লিট ইনসাইড

পিতা, আমরা মুক্ত আকাশ দেখছি (পর্ব-৭)


Thumbnail

শুরু হলো শোকাবহ আগস্ট মাস। এ মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল ষড়যন্ত্রকারীরা। আগস্ট ষড়যন্ত্রের আদ্যোপান্ত নিয়ে অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর সারা জাগানো বই ‘পিতা, আমরা মুক্ত আকাশ দেখছি’ এর ধারাবাহিক পর্বের সপ্তম পর্ব পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল-

বাংলাদেশ সচিবালয়ের একজন সচিবের কক্ষ। সচিব তাঁর নিজ আসন ছেড়ে কক্ষের একপাশে পাতা সোফায় বসে কফি আর বিস্কুট খাচ্ছেন। তাঁর সাথে কফি পানে শরিক হয়েছেন তিনজন রাজনীতিবিদ এবং অন্য একটি মন্ত্রণালয় থেকে আসা একজন যুগ্ম সচিব। রাজনীতিবিদরা এসেছেন মূলত তাদের তদ্বিরের জন্যে। তাঁদের প্রধান তদ্বির হচ্ছে ধানমণ্ডি অথবা গুলশান-বনানী এলাকায় কোনো কোনো জমির প্লট মালিকবিহীন অবস্থায় পড়ে আছে, তার খোঁজখবর নেয়া। তিন রাজনীতিবিদের কথা হল, সারা জীবন জনগণের জন্যে এত ত্যাগ করার পরে ঢাকা শহরে যদি মাথা গোঁজার মতো স্থায়ী ঠাই হিসেবে বাড়ি করতে না পারেন, তা হলে আর ক্ষমতায় এসে কি লাভ হল। তিনজনেই সচিব সাহেবকে 'স্যার, স্যার' বলে সম্বোধন করছিলেন। এতে সচিব সাহেব খুব খুশি। হন এবং খুব আগ্রহভরে তাদেরকে সাহায্য করার আশ্বাস দেন। 

তবে রাজনীতিবিদরা তদ্বিরের ব্যাপারে আলাপ করতে গিয়ে এই খেদ প্রকাশ করেন যে, তাঁরা আসলে কিছুই করতে পারছেন না একমাত্র বঙ্গবন্ধুর কারণে। কেননা, বঙ্গবন্ধু যদি জানতে পারেন যে তার দলের লোকেরা দলের নাম ভাঙিয়ে ধানমণ্ডি গুলশানের জমিজমা দখল করার তালে আছে, তবে তিনি তাদের সহজে রেহাই দেবেন না। কাজেই সচিব সাহেবকে তাঁরা সতর্ক করতে ভুল করলেন না। সচিব এবং যুগ্ম সচিব দুজনেই রাজনীতিবিদদের আশ্বাস দিলেন বিষয়টি গোপন রাখা হবে। অন্যদিকে রাজনীতিবিদেরাও জানালেন, তাঁরা বঙ্গবন্ধুর খুব কাছের লোক এবং সচিব সাহেবদের বিপদে-আপদে তাঁদের প্রতি সাহায্যের হাত সব সময় প্রসারিত থাকবে। সেইসাথে তাঁরা সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বেঁধে নেয়ার ফলে যে অসুবিধা হচ্ছে, সেজন্যে দুঃখপ্রকাশও করলেন। দেশের পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনার এক পর্যায়ে  সচিব সাহেব হাসতে হাসতে বলেন, একটি বিষয়ে তাঁরা কিন্তু একমত, সেটি  হল- দেশের বর্তমান দুরবস্থার জন্যে দায়ী হল বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর নিকটস্থ কিছু  রাজনীতিবিদ। উপস্থিত তিন রাজনীতিবিদের একজন এ কথার সঙ্গে আর যোগ করেন যে, কতিপয় সরকারি আমলাও খুব খারাপ প্রকৃতির। তারা অধিকাংশ সময় রাজনীতিবিদদের প্রতি সম্মান দেখায় না। সোজা কথা হচ্ছে, তাদের তদ্বিরের সময় এসকল আমলা কাজ করতে চায় না। তবে এদেরকে শায়েস্তা করতে খুব বেশি সময় বোধহয় লাগবে না। এসকল আমলার মধ্যে দু-একজন রাজনীতিবিদদের মুখের উপর একথা বলতেও দ্বিধা করেনি যে, গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজ—বিশেষ করে সাধারণ নিয়ম  অনুযায়ী যেসব কাজ করা সম্ভব নয়, সেগুলো করতে হলে বঙ্গবন্ধুর অনুমতি লাগবে। দুই-একজন আমলার এ ধরনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ উক্তির জবাবে কোনো কোনো রাজনীতিবিদ তাই বলেছেন যে, বঙ্গবন্ধুকে এসব ছোটখাটো ব্যাপারে বিরক্ত করা ঠিক নয়। আবার তাদের মধ্যে দু-একজন বেয়াদব আমলাদের ধমকও লাগিয়েছেন। তবে রাজনীতিবিদ জানান, বঙ্গবন্ধুর কানে এ ধরনের দু-একটি ঘটনার কথা পৌছানোর পর তিনি ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজনীতিবিদদের ডেকে তিরস্কার করেছেন-এমনকি পার্টি থেকে বহিষ্কারের কথা বলেছেন। তবে দলের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি কোনো-না-কোনোভাবে এসব তদ্বির থেকে ফয়দা পাচ্ছেন বলে এ নিয়ে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপ গ্রহণ করছে না।

সচিবালয় থেকে গণভবনের দূরত্ব বেশি নয়-মাত্র কয়েক মিনিটের পথ। সচিবালয় থেকে বেরিয়ে রাজনীতিবিদরা সোজা সেখানেই চলে গেলেন।

গণভবনের বারান্দায় অন্যান্য নেতা ও কর্মীর জটলা চলছে। সচিবালয় থেকে আসা তিন রাজনীতিবিদ সে জটলায় শুধু অংশই নিলেন না, তাদের একজন সুযোগ পেয়ে বঙ্গবন্ধু সরকারের গৃহীত পদক্ষেপকে সমর্থন করে খুব জ্ঞানগর্ভ ও লম্বা বক্তব্য পেশ করলেন। কথায় কথায় বঙ্গবন্ধুর ভূয়সী প্রশংসা করতে তিনি ভুল করলেন না। বঙ্গবন্ধু যে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশে এমন শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছেন, যার নজির বিশ্বে নেই—একথা বলতে গিয়ে তিনি মুখে প্রায় ফেনা তুলে ফেললেন। রাজনীতিবিদের এ বক্তব্য শুনে সেখানে উপস্থিত এক তরুণ ছাত্র এতটাই মুগ্ধ হয়ে গেল যে, সে আর স্থির থাকতে পারল না-হঠাৎ করে সামনে এসে রাজনীতিবিদের পায়ে হাত দিয়ে সালাম করল। ছাত্রটির মনে হল বঙ্গবন্ধুর এ ধরনের খাঁটি সহযোগী থাকার কারণেই দেশে এমনি উন্নতি হবে যে সোনার বাংলা গড়ার কথা আর স্বপ্নে না থেকে বাস্তবায়িত হতে বেশি দেরি হবে না। সেদিন ছাত্রটি বেশ উদ্বুদ্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে রওনা হয়ে যায়। যাওয়ার পথে সে ভাবল, বন্ধু-বান্ধবদের গিয়ে আজ বলবে যে রাজনীতিবিদরা কি নিঃস্বার্থভাবে বঙ্গবন্ধুকে সমর্থন করছে। অথচ আজকাল দুর্মুখেরা বলে বেড়াচ্ছে কিনা, বঙ্গবন্ধুর বেশকিছু সহকর্মী আসলে তাঁকে সঠিকভাবে সহযোগিতা করছে না। এই অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে ছাত্রটির খুব রাগ হল।


আগস্ট মাস   বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান  


মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

ভাষাবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হক আর নেই

প্রকাশ: ১১:৩৫ এএম, ২৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

একুশে পদক বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, ভাষাবিদ, গবেষক প্রাবন্ধিক অধ্যাপক . মাহবুবুল হক মারা গেছেন। তিনি দীর্ঘদিন হৃদরোগ কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন।

বুধবার (২৪ জুলাই) দিবাগত রাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তার মরদেহ রাজধানীর ভাটারার বাসায় আনা হবে। এরপর জানাজা শেষে নেয়া হবে চট্টগ্রামে। সেখানেই তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

. মাহবুবুল হক প্রবন্ধে অবদানের জন্য ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। ছাড়া গবেষণায় অবদান রাখায় ২০১৯ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।

. মাহবুবুল হক ১৯৪৮ সালের নভেম্বর ফরিদপুরের মধুখালিতে জন্মগ্রহণ করেন। এরপর বেড়ে ওঠেন চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে বাংলা ভাষা সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান), ১৯৭০ সালে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর এবং ১৯৯৭ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

এরপর চট্টগ্রামের রাঙ্গুনীয়া কলেজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে যোগদান করেন।

তার উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে: বাংলা বানানের নিয়ম, রবীন্দ্র সাহিত্য রবীন্দ্র ভাবনা, ইতিহাস সাহিত্য, সংস্কৃতি লোক সংস্কৃতি এবং বাংলার লোক সাহিত্য: সমাজ সংস্কৃতি প্রভৃতি।


ভাষাবিদ   অধ্যাপক   মাহবুবুল হক  


মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

চলনবিল সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা

প্রকাশ: ১১:৫০ এএম, ১৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ছোটকাগজ সম্পাদনায় বিশেষ অবদান রাখায় চলনবিল সাহিত্য পুরস্কার পেলেন শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক ছোটকাগজ ‘হৃদয়ে চলনথ এর সম্পাদক কবি হাদিউল হৃদয়। হাদিউল হৃদয় তাড়াশ প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক কালবেলা পত্রিকার তাড়াশ উপজেলা প্রতিনিধি। 

 

শুক্রবার (১২ জুলাই') সন্ধ্যা সা‌ড়ে ৬টায় উপ‌জেলা পাব‌লিক লাই‌ব্রে‌রীর হল রু‌মে আনুষ্ঠানিকভাবে কবি কণ্ঠে কবিতা সংগঠন থেকে প্রধান অতিথি তাড়াশ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. মনিরুজ্জামান মনি এ পুরস্কার স্মারক ও সনদপত্র তুলে দেন।

 

সা‌বিনা ইয়াস‌মিন বিনুর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন, সংগঠ‌নের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হো‌সেন মল্লিকী। আলোচনা সভায় সংগঠনের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক রাজুর সভাপ‌তিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, তাড়াশ পৌরসভার কাউ‌ন্সিলর রোখসানা খাতুন রুপা, পাব‌লিক লাইব্রেরীর সাধারণ সম্পাদক মোজ্জামেল হক মাসুদ, সা‌বেক সাধারণ সম্পাদক হোস‌নেয়ারা নাসরিন দোলন, যুগ্ম সম্পাদক লুৎফর রহমান, উপ‌জেলা প্রেসক্লা‌বের সাধারণ সম্পাদক ‌সোহেল রানা সোহাগ, প্রভাষক আব্দুল কাদের, প্রভাষক আব্দুল মতিন প্রমূখ।

উল্লেখ্য, হাদিউল হৃদয় বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বিল চলনবিলের প্রাণকেন্দ্র তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়নের পল্লীর নিভূত অজোপাড়া পাড়িল গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মধ্যবিত্ত্ব মুসলিম পরিবারে জন্ম। তিনি একজন সাংবাদিক ও সাহিত্য কর্মী। মূলতঃ কবিতা দিয়ে শুরু করলেও প্রবন্ধ, মুক্তগদ্য ও ছড়া লিখেন। তার লেখা লিটলম্যাগ ও দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে আসছে। তার সম্পাদনা হৃদয়ে চলন ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১২টি সংখ্যা প্রকাশ হয়েছে। সম্পাদনার স্বীকৃতিস্বরূপ এর আগেও বিভিন্ন সংগঠন থেকে পেয়েছেন সম্মাননা ও পুরস্কার।'


চলনবিল সাহিত্য পুরস্কার  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন