নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০১ পিএম, ২৬ অক্টোবর, ২০১৮
ওয়ান-ইলেভেনের সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিএনপির সংস্কারপন্থীদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগে ক্ষুব্ধ হয়েছেন তারেক জিয়া। গতকাল বৃহস্পতিবার বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানে দলীয় কার্যালয়ে বিএনপি থেকে বহিস্কৃত এবং সংস্থারপন্থী হিসেবে পরিচিত ১২ নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ঐক্যফ্রন্টে যোগদানকারী বিএনপির শীর্ষ নেতারা। সংস্কারপন্থীদের মধ্যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী আলমগীর কবির, সাবেক হুইপ আবু ইউসুফ মো. খলিলুর রহমান, আবু হেনা, জিএম সিরাজ, সর্দার সাখাওয়াত হোসেন বকুল, নজির হোসেন, জিয়াউল হক, আতাউর রহমান আঙ্গুর, ইলেন ভুট্টো, শফিকুল ইসলাম তালুকদার, শহিদুল আলম তালুকদার ও জহির উদ্দিন স্বপন। এদের মধ্যে অনেকে বি চৌধুরীর বিকল্পধারা কিংবা অলি আহমেদের এলডিপিতেও নাম লিখিয়েছিলেন।
এই বৈঠক নিয়ে বিএনপির মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। লন্ডনে তারেক রহমান এই বৈঠকের ব্যাপারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। বৈঠক যখন চলছিলো, তখনই তারেক জিয়াকে টেলিফোনে এই বৈঠকের খবর জানানো হয়। গতকাল রাতে তারেক রহমানের সঙ্গে টেলিকনফারেন্স হওয়ার কথা ছিল শীর্ষ নেতাদের। এই বৈঠকের কারণে সেই টেলিকনফারেন্স তারেক রহমান বাতিল করেছেন।
১২ জন নেতা সাবেক বিএনপির নেতা। যারা ওয়ান-ইলেভেনের সময় তারেক জিয়াকে মাইনাস ও নেতৃত্বের পরিবর্তন চেয়েছিলেন। তখন বেগম জিয়া তাদের দল থেকে বহিস্কার করেন। এর আগে খালেদা জিয়া যখন মুক্ত ছিলেন, তখন তিনিই প্রথম সংস্কারপন্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেন। তিনি জহির উদ্দীন স্বপনসহ এদের দুই একজনকে ডেকে দলের কার্যক্রমে অংশগ্রহন ও এলাকায় বিএনপির পক্ষে কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তারেক তা জানার পরে কড়া বার্তা দেন, ‘এদেরকে কোনমতেই জায়গা দেয়া যাবে না।’ কিন্তু যখন খালেদা জিয়া বন্দি, তারেক জিয়া ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, তখন মির্জা ফখরুল ইসলাম খালেদা- তারেককে না জানিয়েই এ উদ্যোগ নিয়েছেন। এরা সবাই ২০০১ সালে এমপি ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে বিএনপিতে নির্বাচন বর্জন করার পক্ষে যে অংশটি। তাদেরকে কোনঠাসা করার জন্যই এদেরকে বিএনপিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। যেন আগামী নির্বাচনে বিএনপির কট্টরপন্থী অংশ যদি চায়, তারা নির্বাচনে যাবে না। খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোন নির্বাচন নয়। তখন যেন বিএনপির নির্বাচনে যেতে কোন সমস্যা না হয়, একটা বড় অংশ যেন নির্বাচনমুখী হয়। সেজন্যই এই ১২ সংস্থারপন্থীকে দলে ডাকা হয়েছে।
বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন যে, শুধু এই ১২ জন না। বিভিন্ন সময়ে যারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। বিভিন্ন কারণে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। তাদের সবাইকে দলে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে যারা বিএনপির সংস্থারপন্থী নন। তারা এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
গতকাল রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এই সংস্কারপন্থীদের এই সময়ে আনার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন যে, যখন আমরা একটা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি তখন এই আন্দোলনের পিঠে ছুরিকাঘাত করার জন্য এই সংস্কারপন্থীদের এই সময়ে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি মনে করেন,‘এদের দলে এখন কোন দরকার নেই। এদের নির্বাচনী এলাকাতেও অবস্থান সুবিধার নয়। বিএনপি ছাড়া এদের অস্থীত্বই বিলিন হয়ে যাবে। তারপরও তাদের কেন নেয়া হয়েছে তা বোধগম্য নয়।’
অবশ্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ঐক্য প্রক্রিয়াকে সম্প্রসারিত করার জন্যই সমস্ত বিবেদ থেকে দলকে উর্ধে তুলে রাখার জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ যারা নির্বাচন পন্থী এবং যারা তারেক জিয়া এবং খালেদা জিয়াকে মাইনাস করে বিএনপিকে ঢেলে সাজাতে চায়। তারা দলের মধ্যে কোনঠাসা হয়ে থাকার কারণেই সংস্থারপন্থীদের সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। এরা যোগ দিলে দলেরমধ্যে সংস্কারপন্থীদের পাল্লাই ভারী হয়ে যাবে। তখন খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়াকে দলের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হবে সময়ের ব্যাপার মাত্র।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।