ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

গ্রামীণ কল্যাণ নিয়ে ইউনূসের ভয়ঙ্কর জালিয়াতি

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

জালিয়াতি করে অবশেষে গ্রামীণ কল্যাণেও ফেঁসে যাচ্ছেন ড. ইউনূস। রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ করার ক্ষেত্রে ড. ইউনূস প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন, আইন লঙ্ঘন করেছেন এবং জাল জালিয়াতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদ নিজের কুক্ষিগত করেছেন। বাংলা ইনসাইডার এর অনুসন্ধানে এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। 

সম্প্রতি গ্রামীণ ব্যাংক তার নিজস্ব সম্পত্তি হিসেবে গ্রামীণ কল্যাণ দখলে নিয়েছে। আর এটিকে জবরদখল হিসেবে অভিহিত করেছেন ড. ইউনূস। ১২ ফেব্রুয়ারি গ্রামীণ ব্যাংক তাদের বোর্ড সভার সিদ্ধান্তের আলোকে গ্রামীণ কল্যাণ এবং তার প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাদের নিজস্ব চেয়ারম্যান পদে নিয়োগদান করেন। আর ড. ইউনূস দাবি করেছেন যে গ্রামীণ কল্যাণের সঙ্গে গ্রামীণ ব্যাংকের কোন সম্পর্ক নেই। 

আসলে কে সত্য? 

বাংলা ইনসাইডার এ বিষয়ে অনুসন্ধান করছে। বিশেষত গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ড. ইউনূস ডয়েচ ভেলে-তে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন যে, এখন গ্রামীণ কল্যাণের সঙ্গে গ্রামীণ ব্যাংকের কোন সম্পর্ক নেই। একই ভাবে ড. ইউনূসের পক্ষে ৩৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি গত রোববার এক বিবৃতি পাঠিয়েছেন। তাতে তারা অভিযোগ করেছেন যে ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি প্রতিষ্ঠান জবরদখল করার প্রচেষ্টা সংক্রান্ত বিভিন্ন সংবাদ এর প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। গ্রামীণ টেলিকম ভবনে অবস্থিত গ্রামীণ কল্যাণ এবং গ্রামীণ টেলিকম সহ এ সব প্রতিষ্ঠান জবর দখলের প্রচেষ্টা হিসাবে এতে অনধিকার এবং জোরপূর্বক প্রবেশ, ভবনটির সামনে রাজনৈতিক সমাবেশ করা হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করছেন। 

এই ৩৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ড. ইউনূসের পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে বলেছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এসব অলাভজনক প্রতিষ্ঠান প্রান্তিক পর্যায়ে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের সংশোধিত আর্টিকেল অফ অ্যাসোসিয়েশন অনুসারে প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন আনার এখতিয়ার গ্রামীণ ব্যাংকের নেই বলে ড. ইউনূসের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কোন আইনগত দাবি থাকলে তা আদালতের কাছে উপস্থাপন করার উদ্যোগ গ্রামীণ ব্যাংক গ্রহণ করতে পারত বলে তারা উল্লেখ করেছেন। একই বক্তব্য ড. ইউনূস দিয়েছেন। অর্থাৎ ড. ইউনূস গ্রামীণ কল্যাণের আর্টিকেল অফ অ্যাসোসিয়েশন পরিবর্তন করেছেন। 

আমরা অনুসন্ধান করার চেষ্টা করি গ্রামীণ কল্যাণ কীভাবে গঠিত হয়েছিল

১৯.১২.১৯৯৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের ৩৪ তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দাতাগোষ্ঠীর প্রাপ্ত অনুদান ও ঋণের অর্থ দিয়ে সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাডভান্সমেন্ট ফান্ড এর অর্থ দিয়ে ২৫.০৪.১৯৯৬ তারিখে গ্রামীণ ব্যাংকের ৪২ তম বোর্ড সভায় গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য ও কর্মীদের কল্যাণের কোম্পানি আইন ১৯৯৪ এর আওতায় গ্রামীণ কল্যাণ নামক একটি প্রতিষ্ঠান তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়। অনুমোদনটি দেয় গ্রামীণ ব্যাংক। তাহলে ওই গ্রামীণ কল্যাণ কার প্রতিষ্ঠান? উত্তর, আইনগত দিক থেকে যদি উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়, খুব সহজ সোজা সাপ্টা উত্তর গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠান। 

গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড সভায় গ্রামীণ কল্যাণ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং গ্রামীণ কল্যাণে গ্রামীণ ব্যাংকের সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাডভান্সমেন্ট ফান্ড হতে মোট ৬৯ কোটি টাকা প্রদান করা হয়। অর্থাৎ যে প্রতিষ্ঠানটিকে টাকা দিয়ে তৈরি করা হল সেই গ্রামীণ কল্যাণ আসলে গ্রামীণ ব্যাংকের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর কিছু নয়। 

শুধু তাই নয়, পাঠক লক্ষ করুন, মেমোরেন্ডাম এবং আর্টিকেল অনুযায়ী গ্রামীণ কল্যাণের নয় সদস্যের পরিচালনা পরিষদের দুইজন সদস্য গ্রামীণ ব্যাংক হতে মনোনয়ন দেওয়ার বিধান ছিল। এছাড়াও উল্লেখ ছিল যে, গ্রামীণ কল্যাণের চেয়ারম্যান হবেন গ্রামীণ ব্যাংক থেকে মনোনীত প্রতিনিধি। 

এখন প্রশ্ন হল যে, এটি গ্রামীণ কল্যাণের আর্টিকল অফ অ্যাসোসিয়েশন। ড. ইউনূস দাবি করেছেন যে, এই আর্টিকল অফ অ্যাসোসিয়েশন তিনি পরিবর্তন করেছেন। গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড সভায় যে আর্টিকল অফ অ্যাসোসিয়েশন তৈরি করা হচ্ছে সেই আর্টিকেল অফ অ্যাসোসিয়েশন গ্রামীণ ব্যাংকের অগোচরে রাতের অন্ধকারে ড. ইউনূস পরিবর্তন করেছেন কীভাবে? 

এবার আসুন আসল তথ্য অনুসন্ধান করে দেখি। যখন ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি থেকে বয়সজনিত কারণে অপসারিত হন, তখনই তিনি জানতেন যে, গ্রামীণ কল্যাণ এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ ডিস্ট্রিবিউশন লি:, গ্রামীণ শিক্ষা ইত্যাদি তার কর্তৃত্বে আর থাকবে না এই সময় তিনি প্রতারণামূলকভাবে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ভুল প্রলোভন দেখিয়ে এই কোম্পানির সদস্যদের দিয়ে একটি বোর্ড সভা করেন। এই বোর্ড সভা করে আর্টিকল অফ অ্যাসোসিয়েশন পরিবর্তন করেন। অথচ এই আর্টিকল অফ অ্যাসোসিয়েশন পরিবর্তন করতে গেছে গ্রামীণ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। কারণ গ্রামীণ ব্যাংকের ৪২ তম বোর্ড সভায় এই আর্টিকল অফ অ্যাসোসিয়েশন অনুমোদিত হয়েছিল। গ্রামীণ ব্যাংক একমাত্র সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা রাখে আইন অনুযায়ী যে গ্রামীণ ব্যাংক তার প্রতিনিধি গ্রামীণ কল্যাণে থাকবে কিনা। গ্রামীণ কল্যাণকে যদি ছেড়ে দিতে হয় তাহলে গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ড. ইউনূস এই সিদ্ধান্ত নেয়ার কোন এখতিয়ার রাখে না। এটি হল এক অদ্ভুত জালিয়াতি এবং প্রতারণা। এটি রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাতের এক ভয়ঙ্কর ঘটনা। ড. ইউনূসের নিয়ন্ত্রণে থাকা গ্রামীণ কল্যাণ কেবল অবৈধ ভাবেই ছিল না বরং ড. ইউনূস রাষ্ট্রীয় সম্পদ কুক্ষিগত করেছিলেন, প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং এজন্য তার বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে প্রতারণার মামলা হওয়া উচিত বলে মনে করেন আইনজ্ঞ বিশেষজ্ঞ।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

সরকার পতনের ‘ব্লু প্রিন্ট’: বিমানবন্দর ও বিটিভি দখল করতে চেয়েছিল সন্ত্রাসীরা

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৪ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে আসলে সরকার পতনের একটি আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল এবং এই আন্দোলন দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে পরিকল্পিত হয়েছিল। সরকার পতনের জন্য সারা দেশে তাণ্ডব সৃষ্টি, নাশকতা এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা দখল করার নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হয়েছিল। আর এ কারণে ঢাকায় প্রায় পাঁচ লাখ ছাত্রশিবির, ছাত্রদল এবং পেশাদার সন্ত্রাসীদেরকে নিয়ে আসা হয়েছিল।

একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, মূল পরিকল্পনা কোটা সংস্কার আন্দোলনকে বেগবান করে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সরকার পতনের আন্দোলনে ধাবিত করাই ছিল বর্তমান নাশকতার লক্ষ্য। আর এই নাশকতার জন্য তারা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট দখল করার পরিকল্পনা করেছিল। এর মধ্যে প্রথমটি ছিল বিমানবন্দর। বিমানবন্দর দখল করে সমস্ত আন্তর্জাতিক বিমান উঠানামা বন্ধ করে সরকারেক জিম্মি করতে চেয়েছিল। আর এ কারণেই ঢাকার উত্তরা এলাকায় ব্যাপক সন্ত্রাসী এবং ছাত্রশিবিরের ক্যাডারদেরকে জড়ো করা হয়েছিল। সেখানে অন্তত ২০ থেকে ৩০ হাজার ছাত্রশিবির এবং ছাত্রদলের ক্যাডার ঢাকার বাইরে থেকে এসেছিল বলে একাধিক গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

সহিংসতার দ্বিতীয় টার্গেট ছিল সংসদ ভবন এবং গণভবনে আক্রমণ করা। এ কারণেই মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকায় অন্তত ২০ হাজার ভাড়াটে লোককে আনা হয়েছিল এবং সঙ্গে ছিল পেশাদার ভাড়াটে সন্ত্রাসী। বসিলা এলাকায় যারা সহিংসতার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল তাদেরকে রাখা হয়েছিল কেরাণিগঞ্জে নদীর ওই পাড়ে। লঞ্চ, টলার এবং নৌকার মাধ্যমে তারা এপারে এসে আক্রমণ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনীর দৃঢ়তায় তারা সেখান থেকে বেশি দূর এগোতে পারেনি।

আর এই পরিকল্পনারই আরেকটি বাস্তবায়ন করার কথা ছিল ধানমন্ডির সাইন্স ল্যাবরেটরি থেকে। সেখান থেকে ছাত্রদল এবং ছাত্রশিবিরের ক্যাডাররা ২৭ নম্বর পর্যন্ত চলে এসেছিল বটে। কিন্তু ২৭ নম্বর পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিরোধের কারণে তারা আর এগোতে পারেনি। আর এ কারণে মোহাম্মদপুর এবং ধানমন্ডির এলাকায় ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটে।

তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ছিল বিটিভি দখল করা। আর এ কারণেই রামপুরাতে বিপুল সংখ্যক পেশাদার সন্ত্রাসী, শিক্ষিত জঙ্গিদেরকে জড়ো করা হয়েছিল। বিটিভির ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, যখন পুলিশ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে লড়াই করছে সে সময় এক ফাঁকে কিছু শেপাদার দুর্বৃত্ত বিটিভিতে ঢুকে যায় এবং অগ্নিসংযোগ করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা বিটিভির নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করতে পারেনি। এখানেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। উত্তরা এবং রামপুরা এলাকায় অনেক তাণ্ডব এবং সহিংসতা হলেও শেষ পর্যন্ত জঙ্গি, ছাত্রদল এবং ছাত্রশিবির তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। 

এই তাণ্ডবের চর্তুথ টার্গেট ছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহসড়ক বন্ধ করা যেন সাপ্লাই চেইন বন্ধ হয়ে যায়। আমদানিজাত পণ্য যেন ঢাকায় ঢুকতে না পারে এবং একই সঙ্গে রপ্তানির জন্য কোন পণ্যও যেন চট্টগ্রাম বন্দরে যেতে না পারে সে পরিকল্পনা ছিল নাশকতাকারীদের। এর ফলে সরকার দুর্বল হয়ে যাবে এবং সরকারের পতন ঘটবে। এ রকম একটি মাস্টারপ্ল্যান থেকে নাশকতার ষড়যন্ত্র সাজানো হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং বাংলাদেশের সেনাবাহিনী আরেকবার প্রমাণ করল তারা বিশ্বমানেরই শুধু নয়, বিশ্বের অন্যতম সেরা বাহিনী।

কোটা আন্দোলন   সরকার পতন   বিটিভি   বিমানবন্দর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

শত কোটি টাকার মালিক প্রধানমন্ত্রীর আরেক চাকর মান্নান

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ১৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail সস্ত্রীক মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান।

তার নাম মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাকর ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। প্রধানমন্ত্রীর ফাই-ফরমাস করছেন। বাজার হাট করে দিতেন এবং জাহাঙ্গীরের (প্রধানমন্ত্রীর আরেক চাকর) চেয়ে এক ধাপ নিচের হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হতো। সেই মোহাম্মদ আব্দুল মান্নানও এখন ১০০ কোটি টাকার মালিক। আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান করছে। তবে কুমিল্লা নিবাসী মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান এখন দেশে নেই। তিনি বিদেশে আছেন। 


জানা গেছে, কানাডায় তার বিপুল সম্পত্তি আছে। সেখানে তিনি বাড়ি করেছেন। তার মেয়েকে কানাডায় পড়িয়েছেন। মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত কর্মচারী ছিলেন। তাকে কাজের লোক হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু কাজের লোক হয়ে আস্তে আস্তে আওয়ামী লীগের নেতা এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতির অনেক গুরুত্বপূর্ণ গোপন ফাইল দেখতেন। আগাম সেই ফাইলের খবর বিভিন্ন জনকে জানিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন। পরবর্তীতে তিনি কুমিল্লা অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়েছেন। ঢাকায় তার একাধিক বাড়ি রয়েছে। তবে একটা সময় যখন প্রধানমন্ত্রী জানতে পারেন তার (আব্দুল মান্নান) বিপুল বিত্তের কাহিনি, তখন তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে দেশ থেকে পালিয়ে যান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান। মোহাম্মদ আব্দুল মান্নানের মেয়ে কানাডার দামী ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছে। বিপুল পরিমাণ সম্পদ সেখানে পাচার করা হয়েছে। কানাডা ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশে মোহাম্মদ আব্দুল মান্নানের সম্পত্তি আছে বলে জানা গেছে। 


এভাবে পোস্টারিং করে প্রতারণার আশ্রয় নিতো মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, জাহাঙ্গীরের মতো মোহাম্মদ আব্দুল মান্নানের যখন অবৈধ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তথ্য পায় তখনই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ব্যক্তিগত কর্মচারী থেকে বাদ দেন। তাকে গণভবনে ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তার বিরুদ্ধে যে তদন্তগুলো হয়েছিল সেই তদন্তগুলো তিনি প্রধানমন্ত্রীর একদা ঘনিষ্ঠ এরকম একটা ধারণা দিয়ে বাধাপ্রাপ্ত করেছিলেন। এরপর তিনি দেশ থেকে পালিয়ে যান। 


দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান এবং তার স্ত্রীর নামে ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। তার বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১০০ কোটি টাকা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সেই টাকা সবই বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

উল্লেখ্য যে, আব্দুল মান্নান প্রধানমন্ত্রীর চা সরবরাহকারী, বাজার করার সূত্রে প্রধানমন্ত্রীর কক্ষে যেতে পারতেন এবং সেখানে প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর ফাইলগুলো দেখতেন। বিশেষ করে বিভিন্ন পদোন্নতি এবং নিয়োগ সংক্রান্ত ফাইলগুলো দেখে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বিভিন্ন ব্যক্তিকে অবহিত করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে ব্লাকমেইল করা, ব্যবসায়ীদের গোপন তথ্য দেয়ার মাধ্যমেও বিত্তবান হয়েছিলেন আব্দুল মান্নান। অবশ্য এই সমস্ত ঘটনা নিয়ে এর আগেও তদন্ত হয়েছে এবং এ সমস্ত তদন্তের পর তাকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিচ্যুতি করা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আব্দুল মান্নান প্রধানমন্ত্রীর চাকর হিসেবে বহিষ্কৃত হবার পরও বেশ কিছু ধরে অনিয়ম করেছিলেন। তারপর যখন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয় তখন তা টের পেয়ে তিনি দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। বর্তমানে তিনি কানাডায় অবস্থান করছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান   দুর্নীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

প্রধানমন্ত্রীর এই পিয়ন কে?

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৪ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

আজ গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার পিয়নও ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া এলাকায় যেত না। জানতে পারার পর আমি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রীর ওই পিয়নের নাম বলেননি। কিন্তু বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, ওই পিয়নের নাম জাহাঙ্গীর। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত কর্মচারী হিসেবে কাজ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর ব্যাগ বহন করতেন, প্রধানমন্ত্রীর খাবার সামনে এগিয়ে দিতেন এবং অন্যান্য ফাই-ফরমাশ খাটতেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন বিরোধী দলে তখন থেকেই জাহাঙ্গীর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ঢাকার বাইরে যখন বিভিন্ন রাজনৈতিক সভায় যেতেন সেখানেও জাহাঙ্গীরকে দেখা যেত। আস্তে আস্তে জাহাঙ্গীরের একটি রাজনৈতিক বলয় তৈরি হয়ে যায়।


নোয়াখলী জেলার চাটখিল উপজেলায় জাহাঙ্গীরের বাড়ি। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করলে জাহাঙ্গীর গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মচারী হন। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর ফাই-ফরমাশ খাটা শুরু করেন। গণভবনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের আনাগোনা শুরু হলে সকলের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি করেন। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মচারী এই সুবিধা নিয়ে তিনি অনেক গোপন নথির সন্ধান পেতেন। অনেকের তদবির করে দেওয়া শুরু করেন। আস্তে আস্তে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একজন প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরো বিষয়গুলো জানতে পারেন। এটি জানার পর জাহাঙ্গীরকে গণভবন থেকে বের করে দেওয়া হয়। কিন্তু গণভবনে থাকার সময় তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের চেয়ে ক্ষমতাবান হয়ে উঠেছিলেন। আওয়ামী লীগের কিছু কিছু ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ,  গণভবনে থাকেন, তাকে বলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করা যায় ইত্যাদি ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে জাহাঙ্গীরের প্রতি আলাদা ‘শ্রদ্ধাবোধ’ দেখাতে শুরু করেন। তাদের কেউ কেউ জাহাঙ্গীরকে ‘স্যার’ ডেকেছেন বলেও শোনা যায়। এমনকী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও জাহাঙ্গীরের কাছে তদবির করতেন। এই জাহাঙ্গীর গণভবনে থেকে বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাকে প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন তদবির করতেন। এভাবে আস্তে আস্তে বিত্তশালী হয়ে ওঠেন এই কাজের লোক। পরবর্তীতে অবশ্য গণভবন থেকে রেবিয়ে যাওয়ার পর এখন তাকে রাজনীতিতে দেখা যায় না। 

গণভবন থেকে বহিষ্কৃত হবার পরও জাহাঙ্গীর তার অবৈধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যান। এর প্রেক্ষিতে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর জাহাঙ্গীরের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী বিশেষ সহকারী পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন জাহাঙ্গীর। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানানো হয়।

আজ প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সন্মেলনে বক্তব্যের পর দুর্নীতি দমন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন যে, বিষয়টি সম্পর্কে তারা অবহিত এবং জাহাঙ্গীরের ব্যাপারে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। খুব শিগগির তার সম্পদ জব্দের প্রক্রিয়া শুরু হবে। 

তবে জাহাঙ্গীর এখন দেশের বাইরে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।



মন্তব্য করুন


ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

যুক্তরাজ্যে থাকতে হলে রাজনীতি ছাড়তে হবে তারেককে

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাজ্যে নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পরই সেই দেশের আভ্যন্তরীণ নীতি, পররাষ্ট্রনীতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে সরকার। স্টারমার সরকার অভিবাসী নীতির বিপক্ষে নয়। তবে অভিবাসীদের কিছু সীমারেখার মধ্যে আবদ্ধ থাকা উচিত বলে তারা মনে করছেন। স্টারমার সরকার মনে করছে যে, অভিবাসীরা যুক্তরাজ্যে অবস্থান করে যা খুশি তা করলে যেমন পররাষ্ট্রনীতির ওপর তার প্রভাব পড়ছে, অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের স্থিতিশীলতা এবং ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এ কারণেই লেবার সরকার তার প্রথম দিকে যে সমস্ত নীতি এবং উদ্যোগগুলো গ্রহণ করতে যাচ্ছে, তার মধ্যে একটি হল অভিবাসীদের কার্যক্রম সীমিতকরণ। 

অভিবাসীদের মধ্যে দুটো ভাগ রয়েছে। প্রথমত, যারা অবৈধভাবে সেখানে অবস্থান করছেন। তাদেরকে বৈধকরণের ক্ষেত্রে একটি রুপরেখা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে নতুন লেবার সরকার। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে তাদের একটি বড় অংশই বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবে। অন্যদিকে যারা অবৈধ অবস্থায় থাকার পর রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করেছে নানা কারণে তাদেরকেও একটি গণ্ডির মধ্যে রাখার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। আগামী ১০০ দিনের মধ্যে এই নীতিমালা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানা গেছে। আর এই নীতিমালার প্রধান যে বিষয়টির কথা বলা হয়েছে যে, মানবিক কারণে বা রাজনৈতিক কারণে যারা যুক্তরাজ্যে আশ্রয় লাভ করবেন তাদেরকে একটি সীমিত পরিসরে কাজ করতে হবে। এই সীমিত পরিসরের মধ্যে রয়েছে তারা যুক্তরাজ্য সরকারের আইন নিয়ম কানুন মেনে চলবেন। তারা অবৈধ পথে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন না এবং বিদেশ থেকে তাদের কোনো অর্থ আসলে সে ব্যাপারে সরকারকে অবহিত করতে হবে এবং সেই অর্থের উৎস জানাতে হবে। পাশাপাশি সেই অর্থের উচ্চ কর দিতে হবে। পাশাপাশি এটিও নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, রাজনৈতিক আশ্রয়প্রাপ্ত অভিবাসীরা কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজেদেরকে যুক্ত করতে পারবেন না। 

বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। লন্ডনে বসে তিনি বিএনপির দল চালাচ্ছেন। কিন্তু লেবার পার্টির এই নতুন অভিবাসন নীতি বাস্তবায়িত হলে তাকে বিএনপির পদ ছাড়তে হবে। বিএনপির কোনো পথ দখল করে তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাস করতে পারবেন না। দ্বিতীয়ত, তার আয় ব্যয়ের নিয়মিত হিসাব দিতে হবে এবং রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা ব্যক্তি হিসেবে তাকে বলতে হবে। কোথা থেকে কোন খাতে তিনি কত টাকা পেয়েছেন তার বিস্তারিত হিসাব দেখাতে হবে।

তৃতীয়ত, তারেক যে সমস্ত সম্পদ বৈধ পন্থায় যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাবেন, সেই সমস্ত সম্পদের ওপর তাকে উচ্চ শুল্ক দিতে হবে। উল্লেখ্য যে, লেবার পার্টির একাধিক এমপি বলেছেন যে, রাজনৈতিক আশ্রয় লাভকারী ব্যক্তিরা এখানে দুর্নীতির অর্থে অর্জিত টাকা দিয়ে রাজকীয় জীবনযাপন করতে পারেন না। এতে ব্রিটিশ সমাজের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। শুধু তারেক জিয়া নয়, বেশকিছু পলাতক অভিবাসী যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করেছেন। তারা অবৈধ অর্থ দিয়ে রাজকীয় জীবন যাপন করছেন। এটি যুক্তরাজ্য সমাজে একটি বিরূপ প্রভাব তৈরি করেছে। আর এ কারণেই এ সব বন্ধের উদ্যোগ গ্রহণ করছে নতুন লেবার সরকার। লেবার সরকার মনে করছে যে, যারা রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করেছে তারা মানবিক কারণে পেয়েছে এবং তাদের সে রকম জীবন যাপন করা উচিত। কিন্তু মানবিক কারণে আশ্রয় পাওয়া ব্যক্তিরা যখন রাজকীয় জীবন যাপন করে তখন তা দৃষ্টিকুটু এবং অন্যায্য বটে। আর এ কারণে তারা এটা বন্ধের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এটি বাস্তবায়িত হলে তারেক জিয়ার বর্তমান অবস্থায় লন্ডনে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে। হয় তাকে রাজনীতি ছাড়তে হবে অথবা যুক্তরাজ্য ছাড়তে হবে।

যুক্তরাজ্য   লেবার পার্টি   বিএনপি   তারেক জিয়া   অভিবাসী   লেবার সরকার   কিয়ার স্টারমার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

রিজভীই হচ্ছেন বিএনপির পরবর্তী মহাসচিব

প্রকাশ: ১০:০৫ পিএম, ২৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন। বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র আজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, আজ লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া তৃণমূলের বাছাই করা সদস্যদের মধ্যে ভোটাভুটি করেন। সারা দেশের প্রায় ১০০ জন তৃণমূলের নেতার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে ধাপে ধাপে মিলিত হয়ে নতুন মহাসচিব হিসেবে কাকে নিয়োগ দেওয়া যায় সে ব্যাপারে মতামত জানতে চান। এই মতামতে রুহুল কবির রিজভীর পক্ষে ৯৬ ভোট পড়েছে বলে দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

ইতোমধ্যেই রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে তারেক জিয়ার কথা হয়েছে। আজ রাত ৮টার পর তারেক জিয়ার সঙ্গে রুহুল কবির রিজভীর প্রায় ১৭ মিনিট কথা হয় বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। প্রথম রুহুল কবির রিজভী প্রথমে স্পিকার অন করে কথা বললেও পরবর্তীতে তিনি দলীয় কার্যালয়ের অন্য ঘরে চলে যান এবং সেখান থেকে তিনি তারেক জিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। 

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এর পরপরই রুহুল কবির রিজভীর ঘনিষ্ঠরা একে অন্যকে মিষ্টিমুখ করিয়েছেন। তবে তারা বিষয়টি চেপে রাখছেন। খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, গত কিছুদিন ধরে রুহুল কবির রিজভীকে নিয়ে জয়জয়কার চলছিল। রুহুল কবির রিজভীর সমর্থক গোষ্ঠীকেই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হচ্ছিল। এমনকি লন্ডন থেকে বিভিন্ন কমিটি পরিবর্তনের যে বার্তাগুলো তারেক জিয়া দিচ্ছিলেন, সেই বার্তাগুলো মহাসচিবের কাছে নয়, সরাসরি রুহুল কবির রিজভীর কাছে দেওয়া হচ্ছিল এবং রিজভী এই নির্দেশনাগুলো টাইপ করে সকলের অগোচরে গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছিলেন। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা গণমাধ্যমের মাধ্যমেই বিএনপির পরিবর্তনের কথা গুলো জানচ্ছিলেন।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, চট্টগ্রাম উত্তর এবং দক্ষিণ এবং বরিশাল মহানগর বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে কোন নেতাই কিছু জানাননি। এমনকি যুবদলের কমিটি বিলুপ্তির বিষয়টিও সকলের অজানা ছিল। জানতেন একমাত্র রুহুল কবির রিজভী। 

নাটকীয় ভাবে গত কিছুদিন ধরে রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে তারেক জিয়ার একটি সখ্যতা তৈরি হয়েছে। আর এই সখ্যতার কারণেই এখন রুহুল কবির রিজভীর ওপর নির্ভর করছেন তারেক জিয়া। তবে অন্য একটি সূত্র দাবি করছে যে, দলের তৃণমূলের সঙ্গে আলাপকালে রিজভীকেই তারা নিরঙ্কুশ ভাবে পছন্দ করেছেন। তৃণমূলের নেতারা মনে করছেন যে, দলের দুর্দিনে রুহুল কবির রিজভী আশা ভরসার স্থল এবং তিনি উজ্জ্বীবিত রেখেছেন দলকে। তাই তিনি ছাড়া আর কোন নেতাই পূর্ণকালীন দায়িত্ব পালন করছেন না বলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে। রুহুল কবির রিজভী সম্পর্কে তৃণমূলের নেতারা তারেককে জানিয়েছেন যে তাকে সার্বক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়। ফোন করলে তিনি ফোন ধরেন। কর্মীদের দুঃখ দুর্দশায় পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। এই রকম সময় রিজভীর কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কিছুদিন ধরেই মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করার ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করছেন। বিশেষ করে কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পরে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন যে, তিনি দলের মহাসচিব থাকতে চান না। তবে বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়া দুজনই তাকে মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। এর মধ্যে তারেক জিয়া নতুন মহাসচিব খুঁজছেন। তবে বিএনপির কোন সূত্রই নিশ্চিত করতে পারেনি যে, আগে মহাসচিব পদে পরিবর্তন হবে নাকি স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন হবে। তবে যেটিই হোক না কেন রহুল কবির রিজভী যে বিএনপির পরবর্তী মহাসচিব হতে যাচ্ছেন তা মোটামুটি নিশ্চিত। 

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, রিজভী বিএনপির মধ্যে যতই জনপ্রিয় থাকুক না কেন জাতীয় রাজনীতিতে তার অবস্থান খুব একটা ভালো নয়। জনগণের কাছেও তার গ্রহণযোগ্যতা খুব একটা বেশি নয়। তবে তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ হবার কারণে রুহুল কবির রিজভী যে বিএনপির পরবর্তী মহাসচিব হতে যাচ্ছেন তা মোটামুটি নিশ্চিত। তবে বিএনপির তরুণ নেতারা বলছেন, তারেক জিয়ার আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে নয়ম বরং তৃণমূলের আকাঙ্খার প্রেক্ষিতেই রিজভীকে বিএনপির মহাসচিব করা হচ্ছে।

বিএনপি   মহাসচিব   তারেক জিয়া   রুহুল কবির রিজভী  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন