নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:০৬ পিএম, ২৩ জুলাই, ২০১৮
প্রযুক্তির আশির্বাদে যোগাযোগ ব্যবস্থা এখন আমাদের হাতের মুঠোয়। কিন্তু এই আশির্বাদের কিছু অভিশাপও আছে । তথ্যপ্রযুক্তির সাথে পাল্লা দিয়ে এর অপব্যাবহার করে অনেক অসাধু গোষ্ঠী নিজেদের লাভবান করছে। সাম্প্রতিককালে শুধুমাত্র সিম ক্লোনিং করেই একশ্রেণির প্রতারক চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এমনকি আপনি নিজেও হতে পারেন সিম ক্লোনের শিকার। আসুন জেনে নিই সিম ক্লোনিং কি, এর ক্ষতিকারক দিক, কিভাবে সিম ক্লোনিং-এর শিকার হয়, কিভাবে এটা প্রতিরোধ করা যায় এবং সিম ক্লোনিং-এর শিকার হলে কী করবেন?
মোবাইল সিম (সাবস্ক্রাইবার আইডেন্টিফিকেশন মডিউল)কার্ডের অবিকল প্রতিরূপ তৈরিই হলো সিম ক্লোনিং। একটি সিম যেটা আপনি ব্যাবহার করছেন সেই সিমটি যদি অন্য কেউ ব্যবহার করে কিংবা এক নাম্বার যদি দেখেন একসাথে দুইজন ব্যাবহার করে অথবা হঠাৎ করেই যদি দেখেন কোন কারণ ছাড়াই আপনার সিম থেকে ব্যাল্যান্স কমে গেছে তাহলেই বুঝবেন আপনার সিম ক্লনিং-এর শিকার।
জঙ্গি কিংবা দুষ্কৃতিকারীরা অথবা প্রতারক চক্রের কেউ আপনার নাম্বারটি ক্লোন করে আপনার জীবন বিপন্ন করতে পারে। অর্থাৎ ওই নাম্বার দিয়ে কেউ যদি কাউকে মৃত্যুর হুমকি, চাঁদাবাজি কিংবা জঙ্গি কানেকশন করে তার দায়ভার আপনার উপরেই বর্তাবে। কাজেই আপনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়বেন। শুধু তাই আপনার নাম্বারটি ক্লোন করে আপনার পরিচিত মানুষদের কাছ থেকে প্রতারক চক্র হাতিয়ে নিতে পারে লাখ লাখ টাকা। শুধু তাই নয় ক্লোন করা সিম দিয়ে (মোবাইল নম্বর) এসএমএস বা কল-লগ অথেনটিকেশন নির্ভর যে কারও ফেসবুক আইডি, ইন্সটাগ্রাম ইত্যাদি হ্যাক করাও সম্ভব। অন্যদিকে, মেসেজিং অ্যাপ আইএমও, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপের মতো সেবা দখল করে প্রতারকরা আপনার ভার্চুয়াল দুনিয়ায় ব্যক্তির ইমেজ ও সামাজিক অবস্থানও ধ্বংস করতে পারে।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারে এমন প্রযুক্তি রয়েছে যা ব্যবহার করে প্রতারকরা মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে সিম ক্লোন করতে পারে। তাছাড়াও প্রতারণা করে কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে কিংবা টার্গেট করে কোনও ব্যক্তির মোবাইল সিমের তথ্য সংগ্রহ বা চুরি, ছিনতাই করে মোবাইল সিম নিয়ে খুব সহজেই সিম ক্লোনিং করে প্রতারক গোষ্ঠী। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট মোবাইলফোন অপারেটরের নির্দিষ্ট শাখায় কর্মরতরা গ্রাহকের তথ্য নিয়েও সিম ক্লোনিং অপরাধে সাহায্য করতে পারেন। অবশ্য আমারা অনেকেই আছি বহুদিন ধরেই একই সিম ব্যাবহার করি। বেশিদিন ধরে একটি সিম ব্যবহার করলে তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে। মোবাইল ফোনের সিম হলো একটি প্রোগ্রামেবল চিপ। এই সিমের তিনটা ভার্সন রয়েছে। এর মধ্যে ভার্সন ১ অপেক্ষাকৃত দুর্বল। সিম ক্লোনিংয়ের যত ঘটনা এখন পর্যন্ত ঘটেছে তার সবই ভার্সন ১-এর সিমে। আমরা যে সিমগুলা ব্যাবহার করি তার মধ্যে প্রায় ৭০ ভাগই হলো ভার্সন ১-এর সিম। এই সিম কপি করা যায়। শুধু তাই নয়, বাজারে সিম কপির সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারও সহজলভ্য। যা দিয়ে সহজেই সিম কপি করা যায়।
মোবাইল ফোনের প্রোগ্রামেবল চিপের মধ্যে দুটো ভার্সন ২ ও ভার্সন ৩ এককভাবে সিকিউরড। জানা যায়, ভার্সন ২ ও ৩ এর নিরাপত্তা দেয়াল এখনও কেউ ভাঙতে পারেনি। সিম ক্লোনিং রোধে সবার মোবাইল সিম হালনাগাদ করে নেওয়া উচিত । নতুন সিম তথা থ্রিজি বা ফোরজিতে ভার্সন ২ ও ৩ ব্যবহার করা হয়েছে। যারা পুরনো তথা অনেকদিন ধরে একই সিম ব্যবহার করছেন তারা যদি নতুন মোবাইল সিম (ফোরজি) তুলে ব্যবহার করেন তাহলে ফোন বেহাত হলেও কোনোভাবে সিম ক্লোন করা সম্ভব হবে না।
তারপরও যদি আপনি সিম ক্লোনিং-এর শিকার হন তবে নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করুন।
বিষয়টি যদি তথ্য প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ এর আওতায় পড়ে তাহলে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ এর সংশ্লিষ্ট ধারা উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দায়ের করুন বা প্রয়োজনে সাধারন ডায়েরি করতে পারেন। যদি থানায় কোনো কারণে অভিযোগ গ্রহণ না করে তাহলে নিকটস্থ বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে কমপ্লেইন্ট পিটিশন দায়ের করতে পারেন। যদি কোনো কারনে তাও সম্ভব না হয় তাহলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ এর আওতায় নিয়ন্ত্রক, সিসিএ বরাবর অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। নিয়ন্ত্রক, সিসিএ বরাবর অভিযোগ দায়ের এর ক্ষেত্রে সরাসরি ডাকযোগে বা ই-মেইলের মাধ্যমেও অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। ইমেইল: info@cca.gov.bd
এছাড়াও আপনি বিস্তারিত জানতে ফোন করুন- ০২-৫৫০০৬৮১৯ বা ভিজিট করুন www.cca.gov.bd
বাংলা ইনসাইডার/বিকে
মন্তব্য করুন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে প্রায়শই বিপদে পড়তে হয় ব্যবহারকারীদের। হ্যাকারদের উদ্ভট কাণ্ডে বন্ধু তালিকায় থাকাদের কাছে পড়তে হয় প্রশ্নের মুখোমুখি। এর জন্য প্রয়োজন বাড়তি নিরাপত্তার। এর জন্য সম্প্রতি নতুন কয়েকটি নিরাপত্তা ফিচার যুক্ত করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেওয়ার পরও অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে যায়। এমন হ্যাকের কবলে পড়লে, জানাতে হবে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে। তাহলেই ফিরে পাওয়া যাবে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট।
হ্যাক হলে যা করবেন:
ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হলে প্রথমেই ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বন্ধু তালিকায় থাকাদের জানাতে হবে। এতে বিড়ম্বনা এড়ানো যাবে। এ ছাড়াও থানায় জিডি করে রাখতে পারেন। হ্যাকারের যদি কোনো অসৎ উদ্দেশ্য থেকে থাকে তাহলে আপনার আইডি দিয়ে অপরাধমূলক কাজ করতে পারে।
অ্যাকাউন্ট হ্যাকের বিষয়টি ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে জানাতে প্রথমে Facebook.com/hacked সাইটে যেতে হবে। অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত ইমেইল অ্যাড্রেস বা ফোন নম্বর লিখতে হবে। এরপর বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। যেসব তথ্য চাওয়া হবে তা দিতে হবে। কারণ এটি প্রমাণ করবে যে আপনিই ওই অ্যাকাউন্টের প্রকৃত মালিক। এরপর রিপোর্ট করলে ফেসবুক ওই অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সংযুক্ত ইমেইল অ্যাড্রেস বা ফোন নম্বর ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট রিকভার করতে সহায়তা করবে।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। বন্ধুদের আপনার হ্যাক হওয়া অ্যাকাউন্টটিতে রিপোর্ট করতে বলুন। কারণ ওই অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার বিষয়ে ফেসবুকে যত বেশি রিপোর্ট পড়বে, তত দ্রুত অ্যাকাউন্ট ফেরত পাওয়া যাবে।
মন্তব্য করুন
বর্তমান
সময়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মধ্যে অন্যতম ইনস্টাগ্রাম। তাইতো প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার এনে
চমকে দেয় মেটার মালিকানাধীন
এই প্লাটফর্মটি। এবার ইনস্টাগ্রামে স্টোরি
দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন অভিজ্ঞতা হবে
ব্যবহারকারীদের। জানা গেছে, ইনস্টাগ্রামে
যুক্ত হচ্ছে রিভিল নামের একটি ফিচার।
যার
মাধ্যমে স্টোরি আপলোড করেও লুকিয়ে রাখা
যাবে। সেই স্টোরি দেখতে
হলে ফলোয়ারকে ডিএম অর্থাৎ ডিরেক্ট
মেসেজ করতে হবে। আপনি
অনুমতি দিলে তবেই সেই
স্টোরিটি দেখতে পাবেন ফলোয়াররা। অর্থাৎ আপনার স্টোরি কে দেখবে না
দেখবে, তা সম্পূর্ণ ভাবে
আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
যেভাবে এই স্টোরি আপলোড করতে হবে-
স্টোরি
তৈরি করার সময় সবার
আগে ক্লিক করতে হবে স্টিকার
আইকনে। সেখানেই খুঁজে পাবেন রিভিল নামের আইকনটি। সেটি সিলেক্ট করে
নিলে স্টোরি সংক্রান্ত বিষয়টি সেখানে উল্লেখ করতে পারবেন। যাতে
আপনার ব্লার স্টোরির আড়ালে কী লুকিয়ে রয়েছে,
তার একটা ইঙ্গিত পাবেন
আপনার ফলোয়াররা।
এই
স্টোরি ইউজাররা কীভাবে দেখতে পাবেন, তা জানা যাবে
স্ক্রিনের বাঁদিকের নিচে একটি প্রিভিউ
আইকন থেকে। আপনি সেই প্রিভিউতে
ক্লিক করে দেখে নিতে
পারবেন ইউজারদের কাছে আপনার স্টোরিটি
কীভাবে শো করবে। তবে
স্টোরিটি দেখতে ইউজারদের ডিএম করতে হবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বর্তমানে মানুষের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে স্মার্টফোন। কিন্তু আগামী ১০/১৫ বছরের মধ্যেই নাকি বিলুপ্ত হয়ে যাবে স্মার্টফোন। তখন এটি আর মানুষের হাতে হাতে দেখা যাবে না। সম্প্রতি এমনটাই দাবি করেছেন মেটার শীর্ষ এআই বিজ্ঞানী ইয়ান লেকুন।
তিনি বলেন, শেষপর্যন্ত আমরা যেটা চাই, সেটা হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন অ্যাসিস্ট্যান্ট। যেগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সাহায্য করবে। আর সেই কারণেই আমাদের পকেটে থাকে স্মার্টফোন। কিন্তু আজ থেকে দশ বা পনেরো বছরের মধ্যেই আমাদের আর স্মার্টফোনের প্রয়োজন পড়বে না। তখন এসে যাবে অগমেন্টেড রিয়েলিটি গ্লাসেস।
লেকুনের দাবি, ওই বিশেষ ধরনের চশমা আর ব্রেসলেটই সব কাজ করে দেবে। ফলে স্মার্টফোনের প্রয়োজন শেষ হয়ে যাবে।
স্মার্টফোন নিয়ে এমন ভবিষ্যদ্বাণী লেকুনেরই প্রথম নয়। এর আগে নোকিয়ার প্রধান নির্বাহী (সিইও) পেক্কা লান্ডমার্ক ২০২২ সালে বলেছিলেন, ২০৩০ সালের মধ্যেই স্মার্টফোন আর প্রাসঙ্গিক থাকবে না। বরং শরীরেই বসানো থাকবে নানা যন্ত্র!
প্রসঙ্গত, বছরের শুরুতেই ‘অসাধ্য সাধন’ করেছে ধনকুবের ইলন মাস্কের সংস্থা নিউরোলিঙ্ক। মানব মস্তিষ্কে বসানো হয়েছে একটি ‘ব্রেইন ইন্টারফেস’ অর্থাৎ চিপ। যা মানব মস্তিষ্কের সঙ্গে কম্পিউটারের সরাসরি যোগাযোগ গড়ে তুলতে পারে। সেই ব্যক্তি তার মস্তিষ্ককে ব্যবহার করে অর্থাৎ ‘টেলিপ্যাথি’র মাধ্যমে ভিডিও গেম বা অনলাইন দাবা খেলতে পারছেন! এটি নিত্যনতুন উদ্ভাবনে আগের সবকিছুকেই টেক্কা দিচ্ছে। ফলে স্মার্টফোনের অবলুপ্তি সংক্রান্ত এমন ভবিষ্যদ্বাণীকে উড়িয়ে দিতে পারছে না কেউ।
মন্তব্য করুন