নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:০১ পিএম, ০৩ অগাস্ট, ২০১৮
গত কয়েকদিন ব্যাপী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। অফিস-আদালতের কাজকর্ম প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। জনগণের মধ্যে কাজ করছে নানা রকম উদ্বেগ, উৎকন্ঠা ও অস্বস্তি। এছাড়াও রয়েছে চাপা উত্তেজনা। তবে এতোসব দুর্ভোগের মধ্যেও মানুষের মধ্যে যেন একটাই আশা, সেটা হলো প্রধানমন্ত্রী। তিনি থাকলেই সব সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করছে জনগণ।
শিক্ষার্থীরা যারা বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করছে তাঁরাও আশা রাখছে প্রধানমন্ত্রীর ওপর। বাংলাদেশের যখনই কোন সংকট, সমস্যা বা নৈরাজ্যের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তখন মানুষ শুধুমাত্র একজনের ওপরই নির্ভর করতে পারে। তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সেতুমন্ত্রী এত কথা বলেছেন, কারো কথাই কিন্তু বেশ একটা আমলে নেয়া হচ্ছে না। বরং গতকাল প্রধানমন্ত্রী যখন দুই পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদের অনুদানের চেক প্রদান করেন ও চলমান আন্দোলনে একগুচ্ছ সমস্যা সমাধানের নির্দেশনা দেন, সেটিকে অনেকেই ইতিবাচক হিসেবে মনে করছেন।
গতকাল প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা দেয়ার পর পরই সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে দাবি পূরণের এক আশার সঞ্চার হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা দিলে তা অবশ্যই রক্ষা করবেন, সেটিই এখন তাদের ভরসা।
যারা এই আন্দোলনকে অন্যদিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছে, তাঁরা বাদে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আশ্বস্ত হয়েছেন। শেখ হাসিনাকেই একমাত্র ভরসাস্থল মনে করা হচ্ছে। সকলেই আশা প্রকাশ করছে, প্রধানমন্ত্রী যদি কোন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন তাহলে হয়তো শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরে যাবে। দেশের বহু সংকটে এমনটাই পরিলক্ষিত হয়েছে।
বাংলাদেশে এখন জনগণের আশা আকাঙ্খার মূর্ত প্রতিকৃতি হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর কথাই দেশের মানুষ একমাত্র বিশ্বাস করে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, সরকারের বিশাল যে মন্ত্রীসভা রয়েছে তাদের কথায় মানুষের আস্থা নেই। জনগণের আস্থা অর্জন যে কোন রাজনীতিবিদের বড় অর্জন। বাংলাদেশে শুধুমাত্র একজন রাজনীতিবিদের ওপরই জনগণের আস্থা রয়েছে।
এদিকে আন্দোলনের চতুর্থ দিনে এই আন্দোলনকে সমর্থন জানায় বিএনপি। এতে সাধারণ মানুষের কাছে আরেকবার হাস্যকর হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে দলটি। কারণ বিএনপির সময়ে দেশে সড়কের অবস্থা ছিল আরো ভয়াবহ। সড়ক গুলোতে দুর্ঘটনার হারও ছিল অনেক বেশি। বিএনপির আমলে দেশে সিএনজি বাণিজ্য, সড়কে টেন্ডার বাণিজ্য ছিল। সড়কে মেরামতের কোন কাজ না করেই টাকা তুলে নেয়া হতো তাদের আমলেই। এই বিএনপি যখন নিরাপদ সড়কের দাবিতে যোগ দেয়, তখন সেটি হয়ে যায় ‘ভূতের মুখে রাম নাম’ এর সমান।
বাংলাদেশের জনগনের কাছে বিএনপির কর্মকান্ড যেন একটি কৌতুকের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সেজন্য জনগণ এখন তাকিয়ে আছেন শেখ হাসিনার দিকে। শুনতে চায় তাঁর একটা কন্ঠস্বর। তাঁর একটি কন্ঠস্বরই যেন শিক্ষার্থীদের ঘরে ফেরাতে পারবে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডআই
মন্তব্য করুন
ডোনাল্ড লু বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চীন সফর ভারত যুক্তরাষ্ট্র
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বিএনপির আশা ভরসার কেন্দ্রস্থল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারণ সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবে না- এমন বক্তব্যগুলো বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে বহুল প্রচারিত ছিল। বিএনপির সব নেতারা প্রকাশ্যেই এ কথা বলত।
বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন র্যাবের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানায় না তখন বিএনপি নেতারা উল্লাসে ফেটে পড়েছিলেন। তারা দলীয় কার্যালয়ে মিষ্টিমুখের ব্যবস্থাও করেছিলেন।
আবার ডোনাল্ড লু নির্বাচনের আগে যখন বাংলাদেশ সফর করেছিলেন এবং ভিসা নীতি প্রয়োগ করেছিলেন তখন বিএনপি নেতাদের প্রকাশ্যে মার্কিন বন্দনা করতে দেখা গেছে। ২৮ অক্টোবরের আগ পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই মার্কিন দূতাবাসে বা মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের বাসভবনে বিএনপির নেতাদের আনাগোনা ছিল। তারা সেখানে চা চক্রে মিলিত হয়েছেন, নৈশভোজে মিলিত হয়েছেন এবং বিভিন্ন রকমের শলাপরামর্শ করেছেন।
পিটার ডি হাস গত বছরের ১০ অক্টোবর বিএনপি যখন সমাবেশ করতে পারেনি তখনও একতরফা বিবৃতি দিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি বিতর্কিত সংগঠন মায়ের ডাকের এক নেতার বাসায় গিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি বিএনপির প্রতি এক ধরনের সহানুভূতি জানিয়েছিলেন। এভাবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির উপর এক ধরনের প্রচ্ছন্ন সমর্থন এবং সহানুভূতি দেখিয়েছিল।
অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সহানুভূতি এবং পরোক্ষ সমর্থনের কারণেই বিএনপির আন্দোলনের পালে হাওয়া লেগেছিল। নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি চাঙ্গা ভাব তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে শুরু করে। যদিও ২৮ অক্টোবরের পর এই ডোনাল্ড লু শর্তহীন সংলাপের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং এই আহ্বানের চিঠি নিয়ে পিটার ডি হাস তিনটি দলের নেতাদের কাছে গিয়েছিলেন এবং একটি সংলাপ আয়োজনের শেষ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেই সংলাপ আয়োজনে বিএনপি বা আওয়ামী লীগ কেউই সাড়া দেয়নি।
এখন নির্বাচন সমাপ্ত হয়েছে এবং ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর ১১ জানুয়ারি নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলার পরও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া এবং নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছেন। ডোনাল্ড লু’র আগে আফরিন আক্তার নির্বাচনের পরে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন এবং সেই সময় তিনি হোটেল ওয়েস্টিনে বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তখন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং শামা ওবায়েদ আফরিন আক্তারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। যদিও সেই সাক্ষাতের পর তারা কোনও কিছুই সাংবাদিকদেরকে জানাননি। কিন্তু এবার ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। আর এটি বিএনপির মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে।
বিএনপি মনে করছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদেরকে আর আগের মতো গুরুত্ব দিচ্ছেন না, পাত্তা দিচ্ছে না। বরং সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে বিএনপিকে এড়িয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। বিএনপি নেতারা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ, শামা ওবায়েদ, তাবিথ আউয়ালসহ যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এবং মার্কিন দূতাবাসে যাদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে তাদেরকে দুষছেন। তারা মনে করছেন যে, বিএনপির মধ্যেই সমস্যা রয়েছে। বিএনপির নেতারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পারেননি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিএনপির বক্তব্যগুলো তারা সঠিকভাবে ও যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারেননি। আর একারণেই ডোনাল্ড লু’র সফরের পর বিএনপির মধ্যে চলছে এক ধরনের হতাশা।
ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ রাজনীতি বিএনপি
মন্তব্য করুন
আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পর্যন্ত আওয়ামী লীগ দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী, দলের ভেতর সুবিধাবাদী, লুটেরা এবং দলের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না। কিন্তু ২৩ জুনের পর আওয়ামী লীগের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ক্র্যাকডাউন হবে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী এবং দলের সুনাম নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করবে। আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আওয়ামী লীগ এবং তার আদর্শিক জোট ১৪ দলের নেতাদের চীন সফরে হিড়িক পড়েছে। আওয়ামী লীগ এবং তার সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর এই চীন সফরকে ঘিরে কূটনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানামুখী আলাপ আলোচনা। ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই ১৪ দল এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের চীন সফরের ব্যাপারে দৃষ্টি রাখছেন। তবে তারা এই বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হচ্ছেন না। বিষয়টি তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় হিসেবেই মনে করছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বিএনপির আশা ভরসার কেন্দ্রস্থল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারণ সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবে না- এমন বক্তব্যগুলো বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে বহুল প্রচারিত ছিল। বিএনপির সব নেতারা প্রকাশ্যেই এ কথা বলত।