নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:২১ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একসময় জাসদ নেতা আ স ম আব্দুর রব ছাত্রলীগ করতে এসেছিলেন। অনেকেই তাঁর মতো আওয়ামী লীগে যুক্ত হয়েছে। আবার চলে গেছে। সুবিধা নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে মন্ত্রব্য করেন ‘অসময়ে নীরব, সুসময়ে সরব, আ.স.ম আব্দুর রব’।
আজ রোববার বিকেলে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। সম্প্রতি নেপালে অনুষ্ঠিত সাত দেশের জোট ‘বিমসটেক’ চতুর্থ শীর্ষ সম্মেলন বিষয়ে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। বিকেল সোয়া ৪ টার দিকে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্য শুরু করেন।
মাহমুদুর রহমান মান্নার জোটে যাওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মাহমুদুর রহমান মান্না এক সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। এর আগে তিনি সব সময় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লেখালেখি করেছেন। আমাদের বিরুদ্ধে লিখেই তিনি অভ্যস্ত। এবার তাঁকে বললাম আপনার লেখার হাত অনেকে ভালো, আপনিতো সবসময় আমাদের বিরুদ্ধে লিখেন। এবার একটু আমাদের পক্ষে লেখেন। একথা শুনেই মান্না জুড়ে দেয় কান্না।
বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘হেনরি কিসিঞ্জার মন্তব্য করেছিলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হলে একটি তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হবে। সে বাংলাদেশ এখন দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। অনেক দেশ আমাদের কাছে এমন উন্নয়নের কারণ কি, ম্যাজিক কি, জানতে চান। আমি বলি ম্যাজিক একটাই দেশের মানুষকে ভালবাসতে হবে এবং দেশের উন্নয়েন কাজ করতে হবে। এটাই আমাদের ম্যাজিক।’
ইভিএম নিয়ে বিরোধীতা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ব্যালটে ভোট হলে কারচুপির সুযোগ পায় তারা। নানা কারচুপির পদ্ধতি তাদের জানা। সেখানে ইভিএম হলে তো তাঁরা কারচুপি করতে পারবে না। তাই ইভিএমন বিরোধীতা। তবে এটিই শেষ কথা নয়। সমস্যা হলে এর সমাধানও হবে।
মিডিয়ায় বিএনপিকে হাইলাইট দেওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বেসরকারি টেলিভিশনের লাইসেন্স আমি প্রদান করেছি, তারপরেও আমি থাকি তিন নম্বর স্থানে। কিন্তু বিএনপি বিরোধীদলেও নাই, সরকারেও নাই, তাঁরা কোনো স্থানে না থাকার পরেও তারাই এক নম্বর স্থানে থাকে। তারাই মিডিয়ার কাছে অগ্রাধিকার পায়। মিডিয়ার কাছে বিএনপি’ই ফেবারিট।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের আদালতে হাজির না হওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনকে আদালতে ১৫৪ বার আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তিনি হাজির হননি। অন্য কেউ যদি এত বার আদালতকে অগ্রাগ্য করতো তাহলে আপনারা (মিডিয়া) কী লিখতেন। কিন্তু কিছু লোকের দোষ দেখা হয় না। আর আমাদের পান থেকে চুন খসলেই হাউমাউ শুরু হয়।’
সংবাদ সম্মেলনের একটি পর্যায়ে প্রখ্যাত সাংবাদিক নাইমুল ইসলাম খান প্রধানমন্ত্রীকে নিজের পরিচয় দেওয়ার সময় বলেন, ‘আমি আমাদের নতুন সময়ের সম্পাদক নাইমুল ইসলাম খান।’ পত্রিকাটি নতুন বলেও উল্লেখ করেন নাইমুল ইসলাম খান। এসময় অডিটোরিয়ামে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। নাইমুল ইসলাম খান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি বিএনপি আন্দোলন করে না কেন প্রশ্ন করেছেন। কিন্তু আপনার সমর্থন ছাড়া তো বিএনপি আন্দোলন করতে পারবে না।
মিয়ানমারের ভুয়া ছবি ব্যবহার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মিয়ানমার মুক্তি যুদ্ধের ছবি ব্যবহার করে জঘন্য কাজ করেছে। তবে বাংলাদেশেও এই ঘটনা বহুবার ঘটেছে। আপনারা দেখেছেন, মক্কা শরীফের মানববন্ধন করার ছবি তৈরি করে বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার করা হয়েছে। ২০১৩, ১০১৪, ২০১৫ সালে দেখেছেন, বিভিন্ন ছবি বানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিএনপি-জামাত এগুলো করেছে। মিয়ানমারও এমন কাজ করেছে। এটা অত্যন্ত জঘন্য কাজ। মিয়ানমার কি তাহলে জামাত-বিএনপির কাছ থেকে এগুলো শিখেছে?
রোহিঙ্গা পুনর্বাসন প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএমসটেক সম্মেলনের সময় মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের উইন মিন্তের সঙ্গে তাঁর অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। মিয়ানমার প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের সঙ্গে যে সমঝোতা চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে সে অনুযায়ী কাজ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাঁদের কাছে মিয়ানমারে ফিরে যেতে ইচ্ছুক এমন ৩০০০ জনের তালিকা আছে। এদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।
গত বৃহস্পতিবার বিমসটেক চতুর্থ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে নেপাল যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঐদিন সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তিনি। সম্মেলন চলাকালে শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি এবং ভূটানের প্রধান উপদেষ্টা দাশো সেরিং ওয়াংচুক এর সঙ্গে বৈঠক করেন। শুক্রবার তিনি দেশে ফিরে আসেন।
প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফর থেকে ফিরে এসে সে বিষয়ে দেশবাসীকে অবহিত করার জন্য সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। এই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রীর আজকের এই সংবাদ সম্মেলন।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সিরাজগঞ্জে গণমাধ্যম কর্মীদেরকে নিয়ে ভাষায় লিঙ্গীয় বৈষম্য নারী পক্ষ নামে একটি সংগঠন সিরাজগঞ্জ ও পাবনার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রবিবার (১৯ মে') দুপুরে শহরের এস. এস রোডস্থ নর্থ টাউন রেস্তোরাঁয় প্রোগ্রাম ফর উইম্যান ডেভোলপমেন্ট (পি ডাব্লিউডি) সার্বিক সহযোগিতা ও নারীপক্ষ আয়োজনে ভাষায় লিঙ্গীয় বৈষম্য দিনব্যাপী মতবিনিময় সভার শুভ উদ্বোধন করেন নারীপক্ষ চেয়ার পারসন গীতা দাস।
মতবিনময় সভায় নারীপক্ষ চেয়ারপার্সন গীতা দাস বলেন, মানুষ কোনো ভালো কর্ম করলে তাকে বিশেষায়িত করা যায়। কিন্তু নারীরা নির্যাতিত হলেও তাদেরকে বিশেষায়িত করা হয়। যেমন ধর্ষণের শিকার হলে তাকে ধর্ষিতা, নির্যাতনের শিকার হলে নির্যাতিতা বলা হয়। অথচ ধর্ষণের শিকার, নির্যাতনের শিকার লিখলেও হয়।’ একজন নারীকে মানুষ হিসেবে দেখলে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন কামরুন নাহার, ফেরদৌসী আখতার, পিডাব্লিউডি নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা জলি।
এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি চ্যানেল টুয়েন্টিফর সিনিয়র রিপোর্টার সাংবাদিক হীরুকগুণ, এনটিভি জেলা প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম ইন্না, দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি সুজন সরকার, বৈশাখী টেলিভিশন সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি সুজিত সরকার, দীপ্ত টিভির সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি শিশির, দীপ্ত টিভি পাবনা জেলা প্রতিনিধি শামসুল আলম সহ অনেকে।
মন্তব্য করুন
পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামালের বিরুদ্ধে জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে প্রচারণার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের শিবপুর বাজার এলাকা থেকে জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করেন চেয়ারম্যার প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামাল।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপে আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যার প্রার্থী তানভীর ইসলাম বলেন, সাইফুল ইসলাম কামালের গুন্ডা সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত আমার কর্মী, সমর্থক, ভোটারদের ভয়ভীতি, হুমকী, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে ভোট দিতে নিরুৎসাহিত করছে। ফলে নির্বাচন কমিশনের ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আচরণবিধি সাইফুল ইসলাম কামাল বারবার লঙ্ঘন করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামাল বলেন, ‘ঘোড়া নিয়ে প্রচার প্রচারণা করিনি। তবে আমি ঘেড়ার গাড়ি নিয়ে প্রচার প্রচারণা করেছি। এটাও যদি বিধি নিষেধ থাকে তাহলে এটাও পরিহার করবো।’
পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট ও রিটার্নিং অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় চেয়ারম্যান প্রার্থী এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি আমরা। তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন