ইনসাইড পলিটিক্স

হাসপাতালে খালেদা জিয়া: কার লাভ, কার ক্ষতি?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫:৫৮ পিএম, ০৬ অক্টোবর, ২০১৮


Thumbnail

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে আজ শনিবার। বিকেল ৩টার দিকে কড়া প্রহরায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরানো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে শাহবাগের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের  (বিএসএমএমইউ) কেবিন ব্লকে স্থানান্তর করা হয়। দীর্ঘদিন ধরেই খালেদা জিয়া দাবি করে আসছিলেন তিনি অসুস্থ। এ কারণে হাসপাতালেও যেতে চাচ্ছিলেন তিনি। এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার তাঁকে প্রথমে বিএসএমএমইউ এবং পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু খালেদা জিয়া ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ব্যাপারে অনড় থাকেন। পরবর্তীতে খালেদার চিকিৎসার বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। অবশেষে বিভিন্ন ঘটনার পর শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়েই ভর্তি হলেন খালেদা জিয়া।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এর আগে তিন দফা চিকিৎসকরা খালেদা জিয়াকে দেখেছেন। কিন্তু বিশেষ কোনো শারীরিক সমস্যা পাওয়া যায়নি। খালেদা জিয়া যতটুকু অসুস্থ ছিলেন, বার্ধক্যে এরকম অসুস্থতা থাকেই। তারপরও তিনি হাসপাতালে, বিশেষ করে ইউনাইটেড হাসপাতালে যেতে চাচ্ছিলেন। প্রশ্ন হচ্ছে, যেসব সুবিধার জন্য তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে যেতে চাচ্ছিলেন সেই সুবিধাগুলো বিএসএমএমইউতে তিনি কতটুকু পাবেন। আরেকটি প্রশ্নও দেশের রাজনীতি অঙ্গনে দীর্ঘদিন ধরে ঘুরপাক খাচ্ছে – খালেদা জিয়া কি অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে যেতে চাচ্ছিলেন নাকি তাঁর হাসপাতালে যাওয়ার পেছনে অন্য কোনো কারণ ছিল? কারণ যাই হোক, খালেদা জিয়া আজ থেকে হাসপাতালে থাকছেন।

হাসপাতালে যাওয়ায় খালেদা জিয়া ও বিএনপির লাভ

পছন্দের হাসপাতাল ইউনাইটেডে যেতে না পারলেও বিএসএমএমইউতে খালেদা জিয়া কারাগারের চেয়ে ভালো অবস্থায় থাকবেন একথা নিশ্চিত। আর এটাই আসলে চাইছিল খালেদা জিয়া ও তাঁর দল বিএনপি। হাসপাতালে গেলে আরও কিছু সুবিধা তিনি পাবেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

১। খালেদা জিয়া হাসপাতালের ভিআইপি ব্লকে থাকবেন। বিএসএমএমইউতে ভর্তি হওয়ার একটি বড় সুবিধা হলো, সেখান থেকে খালেদা জিয়া বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন, যোগাযোগ করতে পারবেন। ওয়ান-ইলেভেনের মতো ঘটনাগুলোর সময় দেখা গেছে, কারাবন্দী রাজনৈতিক নেতারা বঙ্গবন্ধুতে ভর্তি থাকা অবস্থায় নিজ নিজ কর্মীদেরকে সহজেই বার্তা দিতে পেরেছেন। বিষয়টি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এছাড়া বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের চিকিৎসকদের বিরাট একটি অংশও বিএনপিপন্থী। তাই খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুতে থাকাকালীন দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে বার্তা পৌঁছে দিতে পারবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাছাড়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই সময়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মুহূর্তে একাদশ নির্বাচনে যাওয়া, না যাওয়া বিএনপির একটি বড় ইস্যু। আগামী ১০ অক্টোবর আবার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষিত হতে যাচ্ছে যাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার দণ্ডিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেহেতু দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি খালেদা জিয়ার জন্য নাজিমউদ্দিন রোডের তুলনায় বিএসএমএমইউতে সহজতর হবে, তাই এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে খালেদা জিয়ার কারাগার থেকে মেডিকেলে যাওয়া তাঁর ও তাঁর দলের জন্য একটি বড় সুবিধা বলে গণ্য হবে। 

২। নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারে যে পরিবেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ছিলেন সে পরিবেশে খালেদা জিয়া স্বচ্ছ্বন্দ্য ছিলেন না। আজীবন বিলাস-ব্যাসনে অভ্যস্ত খালেদা জিয়া। কিন্তু কারাগারে তাঁর কক্ষে এয়ার কন্ডিশনার ছিল না, তাঁকে চৌকিতে ঘুমাতে হতো। কিন্তু বিএসএমএমইউতে খালেদা জিয়া ভিআইপি কেবিনে থাকবেন। সেখানে সকল ভিআইপি সুবিধাই থাকবে। উন্নত পরিবেশে ফিরে আসাও খালেদা জিয়ার জন্য একটি বড় সুবিধা হতে যাচ্ছে।

৩। কারাগারে খালেদা জিয়াকে জেলের খাবারই খেতে হতো। বিশেষ কোনো খাবারের বন্দোবস্ত ছিল না তাঁর জন্য। কিন্তু তিনি যখন হাসপাতালে আসবেন চিকিৎসকদের অনুমতি সাপেক্ষে তাঁকে বাড়ির তৈরি খাবারও দেওয়া হতে পারে। এটি খালেদা জিয়ার জন্য একটি বড় লাভ।

৪। কারাগারে থাকা অবস্থায় খালেদা জিয়া কারাগারের লোকজন ছাড়া কারও সঙ্গে সহজে দেখাসাক্ষাৎ করতে পারতেন না। মাসে দুদিন দর্শনার্থী ছাড়া কারও সঙ্গে দেখা করার সুযোগ ছিল না তাঁর। কিন্তু বিএসএমএমইউতে তাঁকে দুইজন পছন্দের চিকিৎসক দেওয়া হয়েছে, দেওয়া হয়েছে পছন্দের টেকনিশিয়ান। তাই হাসপাতালে তিনি অনেকটাই মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারবেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারাও খালেদা জিয়া ও তাঁর দলের জন্য একটি বড় লাভ।

খালেদা জিয়া হাসপাতালে যাওয়ায় বিএনপির ক্ষতি, সরকারের লাভ

খালেদা জিয়া হাসপাতালে যাওয়ায় শুধু যে তাঁর ও তাঁর দল বিএনপিরই লাভ হয়েছে তাই নয়, এ ঘটনায় সরকারেরও কিছু লাভ হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

১। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া আওয়ামী লীগের একটি কৌশলগত বিজয় বলে মনে করা হচ্ছে। খালেদা জিয়া অনড় ছিলেন, তিনি ইউনাইটেড হাসপাতাল ছাড়া চিকিৎসা গ্রহণ করবেন না। আর সরকার অনড় ছিল, খালেদা জিয়াকে ইউনাইটেড হাসপাতাল বা অন্য কোনো বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হবে না। খালেদা জিয়া অস্বীকৃতি জানালেও গত চারমাস ধরে তাঁকে বারবার বিএসএমএমিউতেই ভর্তি হতে বলছে সরকার। শেষ পর্যন্ত সরকারের অবস্থানটিই খালেদা জিয়া মানতে বাধ্য হলেন। এতে আপোষহীন নেত্রী হিসেবে খালেদা জিয়ার যে পরিচিতি তা ঠুনকো হয়ে গেল।

২। খালেদা জিয়ার হাসপাতালে আসার মধ্য দিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনের দিকে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে লাভবান হবে সরকার। সরকারের কাছে খবর আছে খালেদা জিয়াই বিএনপির মধ্যে সবচেয়ে বেশি নির্বাচনমুখী। যে কোনো মূল্যে নির্বাচনে যেতে চান খালেদা জিয়া, এমনকি যদি তাঁর মুক্তি না হয় তবুও। সম্প্রতি খালেদা জিয়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ঈদের পরেরদিন একান্ত বৈঠক করেছেন। সেখানেও তিনি নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। কিন্তু বিএনপির তারেক জিয়া প্রভাবিত তরুণ অংশটি নির্বাচনে যাওয়ার বিপক্ষে। দাবিদাওয়া অর্জিত না হলে নির্বাচনে যেতে আগ্রহী নয় তাঁরা। এমন অবস্থায় খালেদা জিয়া হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবেন এবং দলকে নির্বাচনমুখী করতে ভূমিকা পালন করতে পারবেন। যেহেতু দলের মধ্যে তারেকের চেয়ে খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা বেশি তাই দলকে নির্বাচনমুখী করতে খালেদা জিয়ার বার্তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে সরকার।

৩। বিএসএমএমইউতে বিএনপির বিভিন্ন নেতারা যখন গোপনে যোগাযোগ করবে তখন দলে কার কী অবস্থান তা সরকারের সামনে উন্মোচিত হয়ে যাবে। গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে প্রকৃতভাবে বিএনপিতে কে কোন ভূমিকা পালন করছে তা জানতে পারবে সরকার, যা সম্ভব হচ্ছে খালেদা জিয়ার হাসপাতালে যাওয়ার মাধ্যমেই।

৪। নির্বাচনে আসার জন্য বিএনপি কিছু নূন্যতম অর্জন চাইছিল। খালেদা জিয়াকে জেল থেকে বের করে আনা হয়েছে এবং হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে- একে বিএনপি নিজেদের অর্জন হিসেবে দেখাতে পারবে। এমন অর্জন দেখিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে আওয়ামী লীগ সরকার। বিএনপি যে সময়টায় কঠোর আন্দোলন করার চিন্তাভাবনা করছিল, তখন খালেদা জিয়া কারাগারের বাইরে আসায় দলটির মধ্যে নমনীয় ভাব চলে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া খালেদা জিয়া বিএসএমএমইউতে আসায় সরকার আন্তর্জাতিক মহলকে দেখাতে পারবে, খালেদা জিয়ার ওপর কোনো নির্যাতন-নিপীড়ন হচ্ছে না। এটাই হবে সরকারের সবচেয়ে বড় লাভ।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ   



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। 

বিএনপির একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেছেন, দল এখন আন্দোলনে ব্যস্ত, তবে আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গে সংগঠনের বিষয়টিও সম্পৃক্ত। আন্দোলন এবং সংগ্রাম একসাথেই চলবে। এই অংশ হিসেবেই আমরা দলের নেতৃত্বের পুনর্গঠনের বিষয়টি বিবেচনা করছি। 

বিএনপির এই নেতা বলেন, তারেক জিয়া যখন বলবেন তখনই কাউন্সিল করার জন্য তাদের প্রস্তুতি আছে। তবে বিএনপির একাধিক নেতা আভাস দিয়েছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ তারা একটি সংক্ষিপ্ত কাউন্সিল করতে পারেন এবং সংক্ষিপ্ত কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতৃত্ব পুনর্গঠন করা হতে পারে। 

বিএনপিতে এখন নীতি নির্ধারণী সংস্থা স্থায়ী কমিটিতে পাঁচ সদস্য পদ শূন্য রয়েছে। আবার যারা স্থায়ী কমিটিতে আছেন এ রকম বেশ কয়েক জন এখন গুরুতর অসুস্থ এবং জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। অনেকে বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলামের মতো নেতারা এখন এতই অসুস্থ যে তারা কোন রাজনৈতিক দায়িত্ব পালনের মতো অবস্থায় নেই। 

বিএনপির একজন নেতা স্বীকার করেছেন, তারা দলকে সার্ভিস দিতে পারছেন না। কিন্তু বিষয়টি খুব স্পর্শকাতর বলে মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, অসুস্থ অবস্থায় তাদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে অমানবিক। তবে বিএনপির তরুণ নেতারা মনে করেন, এটি মোটেও অমানবিক নয়। একজন পদে থাকা ব্যক্তি যদি দায়িত্ব পালন না করতে পারেন তাহলে তাকে কোন আলঙ্কারিক পদ দিয়ে ওই শূন্যপদ পূরণ করা উচিত। বিএনপির মধ্যে একটি চাপ আছে যে, যারা মাঠের আন্দোলনে সক্রিয়, অপেক্ষাকৃত তরুণ তাদেরকে নেতৃত্বের সামনে আনা হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে তারেক জিয়া এবং বেগম খালেদা জিয়ার মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। 

তারেক জিয়া বিএনপিতে তরুণদেরকে সামনে আনতে চান। তবে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন সংগ্রামে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন এ ধরনের ব্যক্তিদেরকে খালেদা জিয়া এখনই দল থেকে বাদ দিতে রাজি নন বলেই বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। এ প্রসঙ্গে বলা যায় যে, রফিকুল ইসলাম মিয়া বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। বিভিন্ন সংকটে তিনি বেগম জিয়ার পাশে ছিলেন। এ কারণেই দীর্ঘদিন রোগশয্যা থাকার পরও তাকে স্থায়ী কমিটিতে রাখা হয়েছে। যদিও তারেক জিয়া তাকে স্থায়ী কমিটি থেকে সরিয়ে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদে দেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার আপত্তির কারণে তিনি সেটি করতে পারেননি। 

একইভাবে ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকারকেও স্থায়ী কমিটিতে না রাখার ব্যাপারে তারেক জিয়ার আগ্রহ আছে। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার অত্যন্ত আস্থাভাজন হওয়ার কারণ তারেক জিয়ার সেই চেষ্টা সফল হয়নি। আর এ কারণেই তারেক জিয়া কাউন্সিল করছেন না বলে অনেকে মনে করেন। কারণ এখন কাউন্সিল হলে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাকে সমঝোতা করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়ার পছন্দের অনেক ব্যক্তিকে দলের নেতৃত্ব রাখতে হবে। সেটি তারেক জিয়া চান। খালেদা জিয়ার হাত থেকে বিএনপির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিলেও এখন তারেক বিএনপিকে খালেদা জিয়ার প্রভাব মুক্ত করতে পারেনি। তাই কাউন্সিলের জন্য তার অপেক্ষা। তবে একাধিক সূত্র বলছে, দলের নেতাকর্মী মধ্যে কাউন্সিল করে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য একটি বড় ধরনের চাপ আছে।


কাউন্সিল   বিএনপি   তারেক জিয়া   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   বেগম খালেদা জিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

জামিনে কারামুক্ত হলেন বিএনপি নেতা

প্রকাশ: ০৯:৩৬ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

এ সময় কারাফটকে তাকে স্বাগত জানাতে শত শত নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে হাবিবুর রশিদ হাবিব বলেন, পুরো দেশটাকে কারাগারে পরিণত করেছে এই জালিম সরকার।

তারা শুধু বিএনপি নেতাকর্মী নয়, দেশের জনগণের অধিকার, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সবকিছুকে ধ্বংস করেছে। এই মাফিয়া আর পুতুল সরকার থেকে মুক্তি পেতে আন্দোলনের বিকল্প নাই। সেই আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান হাবিব।

উল্লেখ্য, গত ১৮ এপ্রিল নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে হাবিবুর রশীদ হাবিবকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন আদালত। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তাকে তিন মামলায় ৬ বছর নয় মাসের সাজা দেন আদালত।

এছাড়া দুটি মামলা গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও ছিলো। সব মামলায় জামিন শেষে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

হাবিবুর রশিদ হাবিব   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচনের আগে ও পরে একই কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র: মঈন খান

প্রকাশ: ০৭:১৫ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র যে কথা বলেছিল, নির্বাচনের পরেও একই কথাই বলেছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।

শুক্রবার (১৭ মে) কারামুক্ত বিএনপি নেতা নবী উল্লাহ নবীর বাসায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মঈন খান বলেন, সরকার যদি ভাবে মার্কিন প্রতিনিধি তাদের সঙ্গে এসে কথা বলেছে আর সব সমস্যার সমাধান হয়েছে, তাহলে সরকারের ধারণা ভুল। নির্বাচনে আগে যুক্তরাষ্ট্র যে কথা বলেছিল, নির্বাচনের পরেও সেই কথা বলেছে।

তিনি বলেন, বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও আটকের একমাত্র উদ্দেশ্য এ দেশের মানুষকে কথা বলতে দেবে না। মানুষকে ভিন্নমত পোষণ করতে দেওয়া হবে না। গণতন্ত্র দেওয়া হবে না। সরকার জানে সুষ্ঠু নির্বাচন দিলে দেশের মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।

এই সরকার সব অধিকার হরণ করেছে জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, তাদের (সরকার) কোনো ভিত্তি নেই। এদেশের ৯৭ শতাংশ জনগণ তাদের ভোট দেয়নি। এ জন্য সরকার ভীতু। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।

মঈন খান বলেন, সরকার এদেশের রাজনীতি অনেক আগেই ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশে আর সুস্থ ধরার রাজনীতি নেই। এখন আছে পরহিংসার রাজনীতি। সংঘাতের রাজনীতি।

তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ বলে দেবে এ সরকারের পরিণতি কি হবে। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, স্বৈরাচারী সরকারের কি পরিণতি হয়ে ছিল। এ দেশের সরকারের বেলায় যে ভিন্ন কিছু হবে এটা কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় না।

বিএনপি   ড. আব্দুল মঈন খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কেন জোট করতে চায় না বিএনপি

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না। 

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে একটি বিষয় সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যারা বিএনপির সঙ্গে এতদিন ছিল এবং আন্দোলন করেছে, তারা এখন নতুন করে আন্দোলনের আগে একটি লিয়াজোঁ কমিটি করতে চায়। আর আন্দোলনের লক্ষ্য এবং পথ পরিক্রমা চূড়ান্ত করতে চায়। লিয়াঁজো কমিটির নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হোক, সেটিও তারা চায়। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত ইতিবাচক সাড়া দেওয়া হয়নি। নানা বাস্তবতার কারণে বিএনপির জোটবদ্ধ আন্দোলন করতে চায় না। লিয়াঁজো কমিটিও করতে চায় না। 

বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতার সাথে আলাপ করে দেখা গেছে, তারা যে সমস্ত শরিক দলগুলো এখন বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে আগ্রহী, তাদের সঙ্গে কোন আনুষ্ঠানিক ঐক্যে যেতে চায় না। এমনকি লিয়াঁজো কমিটির করতে চায় না। এর কারণ হিসেবে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য বলছেন, যে সমস্ত শরিক রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করতে চায়, আন্দোলনের মাধ্যমে তারা অনেকেই সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায়। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সরকারের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করা বা রাজনৈতিক ডিগবাজি দেওয়ার মাধ্যমে তারা আন্দোলনকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। এটি শুধু এই স্থায়ী কমিটির সদস্য নয়, বিএনপি অনেকের ধারণা।

গত বছরের আন্দোলনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন করার কারণে যারা পরিচিতি পেয়েছিল তারাই সরকারের সঙ্গে প্রকাশ্যে এবং গোপনে যোগাযোগ করেছেন। এদের মধ্যে জেনারেল ইব্রাহিমের কথা বিএনপির অনেক নেতাই বলছেন। তারা বলছেন, তিনি রাজনৈতিকভাবে একেবারে এতিম ছিলেন। বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করার কারণেই তাঁর রাজনৈতিক পরিচিতি হয়েছিল। আর সেই পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে তিনি সরকারের সাথে গোপনে আঁতাত করেছেন। 

এর আগেও অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে বিকল্পধারা প্রসঙ্গটিও বিএনপির অনেক নেতা বলে থাকেন। তাছাড়া ২৮ অক্টোবরের পর আকস্মিকভাবে মাহমুদুর রহমান মান্নার নীরবতাকেও বিএনপির নেতারা সন্দেহ করছেন। 

বিএনপির কাছে এরকম তথ্য আছে যে, আন্দোলন বানচালের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনেকগুলো দলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল এবং তাদেরকে নানা রকম টোপ দেওয়া হয়েছিল। ভবিষ্যতেও আন্দোলন যদি বেগবান হয় তাহলে আবার টোপ দেওয়া হবে। এই সমস্ত লোভ পরিত্যাগ করে শরিকরা কতটুকু আন্দোলনের ব্যাপারে অটল থাকতে পারবে এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। আর কারণেই বিএনপি এখন আনুষ্ঠানিক ভাবে জোটে যেতে চায় না।

বিএনপি মনে করে তারা আন্দোলন করবে। তাদের কর্মসূচির সঙ্গে যদি কেউ একমত পোষণ করে তাহলে তারা যুগপৎ আন্দোলন করবে। তবে আন্দোলন তাদের নিজেদেরই করতে হবে এমনটি মনে করছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। আর এ কারণে বিএনপি কোন রকম জোট বা লিয়াঁজো কমিটির পক্ষে নয়।

বিএনপি   যুগপৎ আন্দোলন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

২০৪ নেতাকে বহিষ্কার করল বিএনপি

প্রকাশ: ০২:৫৩ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।

এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।

বর্তমান সরকার নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।

দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত জন চেয়ারম্যান পদে, জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।

দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জুন।


বহিষ্কার   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন