নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০৬ পিএম, ১৮ অক্টোবর, ২০১৮
সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগির অন্তর্ধান নিয়ে চলা বিতর্কের মধ্যেই প্রকাশ পেয়েছে তাঁর লেখা শেষ কলাম। ওয়াশিংটন পোস্ট গতকাল বুধবার কলামটি প্রকাশ করেছে। খাসোগি কলামটির শিরোনাম দিয়েছিলেন, ‘আরব বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতা। এখানে সেটিই তুলে ধরা হলো:
সম্প্রতি আমি ফ্রিডম হাউসের করা ‘ফ্রিডম ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ প্রতিবেদনটি দেখছিলাম। প্রতিবেদনটি আমাকে এক গভীর উপলব্ধি এনে দিল। আরব বিশ্বে মাত্র একটি দেশেই মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা রয়েছে। সেই দেশটি তিউনিশিয়া। আর জর্ডান, মরক্কো এবং কুয়েত রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে। এই দেশগুলোতে মত প্রকাশের আংশিক স্বাধীনতা রয়েছে। ফ্রিডম হাউসের তথ্য অনুযায়ী, আরব বিশ্বের বাকী দেশগুলোতে তথ্য ও মত প্রকাশের কোনো স্বাধীনতা নেই। এর ফলে ওইসব দেশে বসবাসরত আরবরা যেকোন বিষয়ে হয় ভুল তথ্য পাচ্ছে নাহলে কোন তথ্যই পাচ্ছে না। তাদের অঞ্চলে এবং জীবন-যাত্রায় প্রভাব ফেলে এমন বিষয়গুলো নিয়ে মত প্রকাশ করতে পারে না এমনকি জনসমক্ষে আলোচনাও করতে পারে না। রাষ্ট্রের প্রচারিত খবরই জনগণ বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়। যারা বিশ্বাস করতে পারে না তারা এই মিথ্যা তথ্যের জন্য দুর্ভোগের শিকার হয়। দুঃখজনকভাবে এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুবই কম।
২০১১’র বসন্তে আরবরা আশাবাদী হয়েছিল। সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ এবং সাধারণ জনগণ তাদের নিজ নিজ দেশে একটি উজ্জ্বল ও মুক্ত সমাজের প্রত্যাশা করেছিল। সকলেরই আশা ছিল, প্রশাসনের স্বৈরশাসন থেকে তারা মুক্তি পাবে। একইসঙ্গে তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের হস্তক্ষেপ এবং সেন্সরশিপও বন্ধ হবে। কিন্তু খুব দ্রুতই তাদের সেই প্রত্যাশা মুখ থুবড়ে পড়ে। রাষ্ট্রব্যবস্থা পুরনো অবস্থাতেই ফিরে আসে। কোন কোন ক্ষেত্রে তা আগের থেকেও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।
আমার বন্ধু বিশিষ্ট সৌদি লেখক সালেহ আল-শেহি, দেশটির সংবাদপত্রে কলাম লিখতেন। তাঁর কলামগুলো ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু দেশের প্রশাসন অন্যায়ভাবে তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। তাঁর বক্তব্য সৌদি বিরোধী হতে পারে এমন ধারণা থেকেই ওই শাস্তি দেওয়া হয়।
মিশরের সরকার আল মাসরি আল ইয়োম নামের একটি পত্রিকা পুরোপুরি বন্ধই করে দেয়। এ বিষয়ে পত্রিকাটির কোন কর্মী বা তাদের সহকর্মীদের প্রতিবাদ বা প্রতিক্রিয়াও জানা যায়নি। এমনকি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কোন প্রতিক্রিয়া জানায়নি। নিশ্চুপ থাকতেই দেখা গেছে সবাইকে। এই মৌনতার কারণেই আরব সরকারগুলো গনমাধ্যমের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদার করতে পেরেছে।
একটা সময় ছিল যখন সাংবাদিকরা বিশ্বাস করতেন যে, ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্যের সেন্সরশিপ এবং নিয়ন্ত্রণ এড়ানো সম্ভব যা সংবাদপত্রগুলোকেও সাহায্য করবে। কিন্তু তথ্য নিয়ন্ত্রণে বিশ্বাসী সরকারগুলো আগ্রাসী পদক্ষেপের মাধ্যমে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিল। তারা স্থানীয় রিপোর্টারদেরও গ্রেপ্তার করল এবং নির্দিষ্ট কিছু প্রকাশনাকে ক্ষতির মুখে ফেলতে তাদের বিজ্ঞাপনদাতাদের চাপ দিতে শুরু করল।
বর্তমানে খুব অল্প সংখ্যক মাধ্যমই রয়েছে, যারা আরব বসন্তের চেতনাকে এখনো ধারন করছে। কাতার সরকার সব সময়ের মতোই আন্তর্জাতিক সংবাদের প্রচার বাড়াতে সমর্থন করে গেছে। এক্ষেত্রে প্রতিবেশি দেশগুলোর বিপরীত পথই অনুসরণ করেছে তারা। তিউনিশিয়া এবং কুয়েত, যেখানে সংবাদ মাধ্যমগুলো আংশিক স্বাধীনতা পায়, সেখানে তারা অভ্যন্তরীন ইস্যুকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। আরব বিশ্বের বিষয়গুলো প্রকাশ পায় না সেখানে। এমনকি লেবানন সংবাদ মাধ্যমেও ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহর প্রভাব রয়েছে।
আরব বিশ্ব একটি বাধার সম্মুখিন হয়, যা কোন বাইরের শক্তি নয় বরং নিজেদেরই সৃষ্টি। স্নায়ু যুদ্ধের সময় ‘রেডিও ফ্রি ইউরোপ’ স্বাধীনতার আশাকে উৎসাহিত ও বজায় রাখার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। আরবদেরও এমনই কিছু দরকার। ১৯৬৭ সালে, দ্য নিউইয়র্ক টাইমস এবং দ্য পোস্ট আন্তর্জাতিক হেরাল্ড ট্রিবিউন পত্রিকার যৌথ মালিকানা গ্রহণ করেছিল। এটা সারা বিশ্বের মত প্রকাশের একটি ভালো মাধ্যম হয়ে উঠেছিল। আমার লেখাও দ্য পোস্ট নিয়েছে এবং তারা সেগুলো অনুবাদ করেছে। আরবিতে প্রকাশও পেয়েছে তাদের খবরগুলো। এজন্য আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ।
সংবাদগুলো আরবদের নিজ ভাষায় পড়া দরকার, যেন তারা সেগুলো বুঝতে পারে। একইসঙ্গে এটা তাদের যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলোর গণতন্ত্রের বিভিন্ন বিষয় এবং জটিলতা বুঝতে সাহায্য করবে। নিজেদের মধ্যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনাও করতে পারবে তারা। যদি একজন মিশরের নাগরিক কোন লেখা পড়ে ওয়াশিংটনের নির্মান খরচ জানতে পারে, তাহলে সে তাঁর নিজের দেশের সঙ্গেও এর তুলনা করতে পারবে।
আরব বিশ্বের অনুবাদমাধ্যমের একটি আধুনিক সংস্করণ দরকার, যা তাদের আন্তর্জাতিক ঘটনা প্রবাহ জানতে সাহায্য করবে। আরবদের মতপ্রকাশের একটি প্লাটফরম দেওয়াটাও অত্যন্ত জরুরী। আমরা দারিদ্র্য, অব্যবস্থাপনা এবং শিক্ষার অভাবে ভুগছি। একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফোরাম গঠনের মাধ্যমে, জাতীয়তাবাদী সরকারগুলোর ঘৃনিত প্রোপাগান্ডার প্রভাবমুক্ত হতে পারে আরব বিশ্ব। এর মাধ্যমে তারা সমাজের কাঠামোগত বিভিন্ন সমস্যা এবং প্রকৃত অবস্থা বুঝতেও সক্ষম হবে।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ
মন্তব্য করুন
সৌদি আরব বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল-সৌদ
মন্তব্য করুন
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি আল-জাজিরার
মন্তব্য করুন
কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে আটকে পড়া ১৪০ শিক্ষার্থীকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে পাকিস্তান। গতকাল শনিবার রাতে বিশকেকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের হামলার পর একটি বিশেষ ফ্লাইটে করে পাকিস্তানে ফেরেন এই শিক্ষার্থীরা।
আজ রবিবার (১৯ মে) আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের পাকিস্তানে ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি জানিয়েছেন, কিরগিজস্তান থেকে পাকিস্তানি শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি বিশেষ ফ্লাইট লাহোরের আল্লামা ইকবাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। সহিংসতার পর যেসব পাকিস্তানি শিক্ষার্থী দেশে ফিরতে চান, তাদের জন্য এমন আরও ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ মে একদল কিরগিজ নাগরিকের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান মিশরীয় শিক্ষার্থীরা। ওই ঘটনার জেরে শুক্রবার রাতে বিশকেকের বিভিন্ন হোস্টেলে থাকা বিদেশি মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান স্থানীয় বাসিন্দারা। এমনকি, শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত বাসভবনে ঢুকেও হামলা চালানো হয়। সেসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশি, পাকিস্তানি ও ভারতীয়রাও রয়েছেন।
মন্তব্য করুন
সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিস্তৃত দ্বিপক্ষীয় চুক্তি এবং গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করেছেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এবং হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান। সৌদি শহর ধহরানে দুজনের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (১৯ মে) সৌদি রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এবারর বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে খসড়া কৌশলগত চুক্তির সেমিফাইনাল সংস্করণ পর্যালোচনা করা হয়েছে। এই চুক্তিটি এখন প্রায় চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
বড় ধরনের একটি চুক্তির অংশ হিসেবে মার্কিন নিরাপত্তা গ্যারান্টি ও বেসামরিক পারমাণবিক সহায়তা নিয়ে আলোচনা করছে ওয়াশিংটন ও রিয়াদ। এই চুত্তির আওতায় সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে চলতি মাসের গোড়ার দিকে রয়টার্স জানায়, ইসরায়েল-সৌদি সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ অধরা থাকলেও পরমাণু চুক্তি চূড়ান্ত করতে চাইছে বাইডেন প্রশাসন ও সৌদি সরকার।
মন্তব্য করুন
পাকিস্তানে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছেন এবং তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।
ব্রেক ফেল করে গাড়ি খাদে পড়ে গেলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। রোববার (১৯ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখাওয়া প্রদেশের নওশেরায় শনিবার ব্রেক ফেল করে একটি মিনি-ট্রাক গভীর খাদে পড়ে গেলে পুরুষ, নারী ও শিশুসহ একই পরিবারের ১৪ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আরও আটজন আহত হয়েছেন।
মন্তব্য করুন
সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিস্তৃত দ্বিপক্ষীয় চুক্তি এবং গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করেছেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এবং হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান। সৌদি শহর ধহরানে দুজনের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (১৯ মে) সৌদি রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।