বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিএনপি এবং শামীম ইস্কান্দারের দ্বন্দ্ব
এখন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। গতকাল বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর,
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এবং আমানউল্লাহ আমান গিয়েছিলেন এভারকেয়ার হাসপাতালে।
তারা বেগম খালেদা জিয়ার শারিরীক অবস্থা দেখা এবং সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য গিয়েছিলেন।
কিন্তু এসময় বিএনপির এই ৩ নেতা বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার এর ক্ষোভের
মুখে পড়েন।
শামীম ইস্কান্দার তাদের বলেন, ‘এখানে কি তামশা দেখতে এসছেন? আপনার
আসেন জন্যই বেগম জিয়ার বিদেশ যাওয়ার দরজা বন্ধ হয়ে যায়। আপনারা আসবেন না। বেগম খালেদা
জিয়ার জন্য আপনারা কি করেছেন?’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটু বিব্রত হন। মির্জা আব্বাস
কিছু বলতে গেলে তাকে থামিয়ে দেওয়া হয়। শেষে কিছুক্ষণ থাকার পর তারা চলে আসে। বেগম জিয়ার
পরিবার কিছুদিন ধরেই বিএনপির নেতৃবৃন্দের উপর ক্ষুব্ধ। বিশেষ করে শামীম ইস্কান্দার
বিএনপির নেতৃবৃন্দের উপর প্রকাশ্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, শামীম ইস্কান্দারের ধারণা বিএনপির সরকার
বিরোধী অবস্থান, বিএনপির ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন ইত্যাদি কারণেই বেগম খালেদা জিয়ার
বিদেশে যাওয়া হচ্ছে না। বিএনপির অপরিণামদর্শী রাজনীতির জন্যই বেগম খালেদা জিয়ার এই
পরিণতি। এ কারণেই শামীম ইস্কান্দার এখন বিএনপি থেকে সবকিছু গুটিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন।
বিএনপির সঙ্গে বেগম জিয়ার সম্পর্ক নেই এটি প্রমাণের চেষ্টা করছেন।
শামীম ইস্কান্দারের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, তিনি সরকারের সঙ্গে দেন দরবার করছেন এবং তার এই উদ্যোগের কারণেই বেগম খালেদা জিয়া কারাগার থেকে এখন ফিরোজায় অবস্থান করতে পারছেন। বেগম খালেদা জিয়া যদি বিএনপি থেকে দূরে থাকে, রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়, সেক্ষেত্রে সহজেই তাকে বিদেশে নেওয়া সম্ভব বলে শামীম ইস্কান্দার মনে করেন। কিন্তু যখনই খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার জন্য প্রক্রিয়া শুরু হয় তখনই বিএনপির নেতারা একেকটি কান্ড করে বসেন।
বিভিন্ন সূত্র বলছে, নির্বাচনের আগে শামীম ইস্কান্দার বিএনপি নেতাদেরকে
পরামর্শ দিয়েছেন তারা শর্ত সাপেক্ষে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য বলেছিলেন এবং সে শর্তটি
হবে, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া
যেতে দেওয়া। কিন্তু বিএনপি নেতারা সেটি শুনেননি। এখন যখন বেগম জিয়া আবার অসুস্থ হয়ে
পড়েছেন, তখন শামীম ইস্কান্দার নতুন করে যোগাযোগ করছেন। তিনি বুঝানোর চেষ্টা করছেন যে,
বিএনপির সাথে বেগম জিয়ার আর কোন সম্পর্ক নেই। প্রয়োজনে বিএনপি থেকে বেগম জিয়া পদত্যাগ
করবেন। এমন বক্তব্যও দেয়া হয়েছে।
কিন্তু, এরকম একটি সময়ে হঠাৎ করে মির্জা ফখরুলরা হঠাৎ করেই দল বেধে
এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়েছেন। ফলে সরকার মনে করছে যে, এখনো বেগম খালেদা জিয়ায় বিএনপির
চেয়ারপার্সন এবং তিনি সবকিছুর কলকাঠি নাড়াচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে তাকে বিদেশ পাঠানোটা
সরকার নিরাপদ মনে করবে না। আর একারণেই শামীম ইস্কান্দার ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
শুধু এই বিষয় নয়, বিএনপি নেতাদের কর্মকান্ড নিয়েও তার মধ্যে ক্ষোভ
রয়েছে। তবে বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, শামীম ইস্কান্দারের সাথে তারেক জিয়ার দীর্ঘদিনের
বিরোধ রয়েছে। তারেক জিয়াকে তিনি পছন্দ করে না। শামীম ইস্কান্দার একাধিক বিএনপি নেতাকে
বলেছেন, তারেক জিয়ার কারণেই বিএনপির আজকের এই অবস্থা। খালেদা জিয়ার এই হাল। এ কারণেই
বিএনপি এখন যেহেতু বিএনপি তারেক জিয়ার কর্তৃত্বে চলছে সেকারণেই বিএনপির উপর ক্ষুব্ধ
এবং প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শামীম ইস্কান্দার।
বিএনপি মির্জা ফখরুল মির্জা আব্বাস শামীম ইস্কান্দার খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
সাইবার যুদ্ধ আওয়ামী লীগ কোটা আন্দোলন তথ্য ডিজিটাল বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গ্রেপ্তার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলামগীর
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন গ্রেপ্তার তারেক জিয়া নাশকতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
এখন ষড়যন্ত্র এবং আন্দোলনের দু’টি অংশ হচ্ছে। একটি দৃশ্যমান অংশ যেটি মাঠে হচ্ছে। সরকার পতনের লক্ষ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ওপর ভর করে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, পেশাদার সন্ত্রাসীরা এক জোট হয়ে দেশে নাশকতা সৃষ্টি করেছে। একটি ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টির চেষ্টা করে সরকারকে হটানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলো। অন্যটি সাইবার জগতে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
বিএনপির বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযান চলছে। নির্বাচনের আগে ২৮ অক্টোবর বিএনপির তাণ্ডবের পর যেভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করেছিল সরকার ঠিক একইভাবে এবারও ১৭ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে যে সন্ত্রাস, সহিংসতা হচ্ছে তার হোতাদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এই সময় নাশকতায় ছাত্রশিবির এবং জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্রদল এবং বিএনপি নেতারা সরকার পতনের একটা নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন। সেই চেষ্টা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তারা আন্দোলনকে সহিংস এবং নাশকতার পথে নিয়ে যান। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো যেমন বিটিভি, সেতু ভবন ইত্যাদি হামলার পিছনে বিএনপির সরাসরি সম্পৃক্ততার খবর পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আর এই কারণেই যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
টানা তিন বারের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি। দলে তার কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা আওয়ামী লীগ সভাপতির পরপরই। সারাদিনই দলীয় কার্যালয়ে কিছু না কিছু বলেন। সংবাদ সম্মেলন করে নানা বিষয়ে বক্তব্য রাখাকে তিনি রীতিমতো একটি রেওয়াজে পরিণত করেছেন। কিন্তু সেই ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে আওয়ামী লীগে এখন নানা রকম অস্বস্তি এবং প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে।