নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৯ অক্টোবর, ২০১৮
আত্ম প্রকাশের পর জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট প্রথম কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করলো গতকাল বৃহস্পতিবার। বাংলাদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন দূতাবাস ও মিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট শীর্ষ নেতারা। ৩০টি দেশের কূটনীতিকরা লেকশোর হোটেলে আয়োজিত এই মতবিনিময়ে উপস্থিত ছিলেন। লক্ষণীয় ব্যাপার হলো ভারতীয় দূতাবাসের কোন প্রতিনিধি সেখানে ছিলেন না। ভারতীয় দূতাবাসের প্রতিনিধি উপস্থিত না থাকা নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যেই হতাশা এবং নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, ড. কামাল হোসেন নিজে এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দু’জনই বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে কথা বলেন। শ্রিংলা বলেছিলেন, ‘আমরা দেখছি।’ জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের অন্যতম নেতা এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী অবশ্য বলেছেন, ‘শারদীয় দুর্গাপূজার জন্যই সম্ভবত ভারতীয় দূতাবাসের কোন কর্মকর্তা মতবিনিময় সভায় উপস্থিত থাকেন নি।’ কিন্তু কূটনীতিক সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপূজা নয় বরং ফ্রন্টের সঙ্গে জামাতের সম্পর্ক স্বচ্ছ এবং পরিষ্কার না হওয়া সহ তিন কারণে ভারত ঐ মতবিনিময় সভায় যায়নি। ভারতের রাষ্ট্রদূত ঐ দিনই দুপুরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দীর্ঘ এক ঘন্টা বৈঠক করেন। একই দিনে ভারতীয় দূতাবাসের একজন পদস্থ কর্মকর্তা বারিধারায় বিকল্প ধারার সভাপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ভারতীয় দূতাবাস জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যাপারে তিনটি আপত্তি জানিয়েছে। এ কারণেই তারা জাতীয় যুক্তফ্রন্টের মতবিনিময়ে যোগ দেয়নি। আপত্তি গুলো হলো:-
১. জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের প্রধান দল বিএনপির সংগে জামাতের সম্পর্কের অস্পষ্টতা। ভারত মনে করে, জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট গঠনের আগে বিএনপির উচিত ছিলো জামাতের সংগে সম্পর্কচ্ছেদ। এর আগেও ভারত একাধিক বার বিএনপিকে জামাতের সংগ ত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছিল। ভারত মনে করে, গণতান্ত্রিক ধারায় রাজনীতি করতে হলে বিএনপিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে জামাত ছাড়ার ঘোষণা দিতে হবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে জামাতের অবস্থান স্পষ্ট না হওয়ায় ভারত মত বিনিময়ে যোগ দেয়নি।
২. তারেকের নেতৃত্ব নিয়েও ভারতের আপত্তি আছে। ভারতের সঙ্গে সর্বশেষ আনুষ্ঠানিক বৈঠকে আবদুল আউয়াল মিন্টু আশ্বস্থ করেছিলেন যে , ২১ আগষ্টের গ্রেনেড হামলা মামলার পর তারা (বিএনপি) এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। ভারত দীর্ঘদিন ধরেই, তারেক জিয়াকে দলের শীর্ষ পদে রাখার বিরোধিতা করে আসছে। গ্রেনেড হামলা রায়ের পর, তারেক জিয়াকে নেতৃত্ব থেকে না সরানোর যে সিদ্ধান্ত বিএনপি নিয়েছে, তাতে ভারত- বিএনপির সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে।
৩. জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের থাকার যৌক্তিকতা নিয়ে ভারত প্রশ্ন তুলেছে। ভারত মনে করে, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বাংলাদেশে পাকিস্তানপন্থী থিংক ট্যাংক। জাতীয় ফ্রন্ট আত্মপ্রকাশের পরই তারা এ ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিলে। কিন্তু ফ্রন্ট এ ব্যাপারে কোন সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি।
ভারত বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় বৈদেশিক ফ্যাক্টর। তাই তাদের অনুপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় আদৌ ফলপ্রসু হলো কিনা, সে প্রশ্ন কূটনীতিক মহলে উঠেছে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।