নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তির উত্থান ঠেকাতে আওয়ামী লীগ বিএনপিকে ছাড় দেওয়ার কৌশল নিয়েছে। বিএনপিকে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে দেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সরকারের মূল লক্ষ্য হলো, বিএনপিকে নির্বাচনমুখী করা এবং তৃতীয় শক্তি থেকে দূরে রাখা। আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে এই ধারণা পাওয়া গেছে।
এবার বিএনপি বাধাহীন ভাবেই তাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে পেরেছে। সকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। বিকেলে বিএনপি জনসভা করেছে। এর আগের বছরই বিএনপিকে জিয়াউর রহমানের কবরে কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হয়নি। বেগম জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হবার পর বিএনপি অন্তত: ৮ বার জনসভার অনুমতি চেয়েও পায়নি।
এবার বিএনপিকে কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমরা যেকোনো রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচিকে স্বাগত জানাই। শান্তিপূর্ণ কোন কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ সরকার কখনো বাঁধা দেয়নি। কিন্তু রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে জনগণের শান্তি-শৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটালে এটি দমন করা সরকারের দায়িত্ব।’
তবে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা বলছেন, তৃতীয় শক্তিকে ম্লান করতেই বিএনপিকে মাঠে নামতে দেওয়া হচ্ছে। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ বিএনপি নয় বরং তৃতীয় শক্তির ব্যাপারে কিছুটা চিন্তিত। কারণ, এদের পিছনে শক্তিশালী আন্তর্জাতিক মদদ ও পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে। বিএনপিকে কোনো কর্মসূচি পালন করতে না দেয়া হলে, বিএনপি হয়তো বি. চৌধুরী এবং ড. কামাল হোসেনের দিকেই ঝুঁকবে। আওয়ামী লীগ, অধ্যাপক চৌধুরীদের সাথে বিএনপির ঐক্য চায় না। বরং, বিএনপি রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে নির্বাচনমুখী হোক এটা চায়। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে পারলে বিএনপিও তৃতীয় শক্তির দিকে ঝুঁকবে না। বরং বিএনপির কর্মসূচি তৃতীয় শক্তির অবস্থানকে দুর্বল করে দেবে। এ রকম একটি চিন্তা থেকেই বিএনপির ব্যাপারে সরকার শিথিল অবস্থান গ্রহণ করেছে। এই প্রক্রিয়া আরও বিস্তৃত হবে বলেই আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেছেন। এমনকি কেউ কেউ বলছে, বেগম জিয়াও হয়তো কারাগার থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তবে বিএনপিকে ছাড় দেওয়ার সঙ্গে, দলটির নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রশ্নটি জড়িত। বিএনপি যদি রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে নির্বাচনে যেতে রাজি হয়, তাহলে সরকার বিএনপিকে আরও ছাড় দেবে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিএনপির সঙ্গে আলোচনার কোনো সম্ভাবনা নেই। কিন্তু একাধিক সূত্র বলছে, সরকার বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছে। বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে আসার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিএনপি দলগত ভাবে কিছু করতে পারবে না। তবে আদালত যদি বেগম জিয়া ও তারেক জিয়াকে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করে, সেক্ষেত্রে তাদের কিছু করার নেই। অন্যদিকে বিএনপিও ড. কামাল-অধ্যাপক চৌধুরীর অধীনে যেতে রাজি নয়। এজন্য নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে তারা সরকারের সাহায্য নিচ্ছে। আজ বিএনপির জনসভা তারই একটি দৃষ্টান্ত। তৃতীয় শক্তির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সব সময়ই এক হয়।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।