নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৮ মে, ২০১৮
আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা সবাই হাত-পা গুটিয়ে বসে আছেন। মুখেও কুলুপ এঁটেছেন। কথার রাজনীতির মাঠ দখল করে রেখেছে বিএনপি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং দু-এক মন্ত্রী ছাড়া কেউই রাজনীতির মধ্যে নেই। ফলে, সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার জবাব দেওয়ার লোক নেই আওয়ামী লীগে। আজ একনেকের বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীও এনিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন। বললেন, ‘কেউ তো কোনো কথাই বলছেন না। সব কথা কি শুধু আমিই বলবো? বিএনপির একটা মিথ্যাচারের ব্যাপারে কেউ কথা বলছে না কেন?’ একনেকের বৈঠকের পর দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আলাপের সময় উপস্থিত একজন সিনিয়র নেতা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সম্প্রতি গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর সমালোচনার তীর সরকারের দিকে। বিএনপির প্রায় সব নেতাই একযোগে সরকারের সমালোচনায় মুখর। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতারা এ ব্যাপারে নীরব। তারেককে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রসঙ্গে আমীর হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদের মতো সিনিয়র নেতারা একটি কথাও বলছেন না। বেগম খালেদা জিয়ার কারান্তরীণ থাকা নিয়ে বিএনপির বাইরেও সুশীল সমাজের লোকজন সরকারের সমালোচনা করছে। এখনেও সিনিয়র নেতারা চুপচাপ। কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়েও আওয়ামী লীগের কারও কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে না।
গত এক সপ্তাহে আওয়ামী লীগের নেতাদের বক্তৃতা, বিবৃতি পর্যালোচনা করলে দেখো যায় প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ এবং প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ কেবল চলমান রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। এই এক সপ্তাহে শিল্পমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমীর হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর মতো জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতারা নীরব ছিলেন। একসময় কথা বলাই যাঁদের একমাত্র কাজ ছিল, সেই খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল, নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া যেন বোবা হয়ে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, এনিয়ে প্রধানমন্ত্রীও অসন্তুষ্ট। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, ‘কেউই দলের চিন্তা করে না, চিন্তা করে শুধু নিজের। সবাই গা বাঁচিয়ে চলতে চায়।’ লক্ষ্য করলে দেখা যায়, অধিকাংশ মন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের কাজেও মনোযোগী নন। মন্ত্রণালয়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আটকে আছ। মন্ত্রীরা সিদ্ধান্তের জন্য তাকিয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রীর দিকে। আওয়ামী লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেছেন ‘প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কেউ কোনো কাজ করছে না। এটা আওয়ামী লীগের জন্য উদ্বেগের কারণ।’ ঐ নেতা বলেন, শুধু আওয়ামী লীগ নয়, ১৪ দলের মধ্যে একমাত্র তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ছাড়া কেউ কথা বলছেন না। সাম্যবাদী দলের নেতা দীলিপ বড়ুয়া একরকম নিখোঁজ, জাসদ একাংশের নেতা মঈন উদ্দিন খান বাদল কথা বন্ধ রেখেছেন দীর্ঘদিন। রাশেদ খান মেনন এখন টেকনোক্রেট মন্ত্রীর মতোই আচরণ করছেন।
নির্বাচনের বছরে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের ঘুমিয়ে থাকায়, হতাশ কর্মীরা। বিএনপি মাঠে না থাকলেও টেলিভিশনের টকশো আর খবর-জুড়ে অথচ আওয়ামী লীগ যেন সব চিন্তা আর দায়িত্ব তুলে দিয়েছে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনার কাঁধে।
Read In English: https://bit.ly/2K5W789
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।