নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
দলীয় কোন্দল অন্তঃকলহ দূর করতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে আওয়ামী লীগ। সম্প্রতি তিনজন এমপির বিরুদ্ধে দলের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব টিমের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে যে, যেসব এলাকায় অন্তঃকলহ হচ্ছে তার প্রতিটির পেছনেই রয়েছেন দলের হেভিওয়েট ও গুরুত্বপূর্ণ নেতারা।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, স্থানীয় নেতাদের শাস্তিপ্রদান, সতর্ক করাসহ দল থেকে নেওয়া প্রদক্ষেপের পরও অনেক এলাকায় অন্তঃকলহ মিটছে না। কারণ এসব অন্তঃকলহের মূল হোতারা সবাই হেভিওয়েট নেতা। আর তাদের পৃষ্ঠপোষকতার কারণেই স্থানীয় আওয়ামী লীগে একাধিক গ্রুপ দেখা যায়।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সিলেট সিটি নির্বাচনে অপ্রত্যাশিত ভাবে অল্প ব্যবধানে পরাজিত হন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও এই পরাজয়ের মূল কারণ ছিল সিলেট সিটি আওয়ামী লীগের অন্তঃকলহ। এই পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজসহ অনেককেই শোকজ করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিলেট নগরে আওয়ামী লীগের কোন্দলের নাটের গুরু হলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তাঁর ভাইয়ের কারণেই বিভক্ত হয়ে পড়েছে সিলেট আওয়ামী লীগ।
বরিশাল অঞ্চলে আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর পরিবারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব হিরণ পরিবারের। বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য হাসনাত আব্দুল্লাহর অনুসারীদের কাছ থেকে নিজেদের রক্ষায়ই গ্রুপ করতে বাধ্য হয়েছেন সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য শওকত হোসেন হিরণের স্ত্রী ও তাঁর অনুসারীরা। বারবার পদক্ষেপ সত্ত্বেও বরিশালের সেই দ্বন্দ্ব মেটানো যাচ্ছে না।
জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও বর্তমানে শরীয়তপুর- ২ আসনের সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) শওকত আলীর সঙ্গে স্থানীয় বিরোধী জড়িয়ে পড়েছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম। তাদের বিরোধে বিভক্ত শরীয়তপুর।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব-উল-আলম হানিফের সঙ্গে তথ্যমন্ত্রী ও কুষ্টিয়া-২ আসনের সংসদ হাসানুল হক ইনুর বিরোধিতার বিষয়টি জাতীয় পর্যায়েও আলোচিত। আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগ সরকারের শরিক দুই নেতা কুষ্টিয়ায় একে অপরকে হারানোর ব্রত নিয়েই যেন মাঠে নেমেছেন। দুই হেভিওয়েট নেতার বিরোধে কুষ্টিয়া আওয়ামী লীগ কোন্দলে জর্জরিত।
রংপুর-৪ আসনের এমপি টিপু মুনশি এবং রংপুর-৫ আসনের এমপি এইচ. এন আশিকুর রহমানের রহমানের বিরোধ। আর তাঁদের বিরোধী কোন্দলে বিপর্যস্ত রংপুর আওয়ামী লীগ।
নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান সারাদেশে শ্রমিকদের সংগঠিত করে বেড়ান। অথচ মাদারীপুর-২ আসনের এমপি শাহজাহান খানের সঙ্গে মাদারীপুর-৩ আসনের এমপি আ. ফ. ম বাহাউদ্দিন নাছিমের বিরোধ প্রকাশ্য। আর তাঁদের বিরোধের জেরে মাদারীপুর আওয়ামী লীগ কোন্দলে জর্জরিত।
ফরিদপুর আওয়ামী লীগের কোন্দলের নেপথ্যে আছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ ও ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন।
চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম সিটির সাবেক মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী সঙ্গে বিরোধ ছিল সাবেক প্রাথমিক ও গণ-শিক্ষামন্ত্রী ও চট্টগ্রাম-১০ আসনের সাংসদ আফছারুল আমীনের। চট্টগ্রাম এমনিতেই ছিল বিভক্ত। এখন নতুন করে আরও বিভক্ত হয়েছে মহিউদ্দিনের ছেলে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের বিরোধে।
কুমিল্লা আওয়ামী লীগ বিভক্ত করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল (কুমিল্লা-১০) এবং কুমিল্লা-৬ এর সাংসদ আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহারের বিরোধ। দুজনের বিরোধে কুমিল্লা আওয়ামী লীগেও অন্তঃকলহ প্রবল।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতারা আছেন কোন্দলের কেন্দ্রে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের অন্তঃকলহ যাদের মেটানোর কথা তাঁরাই অন্তকলহের মদদ দিচ্ছেন। তাঁদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে বিভক্ত হয়ে পড়ছে স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ। এমনকি স্থানীয় আওয়ামী লীগও বিভক্ত হয়ে পড়ছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে আসা প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, স্থানীয় পর্যায়ের কোন্দলের জন্য সিনিয়র নেতারাই প্রধান আসামি। তারাই নাটের গুরু।
উল্লেখ্য, ৮০-৯০ এর দশকে আওয়ামী লীগ আমু পন্থী, তোফায়েল পন্থী, রাজ্জাক পন্থী নিয়ে বিভক্ত ছিল। শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের কারণেই ওই বিভক্তি দূর হয়। একই ভাবে বর্তমানে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অন্তঃকলহ দূর করতেও দৃঢ়প্রতিজ্ঞা আওয়ামী লীগ সভাপতি।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগদান শেষে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক থেকে দেশে ফিরে সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। স্থানীয় আওয়ামী লীগের কোন্দল, অন্তকলহের জন্য সিনিয়র নেতাদের তিনি সতর্ক করবেন। একই সঙ্গে কোন্দল মেটানোর জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমায় বেধে দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ২৯ মে অনুষ্ঠেয় তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ৫২ জন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী
তাদের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃতদের মধ্যে ১৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ২৬ জন ভাইস চেয়ারম্যান
প্রার্থী ও ৯ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। গতকাল বুধবার বিএনপির পাঠানো এক সংবাদ
বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিভাগভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, রংপুর বিভাগের ১২ জন, রাজশাহী বিভাগের চারজন, বরিশাল বিভাগের পাঁচজন, ঢাকা বিভাগের চারজন, ময়মনসিংহ বিভাগের ৯ জন, সিলেট বিভাগের সাতজন, চট্টগ্রাম বিভাগের একজন, কুমিল্লা বিভাগের ছয়জন ও খুলনা বিভাগের চারজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
ডোনাল্ড লু বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চীন সফর ভারত যুক্তরাষ্ট্র
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পর্যন্ত আওয়ামী লীগ দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী, দলের ভেতর সুবিধাবাদী, লুটেরা এবং দলের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না। কিন্তু ২৩ জুনের পর আওয়ামী লীগের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ক্র্যাকডাউন হবে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী এবং দলের সুনাম নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করবে। আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আওয়ামী লীগ এবং তার আদর্শিক জোট ১৪ দলের নেতাদের চীন সফরে হিড়িক পড়েছে। আওয়ামী লীগ এবং তার সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর এই চীন সফরকে ঘিরে কূটনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানামুখী আলাপ আলোচনা। ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই ১৪ দল এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের চীন সফরের ব্যাপারে দৃষ্টি রাখছেন। তবে তারা এই বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হচ্ছেন না। বিষয়টি তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় হিসেবেই মনে করছেন।