নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৮ মে, ২০১৮
বিএনপির নেতা এবং ঝিনাইদহের সাবেক এমপি মশিউর রহমানকে একটি দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালত ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়। গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান মশিউর রহমান। এরপর তিনি আইনজীবী হিসেবে নেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ এবং আব্দুল বাসেত মজুমদারকে। ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আইনমন্ত্রী আর ব্যারিস্টার বাসেত মজুমদার সুপ্রিম কোর্টে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের নেতা। আওয়ামীপন্থী এই দুই হেভিওয়েট আইনজীবী হাইকোর্টে মশিউর রহমানের জামিনের আবেদনে কৌসুলি ছিলেন এবং হাইকোর্ট মশিউর রহমানকে জামিন দেয়। মশিউর রহমানের এই জামিনই বেগম জিয়ার জামিনের আবেদনের রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এখন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, মশিউর রহমানের রায় স্থগিতের আবেদন করবেন। এই মামলায় রায় স্থগিত হলেই আগামী নির্বাচনে বিএনপির এই নেতা অংশগ্রহণ করতে পারবেন। বাইরে আওয়ামী লীগ, বিএনপির দুর্নীতি নিয়ে কথার ঝড় তুলেছেন, আর আদালতে গিয়ে এরাই আদালত কর্তৃক স্বীকৃত দুর্নীতিবাজদের রক্ষায় আইনি লড়াই করছেন। এই দ্বিচারী আচরণের এটি একটি উদাহরণ মাত্র।
শুধু বিএনপির নেতাদের মামলা নয়, আইন মন্ত্রণালয়ে পাওয়া নথিতে দেখা যাচ্ছে জঙ্গি, জামাত এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যখন মামলা হচ্ছে, তাঁদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তখন তাদের জামিনের জন্য আদালতে দাঁড়াচ্ছেন আওয়ামী পন্থী আইনজীবীরা। জঙ্গি মামলায় অভিযুক্ত এবং দণ্ডিত যারা জামিন পেয়েছেন তাঁদের শতকরা ৮০ ভাগ আইনজীবী হলেন আওয়ামীপন্থী। এটা শুধুমাত্র ঢাকার চিত্র নয়, সারাদেশের চিত্র। আওয়ামী লীগের পরিচয়ে বেড়ে ওঠা এবং আইনজীবী সমিতিতে আওয়ামী পন্থী নেতাদের কাছেই যাচ্ছেন জঙ্গি অভিযোগে অভিযুক্তরা। যে কারণেই হোক, এতে জামিন পাওয়া সহজ হয়ে যাচ্ছে। জামিন পাওয়ার পর মামলার কার্যক্রমও ঝুলে যাচ্ছে।
পুলিশের পদস্থ একজন কর্মকর্তা বলেছেন, পুলিশ কর্মকর্তা জীবন দিয়ে জঙ্গিদের ধরছে। কিন্তু কিছুদিন পরেই তাঁর জামিন হয়ে যাচ্ছে। আর তাঁর আইনজীবী হলেন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা।
সুপ্রিম কোর্টে আওয়ামীপন্থী খ্যাতিমান আইনজীবীদের অনেকেই এরকম মামলার দায়িত্ব নিচ্ছেন। ঢাকা বারে তো আওয়ামীপন্থী আইনজীবী ছাড়া এসব মামলা অন্য কাউকে দিতে চায় না আসামি পক্ষ। একই ঘটনা দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘একজন আইনজীবী কোন মামলা নেবেন আর কোন মামলা নেবেন না এটা তাঁর পেশাগত অধিকার। এখন তিনি জঙ্গির জামিন চাইবেন কিনা, দুর্নীতিবাজদের জামিন চাইবেন কিনা এটাও তাঁর নিজস্ব সিদ্ধান্তের বিষয়।’ তিনি বলেন, বিচার পাওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। যেকোনো নাগরিক তাঁর পছন্দের আইনজীবী নিতেই পারেন।’ আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তো সরকার থেকে কাউকে বারণ করতে পারবো না যে, আপনি এই মামলা নেবেন না।‘
এ প্রসঙ্গে তাঁর পিতা অ্যাডভোকেট সিরাজুল হকের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। যিনি এরশাদের মামলা গ্রহণ করে আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। অথচ এখন যাঁরা বিএনপির দুর্নীতিবাজ কিংবা জঙ্গিদের মামলা নিচ্ছেন, তাঁদের আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করা উচিত কিনা, জানতে চাওয়া হলে আইনমন্ত্রী বলেন, এই প্রশ্নের উত্তর যাঁরা এরকম মামলা নিয়েছেন, তাঁরাই দিতে পারবেন। এ ব্যাপারে ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এনিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।