়টিকে দেখছেন ইতিবাচক হিসেবে।
মেয়র
প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহকে
বিজয়ী করার লক্ষ্যে শনিবার
৩ মে বিকেলে বিভাগীয়
৫টি জেলার সমন্বয়ে বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়
বরিশালের গৌরনদীতে। এতে সভাপতিত্ব করেন
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নির্বাচন পরিচালনা
টিমের প্রধান আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ।
সভাপতি বড় ভাই আবুল
হাসানাতের পাশেই বসা ছিলেন ছোট
ভাই আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ।
সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানকসহ কেন্দ্রীয়
নেতারা উপস্থিত ছিলেন। যদিও মঞ্চে থাকাকালীন
দুই ভায়েরই মুখ ছিলো অনেকটা
মলীন।
বরিশাল
নগরীর ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের
ইন্দ্রকাঠি নয়গাঁও স্কুল মাঠের বিকেল ৪টার উঠান বৈঠকে
যোগ না দিয়ে আওয়ামী
লীগের মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ
খোকন সেরনিয়াবাত বিশেষ বর্ধিত সভায় যোগ দেন।
এরআগে
গত ২৬ মে একই
স্থানে একই টিমের আয়োজনে
বরিশাল জেলা ও মহানগর
আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় যোগ দেননি
মেয়র প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত। প্রার্থীর
বড় ভাই সাংগঠনিক টিমের
প্রধান আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর
সভাপতিত্ব বিশেষ বর্ধিত সভা হয়। সভায়
সভাপতির বক্তব্যে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ
এমপি বিভাগের ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও পিরোজপুর জেলা
আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, আমরা
সবাই একত্র হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দৈনিক
নগরীর ত্রিশটি ওয়ার্ডে যারা নির্বাচনী প্রচারনা করে তাদের সহযোগিতা
করবেন। আপনারা আলাদাভাবে নির্দিষ্ট এলাকায় যেখানে আপনাদের ভোটার রয়েছে, সেখানে গিয়ে আমার ছোট
ভাই নৌকা প্রতীকের প্রার্থী
আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের জন্য
ভোট চাইবেন।
আবুল
হাসানাত আব্দুল্লাহ বলেন “ওয়াদা” করে যাবেন। আপনারা
আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবতকে বিজয়ী
করে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করবেন।
সভায়
সাংগঠনিক টিমের অন্যতম সদস্য ও আওয়ামী লীগের
সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এ্যাড. জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন,
১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টে গুলিবিদ্ধ
হয়ে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষন
থেকে ফিরে আসা মানুষটি
হলো খোকন সেরনিয়াবাত।
যারা
বিভিন্ন ধরনের অপ্রচার চালিয়েছে, আজ খোকন সেরনিয়াবাত
অপ্রচারকারীদের মুখে চুনকালি মেখে
নতুন সূচনা করেছেন।
কেন্দ্রীয়
টিমের সমন্বয়ক ও যুগ্ম সাধারণ
সম্পাদক কৃষিবিদ আফম বাহাউদ্দিন নাছিম
বলেন, বেঈমানদের সাথে আওয়ামী লীগের
আদর্শের নেতাকর্মীদের কোন আপোষ হতে
পারেনা। আমরা গাজিপুর সিটি
নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়েছি।
আমরা বেঈমানমুক্ত জনপ্রিয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে সমন্বয় করে বরিশাল সিটি
কর্পোরেশনে জিততে চাই।
অন্যান্যদের
মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আফজাল হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ,
কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মো. গোলাম কবীর
রাব্বানী চিনু, সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ
শম্ভু, আসম ফিরোজ এবং
বরিশাল সিটি করপোরেশনের আওয়ামী
লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার মেয়র
প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ
খোকন সেরনিয়াবাত প্রমুখ।
সভায়
বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের
সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. তালুকদার মো. ইউনুস ও
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড. একেএম জাহাঙ্গীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, দলের যাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তাদেরকে জিতে আসতে হবে নিজ যোগ্যতায়, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে। কাউকেই জেতানোর দায়িত্ব নেবে না আওয়ামী লীগ।কেউ যদি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সাহায্যের জন্য হাত পাতে বা অন্য কোনো উপায় অবলম্বনের চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মনোনয়ন প্রাপ্তদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি এবার বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরতে চান। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করতে চান যে, বিদেশিরা যে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে সমস্ত আশঙ্কা এবং সন্দেহ পোষণ করেছিল তার সবই ছিল অমূলক। বরং বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রপ্রিয়। তারা গণতন্ত্রের চর্চা করতে চায়। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চায়। আর এই লক্ষ্যেই তারা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে।
আওয়ামী লীগের প্রধান লক্ষ্য হল ৭ জানুয়ারি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা। দ্বিতীয় লক্ষ্য হল ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং তৃতীয় লক্ষ্য হল উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোটগ্রহণ যেন সম্পন্ন হয় সেটি নিশ্চিত করা। এজন্য নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা করতেও তারা প্রস্তুত। কিন্তু কোন কোন প্রার্থী ইতোমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড়ানোতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করছেন, এর ফলে তাদের নিশ্চিত বিজয় ঝুঁকিতে পড়ল। কিন্তু আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা এটিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। তারা মনে করছেন, এর ফলে নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভোটার ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। এটি আওয়ামী লীগের চাওয়া। কে জিতল না জিতল এটা আওয়ামী লীগের বড় লক্ষ্য নয়। এই কারণেই সব প্রার্থীদেরকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও প্রশাসনকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করা যাবে না। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যে ব্যবস্থা নেবে সেই ব্যবস্থার সঙ্গে সহমত পোষণ করবে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন যে, নির্বাচন কমিশন এখন সমস্ত কিছু তদারকি করছে। নির্বাচন কমিশনকে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন প্রশাসনে রদবদল শুরু করেছে। সকল থানার ওসি
যাদের চাকরির মেয়াদ একবছরের বেশি হয়েছে তাদেরকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসাথে সুনামগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসককে আজ প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকেও সরানোর ব্যাপারে প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ সমস্ত কর্মকাণ্ডের ফলে যারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন তাদের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। তাদের কেউ কেউ মনে করছেন যে, এবারের নির্বাচনের সহজ বিজয় আর সম্ভব হবে না। এ কারণে তারা স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরকে হুমকি ধামকি দেওয়া, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বসিয়ে দেওয়া ইত্যাদি তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত হতে শুরু করেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কড়া হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। যে খুশি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে এবং নির্বাচনে জনগণ যাকে ভোট দিবে তিনি এমপি হবেন। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কোনো রকম পছন্দ নেই। কাউকে টেনে নির্বাচনে জয়ী করা বা কোন হিসাব নিকাশ মিলিয়ে কাউকে ভোটের মাঠে বিজয়ী করার কোন অভিপ্রায় আওয়ামী লীগের নাই এবং সেটা আওয়ামী লীগ করবে না।
আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছেন, নির্বাচনে ন্যূনতম কারচুপি হলেও সেটি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে শোরগোল পড়বে। একারণে আর যাই হোক না কেন, কোন প্রার্থীকে জয়ী করার দায়দায়িত্ব আওয়ামী লীগ নেবে না।
আওয়ামী লীগ নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্র
মন্তব্য করুন
সাদেক খান ঢাকা-১৩ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
অবরোধ মশাল মিছিল বিএনপি রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
জি এম কাদের জাতীয় পার্টি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তৃণমূল বিএনপি বিএনএম শাহ্ জাফর
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, দলের যাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তাদেরকে জিতে আসতে হবে নিজ যোগ্যতায়, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে। কাউকেই জেতানোর দায়িত্ব নেবে না আওয়ামী লীগ।কেউ যদি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সাহায্যের জন্য হাত পাতে বা অন্য কোনো উপায় অবলম্বনের চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মনোনয়ন প্রাপ্তদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
২০১৫ সালের কথা মনে আছে? ওইসময় বেগম খালেদা জিয়া সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ ডেকেছিলেন। অবরোধ সফল করতে তিনি গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। বলেছিলেন যে, যতক্ষণ পর্যন্ত সরকারের পতন ঘটবে তত ক্ষণ পর্যন্ত তিনি ঘরে ফিরবেন না। সেখানে নাওয়া খাওয়া এবং রাত্রিযাপনের ব্যবস্থাও করেছেন বেগম জিয়া। এই সময় আকস্মিকভাবে ঘটে দুর্ঘটনা। মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বেগম খালেদা জিয়ার ছোট পুত্র আরাফাত রহমান কোকো মৃত্যুবরণ করেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনটি একটি ভিন্ন ধরনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে কারা বিজয়ী হবে তা নিয়ে কারোরই কোন সন্দেহ নেই। বিএনপি-জামায়াত জোট যখন এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না তখন এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ে একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। আওয়ামী লীগ যে আবার সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে এবং সরকার গঠন করতে যাচ্ছে, এটি নিয়ে কারও কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে মজার যে বিষয়টি সামনে এসেছে তা হল কারা প্রধান বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় সংসদের দায়িত্ব পালন করবে। শেষ পর্যন্ত যদি ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হয় তাহলে এই নির্বাচনী লড়াইয়ের প্রধান আকর্ষণ হবে কে হতে যাচ্ছে জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধীদল?