নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ২১ মে, ২০১৮
বিএনপিতে এখন তারেকের রাজত্ব চলছে বলে অধিকাংশ নেতা মনে করেন। ২০০১ সাল থেকে বিএনপিতে তারেক জিয়ার প্রভাব বাড়ছেই। তারেক জিয়া যাঁর প্রতি রুষ্ট হন তাঁকে হয় দল ত্যাগ করতে হয় অথবা দলে নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকতে হয়। তারেকের পছন্দ নয় এ কারণেই শমসের মোবিন চৌধুরীর মতো নামকরা কূটনীতিককে বিএনপি ছাড়তে হয়েছে। তারেকের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলার জন্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের মতো জাঁদরেল নেতারা বিএনপিতে থেকেও নেই। বিএনপির অনেকেই বলেন, তারেক জিয়ার ‘আশীর্বাদ’ ছাড়া বিএনপিতে কেউ ভালো অবস্থানে থাকতে পারেন না। কিন্তু বিএনপির মধ্যে গভীরভাবে অনুসন্ধান চালালে দেখা যায়, তারেক জিয়ার প্রিয়ভাজন না হওয়া সত্ত্বেও বিএনপিতে বেশ শক্ত অবস্থানেই আছেন অনেক নেতা। এরা সুযোগ পেলেই তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলেন। এদের শক্ত অবস্থানের প্রধান কারণ বেগম জিয়া। দ্বিতীয় প্রধান কারণ, পরিবেশ পরিস্থিতি এমন যে তাদের চাইলেই তারেক বাদ দিতে পারেন না।
বিএনপিতে এখন বেগম জিয়া তারেক জিয়ার পরই যার অবস্থান তিনি হলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বেগম জিয়া গ্রেপ্তারের পর তিনিই দলের মধ্যমণি। কিন্তু মির্জা ফখরুল তারেকের পছন্দের ব্যক্তি নন। বিএনপির মহাসচিব হবার পর মির্জা ফখরুল একবারও তারেকের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাত পাননি। এমনকি গত বছর বেগম জিয়া যখর লন্ডনে গেলেন, তখনও বিএনপি মহাসচিবও লন্ডন যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারেক জিয়ার অনাগ্রহে ফখরুল লন্ডন যাত্রা বাতিল করেন। যদিও আমীর খসরু মাহমুদ, আবদুল আউয়াল মিন্টুরা সে সময় লন্ডন যান এবং তারেক জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। ২০১৪ তে মির্জা ফখরুলের বোরখা পরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে গিয়ে জামিন নেওয়ার ব্যাপারে তারেক জিয়া তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। এখনো দুজনের চিন্তা দুই মেরুতে। তারেকের অপছন্দের মানুষ হয়েও মির্জা ফখরুল এখন বিএনপির মহাসচিব। এটা সম্ভব হয়েছে বেগম জিয়ার পছন্দের জন্য। তাছাড়া দলের বাইরে তার আলাদা ইমেজ থাকায় তারেক চাইলেই ফখরুলকে ফেলতে পারছেন না।
বিএনপিতে তারেকের সঙ্গে প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব করে এখনো স্থায়ী কমিটির সদস্য হয়ে আছেন বর্ষীয়ান নেতা তরিকুল ইসলাম। ২০০১ সাল থেকে তিনি তারেক বিরোধী প্রধান নেতা। বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, অসুস্থতার অজুহাতে তারেক তরিকুলকে দলের স্থায়ী কমিটির পদ থেকে বাদ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বেগম জিয়ার অনড় আপত্তির কারণে সেটা হয়নি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান তারেক জিয়ার প্রকাশ্য সমালোচক। এখনো বিএনপির এই সংস্কারপন্থী নেতা মনে করেন, তারেক জিয়ার রাজনীতি থেকে সরে যাওয়া উচিত। ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি বিএনপিতে পরিবারতন্ত্রের অবসান চেয়েছিলেন। এরপর তাঁর বিএনপিতে থাকা বিস্ময়! তবে সেনাবাহিনীতে আলাদা শ্রদ্ধার পাত্র হিসেবে বিবেচিত জেনারেল মাহবুব। বিএনপি তাই চাইলেও তাঁকে ফেলতে পারবে না।
চট্টগ্রামে বিএনপির দুই নেতার মধ্যে আবদুল্লাহ আল নোমান, তারেক জিয়ার অপছন্দের তালিকায়। বিএনপির জনপ্রিয় এই নেতা নিজেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, তারেক জিয়াই তাঁকে স্থায়ী কমিটির সদস্য হতে দেননি। এনিয়ে ক্ষুব্ধ নোমান পদত্যাগও করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বেগম জিয়ার অনুরোধে তিনি দলে ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন। দলে বিপুল জনপ্রিয় হলেও তারেকের জন্যই তিনি বঞ্চিত, এমনটাই মনে করেন বিএনপির অনেক নেতা কর্মীই।
তারেক জিয়ার বিরাগভাজনদের তালিকা বেশ দীর্ঘ। তবে এই ক’জন শীর্ষ নেতার নাম বেশী আলোচিত হয় বিএনপিতে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক কারাগা
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল। সারা দেশেই বাড়ছে দলটির গৃহদাহ। দল পুনর্গঠন ও চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচন ঘিরে দলীটির বিবাদ প্রকাশ্যে আসছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশ সবচেয়ে বেশি লঙ্ঘন করছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতারা। তাদের অনেকে এলাকায় গিয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করতে গোপনে উসকে দিচ্ছেন স্থানীয় নেতাদের। ঢাকায় ফিরে তারাই আবার দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনের দায়ে সংশ্লিষ্ট নেতাদের বহিষ্কারের মাধ্যমে নিজেদের পথ প্রশস্ত করছেন। এতে পারস্পরিক সন্দেহ-অবিশ্বাস ঘনীভূত হচ্ছে।
দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানায়, গত বছরের ২৮ অক্টোবরের দলীয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে কারাগারে যাওয়া নেতাদের অনেকের ভূমিকা রহস্যজনক বলে মনে করছেন দলীয় অনেকে। এ নিয়ে দলের ভিতরে রয়েছে বিতর্ক। সুনির্দিষ্ট প্রমাণের (অডিও-ভিডিও) ভিত্তিতে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। অনেককে অঘোষিতভাবে ‘ওএসডি’ করা হয়েছে সাংগঠনিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে। এ নিয়ে ক্ষোভে কেউ কেউ রাজনীতি থেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন। চলে যাচ্ছেন দেশ ছেড়ে।
এসব বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি মহাসাগরের মতো বিস্তৃত একটি বিশাল রাজনৈতিক দল। এ দলে নেতাদের মধ্যে কোনো বিষয়ে মতামত প্রদানের ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকতেই পারে। তবে কোনো রকমের অভ্যন্তরীণ বিরোধ বা কোন্দল নেই।
জানা গেছে, সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি বিরোধ-কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে চলমান উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। এই নির্বাচনের প্রাক্কালে দলের হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে বয়কটের পক্ষে নেতা-কর্মীদের মধ্যে গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য সারা দেশে সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বেশির ভাগ নেতাই তাদের নিজ নিজ এলাকায় সেই দায়িত্ব পালন করেননি। অনেকে এলাকাতেই যাননি। জেলা বিএনপির শীর্ষকর্তারাও তেমন কোনো ভূমিকা রাখেননি। বরং উল্লিখিত নেতাদের এলাকাতেই ভোট কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি ভোটারের উপস্থিতি দেখা গেছে। নির্বাহী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত এসব নেতার দ্বৈত ভূমিকায় তৃণমূলের নেতারা ক্ষুব্ধ।
মন্তব্য করুন