ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচন প্রশ্নে বিভক্ত বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২২ অক্টোবর, ২০১৮


Thumbnail

নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নে বিএনপির সিদ্ধান্ত দলগতভাবে গৃহীত হবে নাকি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গৃহীত হবে তা নিয়ে দলটিতে বিভক্তির সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের প্রশ্নে বিএনপি ভেঙে পড়তে বলেও আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হবার পর থেকেই বিএনপির কিছু নেতার রহস্যময় নীরবতা বজায় রেখেছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে সিনিয়র নেতা ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান এবং তরুণদের মধ্যে মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় অস্বাভাবিক নীরবতা অবলম্বন করছেন। স্থায়ী কমিটির সদস্যদের এমন আচরণে বিএনপির মধ্যেই বিভিন্ন প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে নিয়মিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির মিটিং হত। স্থায়ী কমিটির মিটিং এর মাধ্যমেই বিএনপির কর্মপন্থা ও কৌশল বিষয়ক সিদ্ধান্তগুলো গ্রহণ করা হতো। কিন্তু জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হওয়ার পর থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তাই প্রশ্ন উঠেছে, বিএনপির সিদ্ধান্তগুলো কীভাবে, কার মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে? এসব নিয়ে বিএনপির মধ্যেই নানা রকম কথা হচ্ছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির তিন প্রভাবশালী নেতা দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদই বর্তমানে বিএনপির সকল সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এই তিনজনের সিদ্ধান্তেই বিএনপি ঐক্যফ্রন্টে যোগদান করেছে।

এতদিন ঐক্যফ্রন্টের ব্যাপারে বিএনপির সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন তারেক জিয়ার যোগাযোগের যোগসূত্র ছিলেন বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তাঁকেও গতকাল আইসিটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফলে বর্তমানে তারেকের সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ নেই। ফলে কোনো কর্মসূচির ব্যাপারেও তারেক বিএনপিকে কোনো নির্দেশ দিতে পারছে না। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ছাড়া বিএনপিতে তারেকের সঙ্গে অন্যান্য যেসব নেতা ঘনিষ্ঠ ছিলেন তাঁদের মধ্যে হাবীবুন্নবী খান সোহেলের মতো নেতারাও একে একে গ্রেপ্তার হচ্ছেন। এছাড়া একাধিক মামলা মাথায় নিয়ে সব ধরনের কার্যক্রম থেকে দূরে সরে আছেন চৌধুরী আব্দুল আউয়াল মিন্টু। যার ফলে তারেক জিয়ার সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ শিথিল হয়ে গেছে। দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে তারেকেরও এখন তেমন কোনো ভূমিকা নেই।

এছাড়া খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন থাকায় তাঁর সঙ্গেও যোগাযোগ শিথিল হয়ে গেছে বিএনপির। এমন অবস্থায় বিএনপি চালাচ্ছেন তিন নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। তাঁদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান। কিন্তু সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তিন নেতা এককভাবেই। ফলে সরকার যখন নির্বাচনের মহাসড়কের দিকে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে তখন বিএনপির মধ্যেই নিজ দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ক্রমশ ক্ষোভ-বিক্ষোভ দানা বেঁধে উঠছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে বিএনপির তিন নেতা যখন আশাবাদ ব্যক্ত করছেন তখন তৃণমূল ও মধ্যস্তরের নেতারা প্রকাশ করছেন ক্ষোভ এবং হতাশা।

বিএনপির মধ্যস্তরের নেতা ও তৃণমূলের কর্মীরা মনে করছেন নির্বাচন চলে আসলেও আন্দোলনের কর্মসূচি দিতে না পারা বিএনপির এক ধরনের ব্যর্থতা এবং আন্দোলনের ব্যাপারে তিন নেতার কোনো উৎসাহ নেই। বিএনপির এই নেতাকর্মীরা ধারণা করছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপির একটি অংশকে সরিয়ে এই তিন নেতা নির্বাচনে যাবেন। এই নিয়ে অসন্তুষ্ট তাঁরা।

বিভিন্ন কার্যকলাপে পরিষ্কার হয়েছে, বিএনপির তিন নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ স্পষ্টতই গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নির্বাচনে যাওয়ার একটি পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছেন। আবার বিএনপিরই একটি অংশ নির্বাচনে যেতে অনিচ্ছুক। তাই যখন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে তখনই নির্বাচনের যাওয়া না যাওয়া নিয়ে বিএনপি ভাঙ্গন অনিবার্য বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে ঐক্যফ্রন্ট কী সিদ্ধান্ত নিল না নিল সেটা বিএনপির দেখার বিষয় না। দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্ববাধয়ায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া বিএনপি কোনো ভাবেই নির্বাচনে যাবে না বলে জানান তিনি। গয়েশ্বর বলেন, খালেদা জিয়াকে নিয়েই বিএনপি নির্বাচনে যাবে।

কিন্তু বিএনপির বর্তমান সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী তিন নেতার অন্যতম ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, ‘আমরা অবশ্যই খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, নির্দলীয় স্রকারের অধীনে নির্বাচন চাই। কিন্তু আমাদেরকে বাস্তবতা বুঝতে হবে। আমরা এখন একটা ঐক্যফ্রন্টে আছি আর ফ্রন্ট থেকে সাত দফা দাবি দেওয়া হয়েছে। সাত দফার ভিত্তিতেই আমরা আন্দোলন করছি। আর আমাদের নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জোটগত ভাবেই হবে।’ এ সময় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে, কী করবেন, মওদুদকে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে বিষয়টি দেখা যাবে।

একটি সূত্র বলছে, গতকাল গণফোরামের কার্যালয়ে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় নির্বাচন, নির্বাচনী কৌশল, নির্বাচনী ম্যানিফেস্টো ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করা হয় এবং কয়েকজন নেতাকে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়। সভা সূত্রে জানা গেছে, ঐক্যফ্রন্টের সভায় নির্বাচনী কৌশল, আসন বন্টন প্রস্তাবনা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জাসদের আ স ন আব্দুর রবকে। আর নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সরকার পরিচালনার ঘোষণাপত্র ও নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির।

সব মিলিয়ে বোঝা যাচ্ছে, নির্বাচনমুখী মনোভাব নিয়েই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এগুচ্ছে। কিন্তু বিএনপির একটি অংশ খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় ছাড়া নির্বাচনে যেতে ইচ্ছুক নয়। এই উদ্দেশ্যে এখন আলাদাভাবে বৈঠক করছেন মির্জা আব্বাসসহ প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে বিএনপির সঙ্গে জড়িত দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিতে বিদ্রোহের আশঙ্কা অমূলক নয় ধারণা করা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের প্রশ্নে বিএনপি ভেঙে যায় কী না সেটাই এখন দেখার বিষয় বলে মনে করছেন দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। 

বিএনপির একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেছেন, দল এখন আন্দোলনে ব্যস্ত, তবে আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গে সংগঠনের বিষয়টিও সম্পৃক্ত। আন্দোলন এবং সংগ্রাম একসাথেই চলবে। এই অংশ হিসেবেই আমরা দলের নেতৃত্বের পুনর্গঠনের বিষয়টি বিবেচনা করছি। 

বিএনপির এই নেতা বলেন, তারেক জিয়া যখন বলবেন তখনই কাউন্সিল করার জন্য তাদের প্রস্তুতি আছে। তবে বিএনপির একাধিক নেতা আভাস দিয়েছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ তারা একটি সংক্ষিপ্ত কাউন্সিল করতে পারেন এবং সংক্ষিপ্ত কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতৃত্ব পুনর্গঠন করা হতে পারে। 

বিএনপিতে এখন নীতি নির্ধারণী সংস্থা স্থায়ী কমিটিতে পাঁচ সদস্য পদ শূন্য রয়েছে। আবার যারা স্থায়ী কমিটিতে আছেন এ রকম বেশ কয়েক জন এখন গুরুতর অসুস্থ এবং জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। অনেকে বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলামের মতো নেতারা এখন এতই অসুস্থ যে তারা কোন রাজনৈতিক দায়িত্ব পালনের মতো অবস্থায় নেই। 

বিএনপির একজন নেতা স্বীকার করেছেন, তারা দলকে সার্ভিস দিতে পারছেন না। কিন্তু বিষয়টি খুব স্পর্শকাতর বলে মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, অসুস্থ অবস্থায় তাদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে অমানবিক। তবে বিএনপির তরুণ নেতারা মনে করেন, এটি মোটেও অমানবিক নয়। একজন পদে থাকা ব্যক্তি যদি দায়িত্ব পালন না করতে পারেন তাহলে তাকে কোন আলঙ্কারিক পদ দিয়ে ওই শূন্যপদ পূরণ করা উচিত। বিএনপির মধ্যে একটি চাপ আছে যে, যারা মাঠের আন্দোলনে সক্রিয়, অপেক্ষাকৃত তরুণ তাদেরকে নেতৃত্বের সামনে আনা হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে তারেক জিয়া এবং বেগম খালেদা জিয়ার মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। 

