নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৭ অক্টোবর, ২০১৮
২১ আগস্ট ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার ঘটনা সম্পর্কে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মঈন ইউ. আহমেদ। বর্তমানে নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন ওয়ান ইলেভেনের কারণে আলোচিত-সমালোচিত এই সেনাপ্রধান। যুক্তরাষ্ট্রে বাঙালি কমিউনিটির এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন সেসময়ের সেনাবাহিনীর সিজিএস (চিফ অব জেনারেল স্টাফ) মঈন ইউ. আহমেদ। জেনারেল মঈন জানিয়েছেন, ২ আগস্ট ২০০৪ এ তিনি চট্টগ্রামের জিওসি থেকে সেনাসদরে সিজিএস পদে বদলি হয়ে আসেন। তিনি জানিয়েছেন, ’২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনায় শুধু তারেক নন বেগম জিয়াও জড়িত।’ তাঁর মতে, তৎকালীন ডিজিএফআই এর মহাপরিচালক জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল। বেগম জিয়ার সম্মতি নিয়েই তারেক জিয়া রেজ্জাকুল হায়দারকে এই দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
জেনারেল মঈন জানিয়েছেন, বেগম জিয়া বলেছিলেন, যদি অপারেশন সফল হয়, তাহলে রেজ্জাকুল হায়দারকে সেনাপ্রধান করা হবে। মূলত: সেনাপ্রধান হওয়ার লোভেই জেনারেল হায়দার ঐ গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন, কিন্তু, পরবর্তীতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার সঙ্গে রেজ্জাকুল হায়দারের সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি সেনাবাহিনীতে জানাজানি হয়ে যায়। এনিয়ে পেশাদার সেনা কর্মকর্তারা ক্ষুব্ধ হন। দ্রুত জেনারেল হায়দার সেনাবাহিনীতে সমালোচিত এবং বিতর্কিত হতে থাকলেন।
জেনারেল মঈন এর ভাষ্য অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রত্যেকেই জানতেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার সঙ্গে সেনাবাহিনীর দু-একজন ব্যক্তির বিচ্ছিন্ন ভাবে জড়িত থাকার কথা। এই ঘটনার ১০ মাসের মধ্যে নতুন সেনাপ্রধান (১২তম) নিয়োগের কথা। তারেক জিয়া সেনাপ্রধান হিসেবে রেজ্জাকুল হায়দারকেই চেয়েছিলেন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় তার সম্পৃক্ততার পরও জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার ছিলেন তারেক জিয়ার প্রথম পছন্দ। বেগম জিয়াও হয়তো সেটাই করতেন। কিন্তু বিদায়ী সেনাপ্রধান হাসান মাসউদ চৌধুরী ছিলেন অত্যন্ত সৎ, নিষ্ঠাবান এবং নিবেদিত প্রাণ সামরিক কর্মকর্তা সেনাবাহিনীতে তিনি সবার শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন। জেনারেল মঈন এর ভাষ্যমতে, তাঁর সততা ও নিষ্ঠার কারণে, বেগম জিয়াও তাঁকে সমীহ করে চলতেন। সেনাপ্রধান হিসেবে যখন নানারকম কানাঘুষা এবং জল্পনা-কল্পনা চলছে, সেসময়ই জেনারেল হাসান মাসউদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। তিনি নতুন সেনাপ্রধানের ব্যাপারে সরকারের মনোভাব জানতে চান। এ সময় বেগম জিয়া সেনাপ্রধানকে জিজ্ঞেস করেন, তাঁর কোনো চয়েস আছে কিনা? এসময় জেনারেল প্রথমে বলেন যে, তাঁর কোনো চয়েস নেই, তাঁর রিজার্ভেশন (আপত্তি) আছে। সেনাপ্রধান জানান, আর কাউকে সেনাপ্রধান করলে তার আপত্তি নেই, তবে রেজ্জাকুল হায়দারকে যেন না করা হয়। তাঁকে দিয়ে যা করানো হয়েছে, তাতে তাঁর ‘কোর্ট মার্শাল’ হওয়া উচিৎ। বেগম জিয়া এরপর চুপ হয়ে যান। জেনারেল মইন বলেছেন, ‘২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনার জন্যই আমি সেনাপ্রধান হতে পেরেছি। না হলে জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দারই হতেন। ২০০৫ সালের ১৫ জুন মঈন ইউ. আহমেদ সেনাপ্রধান হিসেবে দেন। ২০০৭ সালে তার সমর্থনে ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর জেনারেল মঈন এর একক আগ্রহেই জেনারেল হাসান মাসউদ চৌধুরীকে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান করা হয়েছিল।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।