নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১০ অক্টোবর, ২০১৮
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পর তাঁরা প্রত্যেকেই প্রতিবাদ করেছিলেন। এদের একজন ঘটনাস্থল বঙ্গবন্ধু এভিন্যুতে ছিলেন। তাঁর শরীরেও স্প্রিন্টার লেগেছিল। এরা সবাই বলেছিলেন, ‘এটা জঘন্য ঘটনা। এর সুষ্ঠু বিচার হওয়া প্রয়োজন। অথচ ঘটনাচক্রে আজ গ্রেনেড হামলার রায়ের দিন এরা নীরব। যেই বিএনপির নেতৃত্বে এই ঘটনা ঘটেছিল সেই বিএনপির অনুকম্পার অপেক্ষায় এরা। সন্ত্রাসের রক্ত হাতে যে বিএনপির সেই বিএনপির সঙ্গেই হাত মেলাতে উদগ্রীব তাঁরা। এরা হলেন ড. কামাল হোসেন, মাহমুদুর রহমান মান্না এবং সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ।
আজ বুধবার রায়ের পর ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন, এই রায় নিয়ে আমি এখন মন্তব্য করতে পারবো না। আমি রায় পড়িনি।’ অথচ এই কামাল হোসেনই ২২ আগস্ট এক বিবৃতিতে ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। ঐ বিবৃতিতে তিনি বলেন, কোনো ভাবেই সরকার এই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না।’ ড. কামাল হোসেন তাঁর বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘ এ ধরনের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে গণতন্ত্র বিপন্ন হবে।’
বর্তমানে যুক্তফ্রন্টের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না ২০০৪ সালে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংঘঠনিক সম্পাদক। গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে ২৭ আগস্ট নাগরিক শোকসভায় বক্তব্য রাখেন মান্না। সেখানে তিনি এই নৃশংস ঘটনার জন্যে জামাত বিএনপিকে দায়ী করেন। মান্না এই শোকসভায় ‘অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন। অথচ আজ রায়ের দিন তিনি মুখে কুলুপ এঁটেছেন। রায় নিয়ে কোনো মন্তব্য নাই তাঁর। ২০০৪ সালে মান্না গ্রেনেড হামলার জন্য যাদেরকে দায়ী করেছিলেন, ২০১৮ তে তাঁদের সঙ্গে ঐক্য গড়তে মরিয়া।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনাস্থলেই ছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। সে সময় তিনিও মান্নার মতো আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ঘটনার পর তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় সুলতান এটাকে সরকারের ইঙ্গিতেই সংগঠিত একটি ফ্যাসিস্ট তৎপরতা বলে অভিহিত করেছিলেন। ৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সভায় সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেছিলেন,’২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার জন্য বিএনপিকে চরম মূল্য দিতে হবে।’ তিনি ঐ সভায় আরও বলেন,‘সরকারের মদদ ছাড়া এরকম ঘটনা ঘটতে পারে না।’ অথচ আজ রায়ের দিন তিনি নীরব। রায় নিয়ে তিনিও কোনো মন্তব্য করেন নি। তিনি ব্যস্ত আগামীকাল সন্ধ্যায় ড. কামাল হোসেনের বাসভবনে বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়বস্তু নির্ধারণে।
যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া জনগণকে নতুন ধরনের রাজনীতি দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু ক্ষমতার মোহে যাঁরা নীতি নৈতিকতা বিসর্জন দেয়, তাঁদের আদর্শ নিয়েই কি প্রশ্ন ওঠে না।’
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।