নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২০ মে, ২০১৮
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক ঐতিহাসিক এবং পরীক্ষিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সিপিবিকে তাঁর বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে মূল্যায়ন করেছিলেন। জাতির পিতার ডাকে কমরেড মনি সিংয়ের নেতৃত্বে সিপিবি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে সিপিবি দেশ গড়ার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বাকশাল গঠনেও সিপিবির ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। জাতির পিতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর প্রথম প্রতিবাদ জানিয়েছিল কমিউনিস্ট পার্টি এবং তার ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনেও কমিউনিস্ট পার্টি ছিল আওয়ামী লীগের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ এবং বিশ্বস্ত বন্ধু। সিপিবির নেতা মোহাম্মদ ফরহাদ ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সবচেয়ে আস্থাভাজনদের একজন।
দু’টি দলের আজকের সম্পর্ক যা-ই হোক, ঐতিহাসিক সম্পর্কের সূত্র ধরে বিভিন্ন সময়ে অনেক নেতাকর্মী কমিউনিস্ট পার্টি থেকে বা তার সহযোগী সংগঠন থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। দু’টি দলের মৌলিক আদর্শ কাছাকাছি থাকায়, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে দল দুটির অভিন্ন অবস্থানের কারণে, সিপিবি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান রাজনীতিতে ইতিবাচক ঘটনা হিসেবেই চিহ্নিত হয়েছে। দেখা গেছে, দলীয় দুঃসময়ে কমিউনিস্ট পার্টি থেকে আসা আওয়ামী লীগাররাই দলের ও নেতার আদর্শের প্রশ্নে অটল থেকেছে। কিন্তু তারপরও আওয়ামী লীগে এরা এখনো অনাহূত, অনাকাঙ্ক্ষিত এবং ‘বহিরাগত কমিউনিস্ট’ হিসেবেই চিহ্নিত। কমিউনিস্ট পার্টি থেকে আওয়ামী লীগে আসা নেতা কর্মীদের সংখ্যা কম নয়। কিন্তু এদের মধ্যে আলোচিত হলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য নূহ-উল-আলম লেলিন, শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল মান্নান খান। এরা সকলেই দলের সভাপতির প্রিয় ভাজন, দুঃসময়ের পরিক্ষীত। কিন্তু সাধারণ কর্মীরা এখনো তাঁদের বহিরাগতই মনে করে। সম্প্রতি শেরপুর জেলা কমিটি থেকে মতিয়া চৌধুরীকে প্রত্যাহার করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। শেরপুরে অগ্নিকন্যাকে নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিন। এ কারণেই ২০০১ এর নির্বাচনে তিনি হেরেছিলেনও। আওয়ামী লীগ সভাপতির হস্তক্ষেপের পরও এই বিরোধ বন্ধ হয়নি। মতিয়া চৌধুরীর ছাত্র রাজনীতির জীবন ছিল বর্ণাঢ্য এবং ঈর্ষণীয়। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে ঐতিহাসিক এবং বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য ‘অগ্নিকন্যা’ উপাধি পান। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া এই অমিত সাহসী নেত্রী ১৯৭৯ সালে এক কঠিন সময়ে ন্যাপ থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। আওয়ামী লীগে তিনি শেখ হাসিনার সবচেয়ে বিশ্বস্ত নেতাদের একজন। বিশেষ করে ওয়ান ইলেভেনে তাঁর ভূমিকা ছিল বলিষ্ঠ এবং সাহসী। সৎ মন্ত্রী হিসেবে তিনি সকলের কাছে প্রশংসিত। কিন্তু তৃণমূলের আওয়ামী লীগে তিনি জনপ্রিয় নন বরং তাকে আড়ালে ‘কমিউনিস্ট’ ডাকে আওয়ামী লীগের অনেক ছেলে ছোকড়ারাও।
নূহ আলম লেনিন, শিক্ষিত, গবেষক হিসেবে দলে শ্রদ্ধার পাত্র। দলের অনেক গবেষণামূলক কাজের দায়িত্ব শেখ হাসিনা নিশ্চিন্তে তাঁর উপর অর্পন করেন। নির্বাচনের রাজনীতি করেন না জন্য তিনি তৃণমূলের থেকে একটু দূরত্ব রেখে চলেন। কিন্তু এটাও যেন পছন্দ নয় আওয়ামী লীগের অনেকের।
শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদও ৯০ এর দশকে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। নিবেদিত প্রাণ এবং পরিশ্রমী হিসেবে তিনিও শেখ হাসিনার আস্থাভাজন। টানা ১০ বছর ধরে শিক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত হলে কি হবে তাঁকে আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী ‘বহিরাগত’ হিসেবেই মনে করেন। আড়ালে নাহিদকে ডাকা হয় কমিউনিস্ট মন্ত্রী হিসেবে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দলের দপ্তর সম্পাদক আবদুল মান্নান খান পূর্ত প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ওয়ান ইলেভেনে বলিষ্ঠ অবস্থার কারণে তাঁকে শেখ হাসিনা দলের মনোনয়ন এবং মন্ত্রিত্ব দুটোই দেন। কিন্তু মন্ত্রিত্ব পেয়ে নানা বিতর্কে জড়িয়ে যান। তবে মন্ত্রিত্বে না থাকলেও দলের সভাপতি তাঁকে প্রেসিডিয়াম সদস্য বানিয়েছেন।
বিশ্বস্ততার পরীক্ষায় বারবার উত্তীর্ণ হওয়ার পরও কমিউনিস্টরা কেন আওয়ামী লীগের হতে পারেন না, সে প্রশ্ন তাদেরও। দলের নেত্রীর আস্থাভাজন হওয়ার পরও তাঁরা কেন আপামর কর্মীর আপন হতে পারেন না, সেই প্রশ্নের উত্তর এখনো অমীমাংসিত।
Read in Eglish- https://bit.ly/2GBhM5V
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।