ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচনের দিন থেকে বড় কর্মসূচির পরিকল্পনা বিরোধীদের

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

ভোটের পরেই বিরোধী দলের আন্দোলন শেষ হয়ে যাবে—এমনটা যারা মনে করছেন তাদের ধারণা ভুল। বরং বিএনপি সহ ৩৪ টি বিরোধী রাজনৈতিক দল নির্বাচনের পরও তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখা এবং আন্দোলনে নতুন মাত্রা দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন যদি শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় তারপরও বিএনপিসহ তার সহযোগী রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলনের কর্মসূচি থেকে সরে আসবে না। বরং তখন তারা নতুন নতুন কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বিভিন্ন ধাপে। 

বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা আন্দোলনকে তিনটি ভাগে ভাগ করেছে। প্রথমভাগে নির্বাচন প্রতিহতের আন্দোলন করছে। যে আন্দোলন এখন চলমান। এই আন্দোলনের দুটি অধ্যায় রয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে তারা হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দিয়ে জনগণের মধ্যে ভীতি সঞ্চারের চেষ্টা করেছে, যেন জনগণ ভোটের ব্যাপারে আগ্রহী না হয় এবং ভোট কেন্দ্রে ভোটের দিন না যায়। দ্বিতীয় ভাগে এখন তথাকথিত অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি চলছে। যদিও সেই আন্দোলনে জনগণ এখন পর্যন্ত সাড়া দেয়নি। যেখানে লোভনীয় কিছু অফার দেওয়া হয়েছিল। যেমন বিদ্যুতের বিল না দেওয়ার জন্য জনগণকে উৎসাহিত করা হয়েছিল। পানির বিল না দেওয়ার জন্য এবং অন্যান্য সরকারি খাজনা ট্যাক্স না দেওয়ার জন্য প্ররোচনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সাধারণ মানুষ এই সমস্ত  ঝামেলার মধ্যে যেতে চাইনি। 

এখন ১ থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সাধারণ কর্মবিরতি নামে এক কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হয়েছে। যে কর্মসূচিতে জনগণকে অফিস আদালতে না যেয়ে ঘরে বসে থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পরিবারকে সময় দিতে বলা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই কর্মসূচিও শেষ পর্যন্ত সফল হবে না। এখন বিএনপির অন্যতম সহযোগী রাজনৈতিক সংগঠন জামায়াতে ইসলাম ৩ তারিখ থেকে ৬ তারিখ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলা, নাশকতা ট্রেনে আগুন, বাসে আগুন ইত্যাদি সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক এবং ভীতির সঞ্চারের কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, যাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ কম হয়। 

বিএনপির বিভিন্ন নেতারা বলছেন, তাদের প্রধান লক্ষ্য হল যে, ভোটাররা যেন ভোটকেন্দ্রে না যায় সেটা নিশ্চিত করা। এই নির্বাচনে বিএনপি না থেকেও আছে। যদি নির্বাচনে ৩০ শতাংশের ওপরে ভোট হয়, তাহলে মনে করতে হবে যে এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হয়েছে। আর যদি ভোটার উপস্থিতি ৩০ শতাংশের কম হয় তাহলে মনে করতে হবে যে বিএনপি জয়ী হয়েছে। সেই ভোটের জটিল সমীকরণে দাঁড়িয়ে বিএনপি এবং তার মিত্ররা চেষ্টা করছে ভোটার উপস্থিতি যত কম হয় ততটা নিশ্চিত করার জন্য। আর সে লক্ষ্যেই শুধু গণসংযোগ নয়, তারা সন্ত্রাস এবং নাশকতার ওপর একটা বড় ধরনের গুরুত্ব দিয়েছে। পাশাপাশি যারা রিটার্নিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবে সেই সমস্ত ব্যক্তিদের টার্গেট কিলিংয়ের নীলনকশা নিয়েও বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে একাধিক আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। 

তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা এসবে মোটেও ভীত নয়। তারা পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এবং এই ধরনের নাশকতা, তৎপরতা কঠোরভাবে দমন করা হবে। আর শেষ পর্যন্ত যদি ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হয়ে যায় যেটি হয়ে যাবে বলেই এখন ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে তখন বিএনপির সামনে একটি বিকল্প থাকবে তা হল বিবাচনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সেই আন্দোলনটি আরও ব্যাপক বিস্তৃত হবে বলে বিএনপি নেতারা বলছেন। এই সময়ে তারা বর্তমান সরকারকে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করবেন এবং একটি অবৈধ সরকার হিসেবে তারা ঘোষণা করবেন। পাশাপাশি একটা বিকল্প প্রবাসী তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পরিকল্পনাও বিএনপির নেতাদের মধ্যে রয়েছে। সেই সাথে তারা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে এবং আন্তর্জাতিক একটা মতামত তৈরি করার জন্য কাজ করবে। এরকম পরিকল্পনা থেকে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অর্থাৎ ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হয়ে গেলেই সব কিছু শেষ হয়ে যাচ্ছে—এমনটি নয়। বরং বিএনপি নেতারা বলছেন, সেদিন থেকে আসল খেলা শুরু হবে।

নির্বাচন   দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন   ভোট বর্জন   অসহযোগ আন্দোলন   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

অস্তিত্বের সংকটে ছোট দল

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০১ জুন, ২০২৪


Thumbnail

কদিন আগে আওয়ামী লীগ তাদের আদর্শিক জোট ১৪ দলের শরিকদেরকে নিয়ে বৈঠক করেছিল। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বৈঠকে ১৪ দলের নেতাদেরকে আমন্ত্রণ জানান। এই বৈঠকে ১৪ দলের নেতারা আওয়ামী লীগের উপেক্ষা-অবহেলার ব্যাপারে মুখ খুলেন এবং অনেক আবেগঘন অভিমানের কথা বলেছিলেন।

সকলে ধারণা করেছিল, এরপর ১৪ দল সক্রিয় হবে এবং ১৪ দলকে আওয়ামী লীগ গুরুত্ব দেবে। কিন্তু ওই বৈঠক হয়ে যাওয়ার বেশ কয়েকদিন পরও এখন পর্যন্ত ১৪ দলের নতুন কোনও পদক্ষেপ হয়নি। এমনকি ১৪ দলের শরিকদের একজন নেতা বলেছেন যে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যে কোন এ ধরণের বৈঠকের পর একটি ফলোআপ বৈঠক করতে হয়। যেটি ১৪ দলের সমন্বয়ক আহ্বান করেন এবং পরবর্তী বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করা হয়। সেটিও হয়নি। ঐ বৈঠকটা ছিল একটা সান্ত্বনা পুরস্কার বলে মনে করেন ১৪ দলের অধিকাংশ শরিক নেতারা। এরপর আর ১৪ দলের খোঁজখবর নিচ্ছেন না আওয়ামী লীগ। ফলে ১৪ দল এখন অপাংক্তেয় অবহেলায়।

১৪ দলের শরিকদের মধ্যে অধিকাংশ দলগুলি ক্ষয়িষ্ণু। আওয়ামী লীগের ছায়ায় তারা বেঁচে আছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের ছায়া এখন নেই জন্য এই দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে। ১৪ দলের ছোট ছোট দলগুলোর মধ্যে ক্ষোভ, কোন্দল, বিভক্তি প্রকাশ্য রূপ ধারণ করেছে। এই দলগুলোতে কর্মীদের মধ্যে হতাশা, তারা কেউ আওয়ামী লীগে চলে চাচ্ছে, কেউ আবার রাজনীতি ছেড়ে অন্য কাজে মনোযোগী হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে অস্তিত্বের সংকট সৃষ্টি হয়েছে ১৪ দলের শরিক দলগুলোর মধ্যে।

আবার ১৪ দলের বাইরে যে রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছে সেগুলোতেও অস্তিত্বের সংকট দেখা দিয়েছে। ১৪ দলের বাইরে রাজনৈতিক দলগুলোর একটা বড় অংশকে নিয়ে বিএনপি রীতিমতো নাটক করছে। নির্বাচনের আগে থেকেই তাদের মূলো ঝুলিয়ে রেখেছে বিএনপি। তাদের সাথে যুগপৎ আন্দোলন করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই আন্দোলন কিছুই হয়নি। নির্বাচনের পরে নতুন করে আন্দোলন সংগঠিত করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এই যোগাযোগের কোন ইতিবাচক ফলাফল দেখা যায়নি।

১৪ দলের শরিক দলগুলোর মধ্যে কল্যাণ পার্টি ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগে চলে গেছে এবং সেই দলটি এক নেতার এক দল হিসেবে কোনরকমে টিকে আছে। বাকি দলগুলোর মধ্যে জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো এখন নিভু নিভু। তারা বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। বিএনপির কর্মসূচি হলে তারা কিছু লোকজন জোগাড় করতে পারে। বাকি সময় তাদের অফিস তালাবদ্ধ থাকে।

এই দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে এবং এদের ভবিষ্যৎ কী হবে তা তারা নিজেরাও জানে না। এই সমস্ত ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে এবং তারা বিএনপির অবহেলার জন্য ক্ষুব্ধ। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি এবং জামায়াত ছাড়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে ক্রিয়াশীল যে বাম এবং গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো ছিল, সেই দলগুলো ক্রমশ ম্লান এবং বিলীন প্রায় হয়ে যাচ্ছে।

সামনে এই অবস্থা যদি চলতে থাকে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দুটি দলের কেউই যদি শেষ পর্যন্ত ছোট ছোট দলগুলোকে ছায়া না দেয় তাহলে কালের গর্ভে দলগুলো বিলীন হয়ে যাবে বলেও অনেকে মনে করেন। ফলে রাজনীতিতে একটা নতুন শূন্যতার সৃষ্টি হবে। সেখান থেকে উগ্র মৌলবাদের উত্থান ঘটতে পারে বলেও অনেকের আশঙ্কা।


১৪ দল   আওয়ামী লীগ   রাজনীতি   বাংলাদেশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করা হবে’

প্রকাশ: ০৯:৪৯ পিএম, ০১ জুন, ২০২৪


Thumbnail

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, বিএনপি নেতা তারেক রহমান লন্ডনে বসে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তিনি একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করা হবে। শনিবার (১ জুন) নরসিংদী সার্কিট হাউসে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, আমরা যে টানা চারবার ক্ষমতায় এসেছি সে পথ সহজ ছিল না। নানারকম ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু জনগণের সমর্থন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে চলেছি। যারা আওয়ামী লীগের দুর্দিন দেখেননি তারা বুঝবেন না-আমাদের কতটা কঠিন সময় গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই নেত্রী যাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আপনাদের ভালোবাসায় তিনি এখনো বেঁচে আছেন এবং গণমানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।

কর্মীদের উদ্দেশ্যে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, সবসময় জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণ হলো পানির মতো। তাদের সঙ্গে মিশতে হবে। মানুষকে বাদ দিয়ে রাজনীতি হবে না। আপনারা প্রতিদিন প্রধানমন্ত্রী কী বক্তৃতা দেন তা শুনবেন। প্রতিদিন পত্রিকা পড়বেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনী পড়েন। নিজের মস্তিষ্ককে কাজে লাগান।

নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম তালেব হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী-১ আসনের সংসদ সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হীরু, নরসিংদী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপ, নরসিংদী-৩ আসনের সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, সংরক্ষিত মহিলা আসন-৩৫ এর সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুখ। মতবিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা কাজী মোহাম্মদ আলী।


জাহাঙ্গীর কবির নানক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আশাবাদী বিএনপি: হতাশ বিএনপি

