তিন মাস পেরিয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের। এরই মধ্যে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে সরকারবিরোধী আন্দোলনে পদবিধারী নেতাদের ভূমিকা নিয়ে সিলেট বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। দেখা দিয়েছে প্রকাশ্য বিভক্তি।
অভিযোগ উঠেছে, আন্দোলনে অনুপস্থিত থাকা নেতারা অবমূল্যায়ন করছেন ত্যাগী ও জেলখাটা নেতা-কর্মীদের। এ ছাড়া জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীর ‘বিভাগীয় সাংগঠনিক রিপোর্ট’ নিয়েও চলছে অসন্তোষ। অবশ্য রিপোর্টের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি।
সরকার পতনের ‘এক দফা’ আন্দোলনে জেলা ও মহানগর বিএনপির পদবিধারী অনেক নেতাই ছিলেন অনুপস্থিত। কেন্দ্রীয় পদবিধারী অনেক নেতারও দেখা মেলেনি মাঠের আন্দোলনে। পদহীন ও কম গুরুত্বপূর্ণ নেতারাই সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। আসামি হয়েছেন ডজন ডজন মামলার। অন্তত ২০০ নেতাকে যেতে হয় জেলে। ‘দুঃসময়ে’ ‘বড় নেতাদের’ পাশে না পাওয়ায় তৃণমূলে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। সেই ক্ষোভ এখন প্রকাশ্যে।
দলীয় সূত্র জানায়, সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির ব্যানারে গত শুক্রবার দক্ষিণ সুরমার একটি কনভেনশন সেন্টারে ইফতারের আয়োজন করা হয়। সেখানে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। জেলা ও মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতা ছিলেন অনুপস্থিত। এ ছাড়া মাহফিলে গেলেও কেন্দ্রীয় পদবিধারী সিলেটের নেতারা মঞ্চে ওঠেননি। দর্শক সারিতে বসে ইফতারে অংশ নেন। কারা নির্যাতিত অনেক নেতাও ইফতার মাহফিলের দাওয়াত না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন। এ ইফতার মাহফিলের দুই দিনের মাথায় রবিবার ‘রাজপথের সক্রিয় ও কারা নির্যাতিত নেতা-কর্মীরা’ ব্যানারে নগরীর ইলেকট্রিক সাপ্লাই রোডে একটি কমিউনিটি সেন্টারে ইফতারের আয়োজন করা হয়। দলের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই এ আয়োজন করা হয়।
সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, বিগত আন্দোলনে যেসব নেতা-কর্মী জীবনবাজি রেখে কর্মসূচি পালন করেছেন, যারা কারা নির্যাতিত হয়েছেন তাদের নিয়ে ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। এতে রাজপথের সাহসী সৈনিকদের মনোবল আরও সুদৃঢ় হবে বলে আমরা মনে করছি।
জেলা বিএনপির সদস্য ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবদুল আহাদ খান জামাল বলেন, ‘জেলা ও মহানগর বিএনপির ইফতার মাহফিলে অনেক ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাদের দাওয়াতই করা হয়নি। বর্তমান নেতৃত্বে দলের মধ্যে ঐক্যের পরিবর্তে বিভেদ সৃষ্টি হচ্ছে। তাই মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা কমিটি ভেঙে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জোরালো হচ্ছে।’
জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘রাজপথে সক্রিয় ও কারা নির্যাতিত নেতা-কর্মীরা’ ব্যানারে আয়োজিত ইফতারের সঙ্গে বিএনপির দলীয় কোনো সম্পর্ক নেই। এ নিয়ে নেতা-কর্মীদেরও বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই।’
এদিকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বরাবর সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীর লেখা পাঁচ পৃষ্ঠার একটি রিপোর্ট এখন নেতা-কর্মীদের হাতে হাতে। তবে ওই রিপোর্টের নিচে কাইয়ুম চৌধুরীর স্বাক্ষর নেই। কাইয়ুম চৌধুরীও রিপোর্টটি অস্বীকার করেছেন। তবে নেতা-কর্মীদের দাবি, রিপোর্টটি কাইয়ুম চৌধুরী ঢাকায় পাঠিয়েছেন। রিপোর্টটি ফাঁস হওয়ায় এখন তিনি অস্বীকার করছেন।
বিভাগীয় ওই রিপোর্টে আন্দোলন সংগ্রামে কেন্দ্রীয় ১৬ সিলেটি নেতার ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির ছাড়া আর কারও ভূমিকা সন্তোষজনক ছিল না বলে উল্লেখ করা হয়। রিপোর্টে আন্দোলন সংগ্রামের সঠিক চিত্র উঠে আসেনি বলে দাবি করছেন নেতা-কর্মীরা।
বিএনপি সিলেট অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য বিভক্তি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
সাইবার যুদ্ধ আওয়ামী লীগ কোটা আন্দোলন তথ্য ডিজিটাল বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গ্রেপ্তার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলামগীর
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন গ্রেপ্তার তারেক জিয়া নাশকতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
এখন ষড়যন্ত্র এবং আন্দোলনের দু’টি অংশ হচ্ছে। একটি দৃশ্যমান অংশ যেটি মাঠে হচ্ছে। সরকার পতনের লক্ষ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ওপর ভর করে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, পেশাদার সন্ত্রাসীরা এক জোট হয়ে দেশে নাশকতা সৃষ্টি করেছে। একটি ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টির চেষ্টা করে সরকারকে হটানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলো। অন্যটি সাইবার জগতে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
বিএনপির বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযান চলছে। নির্বাচনের আগে ২৮ অক্টোবর বিএনপির তাণ্ডবের পর যেভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করেছিল সরকার ঠিক একইভাবে এবারও ১৭ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে যে সন্ত্রাস, সহিংসতা হচ্ছে তার হোতাদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এই সময় নাশকতায় ছাত্রশিবির এবং জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্রদল এবং বিএনপি নেতারা সরকার পতনের একটা নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন। সেই চেষ্টা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তারা আন্দোলনকে সহিংস এবং নাশকতার পথে নিয়ে যান। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো যেমন বিটিভি, সেতু ভবন ইত্যাদি হামলার পিছনে বিএনপির সরাসরি সম্পৃক্ততার খবর পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আর এই কারণেই যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
টানা তিন বারের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি। দলে তার কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা আওয়ামী লীগ সভাপতির পরপরই। সারাদিনই দলীয় কার্যালয়ে কিছু না কিছু বলেন। সংবাদ সম্মেলন করে নানা বিষয়ে বক্তব্য রাখাকে তিনি রীতিমতো একটি রেওয়াজে পরিণত করেছেন। কিন্তু সেই ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে আওয়ামী লীগে এখন নানা রকম অস্বস্তি এবং প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে।