ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বাংলাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর কঠোর দমন-পীড়ন চলছে: দ্য গার্ডিয়ান

প্রকাশ: ০৭:১২ পিএম, ১০ নভেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

আগামী বছর জানুয়ারিতে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠ এখন হরতাল অবরোধে উত্তপ্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার আওয়ামী লীগ দল টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে চায়। তাই নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর ওপর নির্মম দমন-পীড়নের মাত্রা বাড়িয়েছে সরকার।বাংলাদেশের খুব কম লোকই বিশ্বাস করে যে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু বা গণতান্ত্রিক হবে। বিএনপি বলেছে, যতদিন হাসিনা দায়িত্বে থাকবেন, ততদিন তারা নির্বাচনে অংশ নেবেন না।

যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনীতি নিয়ে এসব কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক মাস ধরে বিরোধীদের হয়রানি চললেও, শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির একটি সমাবেশ সরকারি দমন-পীড়নকে আরও জোরদার করতে প্ররোচিত করে। সমাবেশের আগের দিনগুলোতে বিএনপির শতাধিক নেতাকে আটক করা হয়। সেদিন, কয়েক হাজার বিএনপি সমর্থক রাস্তায় নামলে, হাসিনার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পুলিশের সঙ্গে, লাঠি, লোহার রড, ছুরি এবং অন্যান্য অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সমাবেশে হামলা করতে দেখা যায়।

গার্ডিয়ান বলছে, সহিংসতায় একজন বিএনপি কর্মী, একজন পুলিশ কর্মকর্তা ও একজন সাংবাদিকসহ অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেছেন, বিএনপিকে দমন করার জন্য কর্তৃপক্ষের দ্বারা সহিংসতা 'পূর্বপরিকল্পিত'। সমাবেশের আগে এই সহিংসতার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ইন্টারনেট পরিষেবাগুলোকে অবরুদ্ধ করা হয়েছিল শুধুমাত্র কর্মীদের মধ্যে যোগাযোগ ব্যাহত করার জন্যই নয় বরং পুলিশের কর্মকাণ্ডের সরাসরি সম্প্রচার রোধ করার জন্যও।

পরবর্তীতে বিএনপি নেতারা এবং র্যাংক-এন্ড-ফাইল সদস্যরা বলছেন, শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে বাধা দেওয়ার জন্য তাদের নিশানা করা হয়েছে। রবার্ট এফ কেনেডি মানবাধিকার সংস্থার ভাইস-প্রেসিডেন্ট অ্যাঞ্জেলিটা বেয়েন্স বলছেন, গত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশে বিরোধী নেতা, কর্মী এবং বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতারের সংখ্যা প্রমাণ করে ভিন্নমতের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন কতটা চরম আকার ধারণ করেছে।

গ্রেফতার হওয়া কয়েক হাজার সদস্যের মধ্যে বিএনপির অন্যতম সিনিয়র নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও রয়েছেন। ২৯ অক্টোবর আটক করার কয়েক ঘণ্টা আগে গার্ডিয়ানের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। মির্জা আলমগীর বলেছিলেন, আমরা অগণিত ঘটনা দেখেছি যেখানে আমাদের কর্মীদের মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পুলিশ এবং বিচার বিভাগ আমাদের নীরব করার জন্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করছে বলে মনে হচ্ছে। 

গ্রেফতার এড়িয়ে যাওয়া কয়েকজন বিএনপি নেতা এখন আত্মগোপনে রয়েছেন। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের বিরুদ্ধে এখন ৪৫০টিরও বেশি মামলা রয়েছে এবং ২৮ অক্টোবরের বিক্ষোভের পর সহিংসতা ও হত্যার অভিযোগে ১৭০ জন নেতাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে সোহেল আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে গেছেন। একটি অজ্ঞাত স্থান থেকে সোহেল বর্ণনা করেছেন যে, কীভাবে গত কয়েক মাস ধরে তার বিরুদ্ধে অন্তহীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা করা হয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের দৌড়ে তিনি একই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন –  শেখ হাসিনাকে পুনরায় নির্বাচিত করার জন্য নির্বাচনে কারচুপি করা হয়েছিল –  সোহেলকে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল এবং তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে বাধা দেওয়া হয়েছিল। 

হাবিব উন নবী খান সোহেল আরও বলেন, জুন মাস থেকে প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাতটি মামলার শুনানির জন্য আমাকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন আদালতে হাজিরা দিতে হয়েছে। আমার অনেক সিনিয়র সহকর্মী শুনানিতে অংশ নিচ্ছেন এবং প্রতিদিন আদালতে দীর্ঘ সময় কাটাচ্ছেন।

আরেক মধ্য-স্তরের বিএনপি নেতা আজিজুর রহমান মুছাব্বির (৪১) গ্রেফতার ও মুক্তির পাকেচক্রে আটকে আছেন। একটি সমাবেশে সহিংসতা শুরু হওয়ার পরে ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর তাকে প্রথম গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাকে হিংসাত্মক কার্যকলাপের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছিল এবং ফেব্রুয়ারিতে তাকে জামিন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কারাগারের দরজার বাইরে পুলিশ তাকে পুনরায় গ্রেফতার করে। তিনি মার্চ মাসে আবার জামিনে মুক্তি পান এবং আবার অবিলম্বে পুনরায় গ্রেফতার করা হয়।  এ চক্র সমানে চলছে। তিনি এখন আবার কারাগারে ফিরে এসেছেন ৭০টি বিভিন্ন অভিযোগের মুখোমুখি হয়ে। আজিজুর রহমানের স্ত্রী সুরাইয়া বেগম আক্ষেপের সুরে বলেন, সরকার তাকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখার জন্য কারাগারে আটক রেখেছে, আমরা সবাই হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার। যেহেতু শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে প্রথম নির্বাচিত হয়েছিলেন, তাকে বাংলাদেশে অর্থনীতি পুনরুজ্জীবনের   কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে।  বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু তার চারটি পদের মেয়াদ গণতান্ত্রিক পশ্চাদপসরণ এবং ভিন্নমত বা যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক বিরোধীতার বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী পদক্ষেপ  দ্বারাও সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।

বিএনপির কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে বিএনপি ও এর সদস্য সংগঠনের ৫০ লাখের বেশি নেতা-কর্মী ও সমর্থকের বিরুদ্ধে ১৩৮ হাজারেরও বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রজেক্টের মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান, যিনি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে মানবাধিকার লংঘনের নথিপত্র করছেন, তিনি বলেছেন, বিরোধীদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে মানবাধিকার লংঘন করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বলপূর্বক গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন।  বাংলাদেশে যখনই নির্বাচন হয় তখনই বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য ভুয়া ফৌজদারি মামলা ঠুকে বিরোধী কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং তাদের নির্বিচারে আটক করা হয়। ২০১৮ সালের আগের নির্বাচনে বিরোধীদের হয়রানি এবং ব্যাপক ভোট কারচুপির অভিযোগ ওঠে। সেই নির্বাচনকে ব্যাপকভাবে 'অগণতান্ত্রিক' বলে নিন্দা করা হয়েছিল। বেশিরভাগই এখন অনুমান করেন যে, অনুরূপ দৃশ্য জানুয়ারিতেও দেখা যাবে ।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সংঘটিত করার জন্য হাসিনাকে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই সপ্তাহে বৃটিশ হাইকমিশনার সহিংসতা পরিহার এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার আহ্বান জানাতে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন। মার্কিন সরকার সম্প্রতি নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দুর্বল করার জন্য অজ্ঞাতনামা সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং গত মাসে বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হাসিনাকে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন। যদিও মার্কিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভণ্ডামির অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাল্টা আঘাত করেছেন। তিনি বলেন - বাইডেন কি কখনো ট্রাম্পের সঙ্গে সংলাপ করেছেন? যেদিন তাদের সংলাপ হবে, আমিও বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপ করব।

বিশ্লেষকরা বলছেন, শেখ হাসিনার সরকার এখন বিচার বিভাগ ও পুলিশকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে এবং বিরোধীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের অস্ত্র তৈরি করেছে। এই সপ্তাহে, একটি ভিডিও ক্লিপে টহলরত পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে একদল সশস্ত্র আওয়ামী কর্মীদের বলতে শোনা গেছে, এক একটি করে বিএনপি লোকদের ধরুন এবং তাদের সবাইকে হত্যা করুন। 

যদিও বিএনপি সদস্যদের গণগ্রেফতারের বিষয়টি আসন্ন নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত বলে সরকার ও পুলিশ উভয়েই অস্বীকার করছে। আইন ও বিচারমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এই ফৌজদারি মামলাগুলোর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা গার্ডিয়ানের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেননি।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র মোহাম্মদ ফারুক হোসেন বলেন, তারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার পরই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ২৮ অক্টোবরের সমাবেশে পুলিশ কর্মকর্তাদের হত্যা ও আহত করার জন্য দায়ীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। 

বাংলাদেশের একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোবাশ্বের হাসান বলেছেন যে, শেখ হাসিনার নিপীড়নমূলক পদ্ধতিগুলো বিএনপির আন্দোলনের গতি বাড়াচ্ছে, কারণ হাসিনার সরকার এখন দুর্বল অর্থনীতি এবং ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের বিক্ষোভের সম্মুখীন হচ্ছে।  কারণ ২৮ অক্টোবরের সমাবেশে রাজনৈতিক কর্মীদের পাশাপাশি দরিদ্র শ্রমিকরাও দলে দলে অংশ নেন। হাসান বলেন, সাধারণ মানুষের স্পন্দনের সঙ্গে মিশে গেছে বিএনপির সমাবেশগুলো। বিএনপির ক্রমবর্ধমান গতিকে বর্তমান প্রশাসনের বিরুদ্ধে পূর্ণ প্রস্ফুটিত গণআন্দোলনে বিকশিত হওয়া থেকে বিরত করার লক্ষ্যে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপকে একটি 'পরিকল্পিত পদক্ষেপ' বলেই মনে হচ্ছে।





বাংলাদেশ   বিএনপি   দ্য গার্ডিয়ান   প্রধানমন্ত্রী   শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কে হচ্ছেন ভারতের বিরোধীদলীয় নেতা?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছিল। তখন ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে দলটির সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান রাহুল গান্ধী। কিন্তু সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানোর বড় কৃতিত্ব রাহুলের বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাই কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধীকে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে চান দলটির অনেক নেতা।  

দলীয় সূত্রের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, বুধবার (০৫ জুন) কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বাড়িতে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বৈঠকে বিরোধীদলের নেতা নির্বাচনের বিষয়ে সরাসরি কোনো আলোচনা হয়নি। তবে ঘরোয়া আলোচনায় দলের নেতারা অনেকে রাহুল গান্ধীকে বিরোধীদলীয় নেতা বানানোর পক্ষে মত দিয়েছেন।

বৈঠকের আগে উদ্ধব ঠাকুরের শিবসেনার নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, আগামীবার ইন্ডিয়া জোট সরকার গঠন করতে পারলে সেই সরকার ব্যবস্থায় রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হতে রাজি থাকলে এ নিয়ে তাদের আপত্তি থাকবে না।

দলীয় নেতারা বলেন, বিরোধীদলের প্রধানকে সিবিআই প্রধান, লোকপাল এবং মুখ্য ভিজিল্যান্স কমিশনার নিয়োগের বাছাই কমিটির বৈঠকে যেতে হয়। এসব জায়গায় প্রধান বিচারপতি এবং প্রধানমন্ত্রীও থাকেন। ফলে রাহুল গান্ধী বিরোধীদলের নেতা হলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখোমুখি হয়ে নিজের মত বা আপত্তির বিষয়টি তুলে ধরতে পারবেন।

কংগ্রেসের আরেক অংশের মতে, রাহুল গান্ধী সারা দিন সংসদে থাকার লোক নন। ফলে তার জন্য বিরোধীদলের প্রধানের ভূমিকা পালন করা কঠিন। তিনি সংসদে বসে থাকার বদলে মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার বিষয়ে আগ্রহী। এবারের নির্বাচনে গতবারের চেয়ে ৪৭টি আসন বেশি পেয়েছে কংগ্রেস। তবে বেশকিছু জায়গায় সাংগঠনিক দুর্বলতা স্পষ্ট। ফলে মাঠে সংগঠন মজবুত করার কাজে নিয়োজিত হওয়া তার জন্য বেশি বাস্তবিক।

২০১৪ এবং ২০১৯ সালের নির্বাচনে লোকসভায় কোনো বিরোধীদলের নেতা ছিলেন না। ওই সময়ে কংগ্রেস বৃহত্তম বিরোধীদল হলেও বিরোধীদলনেতা হওয়ার মতো আসন পায়নি তারা। কেননা বিরোধীদলের নেতা হিসেবে পার্লামেন্টে জায়গা পেতে হলে লোকসভার মোট আসনের ১০ শতাংশ জিততে হবে। ফলে প্রথম মেয়াদে মল্লিকার্জুন এবং দ্বিতীয় মেয়াদে অধীর চৌধুরী বিরোধীদলনেতা ছিলেন।

এবারের নির্বাচনে অধীর হেরে গেছেন। কেবল তিনি নয়, মধ্যপ্রদেশে দিগ্বিজয় সিংহ, ছত্তিশগড়ের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল, রাজস্থানের সি পি জোশি এবং হিমাচলে আনন্দ শর্মার মতো প্রবীণ নেতারাও হেরে গেছেন। ফলে রাহুল গান্ধী রাজি না হলে কংগ্রেসের জোট ইন্ডিয়ার নেতা কে হবেন তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, ভারতের ৫৪৩ আসনের এবারের লোকসভার নির্বাচনে কোনো দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ পেয়েছে ২৯৩ আসন। অপরদিকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট পেয়েছে ২৩৩ আসন।


রাহুল গান্ধী   কংগ্রেস   ইন্ডিয়া জোট  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

এবার নাইডুর শপথ গ্রহণ স্থগিত

প্রকাশ: ০৭:৩০ পিএম, ০৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ওই রাজ্যের তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডুর শপথ গ্রহণ স্থগিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। তার শপথ নেওয়ার কথা ছিল আগামী ৯ জুন। তা পিছিয়ে ১২ জুন করার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে তার।  

জানা গেছে, মোদির শপথ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। তাই তাদের ভারতে পৌঁছানোর সময়সূচির কথা মাথায় রেখে শপথ অনুষ্ঠান একদিন পিছিয়ে ৯ জুন সন্ধ্যায় করা হয়েছে।

টিডিপির মুখপাত্র কে পাত্তবি রাম বলেছেন, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রাজ্যের রাজধানী অমরাবতীতে শপথ নেবেন নাইডু। মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর নিজে শপথ নিতে তাড়াহুড়া করে অমরাবতীতে যেতে চান না তিনি। এই শপথ অনুষ্ঠানে বিজেপির অনেক নেতাকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন নাইডু।

কে পাত্তবি রাম বলেন, খুব সম্ভবত নাইডু ১২ জুন শপথ নেবেন। ৭ জুন দিল্লিতে এনডিএ জোটের বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। আর এরপর ৯ জুন মোদির শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। এরপর অমরাবতীতে ফিরবেন এবং ১২ জুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন।


তেলেগু   দেশম পার্টি   চন্দ্রবাবু নাইডু  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় এক নারীর মৃত্যু

প্রকাশ: ০৭:২০ পিএম, ০৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

হুঁইসেল দিতে দিতে আসে পুরোনো দিনের একটি ট্রেন। সেই ট্রেনের ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে রেললাইনের পাশে জড়ো হন অনেক মানুষ। ট্রেনটি যখন কাছে চলে আসে তখন উপস্থিত সবাই মোবাইল দিয়ে ছবি তুলতে থাকেন। তাদের মধ্যে ছিলেন এক নারী। যিনি ট্রেনের সঙ্গে একটি সেলফি তোলার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। 

আর সেলফি তোলার নেশায় তিনি যে ট্রেনের কত কাছে চলে গিয়েছিলেন সেটি বুঝতেও পারেননি। এতে কোনো কিছু বোঝার আগেই ট্রেনের ইঞ্জিন এসে সরাসরি আঘাত হানে তার মাথায়। এতে ঘটনাস্থলেই ওই নারীর মৃত্যু হয়।

গত সোমবার (৫ জুন) মেক্সিকোর হিদালগোতে ঘটেছে এ ঘটনা। ওইদিন কয়লা চালিত পুরোনো আমলের একটি ট্রেন দেখার জন্য সাধারণ মানুষ রেললাইনের পাশে গিয়েছিলেন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, নিহত ওই নারী ২০ বছর বয়সী ছিলেন। তিনি তার ছেলে এবং একটি স্কুলের কিছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন। ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

'ইমপ্রেস' নামের জনপ্রিয় এ ট্রেনটি কানাডা থেকে মেক্সিকো সিটিতে আসছিল। কয়লাচালিত ট্রেনটি তৈরি করা হয় ১৯৩০ সালে।


মৃত্যু   মেক্সিকো   ট্রেন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মোদির শপথ গ্রহণের তারিখ পেছাল

প্রকাশ: ০৫:৫৭ পিএম, ০৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

টানা তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। তবে তার শপথ অনুষ্ঠান একদিন পিছিয়েছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবারের (৮ জুন) পরিবর্তেপরেরদিন রবিবার (৯ জুন) সন্ধ্যায় তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন মোদি।

এর আগে, বুধবার বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (এনডিএ) অন্যান্য শরিক দলের সমর্থনে নরেন্দ্র মোদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। আগামী রবিবার শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে এক অনন্য মাইলফলক স্পর্শ করবেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি জওহরলাল নেহরুর পর দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অন্যান্য কীর্তি গড়বেন।

নরেন্দ্র মোদির এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকার বিষয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে ইতোমধ্যে নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে মোদির বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট পেয়েছে ২৯৩ আসন। রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট পেয়েছে ২৩২ আসন।


নরেন্দ্র মোদি   শপথ   প্রধানমন্ত্রী   ভারত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

আট মাসে হামাসের অর্ধেক যোদ্ধা নিহত

প্রকাশ: ০৫:৪৭ পিএম, ০৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে নিজেদের যোদ্ধাবাহিনীর অর্ধেক সদস্যকে হারিয়েছে হামাস। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের কর্মকর্তারা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন। 

কর্মকর্তারা বলেছেন, গত ৭ অক্টোবর সংঘাত শুরুর আগে হামাসের সামরিক শাখায় ছিল ২০ থেকে ২৫ হাজার যোদ্ধা। আট মাস পর বর্তমানে গোষ্ঠীটির যোদ্ধা বাহিনীর সদস্যসংখ্যা নেমে এসেছে ৯ থেকে ১২ হাজারে। এই সময়সীমায় অবশ্য ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর সদস্যরাও নিহত হয়েছেন, তবে তাদের সংখ্যা মাত্র ৩০০ বা তার কিছু বেশি। 

জনবল কমে যাওয়ায় এখন রণকৌশলে পরিবর্তন এনেছে গোষ্ঠীটি। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন আর সরাসরি সম্মুখ সমরে আসছেন না হামাস যোদ্ধারা। তার পরিবর্তে তারা অ্যামবুশ এবং ইম্প্রোভাইজড বোমার ওপর নির্ভর করছেন বেশি।

গাজায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদেরও অনেকে বলেছেন, হামাসের এই কৌশল পরিবর্তনের ব্যাপারটি নজরে পড়েছে তাদেরও। গাজার বাসিন্দা ওয়াসিম ইব্রাহিম এ প্রসঙ্গে বলেন, 'যুদ্ধের প্রথম দিকের মাসগুলোতে হামাসের যোদ্ধারা মুখোমুখী যুদ্ধে নামতেন, ইসরায়েলি হামলাকে প্রতিহত করার পাশাপাশি অনেক সময় ইসরায়েলি বাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্যও করতেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইসরায়েলি বাহিনী আসছে- এমন খবর পাওয়া মাত্র তারা তৎপর হতেন। কিন্তু গত বেশ কিছুদিন ধরে হামাস যোদ্ধাদের রণকৌশলে পরিবর্তন এসেছে। এখন তারা ইসরায়েলি বাহিনীকে রণক্ষেত্রে প্রবেশ করতে দেন এবং মুখোমুখী সংঘাতের পরিবর্তে অ্যামবুশ ধরনের হামলা চালান।' 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বাহিনীর একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে বলেন, 'আমদের ধারণা, মুখে যা ই বলুক- হামাস এই যুদ্ধকে আরও দীর্ঘায়িত করতে চায়। এ কারণে তারা এই কৌশল নিয়েছে।'

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, 'যোদ্ধাদের সংখ্যা কমলেও আপাতত অস্ত্র-গোলাবারুদের অভাবে ভুগছে না হামাস। গোপন সুড়ঙ্গ ও অন্যান্য চোরাপথে তাদের কাছে অস্ত্র আসছে।'

এ ইস্যুতে আরও তথ্য জানতে হামাসের মুখপাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, কিন্তু তাদের কেউই কথা বলতে রাজি হননি।

তবে মার্কিন ওই কর্মকর্তার অনুমান যদি সত্যি হয়, সেক্ষেত্রে যে ব্যাপারটি স্পষ্ট হয়ে উঠছে তা হলো- গাজায় দীর্ঘ দিন যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায় ইসরায়েল এবং হামাস উভয়ই। কারণ গত সপ্তাহে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জাশি হানেগবি বলেছিলেন, ২০২৪ সাল শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত গাজায় যুদ্ধ বন্ধ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আপাতত নেই। 

মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, হামাস যে কৌশল নিয়েছে, তাতে সীমিত জনবল নিয়ে আরও কয়েক মাস যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবে গোষ্ঠীটি।

গত বছর ৭ অক্টোবর ইসরয়েলের সীমান্তে হামাস যোদ্ধাদের অতর্কিত হামলা এবং সেখানকার ভূখণ্ডে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অন্তত ১ হাজার ২০০ সামরিক-বেসামরিক মানুষকে হত্যার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় এই যুদ্ধ। হত্যার পাশাপাশি অন্তত ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে গিয়েছিল হামাস যোদ্ধারা।


হামাস   যোদ্ধা   নিহত  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন