নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২২ জুলাই, ২০১৮
শোকের মাস আগস্ট আসলেই সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে একটি আশার বাণী শোনা যায়। আশার বাণীটি হলো, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ছয় খুনিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী প্রমুখেরা বলা শুরু করেন, বঙ্গবন্ধুদের খুনিদের ফিরিয়ে আনতে শিগগিরই উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এই খুনিরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বহাল তবিয়তেই আছেন। আর সর্বশেষ খবর হচ্ছে, খুনিরা এখন বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ও বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতায় আটঘাট বেঁধেই নেমেছেন। বিএনপি-জামাতের যেসব নেতাকর্মী বিদেশে পলাতক আছেন তাঁদের সঙ্গে জোট বেঁধে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা এবং বাংলাদেশে বড় ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটানোর জন্য ষড়যন্ত্র করছেন বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিরাই।
স্বাধীনতার মাত্র চার বছর পরই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে একদল সেনা সদস্য। পরবর্তীতে প্রায় চার দশক বছর পর এই হত্যাকাণ্ডে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ১১ জনের মধ্যে পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। কিন্তু মৃত্যুদণ্ডের রায় মাথায় নিয়ে আরও ছয় খুনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পলাতক আছেন। পলাতক এই খুনিরা হলেন লে. কর্নেল (বরখাস্ত) খন্দকার আবদুর রশিদ, মেজর (বরখাস্ত) শরিফুল হক ডালিম, মেজর (অব.) নূর চৌধুরী, রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন খান, লে. কর্নেল (অব.) রাশেদ চৌধুরী ও ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদ। এদের মধ্যে মেজর ডালিম কেনিয়ার পাসপোর্ট নিয়ে আছেন পাকিস্তানে। লে. কর্নেল আবদুল রশিদ ও রিসালদার মুসলেহ উদ্দিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং মেজর নূর চৌধুরী ও লে. কর্নেল রাশেদ চৌধুরী কানাডায় অবস্থান করছেন। তবে ষষ্ঠ খুনি আবদুল মাজেদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় বঙ্গবন্ধুর যে খুনিরা অবস্থান করছেন এবং পাকিস্তানে অবস্থানরত মেজর ডালিম –তাঁরা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে সে ষড়যন্ত্রে বিএনপি এবং জামাতের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। বিএনপি এবং জামাতকে অর্থ সহায়তা দিচ্ছেন তাঁরা। এছাড়া এই খুনিরা বর্তমান সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিভিন্ন সন্ত্রাসী এবং জঙ্গি তৎপরতায় অর্থ যোগানসহ বিভিন্ন ভূমিকা পালন করছেন বলেও জানা গেছে।
বঙ্গবন্ধুর এই খুনিদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন সময়ে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু এই উদ্যোগগুলো পর্যাপ্ত বলে প্রমাণিত হয়নি। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে ২০১৪ সালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নেতৃত্বে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক ভাবে এই টাস্কফোর্সের কর্মকাণ্ডে কোনো অগ্রগতি নেই। মেজর (অব.) নূর চৌধুরীকে আনার জন্য কানাডায় কয়েকবার বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোনো মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত ব্যক্তিকে ফেরত দেওয়ার বিধান কানাডায় না থাকায় সে উদ্যোগও সফল হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের উচিত নূর চৌধুরীর ব্যাপারে একটি বড় কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো। কিন্তু সেটির ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বরং খুনি নূর চৌধুরীরা কানাডা থেকে নিয়মিত যুক্তরাষ্ট্রে যাতায়াত করছেন।
বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য দুশ্চিন্তার একটি বিষয় হচ্ছে, শুধু বঙ্গবন্ধুর খুনিরাই নয়, জামায়াতে ইসলামীর নেতা ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক, বিএনপির নেতা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ওসমান ফারুক এবং আরও কিছু বিএনপির নেতাও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। বঙ্গবন্ধুর খুনিরা তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছেন এবং বাংলাদেশ সম্পর্কে সিনেটে ও কংগ্রেসে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্র যে আজকাল নিয়মিত বাংলাদেশকে রাজনীতির অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে নসিহত দিচ্ছে এটার মূল কারণ পঁচাত্তরের খুনিদের এই তৎপরতা। আর এই খুনিরা প্রত্যেকেই অনেক টাকার মালিক। এদেরকে আবার অর্থ যোগান দিচ্ছেন কেনিয়ার পাসপোর্ট নিয়ে পাকিস্থানে অবস্থান করা মেজর ডালিম। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর সঙ্গে মেজর ডালিমের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। আইএসআই এর মাধ্যমে ডালিম পঁচাত্তরের খুনি এবং যুদ্ধাপরাধীদের সন্তান যারা লন্ডনে এবং আমেরিকায় পালিয়ে আছেন, তাঁদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন এবং তাঁরা সবাই বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্র করছেন। বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনকে বাংলাদেশে পৃষ্ঠপোষকতা করে বড় ধরনের নাশকতা ঘটানো এবং বড় ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার ও সরকারকে বেকায়দায় ফেলার নীল নকশা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন এই ব্যক্তিরা।
বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে মেজর ডালিম, লে. কর্নেল আবদুর রশিদ, মেজর নূর চৌধুরী এবং লে. কর্নেল রাশেদ চৌধুরী –এই চারজনই এখন মূলত সক্রিয় হয়ে আছেন। এই চারজন এবং বিএনপির যারা লন্ডনে ও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন তাঁরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পলাতক তারেক জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। সংঘবদ্ধভাবে বিভিন্ন জঙ্গি ও সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ রাখছেন, অর্থ যোগান দিচ্ছেন এবং বাংলাদেশে অস্থিতিশীল একটি পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্র হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। এমন সময়েই জাতির স্বপ্নের কর্ণধার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে উন্নত, প্রগতিশীল ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত বাংলাদেশের স্বপ্ন ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল যে দেশবিরোধী সেনা সদস্যরা, তাঁরা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এখনই যদি এই দেশবিরোধী চক্রটিকে থামানো না যায় তবে বাংলাদেশ সহসাই কঠিন সংকটের সম্মুখীন হতে যাচ্ছে।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান
বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি ভোটার ও প্রার্থীদের ধারণা পাল্টিয়েছে, বিশ্বাস জন্মেছে।
তার কারণেই প্রার্থীরা আবারও ভোটাদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে। প্রার্থীরা ভোটাদের দ্বারে
যাওয়ার যে সংস্কৃতি সেটা আবারও ফিরে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) যশোর শিল্পকলা
একাডেমির মিলনায়তনে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে
অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে যশোর, নড়াইল ও মাগুরার জেলার প্রার্থী নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে
মতবিনিময় শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ কথা বলেন।
একদিন বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন বিশ্বের
রোল মডেল হবে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ৩৬ শতাংশ
এ সময়ে অনেক। দেশের কয়েকটা রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ না নেয়াতে ভোটার উপস্থিতি কম।
আগামীতে দেশের যত ভোট আসছে, ততই আমাদের ভোটের পরিবেশ, ভোট গ্রহণ পরিবর্তন ঘটছে। বিগত
সময়ে নির্বাচন নিয়ে কি ঘটেছে সেটা ফিরে তাকানোর আর কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশের নির্বাচন
কমিশন সকল বির্তক, সমালোচনা পিছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়িয়ে দিন দিন উন্নতির দিকে যাচ্ছে।
ইসি আহসান হাবিব বলেন, নির্বাচনে ভোটারের
উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীরা কাজ করবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম
ধাপে মোট ভোট গ্রহণের শতাংশ প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা এবার থেকে ভোট গ্রহণে উপজেলা ভিত্তিক
তালিকা প্রকাশ করা হবে। ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীরা আলাদাভাবে
প্রচারণা করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যারা ভোটাদের বাঁধা দিবে তাদের প্রতিহত করবে প্রশাসন।
আমরা প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছি আইনের হাত ও ক্ষমতা অনেক বেশি। নির্বাচন বানচাল করতে
সেই ক্ষমতা কঠোরভাবে প্রয়োগ করবে প্রশাসন।
ইসি আরও বলেন, বিগত সময়ের চেয়ে বর্তমান
কমিশন সততার সঙ্গে কাজ করছে। শুধু কমিশন নয়, নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা সততার
সঙ্গে কাজ করছে। নির্বাচনে সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য আইন পাস করেছে এ কমিশন। কেউ সাংবাদিকদের
কাজে বাধাগ্রস্ত করলে জেল জরিমানার বিধান করা হয়েছে। মিডিয়াকে এ অবস্থানে নেয়ার ক্ষেত্রে
এ কমিশন ও সরকার ভূমিকা রাখছে।
যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল
হাছান মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় যশোর, নড়াইল ও মাগুরা জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপাররা
বক্তব্য রাখে। সভায় যশোর, মাগুরা ও নড়াইল জেলার সকল প্রার্থী, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট উপজেলাসমূহের
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাবৃন্দ, আচরণবিধি ও আইনশৃঙ্খলা
রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাবৃন্দ
এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ অংশ
নেয়।
অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে শার্শা উপজেলা
পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রশিক্ষণে অংশ নেন ইসি আহসান
হাবিব খান।
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।