নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০১ পিএম, ১০ জুলাই, ২০১৮
রাজশাহী, সিলেট এবং বরিশাল সিটি নির্বাচনকে বলা হচ্ছে রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট। বিএনপি বলছে এই তিন সিটি নির্বাচনে তাঁরা অংশগ্রহণ করছে আওয়ামী লীগের মুখোশ উন্মোচনের জন্য। তিন সিটি নির্বাচনের পর বিএনপি সিদ্ধান্ত নেবেন দলীয় সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন সম্ভব কি না? কিন্তু তিন সিটি নির্বাচনে যাওয়ার আগেই বিএনপি বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়েছে। একদিকে বিএনপির মধ্যে দলীয় দ্বন্দ্ব ও কোন্দল, অপরদিকে ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে বিশেষ করে জামাতের সঙ্গে টানাপোড়ন প্রকাশ্য রূপ ধারণ করেছে। যে কারণে আসন্ন এই তিন সিটি নির্বাচনের শুরুতেই ব্যাকফুটে চলে গেছে বিএনপি।
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ১৪-দলীয় জোটের একক প্রার্থী আওয়ামী লীগের বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। অন্যদিকে মেয়র পদে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী ও জামায়াতের প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার না করায় বিপাকে রয়েছেন বিএনপি।
আমীর খসরু ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা সিলেটে গিয়েও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীর সঙ্গে কোনো সমঝোতা বা মীমাংসায় আসতে পারেনি। সিলেটে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী বদরুজ্জমান সেলিমকে এখন পর্যন্ত দল থেকে বহিষ্কারও করা হয় নাই। গতবারের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বিগত সময়ে টিকে থাকার জন্য এক পর্যায়ে মুহিতের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতো। এর ফলে বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা তাঁর উপর অনেকটাই ক্ষুব্ধ। অপরদিকে বদরুজ্জমান সেলিম সিলেটের রাজনৈতিক মাঠে বেশ জনপ্রিয় ব্যক্তি। তরুণ ভোটার ও কর্মী সমর্থকরা তাঁর সঙ্গে রয়েছে। সিলেট সিটি নির্বাচনে বিএনপির ভোটারদের বড় একটি অংশ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিমের পক্ষেই থাকবে।
অন্যদিকে বিএনপির শরিক দল জামায়াতের মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করে অনড় অবস্থানে রয়েছে। সিলেটে জামাতের প্রায় ৩০ হাজার ভোট রয়েছে বলে জানা যায়। জামাতের এই ৩০ হাজার ভোট জয়-পরাজয়ের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করবে। সিলেট সিটি নির্বাচনে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের ভোট কার্যত তিন ভাগে ভাগ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নির্বাচনের ফলাফল কোন দিকে যাবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
রাজশাহীতে মেয়র পদে জামাত কোনো প্রার্থী না দিলেও প্রতিটা ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী দিয়েছে। জামাতকে রাজশাহীতে ২০ দলীয় জোটের কোনো সমন্বয় সভায় দেখা যায় নাই। রাজশাহী সিটি নির্বাচনে বিএনপির কোনো সমন্বয়ক কমিটিতেও নেই জামাত। রাজশাহী সিটিতে জামাতের বিশাল ভোট ব্যাংক এবং অনেক কর্মী সমর্থক আছে। জামাতের এই ভোট ব্যাংক রাজশাহী সিটি নির্বাচনে বিশাল একটি ফ্যাক্টর। তবে এখানেও বিএনপির সঙ্গে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামাতের সম্পর্ক ভালো নয়।
বরিশাল সিটি নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সারোয়ার দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিকভাবে প্রায় নিষ্ক্রিয় ছিলেন। বিশেষ করে ওয়ান ইলেভেনের পর থেকে তাঁকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তেমন একটা থাকতে দেখা যায় নাই। অপরদিকে বরিশালের মেয়র আহসান কামাল স্থানীয় বিএনপির দল গোছানোসহ নেতা কর্মীদের একত্রিত করার বিষয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছেন। যে কারণে বরিশাল সিটিতে বিএনপি ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আহসান কামাল বেশ জনপ্রিয় একজন ব্যক্তি। বিএনপির মধ্যে তাঁর নিজস্ব ভোট ব্যাংক এবং অনেক কর্মী-সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষী রয়েছেন। এবার সিটি নির্বাচনে তাঁকে মনোনয়ন না দেওয়ায়, তিনি বিএনপির মেয়র প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রকাশ্যেই। বরিশাল সিটিতেও অন্য দুই সিটির মতোই বিএনপির দলীয় কোন্দল প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে।
জাতীয় রাজনীতিতে যেমন বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীদের মতপার্থক্য, অনৈক্য এবং কলহ বিরাজমান, তারই ধারাবাহিকতা তিন সিটিতেও লক্ষণীয়। বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটগত কলহের প্রভাব তিন সিটি নির্বাচনে তাঁদের পক্ষে যে ভালো ফলাফল বয়ে আনবে না তা বলাই যায়।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে/জেডএ
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক হোসেন
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।