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০১ জুন, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির মধ্যে এক ধরনের আশাবাদ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আবার হতাশাও বিএনপিকে গ্রাস করে ফেলছে। হতাশা এবং আশার দোলাচলে দুলছে দীর্ঘ ১৭ বছরের বেশি ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি।

বিএনপির আশাবাদের কারণ হল, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কিছু কর্মকাণ্ড। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাতে বিএনপির অনেকেই উল্লসিত। বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির যে বিপুল কাহিনী গণমাধ্যমে এসেছে এবং তার যে এখন বিচার হচ্ছে, এটিও বিএনপির জন্য নতুন ইস্যু এবং এটি নিয়েও তারা মাঠ গরম করার চেষ্টা করছে।

তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনৈতিক সংকট, অর্থ পাচার, খেলাপি ঋণ এবং মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানো নিয়ে কেলেঙ্কারির ঘটনাগুলোতে বিএনপি মনে করছে, জনগণের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের একটি মনোভাব ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে।

আর এই কারণেই বিএনপির লোকেরা আশাবাদী। তারা মনে করছে যে, সরকার বিরোধী কোন আন্দোলন না করলেও জনগণই এখন কিছুদিনের মধ্যে ক্ষেপে যাবে। কারণ জীবনযাত্রার ব্যয় সীমাহীন পর্যায়ে চলে গেছে। এর মধ্যে দফায় দফায় গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির দাম বাড়ানো হচ্ছে। মানুষ এখন জীবিকা নির্বাহের জন্য হিমশিম খাচ্ছে। এই অবস্থা একটি আন্দোলনের জন্য উপযোগী।

বিএনপির একজন নেতা বলছিলেন যে, বিএনপিকে আন্দোলন করতে হবে না। সামনের দিনগুলোতে জনগণই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠবে। আর এ কারণেই বিএনপির মধ্যে এক ধরনের আশাবাদ অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে এখন বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে বিএনপি নেতারা এটাও স্বীকার করে যে শুধু আশাবাদ দিয়ে হবে না, আন্দোলনকে সংগঠিত করতে হবে এবং সংগঠনের জন্য সঠিক নেতৃত্ব প্রয়োজন। প্রয়োজন সঠিক কর্মসূচি। আর এখানেই বিএনপির মধ্যে হতাশা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিএনপির নেতাদের মধ্যে হতাশার একাধিক কারণ রয়েছে।
 
প্রথমত, বিএনপি যে দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি, এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে পারছে না। সেই পরিস্থিতি অনুযায়ী তারা আন্দোলন-সংগ্রামও গড়ে তুলতে পারছে না। অথচ এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে একটি রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করা যে প্রয়োজন, তা তারা উপলব্ধি করছেন। বিএনপি নেতারাই স্বীকার করছেন, তারা তীব্র নেতৃত্বের সঙ্কটে এমন নেতারা দায়িত্বে আছেন যারা দেশের বাস্তবতা অনুভব করতে ব্যর্থ।

বিএনপি হতাশার দ্বিতীয় কারণ হল, বহু নেতাকর্মী এখনও ফেরারি জীবনযাপন করছেন। তারা আত্মগোপনে আছেন। এই সমস্ত নেতাকর্মীদের পাশে বিএনপির কোনো নেতারা নেই। এমনকি অনেকে আদালতের পয়সা খরচ করতে জমিজমা বিক্রি করছেন বলেও অনেকে মনে করছেন।

বিএনপির একজন নেতা স্বীকার করেছেন যে, অনেক নেতাই বিএনপিতে রাজার হালে চলাফেরা করছেন। কিন্তু বিএনপির কিছু কিছু নেতাকর্মী অর্ধাহারে না খেয়ে আছে। এই অবস্থায় নতুন কেউ আন্দোলনের জন্য ঝুঁকি নেবে কি না তা নিয়ে বিএনপির মধ্যে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপি যে সমস্ত কর্মসূচিগুলো দিয়েছিল সেই সমস্ত কর্মসূচিতে কর্মীদের উপস্থিত ছিল আরও আগের চেয়ে কম। বিএনপি নেতারাও স্বীকার করেছেন তাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী ফেরারি জীবনযাপন করছেন। আর এই অবস্থা থেকে স্বাভাবিক জীবনে না ফিরিয়ে আনতে পারলে তাদের আন্দোলনের মাঠে পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে।

বিএনপির মধ্যে হতাশার আরও একটি কারণ রয়েছে, তা হল নেতৃত্ব শূন্যতা। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ে শতাধিক শূন্যপদ রয়েছে। এগুলো পূরণ করা হচ্ছে না। এমনকি স্থায়ী কমিটির যে পাঁচটি সদস্য পদও এখন খালি রয়েছে। আর এই সমস্ত শূন্যপদগুলো পূরণের জন্য কী ধরনের উদ্যোগ লন্ডন থেকে নেওয়া হবে, সেটির দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় তাদেরকে। এ নিয়েও বিএনপির মধ্যে হতাশা। হতাশা আর আশার দুলাচলে বিএনপি স্থবির অবস্থায় রয়েছে। তারা না পারছে আন্দোলন করতে না পারছে চাঙা হতে।


বিএনপি   আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন   মির্জা ফখরুল   ড. মঈন খান   নজরুল ইসলাম খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলায় ধরাশায়ী আওয়ামী লীগের হেভিওয়েটরা

প্রকাশ: ০৮:০৩ পিএম, ০১ জুন, ২০২৪


Thumbnail

এবার উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশগ্রহণ করেনি। দলীয় প্রতীকও ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। তারপরও আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতারা তাদের আত্মীয় স্বজন ও মাই ম্যানদেরকে নির্বাচনে প্রার্থী করার জন্য মরিয়া চেষ্টা করেন এবং এই সমস্ত এলাকায় প্রভাব বিস্তারেরও অভিযোগ এসেছিল। অনেকে মনে করেন যে, এলাকায় প্রভাব অক্ষুন্ন রাখা এবং দলের ভিতর নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা তাদের মাই ম্যানদেরকে নির্বাচনে প্রার্থী করেছিলেন।

কিন্তু উপজেলা নির্বাচনের তিন ধাপ অতিক্রান্ত হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে যে, বহু স্থানে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতাদের আত্মীয় স্বজন এবং মাই ম্যানরা ধরাশায়ী হয়েছেন। এটি আওয়ামী লীগের জন্য একটা বড় শিক্ষা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এর ফলে বিভিন্ন এলাকায় মাই ম্যান গড়ে তুলার প্রতিবাদে তৃণমূলের সংঘবদ্ধ আন্দোলনের বিজয় হয়েছে বলেও অনেকে মনে করছেন।

এবার উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের স্বজন এবং মাই ম্যানরা পরাজিত হয়েছেন তাদের  মধ্যে আছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মন্ত্রীর ছোট ভাই, সাবেক কৃষি মন্ত্রী আবদুর রাজ্জাকের খালাত ও মামাত ভাই, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তাফা কামালের ছোট ভাই, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শাসছুল হক টুকুর ছোট ভাই ও ভাতিজা, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেকের ফুফাতো ভাই এবং মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী এ বি এম তাজুল ইসলামের ভাতিজা। এরা সবাই নির্বাচনে স্ব স্ব উপজেলা থেকে পরাজিত হয়েছেন। এই উপজেলা নির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রার্থী দেওয়া হয়েছিল এবং এই সমস্ত প্রার্থীরা বিপুলভাবে বিজয়ী হয়েছেন।

২৯ মে অনুষ্ঠিত হয় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। সেখানে ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন প্রার্থী হয়েছিলেন। শাহাদাত হোসেনের প্রতি ওবায়দুল কাদেরের সমর্থন ছিল বলে এলাকার ভোটাররা মনে করেন। এই নির্বাচনে চার জন প্রার্থীর মধ্যে তিনি টেলিফোন প্রতীকে ৪৬১০ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন, তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। শাহাদাতের হেরে যাওয়া রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ তৈরি করেছে। নির্বাচনে পরাজয়ের জন্য শাহাদাত হোসেন তার ভাই বাসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জাকে দায়ী করেছেন। কিন্তু যাকেই দায়ী করুন না কেন তার জামানত বাজেয়াপ্ত এই অঞ্চলের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করেছে।

২১ মে দ্বিতীয় ধাপে কুমিল্লা সদরের দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে সাবেক অর্থমন্ত্রী ও কুমিল্লা-১০ আসনের সংসদ সদস্য আ হ ম মোস্তফা কামালের ছোট ভাই গোলাম সরওয়ার পরাজিত হয়। গোলাম সরওয়ার এর আগে তিনবার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু এবার তিনি তৃতীয় হন। আওয়ামী লীগের নেতারা আ হ ম মোস্তাফা কামালের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের চিহ্ন হিসেবেই এই নির্বাচনে তার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ওই নির্বাচনে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাই বাবলু ছিলেন তৃণমূলের ঐক্যবদ্ধ প্রার্থী।

আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের বক্তব্য, মন্ত্রীর ভাই হিসেবে সরওয়ার সব সময় প্রভাব বিস্তার করতেন এবং মন্ত্রীর পরিবারের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ছিল এলাকায়। এছাড়াও এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দুই নেতার বিভক্তিও স্পষ্ট ছিল। কারণ যিনি বিজয়ী হয়েছেন তাকে সমর্থন দেন কুমিল্লা সদর আসনের আওয়ামী লীগের এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন। তবে এই নির্বাচনের ফলাফলে স্থানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগের বিরোধ আরও বেড়ে গেল বলে অনেকেই মনে করছেন।

তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচনে হেরে গেছেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও মানকিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি ডা. জাহিদ মালেকের ফুফাতো ভাই মোহাম্মদ ইসরাফিল হোসেন। এই নির্বাচনে সরাসরি তাকে সমর্থন দেন জাহিদ মালেক। ২০১৯ সালে মোহাম্মদ ইসরাফিল বিনা ভোটে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এখানেও আওয়ামী লীগের লোকজন তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারাম উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে হেরে গেছেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য এ বি তাজুল ইসলামের ভাতিজা মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম তুষার। এভাবে বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতাদের পরাজয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একটি নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করেছে।


উপজেলা নির্বাচন   আওয়ামী লীগ   হেভিওয়েট নেতা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী: গয়েশ্বর

প্রকাশ: ০৫:৪৪ পিএম, ০১ জুন, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। আর যার নেতৃত্বে জনগণ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, হাজার মাইল দূরে থেকে সে তারেক রহমান যদি আওয়াজ দেয় তাতেই ক্ষমতাসীনদের কানের পর্দা ফেটে যায়।

শনিবার (১ জুন) দুপুরে রাজধানীর দোলাইপাড়ে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি দলটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা দক্ষিণ শ্যামপুর-কদমতলী থানা বিএনপি অঙ্গ সহযোগী সংগঠন আয়োজিত দোয়া মাহফিল এবং খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম।

গয়েশ্বর বলেন, খালেদা জিয়া একদিনে প্রধানমন্ত্রী হননি। জিয়ার আদর্শকে ধারণ করে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে খালেদা জিয়া হয়েছেন। দেশের জন্য গণতন্ত্রের জন্য জিয়া পরিবারের অবদান অপরিসীম। আজ অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য জিয়া পরিবারকে ধ্বংস করার চেষ্টা হচ্ছে। যে জিয়া জনতার সে জিয়াকে মুছে ফেলা যাবে না। যে বিএনপি জন্ম হয়েছে দেশ জনগণের প্রয়োজনে সে বিএনপিকে নিঃশেষ করা যাবে না।


খালেদা জিয়া   গয়েশ্বর  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন