নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৪২ এএম, ০৯ অগাস্ট, ২০১৮
রাজধানীর বসুন্ধরা, কালাচাঁদপুর ও নদ্দা এলাকায় গতকাল বুধবার রাতে ব্লক রেইড দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য এতে অংশ নেয়। অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা জানান, প্রায় তিন ঘণ্টা ব্যাপী এই ব্লক রেইডে কালাচাঁদপুর এলাকা থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রকে আটক করা হয়েছে।
হঠাৎ করে বসুন্ধরা ও এর আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি দেখে অনেক স্থানীয় বাসিন্দা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্লক রেইড দেয় সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে, একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে।
সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের কিছু আন্দোলনকে কেন্দ্র করে একটি বিশেষ মহল দেশে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেমে যাওয়ার পরেও একটি গ্রুপ ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আবার আন্দোলন শুরু করে, যে কারণে এই দুটি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এই ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো হল নেই।
গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য আছে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অনেক তরুণ বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। বসুন্ধরা এলাকাটি একটু ভেতরের দিকে হওয়ায় এখানে বাসা ভাড়া কম। তাই ইস্ট ওয়েস্ট এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচয় দিয়ে অনেক তরুণই এই এলাকায় মেস ভাড়া নিয়ে থাকে। এখানেই পড়াশোনা, থাকা-খাওয়া চলে। তবে ইদানীং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তথ্য এসেছে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ব্যাচেলরদের বাসা ভাড়া নেওয়ার পরিমাণ বাড়ছে, যারা অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নয়।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোয়েন্দারা খুঁজে পেয়েছেন। সাম্প্রতিক আন্দোলনগুলোর সময় ফেসবুকে গুজব ছড়ানো আইডিগুলোর অনেকগুলোর লোকেশন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা। নতুন করে একটি আন্দোলন শুরু করার জন্য এবং সরকারকে বিব্রত করার জন্য ওই এলাকায় অনেক জঙ্গি আস্তানা গেঁড়েছে এমন তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা।
এক সময় মনে করা হত, জঙ্গিদের ঘাঁটি হলো উত্তরা। হলি আর্টিজান হামলার আগে আগে উত্তরায় ব্যাচেলরদের বাসা ভাড়া নেওয়া বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেই এলাকায় এখন পুলিশের নজরদারি বাড়ানোর ফলে জঙ্গিরা জায়গা পরিবর্তন করছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই জায়গাটি বসুন্ধরা।
জঙ্গি ও দেশবিরোধী দমনে গতকালের অভিযানটি ছিল আসলে রেকি। এর মাধ্যমে পুলিশ জানান দিল, এলাকাটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির মধ্যে আছে। বর্তমানে বসুন্ধরা ও এর আশপাশের এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং চিহ্নিত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, তিন ধরনের তরুণদের গুরুত্ব দিয়ে এই অভিযানটি পরিচালনা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দলে রয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যারা বিভিন্ন বিতর্কিত কনটেন্ট ডেভেলপ করে ছড়িয়ে দিচ্ছে তাঁরা। দেখা গেছে, এই কাজটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অর্থ্যাৎ তরুণরাই বেশি করছে। দ্বিতীয় দলে আছেন, বিএনপি-জামাতের বেতনভুক্ত কর্মী। এই দলটি প্রশিক্ষিত। আন্দোলন যখন শুরু হবে তখন আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে এই কর্মীরা নাশকতা সৃষ্টি করতে চায়। আর তৃতীয় দলে আছেন জঙ্গিরা। এরা আন্দোলনের সময়য় হত্যাকাণ্ড, ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে চায়।
এই তিনটি দল ১৫ আগস্টকে ঘিরে আবার কোনো নারকীয় ঘটনার সূত্রপাত করতে চায় এমন তথ্যের ভিত্তিতেই সতর্কতাস্বরূপ গতকাল বসুন্ধরা, কালাচাঁদপুর ও নদ্দা এলাকায় গতকাল বুধবার রাতে ব্লক রেইড দেয় ডিএমপি।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি
মন্তব্য করুন
ডোনাল্ড লু বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চীন সফর ভারত যুক্তরাষ্ট্র
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বিএনপির আশা ভরসার কেন্দ্রস্থল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারণ সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবে না- এমন বক্তব্যগুলো বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে বহুল প্রচারিত ছিল। বিএনপির সব নেতারা প্রকাশ্যেই এ কথা বলত।
বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন র্যাবের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানায় না তখন বিএনপি নেতারা উল্লাসে ফেটে পড়েছিলেন। তারা দলীয় কার্যালয়ে মিষ্টিমুখের ব্যবস্থাও করেছিলেন।
আবার ডোনাল্ড লু নির্বাচনের আগে যখন বাংলাদেশ সফর করেছিলেন এবং ভিসা নীতি প্রয়োগ করেছিলেন তখন বিএনপি নেতাদের প্রকাশ্যে মার্কিন বন্দনা করতে দেখা গেছে। ২৮ অক্টোবরের আগ পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই মার্কিন দূতাবাসে বা মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের বাসভবনে বিএনপির নেতাদের আনাগোনা ছিল। তারা সেখানে চা চক্রে মিলিত হয়েছেন, নৈশভোজে মিলিত হয়েছেন এবং বিভিন্ন রকমের শলাপরামর্শ করেছেন।
পিটার ডি হাস গত বছরের ১০ অক্টোবর বিএনপি যখন সমাবেশ করতে পারেনি তখনও একতরফা বিবৃতি দিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি বিতর্কিত সংগঠন মায়ের ডাকের এক নেতার বাসায় গিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি বিএনপির প্রতি এক ধরনের সহানুভূতি জানিয়েছিলেন। এভাবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির উপর এক ধরনের প্রচ্ছন্ন সমর্থন এবং সহানুভূতি দেখিয়েছিল।
অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সহানুভূতি এবং পরোক্ষ সমর্থনের কারণেই বিএনপির আন্দোলনের পালে হাওয়া লেগেছিল। নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি চাঙ্গা ভাব তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে শুরু করে। যদিও ২৮ অক্টোবরের পর এই ডোনাল্ড লু শর্তহীন সংলাপের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং এই আহ্বানের চিঠি নিয়ে পিটার ডি হাস তিনটি দলের নেতাদের কাছে গিয়েছিলেন এবং একটি সংলাপ আয়োজনের শেষ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেই সংলাপ আয়োজনে বিএনপি বা আওয়ামী লীগ কেউই সাড়া দেয়নি।
এখন নির্বাচন সমাপ্ত হয়েছে এবং ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর ১১ জানুয়ারি নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলার পরও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া এবং নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছেন। ডোনাল্ড লু’র আগে আফরিন আক্তার নির্বাচনের পরে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন এবং সেই সময় তিনি হোটেল ওয়েস্টিনে বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তখন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং শামা ওবায়েদ আফরিন আক্তারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। যদিও সেই সাক্ষাতের পর তারা কোনও কিছুই সাংবাদিকদেরকে জানাননি। কিন্তু এবার ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। আর এটি বিএনপির মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে।
বিএনপি মনে করছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদেরকে আর আগের মতো গুরুত্ব দিচ্ছেন না, পাত্তা দিচ্ছে না। বরং সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে বিএনপিকে এড়িয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। বিএনপি নেতারা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ, শামা ওবায়েদ, তাবিথ আউয়ালসহ যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এবং মার্কিন দূতাবাসে যাদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে তাদেরকে দুষছেন। তারা মনে করছেন যে, বিএনপির মধ্যেই সমস্যা রয়েছে। বিএনপির নেতারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পারেননি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিএনপির বক্তব্যগুলো তারা সঠিকভাবে ও যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারেননি। আর একারণেই ডোনাল্ড লু’র সফরের পর বিএনপির মধ্যে চলছে এক ধরনের হতাশা।
ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ রাজনীতি বিএনপি
মন্তব্য করুন
আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পর্যন্ত আওয়ামী লীগ দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী, দলের ভেতর সুবিধাবাদী, লুটেরা এবং দলের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না। কিন্তু ২৩ জুনের পর আওয়ামী লীগের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ক্র্যাকডাউন হবে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী এবং দলের সুনাম নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করবে। আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আওয়ামী লীগ এবং তার আদর্শিক জোট ১৪ দলের নেতাদের চীন সফরে হিড়িক পড়েছে। আওয়ামী লীগ এবং তার সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর এই চীন সফরকে ঘিরে কূটনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানামুখী আলাপ আলোচনা। ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই ১৪ দল এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের চীন সফরের ব্যাপারে দৃষ্টি রাখছেন। তবে তারা এই বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হচ্ছেন না। বিষয়টি তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় হিসেবেই মনে করছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বিএনপির আশা ভরসার কেন্দ্রস্থল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারণ সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবে না- এমন বক্তব্যগুলো বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে বহুল প্রচারিত ছিল। বিএনপির সব নেতারা প্রকাশ্যেই এ কথা বলত।