নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৩ অগাস্ট, ২০১৮
বাংলায় একটি বাগধারা আছে, আমও গেল, ছালাও গেল। এর অর্থ হলো, কোনো কাজে লাভ না হয়ে বরং পুরোপুরি ক্ষতি। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ দাবি করা রাজনৈতিক দল বিএনপির এখন এই আমও গেল, ছালাও গেল অবস্থা। আর এমন অবস্থার কারণ জোট নিয়ে সৃষ্ট জট।
অতিসম্প্রতি বিকল্প ধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট এবং যুক্তফ্রন্টের আহ্বায়ক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঙ্গ নিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মির্জা ফখরুলের সঙ্গে বিএনপির সাবেক নেতা বি. চৌধুরীর সঙ্গদোষেই যত গণ্ডগোলের শুরু। শুধু বি. চৌধুরীই নয়, গণফোরামের ড. কামালের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বিএনপি মহাসচিবের। আর এসব সম্পর্কের জেরেই বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে এখন ভজঘট অবস্থা।
গত কয়েকটি সিটি নির্বাচনেই জোটের শরিক এবং দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধু জামাতের সঙ্গে দূরত্ব দেখা গেছে বিএনপির। বিএনপির সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েনের এমন অবস্থায় জামাতই এখন আলাদা জোটের উদ্যোগ নিচ্ছে। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ইসলাম পছন্দ দলগুলোকে নিয়ে একটি প্লাটফরম করতে চাচ্ছে জামাত। একটি ইসলামী মোর্চা গড়ার লক্ষ্যে তারা এরই মধ্যে তোড়জোড় শুরু করেছে। বিভিন্ন ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে যে দ্বন্দ্ব ছিল সেগুলো কাটিয়ে ওঠায় জামাত কাজ করছে বলে জানা গেছে।
২০ দলের অন্যতম শরিক কর্নেল (অব.) অলির নেতৃত্বাধীন এলডিপি এবং আন্দ্বালিব রহমান পার্থ বিজেপি জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। কর্নেল (অব.) অলি ও পার্থ দুজনই আওয়ামী লীগের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ করছে বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র। জানা গেছে, বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না যায়, তাহলে এলডিপি ও বিজেপি জোট ভেঙ্গে বেরিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে।
২০ দলের এমন অবস্থা নিয়ে সংশয়ে আছে বিএনপি নেতৃত্ব। আবার মির্জা ফখরুল বি. চৌধুরীর যে যুক্তফ্রন্টে বিএনপিকে নেওয়ার চেষ্টা করছিল সেই জোটেও চলছে দুরবস্থা।
গত বছরের শেষে আকস্মিকভাবে যুক্তফ্রন্ট গঠন রাজনৈতিক অঙ্গনে সাড়া ফেলে। ওই সময় বি. চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত ওই আনকোড়া জোটে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল আ স ম আবদুর রবসহ অনেকেরই যুক্ত হওয়ার কথা ছিল। এই অনেকের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। কিন্তু আজ সোমবার ড. কামাল দৃঢ়কণ্ঠে বলেছেন, তাঁর গণফোরাম কখনোই যুক্তফ্রন্টে যাবে না। কারও নেতৃত্বে তিনি থাকবেন না। কামাল হোসেন অবশ্য অনেক দিন ধরেই বলে আসছেন যুক্তফ্রন্টে তিনি নেই। আর আজকের ঘোষণার মধ্যে দিয়ে তিনি অবস্থান নিশ্চিত করলেন। কিন্তু এদিকে বি. চৌধুরী এবং যুক্তফ্রন্টের আরেক নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাও বিরক্ত হয়েছেন কামাল হোসেন গোঁয়ার্তুমিতে। যুক্তফ্রন্টের যুক্ত থাকা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠেছে।
২০ দলের অরাজকতা, যুক্তফ্রন্ট নিয়ে দেন দরবার আর জামাতের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে বিএনপিতে এখন জোট জটে আক্রান্ত। জট কাটিয়ে মুক্তির পথ আপাতত দেখছেন না বিএনপি নেতৃত্ব। আবার সম্প্রতি লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া নির্দেশ পাঠিয়েছেন দলের মহাসচিবকে। লন্ডনের নির্দেশে ২০ দল ঠিক রেখেই আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এখানেও দেখা গেছে বাধা। বিএনপির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে তাদের ওপর আর বিশ্বাস রাখতে পারছেন না ২০ দলের শরিকরা। ঈদের পর আন্দোলনের আরেকটি ঘোষণার আগেই জোট জটে হোঁচট খেয়ে নাজেহাল বিএনপি। এখন বিএনপি কীভাবে চোট কাটিয়ে জোট টিকিয়ে রাখে সেটাই দেখার বিষয়।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন।
শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপিকে উপহাস করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণঅভ্যুত্থান থেকে তারা লিটলেট বিতরণ কর্মসূচিতে নেমে এসেছে। এবার বুঝুন তাদের অবস্থা।
তিনি বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতার কারণেই আজ দেশের এত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি হয়েছে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর কাছে আবেদন করে বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন, কিন্তু বিএনপি এবং মির্জা ফখরুল বাকশালকে গালিতে পরিণত করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমও লিখছে ভারত বিরোধিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখবে বিএনপি। ভারত প্রশ্নে এখন মধ্যপন্থা নিতে চায় বিএনপি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতন্ত্রের কোনো ঘাটতি নেই, সংসদ এবং সংসদের বাইরেও সরকারের বিরোধিতা জারি আছে। সরকার কোনো দল বা গোষ্ঠীর ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে না। গণতন্ত্রের বিচারে বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন। শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।