নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০১ পিএম, ২৫ অগাস্ট, ২০১৮
আপাত দৃষ্টিতে তারা সরকারের ঘোরতর সমালোচক। সরকারের বিরুদ্ধে কথার ফুলঝুরি সাজান প্রতিদিন। সরকারকে উঠতে বসতে গালাগালিও করেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে সরকারের সঙ্গে তাঁদের গোপন যোগাযোগ। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় তাঁরা কট্টর সমালোচক। তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে, কিন্তু তাঁরা গ্রেপ্তার হন না। এরকম কয়েকজন নেতার ভূমিকা নিয়ে বিএনপির মধ্যেই এখন চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। তাঁদের বিএনপিতেই বলা হচ্ছে সরকারের এজেন্ট।
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদের একটি অডিও টেপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। বিএনপি নেতা যে ছাত্রদল নেতাকে টেলিফোনে ঢাকায় এসে রাস্তায় নামার পরামর্শ দিয়েছিলেন, তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিন্তু নির্দেশদাতা আমীর খসরুকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি। মামলা হবার পর কদিন আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। এরপর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে সব তথ্য থাকার পরও তাঁরা খসরুর ব্যাপারে নমনীয়। আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী বলেছেন, ‘বিএনপিতে যে দুই একজনের সঙ্গে কথা বলা যায়, তাঁদের মধ্যে খসরু একজন।’ বিএনপির অনেক মনে করেন, ‘আমীর খসরুর সঙ্গে সরকারের গোপন আঁতাত আছে।’ সরকার আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে যেভাবে চাইবে খসরু সেভাবেই কাজ করবে বলেই আশঙ্কা বিএনপির একাংশের। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, চট্টগ্রামের রাজনীতিতে বিএনপির বিভক্তির জন্য খসরুকে আওয়ামী লীগের প্রয়োজন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। প্রতিদিনই গণমাধ্যমের সামনে সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। কিন্তু বিএনপির এই নেতার সঙ্গেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যোগাযোগের খবর পাওয়া গেছে। গত ২৪ আগস্ট শুক্রবার সকালে রিজভী বনানীতে হাতে গোনা কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে ঝটিকা মিছিলে বের হন। এই মিছিলের আগে তিনি কয়েকজন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের সবুজ সংকেত নিয়েই রিজভী মিছিলে বের হন। গত ফেব্রুয়ারি থেকে রিজভীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। তিনি অফিসেই স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। এটি দেখিয়ে কর্মী ও নেতাদের কাছে আলাদা আকর্ষণ আদায়ের চেষ্টা করছেন। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, তাঁর সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ রয়েছে। একাধিক উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। তাঁদের অনুমতি নিয়েই তিনি এ অবধি ৬ টি ঝটিকা মিছিল করেছেন। বিএনপির একজন নেতার ভাষ্য হলো, ‘বিএনপি কার্যালয়ে তো সারা দিনরাত পুলিশ প্রহরায় থাকে। সেখান থেকে রিজভী বের হন, মিছিল করেন আবার দলের কার্যালয়ে ফিরে আসেন। সরকারের সঙ্গে আঁতাত ছাড়া এটা কীভাবে সম্ভব?’ বিএনপির অনেক শীর্ষ নেতার ধারণা, ‘রিজভীকে সরকার ব্যবহার করে। রিজভীকে দিয়ে সরকার প্রমাণ করতে চায় যে বিরোধী দলের প্রতিবাদ করার পর্যাপ্ত সুযোগ বিদ্যমান আছে।’ বিএনপির অন্য একজন নেতা বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত যদি সরকার বিএনপিকে বা বিএনপির একটি বড় অংশকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে চায়, তাহলে রিজভী হবে সরকারের ট্রাম্প কার্ড। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন নয় কিংবা খালেদার মুক্তি ছাড়া নির্বাচন নয়, এমন কথা বলে রিজভীকে সহজেই বিএনপির একটি অংশকে আলাদা করতে পারবেন।’
বিএনপির আরেক ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। ৭ মামলায় একদিনে জামিন পেয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন। অন্য বিএনপি নেতারা বিদেশে যেতে চাইলে ইমিগ্রেশনের বাধায় পড়েন। কিন্তু মিন্টুর ঢাকা-ব্যাংকক ট্যুর চলে বিরামহীন। ব্যাংকক তাঁর ট্রানজিট। এখান থেকে কখনো যান লন্ডন, কখনো দিল্লি। সরকার সবই জানে। কিন্তু তাঁকে ছাড় দেয়। বিএনপিতে মিন্টুর ভূমিকা নিয়ে এখন আলোচনা হয় প্রকাশ্যেই, কোনো রাখঢাক ছাড়া। তাতে কি, আবদুল আউয়াল মিন্টু এখনো ক্ষমতাধর বিএনপিতে। সরকার তাঁকে বিএনপির ইনফরমার হিসেবে ব্যবহার করে বলেও গুঞ্জন আছে।
একাধিক সূত্র বলছে, সরকার যে বিএনপিকে নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়, তাঁর প্রধান কারণ এসব নেতারা। শুধু এই তিনজন নন, এরকম বেশকিছু নেতা আছেন বিএনপিতে যারা সরকারের ইশারায় চলেন। এরাই আগামী নির্বাচনে বিএনপির জন্য হুমকি, এমন কথা আলোচিত হচ্ছে বিএনপিতেই।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।