নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩৬ পিএম, ৩০ অক্টোবর, ২০১৮
বাবা হারানো একটা মেয়ের পিতৃঋণ শুধবার আকুলতা দেখে চোখে জল আসে, কেমন উদাস হয়ে যায় এ মন। কেন জানি না দৃশ্যমান কোনো দোষ না করেও নিজেকে অনেক বেশি অপরাধী, অকৃতজ্ঞ মনে হয়। সেই মেয়েটা নিরন্তর যে তাঁর নিহত বাবার ছায়া খুঁজে ফেরে, তা তাঁর আচরণেই স্পষ্ট বুঝা যায়। হায়রে বাবা-মা-ভাই হারা মেয়ে, হায়রে নিয়তি। এমন মেয়ের বাবা- ভাই হতেও হয়তো সাত জনমের ভাগ্য লাগে।
ছোট্ট একটা খবর বেরিয়েছে একটি নিউজ পোর্টালে। মেয়েটির চরম রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কিন্তু তাঁর বাবার এক সময়ের ঘনিষ্ঠ সহচর যিনি প্রতিনিয়তই মেয়েটিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য পরোক্ষভাবে উন্মত্ত, তাঁকেই তিনি তাঁর বাবার মতো আদর করে খাওয়াতে চান, বাবা যে নেই তাই। তাঁকে একসময় বাবার পাশে বসে খেতে দেখেছেন। হয়তো ভাবেন, তাঁকে খাওয়ানোর সময় যদি বাবা অলৌকিকভাবে আগের মতো এসে চাচার পাশে বসে পড়ে, হতেও তো পারে! কত অসম্ভবইতো হয় এই দুনিয়ায়! তাইতো তিনি জানতে চান কী কী খাবার তাঁর চাচা পছন্দ করবেন, দেখা করতে এলে। কারণ তিনি দেখা করতে চেয়েছেন বর্তমানে ক্ষমতাধর এই মেয়েটির সঙ্গে। এই সুযোগে মেয়েটি বলেছেন, ‘চাচাকে জিজ্ঞাসা করো, তিনি কী কী খেতে চান’। হায়রে বাবা হারানো মেয়ে, হায়রে তাঁর প্রত্যাশা, হায়রে তাঁর পিতৃঋণ শুধবার আকুলতা।
তাঁকে দেখেছি তাঁর পিতাকে হত্যার পরে বঙ্গবীর উপাধিধারী যিনি পিতৃহত্যার প্রতিশোধের শপথ নিয়ে ঘর ছেড়েছিলেন, ছেড়েছিলেন নিজের মাতৃভূমি, পরিবার। তিনিও মেয়েটির রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হয়ে যান পরে, কিন্তু ভায়ের স্নেহ থেকে কখনোই তাঁকে বঞ্চিত করেননি মেয়েটি। মেয়েটি তাঁর মাঝে নিহত ভাইয়ের ছায়া খোঁজে, প্রতিনিয়ত। এমন অনেক আছেন সারা দেশে তাঁর।
তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, বাবার বন্ধুরা তাঁর বাবার মতোই তাঁকে নিজের সন্তান মনে করে। তাই তো আমারা দেখি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পরে, তাঁর বাবার সহচর আর ভাইয়ের বন্ধুরা জীবন বাজি রেখে তাঁকে আগলে রাখে, রক্ষা করে। এ কারণেই মেয়েটির বিশ্বাস অটুট থেকে যায়, মেয়েটি অকৃতজ্ঞ হতে পারেন না। যদিও স্বার্থের টানপোড়েনে অনেকেই তাঁকে ছেড়ে গেছেন দৈহিক ও মানসিকভাবে। কিন্তু তিনি তা করতে পারেন না। তাইতো তাঁর অনেক সমালোচনা হয়, অনেকই কটু কথা বলে। তাঁরা মেয়েটির মনের সমীকরণ জানেনা তাই তাঁদের হিসাব মেলেনা। তাঁরা শুধু তাঁর বাইরের আবরণ দেখেই কথা বলে, বাবা-মা-ভাই হারা মেয়েটার অন্তরটা কেউ একটিবারের জন্য দেখার, বুঝার চেষ্টা করে না।
অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে নিজেকে কতখানি কৃতজ্ঞ ভাবলে নিজের সহকর্মীদের মতকে উপেক্ষা করে একটা মেয়ে, একটা বোন এমন করতে পারে তা কি আমরা কখনো ভাবি! মনে হয় না। আমি নিজে এমন অনেক পরিবারকে চিনি যিনি তাঁর বাবার বা ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন, পরে মারা গেছেন বা নিহত হয়েছেন। কিন্তু পরে হয়তো ছিলেন তাঁর বাবা-ভাইয়ের চরম রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, তাঁদের প্রতি তাদের আন্তরিকতা, ভালোবাসা, মমতা দেখে হিংসে হবে অনেক বাবার, অনেক ভাইয়ের, অনেক মেয়ের।
বাবা নিহত হবার পরে দেশি বিদেশি হায়েনাদের দ্বারা যারা বিভিন্নভাবে শাস্তি পেয়েছেন, তাদের অনেকেই আজও তাঁর সঙ্গে আছেন। নতুন প্রজন্মের অনেকেই নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য ঐসব ত্যাগী মানুষগুলোকে দূরে সরাতে চায়। তিনি তাদের সব কথা শুনেও সায় দেন না।
সারা দেশে এমন কয়েক শত মানুষ আছে তাঁর বাবা আর ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তারা অনেকেই তাঁর সঙ্গে আছেন, অনেকি আছে ভিন্ন পথে নানা কারণে। কিন্তু তিনি আছেন তাঁর একই পথে। প্রতিদিন শুধে যান তাঁর বাবা-ভাইয়ের রক্তের ঋণ। এই চরম ঋণগ্রস্ত মেয়েটির নাম আমাদের সবার প্রিয় আপা, নেত্রী শেখ হাসিনা।
লেখক: উন্নয়নকর্মী
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:১৫ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:১২ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:০৭ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
সবার জন্য স্বাস্থ্য নিশ্চিতে বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক অভাবনীয়, অনন্য এবং যুগান্তকারী একটি মডেল। শিশু স্বাস্থ্য, মাতৃ স্বাস্থ্য এবং কিশোরীদের স্বাস্থ্য পরিসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এটি একটি অসাধারণ উদ্যোগ। নবজাতকের মৃত্যু, মাতৃ মৃত্যু কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অনুসরণ শুরু করেছে। গত বছর ১৭ মে কমিউনিটি ক্লিনিক ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিসিয়েটিভ’ হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়। ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ সারা বিশ্বের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রত্যাশী জনগণের জন্য ‘আলোক বর্তিকা’।
আজকে আমরা ১৭ মে নিয়ে কথা বলছি। যেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। আবার গত বছর এই দিনে তাঁর চিন্তা প্রসূত কমিউনিটি ক্লিনিককে জাতিসংঘ ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আজকে আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছি, উন্নয়নশীল বাংলাদেশের কথা বলছি, যে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি, একদিন উন্নত বাংলাদেশ হব বলে স্বপ্ন দেখছি এই সবকিছু শেখ হাসিনার স্বপ্ন, শেখ হাসিনার ইনিশিয়েটিভ। বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৭৮১ সালে পলাশি যুদ্ধে ইতিহাসের ঘৃণিত সেনাপতি মির্জাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় নবাব সিরাজ উদ্দৌলার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ২০০ বছরের গোলামী আমাদের ললাটে এসেছিল। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হলেও বাঙালী এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা পায়নি। যার পটভূমিতে বীরদর্পে আবির্ভূত হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ থেকে ৭৫’ বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশে স্বাধীনতার লাল পতাকা উড়েছিল বাঙালী আশায় বুক বেধেছিল।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বিয়োগান্তের ঘটনায় জাতি ছিল দিক নির্দেশনাহীন। নারকীয় এই ঘটনায় জনগণ হয়ে পড়েন দিশেহারা। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করার কোন শক্তি সাহস ছিল না। দলের অনেক বড় বড় নেতাও ছিলেন কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ধানমন্ডির ৩২ বাড়ি ছিল কবরের নীরবতা। সমগ্র জাতি তখন অন্ধকারে। সামরিক বুটে পিষ্ঠ গণতন্ত্র। নির্বাসনে সংবিধান আর মানুষের মৌলিক অধিকার। বাক স্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিল না। এমনকি বঙ্গবন্ধু নাম উচ্চারণ ছিল নিষিদ্ধ।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের মৌলিক চরিত্রকেই বদলে ফেলা হয়। বিশেষ করে পাকিস্তানি ধারায় সামরিক শাসনের সংস্কৃতির প্রবর্তন ঘটে দেশে। সাম্প্রদায়িকতা ফিরে আসে রাজনীতি, প্রশাসন, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরে। একের পর এক স্বপ্নভঙ্গের ঘটনা ঘটতে থাকে দেশে। বাঙালি জাতির জীবনে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ঘোর অমানিশার অন্ধকার। ঠিক এমন প্রতিকূল সময় ১৯৮১ সালের ১৭ মে সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর রক্তস্নাত মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন বাঙালির মুক্তির মহানায়কের যোগ্য উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনা।