ইনসাইড পলিটিক্স

প্রতিহিংসার রাজনীতি: আয়নায় নিজের মুখ?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৮ জুলাই, ২০১৮


Thumbnail

আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর সম্প্রতি হামলা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু পরিবার সম্পর্কে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় জামিন পেতে গত ২২ জুলাই কুষ্টিয়া আদালতে গিয়েছিলেন মাহমুদুর রহমান। সেখানে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁর ওপর হামলা চালান বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই ঘটনার পরপরই বিএনপির নেতাকর্মীরা ও তথাকথিত সুশীল সমাজ সরকারের নিন্দায় মুখর হয়ে উঠেছে। একথা বারবার বলা হচ্ছে, দেশে বাকস্বাধীনতা নেই, ভিন্নমতের প্রতি সহিষ্ণুতা নেই। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পোষণ করার কারণে সমালোচিত হচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার।

সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা অবশ্যই নিন্দনীয় কাজ। কিন্তু আমাদের সমস্যা হচ্ছে, আমরা সত্যিকে খণ্ডিত ভাবে দেখি। একটি ইস্যু নিয়ে আলোচনা করতে গেলে যে এর পেছনের কারণ দেখতে হয়, ইস্যুর উৎপত্তি নিয়ে আলোচনা করতে হয় সেটি আমাদের মনে থাকে না।

এই হামলার নিন্দা যারা করছেন তাঁরা অচেতন বা সচেতনভাবেই বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময় সংগঠিত রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডগুলোর কথা উল্লেখ করছেন না। সমালোচকরা বলছেন না, কোন কোন ঘটনা মানুষের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে যে কারণে আজকে মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার মতো ঘটনা ঘটলো।

দেশে বাক স্বাধীনতা নেই এমন অভিযোগের প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দেওয়া প্রয়োজন, বিএনপি শাসনামলে কুষ্টিয়ার সাংবাদিক নির্যাতন বিরোধী সমাবেশে সাংবাদিক নেতা ও অবজারভার পত্রিকার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরীর ওপর ন্যক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছিল। ইকবাল সোবহান চৌধুরী স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের ভয়ভীতিতে ঢাকায় পালিয়ে যাওয়া চার সাংবাদিককে নিয়ে ২০০৬ সালের ২৯ মে তারিখে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে আসেন। সঙ্গে ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক ওমর ফারুক, গাজী আজমল হোসেন প্রমুখ। সমাবেশে বক্তব্য রাখার সময় ফরিদপুরের সাংবাদিক নেতা লায়েকুজ্জামান বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দল কতটা দেউলিয়া হলে সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা মামলা করতে পারে।’ এই বক্তব্যের পরই আগে থেকে হামলার প্রস্তুতি নিয়ে রাখা  ছাত্রদল ও যুবদলের ক্যাডাররা সমাবেশে অতর্কিত হামলা চালায়। জেলা বিএনপি অফিস থেকে বের হয়ে তারা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে করতে সমাবেশস্থলে আসে। সমাবেশস্থল কুষ্টিয়া পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে জড়ো হয়ে তাঁরা মারপিট-ভাংচুর শুরু করে। এতে রক্তাক্ত হন ইকবাল সোবহান চৌধুরী। আহত হয়েছিলেন আরও ২৩ জন সাংবাদিক।

অবজারভার সম্পাদকের মতোই শাহরিয়ার কবির ও মুনতাসির মামুন আওয়ামী লীগের পদধারী নেতা নন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হওয়ার কারণে শিক্ষা-সংস্কৃতি জগতের এই দুই ব্যক্তিও বিএনপির প্রতিহিংসার রাজনীতির হাত থেকে রক্ষা পাননি।

জোট সরকারের আমলে ২০০২ সালের ৭ ডিসেম্বরে ময়মনসিংহের চারটি সিনেমা হলে বোমা হামলা চালানো হয়। জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সংঘটিত এই বোমা হামলায় ১৮ জন নিহত ও দুই শতাধিক লোক আহত হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় আওয়ামী লীগের সেই সময়ের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবের হোসেন চৌধুরী, লেখক মুনতাসীর মামুন, শাহরিয়ার কবির ও ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ মতিউর রহমানসহ ৩১ জনকে, যা ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত । অবশ্য ২০০৭ সালে তাঁরা এই মিথ্যা মামলার দায় থেকে নিষ্কৃতি পান।

শাহরিয়ার কবির এর আগেও বিএনপির অপরাজনীতি প্রত্যক্ষ করেছেন। ক্ষমতায় আসার পরপরই বিএনপি-জামাত জোট সরকার দেশজুড়ে সংখ্যালঘু নির্যাতন শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ২০০১ সালের ৮ অক্টোবর রাতে মাত্র ১৩ বছরের কিশোরী পূর্ণিমা রানী শীলকে গণধর্ষণ করে বিএনপি-জামাত জোটের সন্ত্রাসীরা। ঘটনার পরপরই ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ওয়াহিদুল হক তাকে দেখতে উল্লাপাড়ায় আসেন। সে সময় পূর্ণিমার সঙ্গে দেখা করতে শাহরিয়ার কবিরদের বাধা দেওয়া হয়, তাঁদেরকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।

এছাড়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর মামলা-হামলা তো চলছিলই। একুশে আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা, আহসানউল্লাহ্‌ মাস্টার ও শাহ এ এম এস কিবরিয়ার মতো জনপ্রিয় নেতাদের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তৎকালীন সরকারের সন্ত্রাসীরা। এগুলো ছাড়াও তাঁদের নির্যাতনের তালিকা অনেক লম্বা যা বর্তমানে নিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবী সমাজ ভুলে গেছে।

আওয়ামী লীগ নেতা সাবের হোসেন চৌধুরী পরিচ্ছন্ন ইমেজের ব্যক্তি। কিন্তু তাঁকেও হেনস্থা করতে ছাড়েনি বিএনপি-জামাত জোট সরকার। অন্য কোনো অভিযোগ না পেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে প্লেট চুরির মামলা দিয়েছিল তাঁরা। এই হাস্যকর মামলায় গ্রেপ্তার করে সাবের হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে চালানো হয়েছিল অমানুষিক নির্যাতন।

এছাড়া বিভিন্ন সময়ে বিএনপির সন্ত্রাসীদের হাতে অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিমসহ আরও অনেকে।

অদ্ভুত একটি বিষয় লক্ষ্য করে দেখুন। আজ বিএনপির নেতাকর্মীরা দাবি করছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত কারান্তরীণ করেছে সরকার। অথচ খালেদা জিয়া কারাবন্দী আছেন আইন-আদালতের মাধ্যমে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার উদাহরণ টানতে গেলে বরং শেখ হাসিনার প্রতি ক্ষমতায় থাকাকালীন বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আচরণের কথাই উল্লেখ করতে হয়।

সেই দিনটি ছিল ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট।  যশোর যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা চালায় জোট সরকারের সন্ত্রাসীরা। কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের হিজলি গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। সেখান থেকে যশোরে ফিরে যাওয়ার পথে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে রাস্তার ওপর একটি যাত্রীবাহী বাস (সাতক্ষীরা-জ-০৪-০০২৯) আড়াআড়ি ফেলে রেখে বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা চালায়। হামলায় জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান ও সাংবাদিকসহ দলীয় অনেক নেতাকর্মী আহত হন। আর এই হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও তৎকালীন সাংসদ হাবিবুল ইসলামের হাবিব ও বিএনপি নেতা রঞ্জু।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন এবার হামলার শিকার হলেন বিএনপি-জামাতের পক্ষ হয়ে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে মিথ্যাচার করা মাহমুদুর রহমান। বিএনপি-জামাত যতই হত্যার রাজনীতি করুক, গণতান্ত্রিক দল আওয়ামী লীগের সময়ে এই ধরনের ঘটনা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ একজন অপরাধীর বিচার করতে হবে আইন-আদালতের মাধ্যমে৷ নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়া কখনোই সমাধান নয়৷

কিন্তু এত কিছুর পরও একটি কথা থেকে যায়৷ কথাটি হলো, দিনশেষে আমরা সবাই মানুষ। রক্ত-মাংসে গড়া মানুষ। আমাদের মধ্যে ভালোবাসা, ক্ষমার মতো ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য যেমন রয়েছে, তেমনি রাগ-ক্ষোভ, ঘৃণার মতো নেতিবাচকতা থেকেও আমরা মুক্ত নই। তাই দিনের পর দিন বিএনপি সরকারের অন্যায়, নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর, মাহমুদুর রহমানের কলম সন্ত্রাসের শিকার হওয়ার পর ছাত্রলীগের একটি অংশের ধৈর্য্যের বাধ যদি ভেঙেই যায় তাহলে আমরা তার সমালোচনা করতে পারি, কিন্তু বিস্মিত হতে পারি না।

শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা, সাংবাদিক সমাবেশে হামলা কিংবা রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা-হামলার প্রচলন যদি বিএনপি সরকার না করতো তবে মাহমুদুর রহমানকে আজকে এই দিন দেখতে হত না। আজ যারা আমার দেশ সম্পাদকের ওপর হামলার ঘটনায় ঘৃণায় ভাষা হারিয়ে ফেলছেন তাঁদেরকে মনে রাখতে হবে, প্রতিহিংসার রাজনীতি বিএনপিই প্রথম চালু করেছিল। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে যে সেই প্রতিহিংসার সিকিভাগও ফেরত দেয়নি এই কথা স্বীকার করতেই হবে।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ

 

 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

অবশেষে ১৪ দলের বৈঠক

প্রকাশ: ০৮:০৬ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের বৈঠক ডাকা হয়েছে আগামী বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সন্ধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন জোটের প্রধান শেখ হাসিনা।


নির্বাচনের প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস পরে প্রধানমন্ত্রী জোটসঙ্গীদের নিয়ে বসতে যাচ্ছেন। তবে এবারের বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হতে পারে সে বিষয়ে জানেন না বলে দাবি করেছেন শরিক দলগুলোর নেতারা।  

এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আসন বণ্টন প্রশ্নে গত ৪ ডিসেম্বর বৈঠকে বসেছিল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটে। 





১৪ দল   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ওবায়দুল কাদেরের হ্যাটট্রিক

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন। 

ওবায়দুল কাদের গত এক মাসে তার তিনটি নীতি নির্ধারণী বক্তব্য ধরে রাখতে পারলেন না। তার এই বক্তব্যগুলোর উল্টো ফল হল। এবং হিতে বিপরীত ফলাফলের দিক থেকে তার বক্তব্যগুলো হ্যাটট্রিক করেছে। ওবায়দুল কাদের উপজেলা নির্বাচনের আগে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের কোনো আত্মীয় স্বজন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। উপজেলা নির্বাচনে যদি কেউ প্রার্থী হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ রকম বক্তব্য তিনি তিনবার দিয়েছিলেন। কিন্তু তার বক্তব্যে সাড়া দিয়ে কেউই উপজেলা নির্বাচনে তাদের আত্মীয়স্বজনকে প্রার্থিতা থেকে সরিয়ে দেয়নি। একমাত্র প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তার শ্যালককে উপজেলা নির্বাচন থেকে তার প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সমর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু নোয়াখালীর একরামুল করিম চৌধুরী, ড. রাজ্জাক কিংবা শাহজাহান খান কেউই তাদের পুত্রদেরকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে আনেননি। 

এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আত্মীয় স্বজনদের ব্যাপারে তার ভিন্ন রকম অবস্থা ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, পরিবার বলতে শুধুমাত্র স্ত্রী, পুত্র এবং স্বামী বোঝাবে। তিনি এটাও বলেন যে, যারা দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছে, আগে থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান আছে, তারা কেন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবে? এর ফলে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য আর ধোপে টেকেনি। পরবর্তী পর্যায়ে কেউই ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য আমলে নেননি। ওবায়দুল কাদেরও আত্মীয় স্বজনদের ব্যাপারে যে রুদ্রমূর্তি অবস্থানে ছিলেন সেখান থেকে সরে আসেন। 

দ্বিতীয় হিতে বিপরীত ঘটনা ঘটে মেট্রোরেলে ভ্যাট না দেওয়ার ঘটনা। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ যখন এনবিআর-এর কাছে আবারও ভ্যাট প্রত্যাহারের জন্য সুপারিশ করেছিল, তখন এনবিআর তা নাকচ করে দেয় এবং ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কিন্তু এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন এবং এই ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্তকে তিনি অযৌক্তিক বলে মনে করেন। এর পরপরই আসন্ন অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে এনবিআর মেট্রোরেলের ওপর ১৫ শতাংশ প্রস্তাবের সুপারিশ করেছে। 

গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে আবারও একই রকম বক্তব্য রেখেছেন। তিনি ভ্যাট আরোপের বিরোধিতা করে এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করবেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু ওবায়দুল কাদের এক মাস আগে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন সেই বক্তব্য এনবিআর আমলে নেয়নি। 

সর্বশেষ ঘটনা ঘটল ঢাকায় অটোরিকশা নিয়ে। ওবায়দুল কাদের আকস্মিকভাবে ঘোষণা করেছিলেন যে, ঢাকায় অটোরিকশা চলবে না। গতকাল থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী অটোরিকশা ঢাকায় চলাচল বন্ধ হয়েছিল। এ নিয়ে অটোরিকশা চালকরা রাজপথে নেমেছিল। গতকাল বিভিন্ন স্থানে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। কোথাও কোথাও সহিংসতার ঘটনাও ঘটে। আজ মন্ত্রিপরিষদ সভায় অনির্ধারিত ভাবে বিষয়টি আলোচিত হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সরাসরি এর বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেন। তিনি বলেন যে, বিকল্প ব্যবস্থা না করে কেন অটোরিকশা প্রত্যাহার করা হবে। দরিদ্র মানুষেরা তারা কী করে খাবে। এরপর তিনি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে নির্দেশনা দেন। মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক থেকে বেরিয়ে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদেরকে জানান, ঢাকায় অটোরিকশা থাকবে, এটি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা। তার কথার হিতে বিপরীতের ঘটনা এটি ঘটল তৃতীয়বার।

ওবায়দুল কাদের   আওয়ামী লীগ   সাধারণ সম্পাদক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কেজরিওয়ালে উজ্জীবিত বিএনপি?

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।

অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।

এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।

আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।


বিএনপি   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   অরবিন্দ কেজরিওয়াল   রুহুল কবির রিজভী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

চীনে প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের ৫০ সদস্যের দল

প্রকাশ: ০৩:২৩ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে দেশটিতে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের সহযোগী ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। চলতি মাসের শেষের দিকে ৫০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চীনে যাবে। 

গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছরপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। এই সফর কর্মসূচির লক্ষ্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়ন এবং মতবিনিময়।

দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত ১৪ এপ্রিল এক চিঠিতে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কাছে ৫০ সদস্যের একটি তালিকা পাঠিয়েছেন। এতে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ মহিলা শ্রমিক লীগ এবং আওয়ামী লীগের ডেটাবেজ টিমের সদস্যরা রয়েছেন।

দলীয় একাধিক সূত্র মতে, আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলটিকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি সংগঠন গড়ে তোলা, সুশাসন, ইতিহাসসহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবে।

৫০ সদস্যের প্রতিনিধি টিমে রয়েছেন:

আওয়ামী যুব লীগ:

সহ সভাপতি মৃনাল কান্তি জোয়ারদার তাজউদ্দীন আহমদ; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বদিউল আলম; সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, মো জহির উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক কাজী সারোয়ার হোসেন, উপ আন্তর্জাতিক সম্পাদক মো সাফেড আসফাক আকন্দ।

আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ:

স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান, সহ সভাপতি আব্দুল রাজ্জাক, তানভীর শাকিল জয় এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের চৌধুরী, একেএম আজিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল ফজল মো নাফিউল করিম, আবদুল্লাহ আল সায়েম৷

 বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ:

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিরিন রোকসানা, মিনা মালেক, সুলতানা রেজা, মিসেস রোজিনা নাসরিন, নীলিমা আক্তার লিলি, সাংগঠনিক সম্পাদক ঝর্না বাড়ুই, মরিয়ম বিনতে হোসেন, প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক মেহেনিগার হোসেন।

বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ:

সভাপতি আলেয়া সারোয়ার, সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা, সহ সভাপতি বিনা চৌধুরী, রাফিয়া আক্তার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিউটি কানিজ, সাংগঠনিক সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন।

মহিলা শ্রমিক লীগ:

সভাপতি সুরাইয়া আক্তার, সাধারণ সম্পাদক কাজী রহিমা আক্তার, কার্যকরী সভাপতি শামসুর নাহার, সহ সভাপতি মেহেরুন নেসা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিনাত রেহেনা নাসরিন।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ:

সহ সভাপতি মো. রাকিবুল হাসান, কুহিনূর আক্তার, খাদেমুল বাশার জয়, খন্দকার মো আহসান হাবিব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো হোসাইন আহমেদ, মো আবদুল্লাহ হিল বারী, এসডিজি বিষয়ক সম্পাদক রাইসা নাহার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক জান্নাতুল হাওয়া আখি।

ডেটাবেজ টিম মেম্বার, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ:

মো নুরুল আলম প্রধান, সাজ্জাদ সাকিব বাদশা, কাজী নাসিম আল মমিন, জাফরুল শাহরিয়ার জুয়েল, অদিত্য নন্দী, মো. সাদিকুর রহমান চৌধুরী, সাব্বির আহমেদ।


চীন   প্রশিক্ষণ   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছে আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।

সাম্প্রিতক সময়ে আবারও মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন এবং বর্তমান মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। যদিও এটিই তাদের প্রথম নয়। এর আগে এই দুই নেতার মধ্যে মার্কেট, অনিয়ম-দুর্নীতি ও সিটি করপোরেশনের টাকা রাখা নিয়ে বাকযুদ্ধ হয়েছিল। এবার তারা মুখোমুখি হয়েছেন ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে। গত বুধবার মেয়র তাপস দাবি করেন, ২০১৯ সালের তুলনায় গত বছর ঢাকায় ডেঙ্গু রোগী কমেছে। এর পাল্টা প্রতিউত্তরে শনিবার মিট দ্য প্রেসে সাংবাদিকদের ডেকে খোকন বলেন, বর্তমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ২০১৯ এর তুলনায় ২০২৩ সালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪১ হাজার কম। আমি ভদ্রতার জন্য কারো নাম উল্লেখ করছি না। তবে এ ধরনের অপপ্রচার করা হলে আমি কষ্ট পাই, ব্যথিত হই। আমি এই দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, আমি আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য, আমার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পাবলিকলি আমি যে কোন বক্তব্য দিতে পারি না, আমার জবাবদিহিতা রয়েছে। সাবেক এবং বর্তমান মেয়রের এই বাকযুদ্ধ সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, আওয়ামী লীগ এখন ফ্রি স্টাইলে চলছে। দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙে গেছে।

তৃণমূলের কোন্দল আরও ভয়ঙ্কর। এই মুহূর্তে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্যদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী না হতে নির্দেশনা দেওয়া হলেও প্রথম ধাপের মতোই এবার এই নির্দেশনা উপেক্ষিত। সামনে উপজেলা নির্বাচনের পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

বিভিন্ন স্থানে যেখানে জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন সেখানে তাদের মাইম্যানদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করছেন। আবার যারা স্বতন্ত্রদের কাছে পরাজিত হয়েছেন তারা তাদের প্রভাবপত্তি ধরে রাখার জন্য তাদের মাইম্যানদের প্রার্থী করছেন। এলাকায় নিজেদের হারানো অবস্থান পুনরুদ্ধারের জন্য উপজেলা নির্বাচনকে বেছে নিয়েছেন। এটা করতে গিয়ে লাগামহীন ভাবে একে অন্যের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো থেকে শুরু করে সহিংসতার ঘটনাও ঘটাচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে একটি লেজেগোবরে অবস্থা তৈরি হয়েছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো যে, আওয়ামী লীগের যে অঙ্গ সহযোগী সংগঠন আছে তারাও এখন ক্রমশ বিভক্ত হয়ে পড়ছে। সবকিছু মিলিয়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের কোন্দল। আওয়ামী লীগ সরকারের অর্জন এখন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেন আওয়ামী লীগেরই নেতাকর্মীদের দিয়ে। এ অবস্থা পরিত্রাণ পেতে আওয়ামী লীগ কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

আওয়ামী লীগ   মোহাম্মদ সাঈদ খোকন   ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন