নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ৩০ অক্টোবর, ২০১৮
শেখ হাসিনার চরম রাজনৈতিক প্রতিপক্ষও স্বীকার করেন যে, রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় তিনি সবাইকে পিছনে ফেলেছেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনা নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। কৌশল এবং বিচক্ষণতায় তিনি তুলনাহীন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি। সবচেয়ে বড় কথা পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে তা তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের অজানা। এজন্য একের পর এক বিস্ময় উপহার দিচ্ছেন, বিশ্বে এই মুহূর্তে সফল রাষ্ট্রনায়কদের অন্যতম শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার সর্বশেষ চমক হলো, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে যাওয়ার সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে যাঁরা গবেষণা করেন তাঁদের খুব কম সংখ্যক মানুষেরই এরকম সংলাপের ব্যাপারে আশাবাদ ছিল। শেখ হাসিনা সংলাপের প্রস্তাবটি লুফে নিয়ে কেবল চমকই দেখালেন না, জনমনে স্বস্তির একটি পরিবেশ সৃষ্টি করলেন। প্রায়ই বলা হয়, রাষ্ট্রনায়করা দলের উর্ধ্বে অবস্থান করেন। তাঁরা দেশ এবং জনগণের কথা চিন্তা করেন। এই ছোট্ট সিদ্ধান্ত, শেখ হাসিনার রাষ্ট্র নায়োকোচিত সিদ্ধান্তের এক ঝলক। শেষ পর্যন্ত এই সংলাপে কী ফল হবে, সেই সিদ্ধান্ত দূরে ঠেলে রেখেও বলা যায়, এটা একটি সাহসী সিদ্ধান্ত। শেখ হাসিনা এমন সব দাবি সামনে রেখে প্রতিপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন, যেখানে তার ‘পদত্যাগ’ বা মৃত্যু পরোয়ানাই মুখ্য দাবি। এই সংলাপের সিদ্ধান্তের কদিন আগেই চট্টগ্রামের জনসভায় ড. কামাল হোসেন ঘোষণা করেছিলেন যে, এই সরকারকে, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীকে তিনি শাস্তি দিবেন। ঐ জনসভায় ড. কামাল অন্তত পাঁচবার শাস্তির কথা বলেছিলেন। শেখ হাসিনা এরকমই, যাঁরা তাঁর মৃত্যু কামনা করে, যারা তার শাস্তি চায়, তাদের তিনি নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানান। কতটা সাহসী হলে একজন মানুষ এটা করতে পারেন?
আমরা অনুমান করতে পারি কেন এই সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন। গত কিছুদিন ধরেই রাজনৈতিক অঙ্গনে নির্বাচন নিয়ে কিছু আশংকা এবং উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছিল। এই সংলাপ কিছুটা হলেও মানুষকে আশাবাদী করে তুলেছে। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দর্শন হলো ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’। তিনি সবসময়ই অধিকারহীন, বঞ্চিত মানুষের পক্ষে কথা বলেন। সমাজের সুশীলদের চেয়ে তৃণমূলের সোজাসাপ্টা মানুষগুলোই তাঁর প্রিয়। জনগণের কথা চিন্তা করেন জন্যই, জনগণের মঙ্গল কামনা করেন জন্যই তিনি সাহসী। সাহসী জন্যই যেকোনো সিদ্ধান্ত তিনি অকপটে নিতে পারেন। সাম্প্রতিক সময়ে যদি কেউ শেখ হাসিনার বক্তৃতাগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন, সেখানে দেখবেন তিনি একটি কথা বারবার বেশ জোর দিয়েই বলছেন, ‘জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নাই।‘ জনগণের প্রতি প্রচণ্ড আস্থাশীল এই মানুষটির হাত দিয়েই এদেশে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি সবকিছুই করতে পারেন। ২০১৪’র নির্বাচনের পর যেমন কেউ ভাবতে পারেনি দশম জাতীয় সংসদ পূর্ণ মেয়াদ কাটাবে, ওই নির্বাচন যেমন ছিল শেখ হাসিনার এক চমক, তেমনি এই সংলাপের সিদ্ধান্তও এক চমক। এরপর সংলাপে কি চমক দেখাবেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা?
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।