নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১০ জুন, ২০১৮
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবন অনেক চড়াই-উতরাই এর মধ্য দিয়ে গেছে। তবে তাঁর রাজনৈতিক জীবনে তিনটি বাঁক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম বাঁক অবশ্যই ১৯৮১ এর ১৭ মে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফেরা। দ্বিতীয় বাঁক হলো ২০০৪ এর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা থেকে অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া। আর তৃতীয় বাঁক হলো, ২০০৮ সালে ১১ জুন দীর্ঘ প্রায় ১১ মাস কারান্তরীণ থেকে মুক্তি পাওয়া। শেখ হাসিনা রাজনীতিতে তাঁর তৃতীয় অধ্যায়ে সবচেয়ে বিচক্ষণ, দূরদর্শী এবং সফল। তাই শেখ হাসিনা সবসময়ই তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ যাঁরা তাঁকে কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠ থেকে মুক্তির লড়াইয়ে ভূমিকা রেখেছিল।
আজ বেগম জিয়ার চার মাসের কারাজীবনে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই হাসিঠাট্টা করেন। তাঁরা বলেন, বিএনপি বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে একটা আন্দোলনও করতে পারেননি। কিন্তু শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই হলো সত্য যে, আওয়ামী লীগও শেখ হাসিনার মুক্তির জন্য মনে রাখার মতোই কিছুই করতে পারেনি। বরং অনেক জাঁদরেল নেতারা শেখ হাসিনা যেন কোনো রাজনীতিতে ফিরে আসতে না পারেন সেই চেষ্টা করেছিলেন। তারপরও প্রয়াত জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা দলের সভাপতির নেতৃত্বের প্রতি অবিচল ছিলেন। তাঁদের কারণে আওয়ামী লীগ অনিবার্য ভাঙনের হাত থেকে মুক্তি পায়। অখণ্ড আওয়ামী লীগ পরোক্ষ ভাবে হলেও শেখ হাসিনার মুক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রয়াত জিল্লুর রহমানের পাশে ছিলেন বেগম মতিয়া চৌধুরী, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান খাঁন। শেখ হাসিনার মুক্তির ক্ষেত্রে আইনজীবীদের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সব মামলায় জামিন নিয়েই শেখ হাসিনা মুক্তি পেয়েছিলেন। অনেকে বলেন, শেখ হাসিনা প্যারোলে মুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো সব মামলায় জামিন পেয়েই তিনি মুক্তি পান। তাঁর জামিনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন আইনজীবী।
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে নেপথ্যে সংলাপ শেখ হাসিনা মুক্তির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। আর এই সংলাপের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন দু’জন। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ. টি. ইমাম এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক সিদ্দিকী।
শেখ হাসিনার মুক্তির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তাঁর চিকিৎসকরা। চিকিৎসকরাই প্রথম তাঁকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর দাবি তুলেছিলেন। আর এই চিকিৎসক টিমের নেতৃত্বে ছিলেন অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। তার সঙ্গে ছিলেন ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, ডা. শাহ আলম, ডা. শায়লা খাতুনসহ আরও কিছু চিকিৎসক।
আওয়ামী লীগ সভাপতির মুক্তির ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল আন্তর্জাতিক চাপ। বিশেষ করে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জী শেখ হাসিনার মুক্তির ব্যাপারে প্রকাশ্য অবস্থান নিয়েছিলেন। তাঁর সাম্প্রতিক গ্রন্থে তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন এ ব্যাপারে। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও কথা বলেন। বাংলাদেশে সেনা সমর্থিত সরকারকেও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেশকে উত্তরণের জন্য ভারত চাপ দেয় মূলত: প্রণব মুখার্জীর কারণেই। আর প্রণব মুখার্জীকে এবং ভারতকে এই মতে আনতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন শেখ রেহানা। শেখ রেহানা এবং সজীব ওয়াজেদ জয়, শেখ হাসিনার মুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক প্রভাব বলয়কে কাজে লাগানোর জন্য গুরুত্ব ভূমিকা পালন করেন। শেখ রেহানা সেসময় দিল্লীতে প্রণব মুখার্জী ছাড়াও সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। বাংলাদেশে সেনা সমর্থিত ওয়ান ইলেভেন সরকারের অন্যতম সমর্থক ছিল ভারত। আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের বেশ কিছু বিষয়ে, বিশেষ করে খেলাফতের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। শেখ রেহানা এই দূরত্ব প্রশমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
আজ শেখ হাসিনার বিস্ময়কর উত্থান, রাষ্ট্রনায়ক থেকে বিশ্বনেতায় আবির্ভূত হওয়ায় এঁদের অবদান অনস্বীকার্য। এঁদের কাছে শেখ হাসিনা ঋণী।
Read in English- https://bit.ly/2xVT7dn
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক হোসেন
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।