নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
বর্তমান বিশ্বে অন্যতম পরাশক্তি হিসেবেই নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে চীন। ভুটান, নেপাল, মায়ানমারসহ সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যেও চীনের প্রভাব আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। পূর্বে চীনের মনোযোগ ছিল শুধু অর্থনৈতিক আধিপত্যের দিকে। অর্থনৈতিকভাবে দেশের নির্ভরতা বাড়ানোই ছিল চীনের একমাত্র লক্ষ্য। তবে গত তিন চার বছরে চীন তাদের ওই অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসেছে। বর্তমানে কোনো দেশের রাজনৈতিক বিষয়েও প্রভাব রাখে চীন। কারণ কোনো দেশের সরকারের পছন্দের বা সহমনা দল না থাকলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ও বাণিজ্য বিস্তারে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয় বলে দেশটির উপলব্ধি। আর এমন অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতেই বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন, সহায়ক সরকারসহ নানা বিষয়ে চীনকে প্রভাব রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। তবে এখনো চীনের পক্ষ থেকে সাড়া পায়নি বিএনপি।
২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগ নেয়। শুধু চীনই নয় জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গেও সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্য নেয় বিএনপি। এমন সম্পর্ক উন্নয়নের জন্যই মোর্শেদ খানের মতো ব্যবসায়িক ব্যক্তিত্বকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বানানো হয়, কারণ ব্যবসার সুবাদে এসব অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো ছিল তাঁর। এছাড়া তৎকালীন বিএনপিতে অনেক নেতা ছিলেন যারা চীনপন্থী কমিউনিস্ট বলেই পরিচিত। এদের মধ্যে তরিকুল ইসলাম, মান্নান ভুঁইয়া, সাদেক হোসেন খোকা ছিলেন অন্যতম। সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগে তারাও বেশ প্রভাব ফেলেন। চীনের সঙ্গে নৈকট্য হয় বিএনপির।
বর্তমান সময়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিএনপি আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছে না। আর তাই এখন তাদের লক্ষ্য চীন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে চীনকে প্রভাব রাখার জন্যে উদ্যোগী হয়ে উঠেছে বিএনপি। এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বিএনপির দীর্ঘদিনের মিত্র বলে পরিচিত পাকিস্তানের মাধ্যমে।
ঐতিহাসিকভাবে পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক এখনো বেশ ভালো। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষে ছিল চীন। তবে অবস্থার এখন অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো হলেও দেশটির প্ররোচনা চীনের বাংলাদেশ নীতিতে কতটা প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, বর্তমানে চীন-বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী ৩৭ বছরে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের যতটা বাণিজ্য ছিল, গত ১০ বছরে সেটি কয়েকগুণ বেড়েছে। পদ্মা সেতুতে কাজ করছে চীন। বাংলাদেশে নির্মিয়মান অনেক বিদ্যুৎ প্রকল্পেও সংশ্লিষ্টতা আছে দেশটির। বাংলাদেশকে সামরিক সহায়তার অংশ হিসেবে সাবমেরিনও দিয়েছে চীন। বর্তমানে চীন-বাংলাদেশ বাণিজ্য সম্পর্ক স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভালো। তাই ভুটান বা নেপালের রাজনীতিতে যতটা প্রভাব রাখছে, বাংলাদেশের তেমন প্রভাব বিস্তারে এখনো তেমন কোনো আগ্রহ নেই চীনের।
গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি করেছে, তা হলো সম্পর্কে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা। ভারতের সঙ্গে যেমন অনেক ব্যাপারে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক আছে, তেমনি সুসম্পর্ক আছে চীনের সঙ্গেও। চীনা সাবমেরিন নিয়ে ভারতের সঙ্গে সাময়িক ভুলবোঝাবুঝি হলেও তা দ্রুত সমাধান হয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে এসেছিলেন। সরকারের সঙ্গে অনেক সমঝোতা স্মারক হয়েছে চীনের। আর চীনের সঙ্গে সরকার এমন সুসম্পর্ক বহাল রাখতেও কাজ করে যাচ্ছে।
এছাড়া বাংলাদেশের সাবেক একজন মন্ত্রী, যিনি এখন মন্ত্রী নেই কিন্তু আওয়ামী লীগে প্রভাবশালী, তাঁর সঙ্গে চীনের নিয়ন্ত্রক কমিউনিস্ট পার্টির ভালো যোগাযোগ আছে। একই রকম ভালো যোগাযোগ আছে বর্তমান সরকারের উল্লেখযোগ্য কয়েকজনের। এরা চীনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সুসম্পর্ক বজায় রাখছে। এছাড়া সম্প্রতি চীন সফরে গিয়েছিল আওয়ামী লীগ নেতাদের একটি প্রতিনিধি দল। দেশটির নীতি নির্ধারকদের বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের উপর আস্থার বিষয়টিই জানতে পেরেছেন তারা। চীন বাংলাদেশের সঙ্গে যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক তা অব্যাহত রাখতে এবং এই সম্পর্ক আরও বাড়ানোর পক্ষে।
অবশ্য, পরিবর্তিত চীনা নীতি ‘এক ঝুড়িতে সব ডিম না রাখার’ পক্ষে। সম্প্রতি বাংলাদেশের নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদের দুটি বৈঠক হয়েছে। দুটি বৈঠকেই চীন কয়েকটি বিষয়ে তাদের আগ্রহের বিষয়ও জানিয়েছে। চীনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে তাদের বিপুল বিনিয়োগের কথা উল্লেখ্য করে বলা হয়েছে পরবর্তীতে এসব ব্যাপারে বিএনপি কি সিদ্ধান্ত নিবে তা জানতে চায় তারা।
তবে, কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগের পরিবর্তিত রূপ নিয়েও চীন আশাবাদী। সরকার এখন দেশের উন্নয়নকেই সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে। অবকাঠামোসহ এসব উন্নয়নে চীন ভালো ভূমিকা রাখতে পারবে বলেই মনে করে। একই সঙ্গে তারা বর্তমান ব্যবসায়িক সুবিধা অব্যাহত থাকবে বলেও আশা রাখে।
অবশ্য, ভারতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থ বিএনপির এখন চীনে একটি উচ্চক্ষমতা-সম্পন্ন টিম পাঠাচ্ছে বলে জানা গেছে। আগামী নির্বাচনে চীন যেন কোনো ভূমিকা রাখে এমনটাই প্রত্যাশা তাদের। তবে এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের নির্বাচনে কোনো পক্ষপাত না বরং নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার ব্যাপারেই নীতিগত অবস্থান চীনের।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
ডোনাল্ড লু বিএনপি আওয়ামী লীগ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সুশীল সমাজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
এনবিআর কাস্টমস জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করলে বিএনপিকে আবারও পালাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার দরকার নেই। সরকারেরও দরকার নেই। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির নেতাকর্মীরা বক্তব্য দিয়েছে, আওয়ামী লীগ পালানোর পথ পাবে না। সেদিনও দেখলাম পল্টন ময়দান থেকে একে একে দৌড়াতে দৌড়াতে অলিগলি কোথায় দিয়ে যে পালিয়েছে, কেউ চিন্তাও করেনি।
সোমবার (১৩ মে) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডির আওয়ামী লীগের সভাপতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা হবে। যদি তারা আবারও জ্বালাও-পোড়াও করে। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করলে বিএনপিকে আবারও পালাতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাসে পালিয়ে যাওয়ার কোনো রেকর্ড নেই। ২০০৭ সালে আর রাজনীতি করব না এই মুচলেকা দিয়ে বিদেশে পালিয়ে গেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাদের মূল নেতা পালিয়ে আছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২৮ অক্টোবরও বক্তব্য দিয়েছিল আওয়ামী লীগ পালানোর পথ পাবে না। শেষ পর্যন্ত দেখলাম দৌড়াতে দৌড়াতে তারা পালিয়েছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশে এসে কেউ আবারও বিএনপিকে মদত দেবে সে পরিস্থিতি এখন বিশ্বে নেই। যারা দাপট দেখাতো তাদের ক্ষমতা মধ্যপ্রাচ্যেই সংকুচিত হয়ে গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথাই ইসরায়েল শুনে না।
এসময় ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক গোলাপ, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের বিএনপি
মন্তব্য করুন
তৃতীয়
ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটে ১৩০ জন
প্রার্থী প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এছাড়া
এই ধাপে ৬ জন
প্রার্থী বিনা ভোটে নির্বাচিত
হয়েছেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন
কমিশন (ইসি)। প্রথম ধাপে
২৮ জন, দ্বিতীয় ধাপে
২১ জন প্রার্থী বিনা
প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
রোববার
(১২ মে) এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জনসংযোগ পরিচালক
মো. শরিফুল আলম।
তিনি
জানান, চেয়ারম্যান পদে ৭৩ জন,
ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৩ জন
ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে
১৪ প্রার্থী প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এছাড়া
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ছয় প্রার্থী। এদের
মধ্যে ভাণ্ডারিয়ার সব পদ, গোসাইরহাটে
ভাইস চেয়ারম্যান ও সোনাগাজী এবং
দাগনভুঞা উপেজলায় মহিলা ভাইস পদের প্রার্থীরা
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
সোমবার
তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেবেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এই ধাপে চেয়ারম্যান
পদে ৫৭০ জন, ভাইস
চেয়ারম্যান পদে ৬১৮ ও
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে
৪০০ জন; মোট ১৫৮৮
জন প্রার্থীনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন।
তফসিল
অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ১৪৫টির মতো
উপজেলায় ৮ মে ভোট
হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায়
২১ মে, তৃতীয় ধাপে
১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও
চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায়
৫ জুন ভোটগ্রহণ হওয়ার
কথা রয়েছে।
মন্তব্য করুন
আগামীকাল দুদিনের সফরে ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে আসছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর এটি প্রথম সফর। নানা কারণেই এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড লুর বাংলাদেশ সফর নিয়ে যেরকম উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ত, এখন সে রকম পরিস্থিতি নেই। ডোনাল্ড লু এর বাংলাদেশ সফর নিয়ে রাজনীতির মাঠে আলাপ আলোচনা আছে। তবে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এর কেউই এই সফরকে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন না।
আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করলে বিএনপিকে আবারও পালাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার দরকার নেই। সরকারেরও দরকার নেই। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির নেতাকর্মীরা বক্তব্য দিয়েছে, আওয়ামী লীগ পালানোর পথ পাবে না। সেদিনও দেখলাম পল্টন ময়দান থেকে একে একে দৌড়াতে দৌড়াতে অলিগলি কোথায় দিয়ে যে পালিয়েছে, কেউ চিন্তাও করেনি।