নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৭ জুলাই, ২০১৮
জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে বেগম জিয়া কারান্তরীণ হয়েছিলেন চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি। আজ ৭ জুলাই, বেগম জিয়ার কারাজীবনের ৫ মাস পূর্ণ হলো। আইনজীবীরা বলেছিলেন কোনো দণ্ডই হবে না। আর হলেও জামিন নিয়ে দিনে দিনেই বেরিয়ে আসবেন। তবে আইনজীবীদের ওই কথা ভুল প্রমাণিত হয়। দিন পেরিয়ে সপ্তাহ হয়েছে, সপ্তাহ পেরিয়ে মাস। এক ঈদ গেল, আরেক ঈদ আসছে। কিন্তু খালেদা জিয়ার মুক্তির কোনো সম্ভাবনা নেই। এক কারাগার, এক বন্দী। মুক্তির অনিশ্চয়তার মধ্যেই চলছে পুরান ঢাকার পুরোনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারাজীবন।
দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দলের দাবিদার বিএনপি তাঁদের চেয়ারপারসনের কারাগারে নেওয়ার প্রতিবাদে দেশজুড়ে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছিল। তবে এই হুমকি যে ফাঁকা বুলি তা এই পাঁচ মাসে প্রমাণিত হয়েছে। বড় কোনো আন্দোলনের ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি। মানববন্ধন, স্বাক্ষর সংগ্রহ, লিফলেট বিতরণসহ নামকাওয়াস্তে কিছু আয়োজন ছাড়া বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য বড় কোনো কর্মসূচি দিতে পারেনি তারা।
বিএনপির শীর্ষ নেতারা বলছেন, বর্তমানে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া বেগম জিয়ার মুক্তি সম্ভব না। এই আন্দোলন হতে হবে বিএনপির একা না, শরিকসহ সব দল নিয়ে। কিন্তু বিএনপির মধ্যেই এখন নেতৃত্বের বিরোধ চরমে। দলটির ইতিহাসে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে বিরোধ বেশি। দলকে গোছানোর মতো নেতৃত্ব বিএনপিতে এই মুহূর্তে অনুপস্থিত। ক্যারিশম্যাটিক কোনো নেতাও নেই বিএনপিতে। তাই সব নিয়ে তো পরের কথা, একাই আন্দোলনে অক্ষম বিএনপি।
আইনি লড়াইয়েও বিধ্বস্ত বিএনপি। বেগম জিয়ার আইনজীবীদের মিডিয়ায় সামনে বক্তব্য দেওয়া ছাড়া অন্য কোনো ক্ষেত্রেই সফলতা দেখা যায়না। আইনি প্রক্রিয়ায় প্রতিনিয়ত ভটজট পাকিয়ে এরই মধ্যে প্রায় প্রতিটি প্রক্রিয়ায় চূড়ান্তভাবে বিলম্বিত করতে সিদ্ধহস্ত প্রমাণ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা। এখন এই আইনজীবীদের মুখেও নেতাদের বুলি, আইনি পথে বেগম জিয়ার মুক্তি অসম্ভব, প্রয়োজন আন্দোলন, কঠোর কর্মসূচি। কিন্তু সেই কর্মসূচি কে করবে?
অসুস্থতার কারণেও বেগম জিয়ার কারাগার ছেড়ে হাসপাতালে থাকার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। সেই সম্ভাবনাও অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নিয়ে চিকিৎসার। কিন্তু বেগম জিয়া ইউনাইটেড হাসপাতালে যেতে চান। পরে সরকারের পক্ষ থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়ার কথাও বলা হয়। কিন্তু বেগম জিয়া ইউনাইটেডেই অনড় থাকেন। এসব ছিল ঈদুল ফিতরের আগের আলোচনা। ঈদের পর বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে আর কোনো দাবি নেই। অনেকের মনে প্রশ্ন, গুরুতর অসুস্থ হলে কীভাবে চিকিৎসা ছাড়াই এতদিন কারাগারে থাকেন বেগম জিয়া। তাই বিএনপি চেয়ারপারসনের অসুস্থতা নিয়ে জনমনে যে সহানুভূতির সৃষ্টি হয়েছিল তাও এখন সুদূর পরাহত।
এদিকে জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলা আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ওই রায়ে বেগম জিয়ার দণ্ড হলে বেগম জিয়া নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। তাই ৩১ জুলাই নির্ধারিত হতে যাচ্ছে বেগম জিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যত।
আবার চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা সংশোধন করে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছিল। গঠনতন্ত্রে ৭ নম্বর ধারায় ‘কমিটির সদস্যপদের অযোগ্যতা’ শিরোনামে দলের সদস্য হওয়ার অযোগ্যতার কিছু কথা বলা হয়েছিল। ওই ধারায় অযোগ্য হন দুর্নীতি পরায়ণ প্রমাণিত হওয়া ব্যক্তিরা। বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র সংবিধান পরিপন্থী বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশন। তাই ওই গঠনতন্ত্র গ্রহণযোগ্য নয়। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, শিগগিরই তারা বিএনপিকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিতে যাচ্ছে।
সব কিছু মিলিয়ে বেগম জিয়া পড়ে গেছেন এক চক্রের মধ্যে যেখান থেকে বেরুনোর পথ পাওয়া যাচ্ছে না। অতি শিগগিরই বেগম জিয়া যে কারাগার থেকে বের হচ্ছেন না তা সবাই মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেছে। আর নেতৃত্বহীন বিএনপি পার করছে এক অন্ধকার সময়।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক হোসেন
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।