নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
কারাগার থেকে বেগম জিয়ার বার্তা নিয়ে প্রতারণা এবং জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। বিএনপির বেশ কিছু শীর্ষ নেতা বিএনপি চেয়ারপারসনের স্বাক্ষর এবং হাতের লেখা জাল করে , তা কারাগার থেকে পাঠানো বলে দাবি করেছেন। বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির গতি-প্রকৃতি তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী প্রবাহিত করতেই নেতারা বেগম জিয়ার ‘বার্তা’ বলে অনেক ‘কথিত’ নির্দেশনা প্রচার করছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বেগম জিয়ার বার্তা বলে একটি চিরকুট নেতাদের মধ্যে প্রচার করেন। যাতে বলা হয়েছে, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে হবে। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়।’ কিন্তু দলের মহাসচিবসহ বেশ কয়েকজন নেতা এবং বেগম জিয়ার আত্নীয়স্বজন এই ‘বার্তা’ জাল বলে মন্তব্য করেছেন।
বেগম জিয়া ৮ ফেব্রুয়ারি কারান্তরীণ হবার পর তার সঙ্গে ব্যারিস্টার মওদুদের সাক্ষাৎ হয়েছে মাত্র একবার। সেটিও আবার একক সাক্ষাৎ নয়। স্থায়ী কমিটির আরও কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে তিনি কারাগারে গিয়েছিলেন। এই সাক্ষাৎও ছিল প্রায় চার মাস আগে। বেগম জিয়ার সঙ্গে সর্বশেষ সাক্ষাৎ হয়েছে বিএনপির দুই আইনজীবীর। এরা হলেন, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া এবং অ্যাডভোকেট মাসুদ। দুজন নাজিমউদ্দিন রোডে জিয়া চ্যারিটেবল মামলার আদালত স্থানান্তরের বিষয়ে গিয়েছিলেন। তাঁদের বেগম জিয়া নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য দলের প্রস্তুতি নেওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, জেল থেকে সাক্ষাৎ শেষে তাঁরা দলের মহাসচিবের কাছে বেগম জিয়ার এই বার্তা পৌঁছে দেন। বেগম জিয়াও ঈদের পরপর দলের মহাসচিবকে একই বার্তা দেন। মির্জা ফখরুল সে সময় একাই বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। ঐ বৈঠকেও বেগম জিয়া মির্জা ফখরুলকে নির্বাচনের বার্তা দেন। দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব খালেদা জিয়াকে উদ্ভূত করে বলেন, ‘যেকোনো পরিস্থিতিতে নির্বাচনে যেতে হবে।’
বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, ক’দিন আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য একটি বার্তা নিয়ে এসেছিলেন। সেটাও ছিল এক চিরকুট। যে বার্তায় বলা হয়েছিল, অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং মাহি বি. চৌধুরী বিশ্বাসঘাতক। তাঁদের সাথে জোট হবে না। পরে শামীম ইস্কান্দার বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতে এই প্রসঙ্গ তুললে বেগম জিয়া বিস্মিত হয়ে যান। বেগম জিয়া জানান তিনি এরকম বার্তা দেননি। গত আগস্ট মাসে বেগম জিয়ার আরেক চিরকুট নিয়ে আসেন বিএনপির আরেক সিনিয়র নেতা। যাতে লেখা ছিল, ‘আপাতত: তারেক নয়, ড. মোশাররফ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।’ এ নিয়ে বিএনপিতে খানিক অস্থিরতা হলেও পরে জানা যায়, এটা ‘ভুয়া’ বার্তা। বিএনপির একজন প্রবীণ নেতা বলেছেন, ‘যে যাঁর মতো স্বার্থ উদ্ধারের জন্য বেগম জিয়ার নামে ভুয়া বার্তা বানাচ্ছে। এই সব ভুয়া বার্তা দলে বিভ্রান্তি বাড়াচ্ছে।‘ তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতাকে নিয়েই যদি আমরা প্রতারণার আশ্রয় নেই, তাহলে আমাদের আর কি থাকে?’
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।