নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০১ পিএম, ২৩ অগাস্ট, ২০১৮
ঈদুল আজহার দিনে গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার ফোনালাপ হয়েছে। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ৮ টার দিকে তারেক জিয়াকে ফোন করেন ড. কামাল। ড. কামালের লন্ডন প্রবাসী জামাতা ডেভিড বার্গম্যানের মাধ্যমে তারেক জিয়ার সঙ্গে তাঁর ফোনালাপ হয়।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ফোনালাপে ড. কামাল সাম্প্রতিক ঐক্য প্রক্রিয়ার বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন তারেক জিয়াকে। এই প্রক্রিয়ায় তাঁকে এবং তাঁর দল বিএনপিকে থাকার অনুরোধ করেন ড. কামাল। ‘একসঙ্গে আন্দোলন একসঙ্গে নির্বাচন’ – এমন একটি ফর্মুলা তারেক জিয়াকে উপস্থাপন করেন ড. কামাল। একসঙ্গে আন্দোলনে সায় দিয়েছেন তারেক জিয়া।
ফোনালাপে ড. কামালকে তারেক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে আন্দোলনে রাজি আছি।’ তবে এক্ষেত্রে তিনটি শর্ত দিয়েছেন তারেক জিয়া। ড. কামালকে দেওয়া তারেক জিয়ার তিন শর্তের প্রথমটি হলো, বিএনপির দাবি নির্বাচনে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের বিষয়টি আন্দোলনে রাখতে হবে। দ্বিতীয় শর্তটি হলো, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করতে হবে। আর তৃতীয় ও শেষ শর্তটি হলো, বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও তাঁদের ওপর সরকারের দেওয়া হয়রানি মূলক মামলা তুলে নেওয়ার আন্দোলন করতে হবে।
তারেক জিয়ার শর্ত শুনে ড. কামাল বলেছেন, তাঁরা শুধু নির্বাচনের জন্যই আন্দোলন করতে চান। শুধু অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতেই আন্দোলন করবে ঐক্য শক্তি। নির্বাচনে যেন দল-নিরপেক্ষ একটি সরকার হয় সেটিই তাঁদের দাবি। তারেককে ড. কামাল বলেন, অন্য বিষয়গুলো নিয়ে তাঁরা আপাতত এগুতে চান না।
ড. কামালের কথার পর তারেক জিয়া বলেন, নির্বাচনের জন্য দাবি-দাওয়ার চেয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিটিই এখন বিএনপির প্রধান ইস্যু। এছাড়া তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলোও একটি বড় ইস্যু। শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনে গেলে এর ফলাফল কী হবে তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করার সময় চান তারেক।
ফোনালাপের এ পর্যায়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা যদি একসঙ্গে আন্দোলন করি এবং একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার আনি, তাহলে সব দাবিই অর্জিত হবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন হলে সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে বাধ্য হবে। ড. কামালের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক ভাবে তারেক কোনো সিদ্ধান্ত না দিয়ে এজন্য কিছু সময় চেয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁর তিন দফা প্রস্তাবও ভেবে দেখতে ড. কামালকে অনুরোধ করেছেন তারেক।
তবে তারেক জিয়ার এমন অনুরোধ তাৎক্ষণিক ভাবেই নাকচ করে দিয়েছেন ড. কামাল। ফোনালাপে তারেক জিয়াকে তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি, বিএনপি নেতাদের মুক্তির দাবি ও তাঁর (তারেক জিয়া) দেশে ফেরার বিষয়গুলো ঐক্য আন্দোলনে অন্তর্ভুক্ত করা হলে জনগণ বিভ্রান্ত হবে। আর তা ঐক্য কোনো আন্দোলন নয় বরং বিএনপির আন্দোলন হিসেবেই পরিগণিত হবে। একবার ঐক্য আন্দোলন বিএনপির আন্দোলন হিসেবে পরিচিত পেলে সেখানে জনসমর্থন পাওয়া যাবে না।
ফোনালাপের এই পর্যায়ে তারেক জিয়া ড. কামালকে বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ঐক্য আন্দোলনে বিএনপি যাবে কিনা এবং যৌথ বা যুগপৎ আন্দোলন হবে কিনা- এ ব্যাপারে পরবর্তীতে জানানো হবে।
ফোনালাপে ড. কামালকে তারেক জিয়া আরও বলেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে জামাত ও অন্যান্য দলও আছে। তাই সম্ভব হলে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে বিএনপি সংহতি জানাবে। আর সেটিই হবে আন্দোলনের ফর্মুলা। তবে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হয়নি। অবশ্য নির্ভরযোগ্য সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ড. কামালের সঙ্গে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আরও আলোচনা হবে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।