মধ্যপ্রাচ্যের পুরোটাই অশান্ত করে তুলেছে দখলদার ইসরাইল। তাদের
আগ্রাসী মনোভাবের কারণে পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধের আশাঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশ্লেকদের
ধারণা ইরানের সঙ্গে যদি ইসরাইলের যুদ্ধ বাধে তাহলে তা ছড়িয়ে পড়বে পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে।
এমনকি এই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে বিশ্বজুড়ে। ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, জর্ডান, চীনের নানামুখী তৎপরতা ও মন্তব্য পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। ইরানের ড্রোন-মিসাইল হামলার কড়া জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। পাল্টা হামলা চালালে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জবাব দেবে বলে ইসরায়েলকে হুঁশিয়ার করেছে ইরান।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে ইসরায়েলের হামলায় সাত কর্মকর্তা নিহত হলে ছড়িয়ে পড়ে যুদ্ধের আগুন। এর প্রতিশোধে শনিবার মধ্যরাতে ইসরায়েলে ৩ শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে মিলে জর্ডানও ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করার অভিযোগে আন্দোলনে রাস্তায় নেমে এসেছে জর্ডানের নাগরিকরা। ইরানের এ হামলার খবর সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রকে দিয়েছিল বলে যে অভিযোগ উঠেছিল তা অস্বীকার করেছে দেশটি। এ উত্তেজনার আগুন আরও উসকে দিয়েছে চীনের মন্তব্য। চীন বলেছে, তারা বিশ্বাস করে, ইরান তার সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদা রক্ষা করে পরিস্থিতি ভালোভাবেই সামাল দিতে সক্ষম। মধ্যপ্রাচ্যে আরও উত্তেজনা এড়াতেও তারা সক্ষম। এ মন্তব্যে পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউসের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকাবিষয়ক পরিচালক সানাম ভাকিল বলেন, ইরান তাদের হাতে থাকা কার্ড খেলে দিয়েছে। ছয় মাস ধরে তারা দেখছে, তাদের মধ্যপ্রাচ্যে কোণঠাসা করে ফেলা হচ্ছে।
ইরানের হামলার জবাব দেওয়া হবে
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি বলেছেন, ইরানের হামলার জবাব দেওয়া হবে। ইরানের হামলার জবাবে ইসরায়েল ঠিক কী পদক্ষেপ নেবে, তা নির্দিষ্ট করেননি জেনারেল হারজি। তাছাড়া কবে, কখন ইসরায়েল এ জবাব দেবে, তার কোনো সময়সীমা উল্লেখ করেননি তিনি। এদিকে, ইরানের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় ঠিক করতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত ২৪ ঘণ্টার কম সময়ে দ্বিতীয়বারের মতো যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার বৈঠক করেছেন। কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কি না সে বিষয়ে ইসরায়েলের সরকারের দিক থেকে কিছু জানানো হয়নি।
ইরানে পাল্টা হামলা হলে সেকেন্ডের মধ্যে কড়া জবাব
ইরানে পাল্টা হামলা চালানো হলে সেকেন্ডের মধ্যে কড়া জবাব দেওয়া হবে বলে হুঙ্কার দিয়েছে তেহরান। গতকাল ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এ হুঙ্কার দিয়েছেন বলে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আইএসএনএ জানিয়েছে। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানিকে ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন, আমরা স্পষ্টভাবে ঘোষণা দিচ্ছি যে, ইরানি স্বার্থের বিরুদ্ধে যে কোনো অপরাধীর ন্যূনতম পদক্ষেপ অবশ্যই কঠোর, বিস্তৃত এবং বেদনাদায়ক প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে মোকাবিলা করা হবে। এর একদিন আগে ইরানের উপপরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বাঘেরি কানি দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইসরায়েলের যে কোনো ধরনের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপে তেহরানের পাল্টা আক্রমণ ‘মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যাপার হবে’। ইরান জবাব দেওয়ার জন্য আর ১২ দিন অপেক্ষা করবে না। অন্যদিকে, ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর জ্যেষ্ঠ মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল ফজল শেকারচি ইসরায়েলের শাসকগোষ্ঠীর অপরাধযজ্ঞের পক্ষে অবস্থান না নিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং ফ্রান্সের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির রাষ্ট্রপ্রধানদের পুনরায় স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, শিশু-হত্যাকারী ইসরায়েলের সন্ত্রাসী শাসকগোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন বন্ধ করুন। তিনি বলেন, ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরান প্রমাণ করেছে যে, তারা যুদ্ধবাজ নয় এবং যুদ্ধের বিস্তার চায় না। ইসরায়েল যদি দুর্বৃত্তমূলক কোনো আগ্রাসন চালায় তাহলে ইরান আরও শক্তিশালী জবাব দেবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।
ইরানের হামলার জবাব দেওয়া নিয়ে চাপে নেতানিয়াহু
শনিবার রাতের হামলার পর নেতানিয়াহু তার যুদ্ধ মন্ত্রিসভার সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। ফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে। চিরশত্রুর হামলার শিকার হওয়ার পরও বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি কথা বলছেন না ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। যেটা তার স্বভাব বিরুদ্ধ। তিনি এখন পর্যন্ত ইরানের হামলার বিরুদ্ধে তার দেশ কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাতে চলেছে সে বিষয়ে কিছু বলেননি। ইরানের ওই হামলার পর ইসরায়েলের পাশে ‘দৃঢ়ভাবে’ অবস্থানের কথা জানিয়েছে দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। তবে সঙ্গে এও বলেছে যে, তারা ইরানের বিরুদ্ধে কোনো ‘প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপে অংশ নেবে না’ এবং তারা এ ধরনের পদক্ষেপের সমর্থনও করে না। যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সসহ ইসরায়েলের অন্যান্য মিত্র দেশও একই সুরে কথা বলেছে। এদিকে, দেশের ভিতর বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ নেতানিয়াহুর প্রতি ইরানের হামলার কঠোর জবাব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইসরায়েলকে সহযোগিতার কথা অস্বীকার সৌদি আরবের
ইরানি মিসাইল হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলকে সহযোগিতা করার কথা অস্বীকার করেছে সৌদি আরব। একটি ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম সৌদি সরকারি ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে এই সহযোগিতার কথা জানিয়েছিল। আল আরাবিয়া নিউজ নিজেদের সোর্সের মাধ্যমে এই খবর যাচাই করতে গেলে ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করে সৌদি কর্তৃপক্ষ। ওই সোর্স আল আরাবিয়া নিউজ জানিয়েছে, সরকারের কোনো অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ইসরায়েলে ইরানি হামলা ঠেকাতে সৌদি আরবের অংশগ্রহণের বিষয়ে কিছুই ছাপানো হয়নি।
ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি ইসরায়েলের
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়ে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বেশ কিছু দেশকে চিঠি পাঠিয়েছেন। সামাজিকমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এক্স পোস্টে ইসরায়েল কাৎজ বলেছেন, ‘আজ সকালে আমি ৩২টি দেশকে চিঠি পাঠিয়েছি এবং ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবিতে বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছি।’ তিনি ইরানকে প্রতিহত এবং দুর্বল করে দিতে দেশটির ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীকে (আইআরজিসি) সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করার জন্যও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ইসরায়েল কাৎজ বলেন, আর দেরি নয়। ইরানকে এখনই থামাতে হবে। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিকভাবে আক্রমণের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। তার সরকার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলার জবাবে সামরিক প্রতিক্রিয়ার কথা বিবেচনা করছে। ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রথমবারের মতো ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনায় ‘সীমিত’ প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে ইসরায়েল। ইরানের বাইরে ইরান-সমর্থিত শক্তিগুলোর ওপর হামলা চালাতে পারে ইসরায়েলি বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রের চার কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ।
পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম ইরান-চীন
ইরান তার সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদা রক্ষা করে পরিস্থিতি ভালোভাবেই সামাল দিতে সক্ষম। মধ্যপ্রাচ্যে আরও উত্তেজনা এড়াতেও তারা সক্ষম। এমনটা মনে করে চীন। রয়টার্সের ওই খবরে বলা হয়েছে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সোমবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। এই ফোনালাপে ইরানের অবস্থান সম্পর্কে ওয়াংকে ব্রিফ করেন আবদুল্লাহিয়ান। এদিকে, মঙ্গলবার চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার খবরে বলা হয়, ওয়াং বলেছেন, “আঞ্চলিক ও প্রতিবেশী দেশগুলোকে লক্ষ্যবস্তু না করার বিষয়ে ইরানের জোরালো অবস্থানের প্রশংসা করে চীন।” ওয়াং জানিয়েছেন, ইরানের দূতাবাসে (কনস্যুলেট) হামলার তীব্র নিন্দা জানায় চীন। তারা দৃঢ়ভাবে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করে। তারা এ ঘটনাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ মনে করে।
ইসরায়েলকে সহায়তা করায় জর্ডানে বিক্ষোভ
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আম্মানে ইসরায়েলের দূতাবাসের সামনে জড়ো হয়ে কয়েক হাজার স্থানীয় মানুষ বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। তারা ১৯৯৪ সালে ইসরায়েল ও জর্ডানের মধ্যে সই হওয়া শান্তি চুক্তি বাতিলেরও আহ্বান জানান। জর্ডানের নাগরিকেরা তাদের সরকারের এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছেন। হুসেইন নামে দেশটির একজন রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্ট বলেন, ‘জর্ডান যেভাবে ইসরায়েলকে রক্ষা করেছে তাতে আমি খুবই বিরক্ত।’ বিপদের আশঙ্কা থাকায় তিনি তার পুরো নাম উল্লেখ করতে চাননি। খবর, ডয়চে ভেলে। তিনি বলেন, ‘এখানকার অনেকেই এটা মেনে নিচ্ছে না। আমরা ইরানকে সমর্থন করি না। গাজায় এখন যা ঘটছে তার পেছনে ইরানের বড় ভূমিকা আছে বলে মনে করি। কিন্তু গাজায় ইসরায়েলের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে এমন যে কোনো পদক্ষেপের সঙ্গে আমরা আছি।’ মারিয়াম নামে আম্মানের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, ‘জর্ডানে ইরানের জনপ্রিয়তা নেই। কিন্তু আমি ইরানের নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্র জর্ডানের বাধা দেওয়া ও অনিচ্ছাকৃতভাবে এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া প্রত্যাখ্যান করি।’ আম্মানের সামরিক বিশ্লেষক মাহমুদ রিদাসাদ বলেন, সপ্তাহান্তে যে ঘটনা ঘটেছে তাকে ‘কখনো ইসরায়েলকে রক্ষার জন্য করা হয়েছে তেমনটা বলা যাবে না, বরং জর্ডানের সার্বভৌমত্ব এবং আকাশসীমা রক্ষার জন্য করা হয়েছে।’ কারণ, ড্রোন বা মিসাইল কোথায় পড়বে তা জানা যায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি। এদিকে জর্ডান সহায়তা করেছে বলে ইসরায়েলের গণমাধ্যমে খুশির খবর প্রকাশ সম্পর্কে রিদাসাদ বলেন, ‘এটা ইসরায়েলের প্রোপাগান্ডা ছাড়া কিছু নয়।’ ব্রাসেলসভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ফিলিস্তিন বিষয়ক বিশ্লেষক তাহানি মুস্তফা জানান, ১ এপ্রিলের ঘটনা নিয়ে জর্ডানের নাগরিকেরা বিভক্ত। কারণ, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সঙ্গে জর্ডানের অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্ক নিয়ে মানুষ বিস্তারিত জানে না, কারণ এসব বিষয় নিয়ে এখানে বেশি লেখা হয় না,’ বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান। ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে ইরানে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটিতে ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৮ জুন।
সোমবার (২০ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা ইরনা।
দেশটির সংবিধান অনুসারে, প্রেসিডেন্টের পদ শুন্য হওয়ার পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। ফলে দেশটিতে আগামী ২৯ জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির প্রধান ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা আগামী ২৮ জুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ৩০ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত প্রার্থীদের নিবন্ধন করা হবে; আর প্রচার-প্রচারণা চলবে ১২ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত।
রোববার (১৯ মে) আজারবাইজানে একটি বাঁধ উদ্বোধন শেষে ফেরার পথে প্রেসিডেন্ট রাইসি ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফার পাহাড়ি এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ঘন কুয়াশার কারণে দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার টানা অভিযান শেষে সোমবার তাদের হেলিকপ্টারটির খোঁজ পায় উদ্ধার দল। তবে এই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তা নিহত হন।
ইরানের ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির প্রধান মোহাম্মদ নামি বলেছেন, নিহত আরোহীদের শনাক্ত করার জন্য কোনো ডিএনএ পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ফ্লাইট ক্রুসহ মোট ৯ জন নিহত হয়েছেন।
এদিকে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ায় বেশ কয়েকটি দেশে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এসব দেশের তালিকায় ইরান যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে পাকিস্তানের মতো দেশ। এ ছাড়া রাইসির মৃত্যুতে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা শোক প্রকাশ করেছেন। ইরানের এই বিপদের দিনে পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে পাঁচদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। এ ছাড়া ইরানের প্রিয় জনগণের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। রাইসির মৃত্যুতে ইরাক, লেবানন, সিরিয়া, পাকিস্তানও রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।
ইরান প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ইব্রাহিম রাইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান মৃত্যু
মন্তব্য করুন
ইরান ইসলামি বিপ্লব ইব্রাহিম রাইসি
মন্তব্য করুন
ইব্রাহিম রাইসি ইরানের প্রেসিডেন্ট
মন্তব্য করুন
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নরসহ ৯ জন আরোহীর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সারা বিশ্বে তোলপাড় চলছে। এটি নিছক দুর্ঘটনা, না পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড- এ নিয়ে বিভিন্ন মহলের সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। ইরানের পক্ষ থেকে এটিকে হত্যাকাণ্ড বলা হচ্ছে। তারা মনে করছে, এটি দুর্ঘটনা নয়। তবে দুর্ঘটনাই হোক বা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডই হোক। এর সঙ্গে যে ইরানের অভ্যন্তরীণ কিছু ব্যক্তি জড়িত এ নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই।
ইরানের গণমাধ্যম এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকরাও বিশ্বাস করছেন যে, ইরানের ভিতর কিছু বিশ্বাসঘাতকদের সহযোগিতা ছাড়া এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না। এই ঘটনার পর কয়েকটি মৌলিক প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এরকম একটি দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টার কেন উড়ার সিদ্ধান্ত নিল? এই ব্যাপারে নিরাপত্তা ছাড়পত্র কে দিল সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ যেকোনো বিবেচনায় এই বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে হেলিকপ্টার উড্ডয়নের কথা নয়।
আল জাজিরার রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, ইরানের প্রেসিডেন্ট, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং গভর্নর এক হেলিকপ্টারে ওঠাটাও একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। কারণ এর আগে কখনোই ইরানের প্রেসিডেন্ট অন্য কারও সঙ্গে হেলিকপ্টারে ওঠেন না। তৃতীয়ত, যেখানে তাদের বহনকারী অন্য হেলিকপ্টারগুলো অন্যদিকে যাচ্ছিল সেখানে এই হেলিকপ্টারটি কেন গতিপথ পরিবর্তন করল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আর এ সবকিছু একটি পরিকল্পিত বলেই মনে করা হচ্ছে।
পরিকল্পিত ভাবার পিছনেও কারণ আছে। অতীতেও দেখা গেছে যে, এরকম বিমান বা হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার শত্রুকে দমন করেছে পাকিস্তানি জিয়াউল হক নিহত হয়েছিলেন এরকমই একটি বিমান দুর্ঘটনায়। পরবর্তীতে প্রমাণিত হয়েছে যে, সেটি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরই একটি পরিকল্পিত নীল নকশা এবং মার্কিন রাষ্ট্রদূতকেও ওই দুর্ঘটনায় জীবন দিতে হয়।
এবার ইরানের যে ঘটনাটি ঘটল তার পিছনে সুপরিকল্পিত চক্রান্ত রয়েছে বলেই অনেকে মনে করে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা এখন বলছেন যে, এর পিছনে মোসাদের হাত রয়েছে। ইসরায়েলি এই গোয়েন্দা সংস্থা দীর্ঘদিন ধরেই ইরানে পট পরিবর্তনের জন্য ভেতরে ভেতরে কাজ করছিল। সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের ভিতরে যে হিজাব বিরোধী আন্দোলন, সেই আন্দোলনেও মোসাদের হাত ছিল এবং মোসাদকে সহযোগিতা করেছিল সিআইএ- এমন তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ইরানকে অস্থিতিশীল করে তোলার জন্য মোসাদ এবং সিআইএ বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেছে, ষড়যন্ত্র করছে- এমন প্রতিবেদনও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন সময় প্রকাশিত হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইরান, ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের মাথাব্যথা হয়ে গিয়েছিল। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, নিষেধাজ্ঞা থাকায় দেশটির মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন জঙ্গি সন্ত্রাসীদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়, অস্ত্র সরবরাহ করে। সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলে যে হামলা হামাস পরিচালনা করেছিল, তার পিছনে ইরানের মদত ছিল। ইরানের মাধ্যমেই মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলকে কোণঠাসা করার চেষ্টা চলছে, এমন বক্তব্য মার্কিন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা হরহামেশাই করে থাকেন। আর এ কারণে ইরানের পট পরিবর্তনের একটি পরিকল্পনা দীর্ঘদিন ছিল।
এর আগেও ইরানের গোয়েন্দা প্রধানকে হত্যা করা হয়েছিল। যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি সিআইএ এবং মোসাদ জড়িত ছিল বলে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। এবারের এই ঘটনাটি সেরকমই কোন ঘটনা বলেই অনেকের স্থিরবিশ্বাস। বিশেষ করে দীর্ঘদিন ধরে ইরানের ভিতর একটি প্রতিবিপ্লব ঘটিয়ে উগ্র মৌলবাদী ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দেওয়ার একটা পরিকল্পনা চলছিল। এখন সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে এই ঘটনা ঘটানো হল বলে কেউ কেউ মনে করছেন।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর এখন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসাবে যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তিনি অত কট্টরপন্থী নন বলেই মনে করা হচ্ছে। ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার অনেকটাই নমনীয় এবং ইরানের ভিতর এখন এরকম ব্যক্তির সংখ্যা আরও বেড়েছে বলেই কোন কোন বিশ্লেষক মনে করছেন। বিশেষ করে যদি ভিতরে শত্রু তৈরি করে প্রেসিডেন্টকে হত্যা করা যায়, তাহলে ইরানে ইসলামী বিপ্লবী সরকারকে হটিয়ে দেওয়াটা খুব কঠিন কাজ নয়। মোসাদ এবং সিআইএ কি সেই পথেই এগোচ্ছে, এর উত্তর সময়ই বলে দিবে।
ইব্রাহিম রাইসি ইরান হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা মোসাদ সিআইএ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েল
মন্তব্য করুন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মস্কোয় নিয়োজিত ইরানের রাষ্ট্রদূত কাজেম জালালিকে ক্রেমলিনে ডেকে নিয়ে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনা বিস্তারিত শুনেছেন। রাষ্ট্রদূত কাজেম জালালি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছেন।
কাজেম জালালি বলেন, 'রোববার রাশিয়ায় সরকারি ছুটি হওয়া সত্ত্বেও রাত ১০টার দিকে পুতিন বৈঠক করেন। এ সময় রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ও বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তার আমন্ত্রণে ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরানের প্রতিনিধি হিসেবে আমি বৈঠকে অংশগ্রহণ করি।'
কাজেম জালালি বলেন, বৈঠকের শুরুতেই পুতিন আমাকে বলেন, ইরানের প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় আমরা খুবই মর্মাহত। এ বিষয়ে সহযোগিতার জন্য যা দরকার হবে, তা আমরা করব। এ ঘটনায় আমরা খুবই উদ্বিগ্ন ও বিচলিত। যা কিছু প্রয়োজন, তার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি, এ বার্তা ইসলামিক রেভল্যুশনের সর্বোচ্চ নেতার কাছে পৌঁছানো নিশ্চিত করুন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলুসভ, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সেক্রেটারি সের্গেই শোইগু, সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব দ্য জয়েন্ট স্টাফ ভ্যালিরি গেরাসিমভ, বেসামরিক সুরক্ষা, জরুরি পরিস্থিতি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী আলেক্সান্দার কোরেনকোভ, প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী ইগোর লেভিতিন ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
ইরান রাষ্ট্রদূত হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত রাশিয়া প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন
মন্তব্য করুন
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান। ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে ইরানে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটিতে ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৮ জুন। সোমবার (২০ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা ইরনা। দেশটির সংবিধান অনুসারে, প্রেসিডেন্টের পদ শুন্য হওয়ার পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। ফলে দেশটিতে আগামী ২৯ জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
১৯৭৯ সালে ইরানের ‘ইসলামি বিপ্লব’ সংঘটিত হয়েছিল। রেজা শাহ পাহলভির রাজতন্ত্রের পতন ঘটিয়ে আয়াতুল্লাহ খোমেনির নেতৃত্বে যে ‘ইসলামি বিপ্লব’ ঘটানো হয়েছিল, সেটিকে বলা হয় ফরাসি এবং বলশেভিক বিপ্লবের পর ইতিহাসের তৃতীয় মহা জাগরণ, যেখানে জনগণ এককাট্টা হয়ে রেজা শাহ পাহলভির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল এবং তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছিল। এই সময় নির্বাসন থেকে ফিরে আসেন আয়াতুল্লাহ খোমেনি এবং খোমেনির নেতৃত্বে ইরান ইসলামি প্রজাতন্ত্রে রূপ গ্রহণ করে। কঠোর শরিয়া আইন অনুসারে ইরান পরিচালিত হতে থাকে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি মৃত্যু মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে নতুন করে অশান্তি সৃষ্টির ইঙ্গিত দিচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনার পর মধ্যপ্রাচ্যের অস্থির পরিস্থিতি আরও অস্থির হয়ে পড়বে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে আজ বলা হয়েছে যে, ইরানের এই ঘটনাটিকে ইরানবাসী কোনভাবেই স্বাভাবিক দুর্ঘটনা বলে মনে করছে না। তারা মনে করছেন, এটি পরিকল্পিতভাবে ঘটানো ঘটছে। এটির পেছনে ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জড়িত বলেও তারা ধারণা করছে। আর এই ধারণাকে পুঁজি করে রাইসির মৃত্যুর পরে যে আবেগ এবং ক্ষোভ সেটাকে কাজে লাগিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উস্কানি এবং উত্তেজনার সৃষ্টি হতে পারে বলে আল জাজিরায় কয়েকজন বিশ্লেষক মন্তব্য করেছেন। তারা মনে করছেন যে, ইরান যদি মনে করে এই ঘটনাটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং এই ঘটনা ঘটিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল, তাহলে তারা অবশ্যই পাল্টা প্রতিশোধ নেবে।
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নরসহ ৯ জন আরোহীর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সারা বিশ্বে তোলপাড় চলছে। এটি নিছক দুর্ঘটনা, না পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড- এ নিয়ে বিভিন্ন মহলের সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। ইরানের পক্ষ থেকে এটিকে হত্যাকাণ্ড বলা হচ্ছে। তারা মনে করছে, এটি দুর্ঘটনা নয়। তবে দুর্ঘটনাই হোক বা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডই হোক। এর সঙ্গে যে ইরানের অভ্যন্তরীণ কিছু ব্যক্তি জড়িত এ নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মস্কোয় নিয়োজিত ইরানের রাষ্ট্রদূত কাজেম জালালিকে ক্রেমলিনে ডেকে নিয়ে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনা বিস্তারিত শুনেছেন। রাষ্ট্রদূত কাজেম জালালি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছেন। কাজেম জালালি বলেন, 'রোববার রাশিয়ায় সরকারি ছুটি হওয়া সত্ত্বেও রাত ১০টার দিকে পুতিন বৈঠক করেন। এ সময় রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ও বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তার আমন্ত্রণে ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরানের প্রতিনিধি হিসেবে আমি বৈঠকে অংশগ্রহণ করি।'