তারেক জিয়া বিএনপিতে তরুণদেরকে সামনে আনতে চান। তবে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন সংগ্রামে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন এ ধরনের ব্যক্তিদেরকে খালেদা জিয়া এখনই দল থেকে বাদ দিতে রাজি নন বলেই বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। এ প্রসঙ্গে বলা যায় যে, রফিকুল ইসলাম মিয়া বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। বিভিন্ন সংকটে তিনি বেগম জিয়ার পাশে ছিলেন। এ কারণেই দীর্ঘদিন রোগশয্যা থাকার পরও তাকে স্থায়ী কমিটিতে রাখা হয়েছে। যদিও তারেক জিয়া তাকে স্থায়ী কমিটি থেকে সরিয়ে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদে দেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার আপত্তির কারণে তিনি সেটি করতে পারেননি। 

একইভাবে ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকারকেও স্থায়ী কমিটিতে না রাখার ব্যাপারে তারেক জিয়ার আগ্রহ আছে। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার অত্যন্ত আস্থাভাজন হওয়ার কারণ তারেক জিয়ার সেই চেষ্টা সফল হয়নি। আর এ কারণেই তারেক জিয়া কাউন্সিল করছেন না বলে অনেকে মনে করেন। কারণ এখন কাউন্সিল হলে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাকে সমঝোতা করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়ার পছন্দের অনেক ব্যক্তিকে দলের নেতৃত্ব রাখতে হবে। সেটি তারেক জিয়া চান। খালেদা জিয়ার হাত থেকে বিএনপির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিলেও এখন তারেক বিএনপিকে খালেদা জিয়ার প্রভাব মুক্ত করতে পারেনি। তাই কাউন্সিলের জন্য তার অপেক্ষা। তবে একাধিক সূত্র বলছে, দলের নেতাকর্মী মধ্যে কাউন্সিল করে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য একটি বড় ধরনের চাপ আছে।


কাউন্সিল   বিএনপি   তারেক জিয়া   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   বেগম খালেদা জিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

জামিনে কারামুক্ত হলেন বিএনপি নেতা

প্রকাশ: ০৯:৩৬ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

এ সময় কারাফটকে তাকে স্বাগত জানাতে শত শত নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে হাবিবুর রশিদ হাবিব বলেন, পুরো দেশটাকে কারাগারে পরিণত করেছে এই জালিম সরকার।

তারা শুধু বিএনপি নেতাকর্মী নয়, দেশের জনগণের অধিকার, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সবকিছুকে ধ্বংস করেছে। এই মাফিয়া আর পুতুল সরকার থেকে মুক্তি পেতে আন্দোলনের বিকল্প নাই। সেই আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান হাবিব।

উল্লেখ্য, গত ১৮ এপ্রিল নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে হাবিবুর রশীদ হাবিবকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন আদালত। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তাকে তিন মামলায় ৬ বছর নয় মাসের সাজা দেন আদালত।

এছাড়া দুটি মামলা গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও ছিলো। সব মামলায় জামিন শেষে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

হাবিবুর রশিদ হাবিব   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচনের আগে ও পরে একই কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র: মঈন খান

প্রকাশ: ০৭:১৫ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র যে কথা বলেছিল, নির্বাচনের পরেও একই কথাই বলেছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।

শুক্রবার (১৭ মে) কারামুক্ত বিএনপি নেতা নবী উল্লাহ নবীর বাসায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মঈন খান বলেন, সরকার যদি ভাবে মার্কিন প্রতিনিধি তাদের সঙ্গে এসে কথা বলেছে আর সব সমস্যার সমাধান হয়েছে, তাহলে সরকারের ধারণা ভুল। নির্বাচনে আগে যুক্তরাষ্ট্র যে কথা বলেছিল, নির্বাচনের পরেও সেই কথা বলেছে।

তিনি বলেন, বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও আটকের একমাত্র উদ্দেশ্য এ দেশের মানুষকে কথা বলতে দেবে না। মানুষকে ভিন্নমত পোষণ করতে দেওয়া হবে না। গণতন্ত্র দেওয়া হবে না। সরকার জানে সুষ্ঠু নির্বাচন দিলে দেশের মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।

এই সরকার সব অধিকার হরণ করেছে জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, তাদের (সরকার) কোনো ভিত্তি নেই। এদেশের ৯৭ শতাংশ জনগণ তাদের ভোট দেয়নি। এ জন্য সরকার ভীতু। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।

মঈন খান বলেন, সরকার এদেশের রাজনীতি অনেক আগেই ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশে আর সুস্থ ধরার রাজনীতি নেই। এখন আছে পরহিংসার রাজনীতি। সংঘাতের রাজনীতি।

তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ বলে দেবে এ সরকারের পরিণতি কি হবে। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, স্বৈরাচারী সরকারের কি পরিণতি হয়ে ছিল। এ দেশের সরকারের বেলায় যে ভিন্ন কিছু হবে এটা কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় না।

বিএনপি   ড. আব্দুল মঈন খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কেন জোট করতে চায় না বিএনপি

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না। 

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে একটি বিষয় সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যারা বিএনপির সঙ্গে এতদিন ছিল এবং আন্দোলন করেছে, তারা এখন নতুন করে আন্দোলনের আগে একটি লিয়াজোঁ কমিটি করতে চায়। আর আন্দোলনের লক্ষ্য এবং পথ পরিক্রমা চূড়ান্ত করতে চায়। লিয়াঁজো কমিটির নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হোক, সেটিও তারা চায়। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত ইতিবাচক সাড়া দেওয়া হয়নি। নানা বাস্তবতার কারণে বিএনপির জোটবদ্ধ আন্দোলন করতে চায় না। লিয়াঁজো কমিটিও করতে চায় না। 

বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতার সাথে আলাপ করে দেখা গেছে, তারা যে সমস্ত শরিক দলগুলো এখন বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে আগ্রহী, তাদের সঙ্গে কোন আনুষ্ঠানিক ঐক্যে যেতে চায় না। এমনকি লিয়াঁজো কমিটির করতে চায় না। এর কারণ হিসেবে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য বলছেন, যে সমস্ত শরিক রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করতে চায়, আন্দোলনের মাধ্যমে তারা অনেকেই সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায়। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সরকারের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করা বা রাজনৈতিক ডিগবাজি দেওয়ার মাধ্যমে তারা আন্দোলনকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। এটি শুধু এই স্থায়ী কমিটির সদস্য নয়, বিএনপি অনেকের ধারণা।

গত বছরের আন্দোলনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন করার কারণে যারা পরিচিতি পেয়েছিল তারাই সরকারের সঙ্গে প্রকাশ্যে এবং গোপনে যোগাযোগ করেছেন। এদের মধ্যে জেনারেল ইব্রাহিমের কথা বিএনপির অনেক নেতাই বলছেন। তারা বলছেন, তিনি রাজনৈতিকভাবে একেবারে এতিম ছিলেন। বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করার কারণেই তাঁর রাজনৈতিক পরিচিতি হয়েছিল। আর সেই পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে তিনি সরকারের সাথে গোপনে আঁতাত করেছেন। 

এর আগেও অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে বিকল্পধারা প্রসঙ্গটিও বিএনপির অনেক নেতা বলে থাকেন। তাছাড়া ২৮ অক্টোবরের পর আকস্মিকভাবে মাহমুদুর রহমান মান্নার নীরবতাকেও বিএনপির নেতারা সন্দেহ করছেন। 

বিএনপির কাছে এরকম তথ্য আছে যে, আন্দোলন বানচালের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনেকগুলো দলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল এবং তাদেরকে নানা রকম টোপ দেওয়া হয়েছিল। ভবিষ্যতেও আন্দোলন যদি বেগবান হয় তাহলে আবার টোপ দেওয়া হবে। এই সমস্ত লোভ পরিত্যাগ করে শরিকরা কতটুকু আন্দোলনের ব্যাপারে অটল থাকতে পারবে এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। আর কারণেই বিএনপি এখন আনুষ্ঠানিক ভাবে জোটে যেতে চায় না।

বিএনপি মনে করে তারা আন্দোলন করবে। তাদের কর্মসূচির সঙ্গে যদি কেউ একমত পোষণ করে তাহলে তারা যুগপৎ আন্দোলন করবে। তবে আন্দোলন তাদের নিজেদেরই করতে হবে এমনটি মনে করছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। আর এ কারণে বিএনপি কোন রকম জোট বা লিয়াঁজো কমিটির পক্ষে নয়।

বিএনপি   যুগপৎ আন্দোলন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

২০৪ নেতাকে বহিষ্কার করল বিএনপি

প্রকাশ: ০২:৫৩ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।

এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।

বর্তমান সরকার নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।

দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত জন চেয়ারম্যান পদে, জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।

দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জুন।


বহিষ্কার   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন